বার্তা পরিবেশক, অনলাইন::: এক মানবিক বিষয়ে নায়ক চরিত্রে অবতীর্ণ হলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের এক পুলিশ কর্মকর্তা।
পথে বিবস্ত্র মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দেখা সবাই এড়িয়ে গেলেও তেমনটি করেননি সেই পুলিশ। ডিউটিরত অবস্থায় গাড়ি থেকে নেমে সেই ভারসাম্যহীন নারীর গায়ে জড়িয়ে দিলেন নিজেরই পরিধানের কাপড়।
এ কাজটি করেছেন ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার রায়।
এমন মানবিক কর্ম করে গত সোমবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসিত হচ্ছেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা। জানা গেছে, গত সোমবার বিমানবন্দর চত্বরের পাশে এক মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীকে দেখেন উপপুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার রায়। পথচারীরা বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু তরুণীকে এমন অবস্থায় দেখে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে নিজের ট্রাউজার ও জার্সি পরিয়ে দেন প্রবীর কুমার।
আর এক পথচারী সেই মুহূর্তের ছবি তুলে ফেসবুকে প্রকাশ করে দেন। দ্রুতই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
উপপুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমারের সেই কাজের প্রশংসা করে আনিসুল হক নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন– পুলিশের নেতিবাচক দিকগুলোই আমরা দেখি। কিন্তু এটিও ঠিক যে তাদের অনেকেই মানবিক কাজ করে থাকেন, সেসব ভালো কাজের প্রশংসা করি না আমরা।
আতিক আহমেদ নামে একজন লেখেন– এই শহরে তো আমরাও থাকি। নিশ্চয়ই ওই নারীকে আগেও ওখানে দেখা গেছে। অন্যরা যারা আগে দেখলেন, তারা কেন এগিয়ে এলেন না? সব কিছুতে কি পুলিশেরই এগিয়ে আসতে হবে!
বিষয়টি নিয়ে উপপুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার বলেন, হ্যাঁ, ঘটনাটি নাকি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে কে বা কারা সেই ছবি ফেসবুকে দিয়েছে আমি জানি না। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়; আমি শুধু আমার মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজটি করেছি।
তিনি বলেন, প্রথম টার্গেটই ছিল ওই নারীকে পোশাকে আবৃত করা। তাই সেই সময় হাতের কাছে যা ছিল তা দিয়েই ওই নারীর লজ্জা নিবারণের চেষ্টা করেছি। মানিব্যাগে সেই সময় যে পরিমাণ টাকা ছিল সেটিও দিয়েছি ওই ভারসাম্যহীন তরুণীকে।
তিনি যোগ করেন, এখানে আলাদাভাবে আমার প্রশংসা করার কিছু নেই। আমার মনে হয়, আমার জায়গায় অন্য কোনো পুলিশ সদস্য থাকলেও এমনটিই করতেন। এ ঘটনার মতো পুলিশ সদস্যদের এমন অনেক মানবিক উদাহরণ আছে। কিন্তু সেসব ঘটনা পত্রপত্রিকায় সেভাবে প্রচার পায় না। এসব প্রচার পেলে জনগণের মাঝে আমাদের ‘ইমেজ’ এ পরিবর্তন আসবে বলে মানে করি।