বার্তা পরিবেশক অনলাইন:: মেঘনা নদীর চাঁদপুর অভয়াশ্রম এলাকায় মা ইলিশ ধরা নিয়ে জেলেদের সঙ্গে নৌপুলিশের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। আহতদের মধ্যে দু’জন জেলে, তিনজন নৌপুলিশ সদস্য ও একজন স্পিডবোট চালক।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক করে ১৮ জেলেকে। এছাড়া আলাদা আরও দুই অভিযানে আটক হয়েছেন ১০ জেলে।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভোরে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়ে এ সংঘর্ষ হয়। চাঁদপুরে দায়িত্বরত নৌপুলিশের এসপি জমশের আলীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।

চাঁদপুর নৌ-থানা পুলিশ জানায়, ভোর ৪টার দিকে নৌ-পুলিশ অভিযান চালায়। ৬টার দিকে মা ইলিশ নিধনকালে জেলেদের আটক করতে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং দলবদ্ধ হয়ে বাঁশ নিয়ে আক্রমণ চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

আহত জেলেরা হলেন, নাজমুল হোসেন শেখ (২০), মনির হোসেন শেখ (৩৫) ও স্পিডবোট চালক মো. রুবেল (২০), এসআই জাকির হোসেন, নায়েক দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল শাহরিয়ার।

আটক জেলেরা হলেন- কামাল (৩২), সবুজ (২৪), শামছু (২৮), মিলন বেপারী (৪০), আমির হোসেন (২৫), কাউছার বেপারী (২৫), বিজয় বেপারী (২০), রুহুল আমিন (২০), হাবিব খান (৩২), ইব্রাহীম (১৮), চারু গাজী (৪০), ছাত্তার খান (২১), আইনুল হক (৬০), আল-আমিন বেপারী (১৮), জসিম বেপারী (২০), নাজমুল হোসেন শেখ (২০), মনির হোসেন শেখ (৩৫) ও অজ্ঞাত পরিচয় একজন শিশু।

চাঁদপুর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের খান সাংবাদিকদের জানানবার্তা, আটক জেলেদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। আজই তাদের আদালতে পাঠানো হবে। আটকদের মধ্যে একজন শিশু থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তিন পুলিশ সদস্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আটক দুই জেলে ও স্পিডবোট চালক চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অপরদিকে সকালে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনের পেটি অফিসার মাইনুল হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে মেঘনা নদী থেকে আট জেলেকে আটক করা হয়। আটকরা হলেন নেয়ামত মিজি (১৯), শহীদ গাজী (২৫), মো. আরিফ গাজী (১৮), ফয়েজ পাটওয়ারী (২০), মো. রাজিব (২২), মো. শাকিল (১৯), মো. আকতার হোসেন (১৮), মো. শাহরুখ হোসেন (২০)।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিদুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আট জেলের প্রত্যেককে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন।

অপরদিকে হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স রোববার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে মা ইলিশ শিকার করায় দুই জেলেকে আটক করেন। আটকরা হলেন মনির হোসেন গাজী (৩৫) ও আমির হোসেন গাজী (২৭)। হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসি বেগম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রত্যেককে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকি সাংবাদিকদের জানান, চাঁদপুরের ৯০ কিলোমিটার নৌ-সীমানায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেলেদের পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে।