বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: মানুষের রক্ত চুষে বড় লোক না হতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, সব ধর্মেই মানুষ ঠকিয়ে ব্যবসা করা ‘স্ট্রিক্টলি ফরবিডেন।’

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

মো. আবদুল হামিদ বলেন, এখন বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটা হচ্ছে। যখন ধান কাটা শুরু হয়, তখন চালের দাম বাজারে কমে যায়। এটিই নিয়ম। তবে বাংলাদেশে এ নিয়ম হয়ে গেছে উল্টো।

‘এবার দেখলাম ধান কাটার পর কৃষক হাহাকার করছে। তারা দাম পাচ্ছে না। অন্যদিকে যারা ব্যবসায়ী, মজুদদার- তারা কম দামে কেনে হাজার হাজার টন চাল স্টক করছে। পরে দুই টাকা, চার টাকা, ৫ টাকা কেজিতে বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এটা আসলেই খুব দুঃখজনক।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি একবার মজুদদারদের গণধোলাই দেওয়ার কথা বলেছিলাম। তবে আমি যে গণধোলাই এর কথা বলেছি- সেটা হলো মগজ ধোলাই। পকেটমারদের যে গণধোলাই দেওয়া হয় সেটা না। মজুদদারদের আসলে মগজ ধোলাই দিতে হবে।

গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যারা ছাত্ররা আছো, ইয়াং অ্যানার্জিটিক- তোমাদের মানুষকে বলতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে। গ্রামের মানুষ, শহরের মানুষ এবং যারা ব্যবসায়ী- তাদের সবাইকে বুঝাতে হবে। যে এগুলো ভালো না।

‘ছাত্রদেরকে দেশ গড়ার পাশাপাশি মানুষকে মোটিভেট করতে হবে। মোটিভেশন দেওয়াটা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।’

মো. আবদুল হামিদ বলেন, এখানে প্রাক্তন মন্ত্রী, বর্তমান সংসদ সদস্যরা আছেন। আমি আপনাদের বলবো- আপনারাসহ সব দলের রাজনীতিকদের অনুরোধ করবো- জনগণ এবং ব্যবসায়ীদেরকে আপনারাও মোটিভেট করেন। তাদের কাছে যান। তাদের বুঝান।

‘রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব শুধু উন্নয়নমূলক কাজ করা নয়, মানুষকে মোটিভেট করা, মজুদদারদের সঠিক পথে আনা, তাদের বুঝানো এসবও আপনাদের একটি পবিত্র দায়িত্ব। এটি আপনারা পালন করবেন।’

মো. আবদুল হামিদ বলেন, রাতারাতি ধনী হওয়ার জন্য অনেকে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেই। অন্যদিকে বিক্রি না হওয়ায় কর্ণফুলী নদীর মধ্যে খাতুনগঞ্জের পচা পেঁয়াজ ফেলছে। আবার অনেক সময় দেখা যায়- পেঁয়াজের মধ্যে গাছ হয়ে যাচ্ছে।

‘অর্থাৎ তারা গোডাউনে এসব পেঁয়াজ আটকে রাখছে। যাতে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে। এই যে প্রবণতা, মানসিকতা- এ মানসিকতা পরিহার করতে হবে।’

‘এই চিটাগাং এর ভাষায় বলবো- আই ন ডরাই। আমি চাই চিটাগাং এর মেয়েরা শুধু নয়, আই ন ডরাই বলে ছেলেরাও মাঠে নামুক। ফরমালিনের বিরুদ্ধে। মজুদদারদের বিরুদ্ধে।

এবারের সমাবর্তনে ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চুয়েট থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়া ২ হাজার ২৩১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ।