নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশালে কুড়িয়ে অংকিতা নামের সেই শিশুটিকে অবশেষে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস ইউনিটে (ওসিসি) পাঠিয়েছে পুলিশ। সোমবার রাতে ১০ বছর বয়সী শিশুটিকে নৌবন্দরে কান্নাকাটি কারতে দেখে উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এসময় শিশুটি নিজের নাম ‘অংকিতা’ বললেও ঠিকানা বা বাবা-মায়ের পরিচয় বলতে না পারায় তাকে রাতেই কোতয়ালি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের মেয়েটি গ্রামের বাড়ি মুলাদী বলে জানালেও বরিশাল পুলিশ সেখানে খোঁজ নিয়ে কোন সূত্র পায়নি। ফলে বাধ্য হয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশ শিশুটিকে মঙ্গলবার সকালে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস ইউনিটে (ওসিসি) প্রেরণ করে। সেই সাথে জানতে চাইতে মেয়েটি কোন ধরনের নিপিড়নের শিকার হয়েছে কী না। যদিও পুলিশের ধারনা মেয়েটি নিপিড়নের শিকার না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। কারণ ১০ বা ১২ বছরের শিশু ধর্ষিত হলে যে আলামত মেলে তা লক্ষ্যণীয় নয় চিকিৎসকেরা মত দিয়েছেন।

কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ জানায়- সোমবার রাতে শিশুটিকে উদ্ধারের পরে নৌ-পুলিশ তাদের কাছে হস্তান্তর করলে পরিচয় জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু মেয়েটি নিজের নাম অংকিতা ও বাড়ি মুলাদী ব্যতিত বাবা-মায়ের নামও জানতে পারেনি। পরে মুলাদী থানায় খোঁজ নিয়েও শিশু হারানোর কোন আলমত মেলেনি। যে কারণে পরিশেষে শিশুটিকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস ইউনিটে (ওসিসি) প্রেরণ করতে হয়েছে।’

পুলিশের অনুমান মেয়েটির বেশভুষা ও ভাষার ব্যবহারে দক্ষিণাঞ্চলের কোন জেলার বাসিন্দা বলে মনে হচ্ছে না। বরং তার কথাবার্তার অঙ্গভঙ্গি দেখে ঢাকা জেলার সাদৃশ্য। কিন্তু পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে তাও বলতে পারছে না পুলিশ।

বরিশাল নৌ সদর থানা পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বরিশালটাইমসকে জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে মেয়েটি নৌবন্দরে কান্নাকাটি করতেছিল। এসময় পুলিশ সদস্য তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় এক ছেলে তাকে লঞ্চে উঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু সেই ছেলে তার সাথে থাকা জামা-কাপড়ের ব্যাগ ও নগদ ৪৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। নাম অংকিতা ছাড়া মেয়েটি আর কিছু বলতে পারেনি। পরে তাকে কোতয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মেয়েটিকে উদ্ধার পরবর্তীতে একটি সাধারণ ডায়েরির আলোকে সার্বিক আইনানুগ প্রক্রিয়া গ্রহণ চলছে জানিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রলয় বরিশালটাইমসকে বলেন- তার স্বজনদের খোঁজে কাজ চলছে। কিন্তু মেয়েটি প্রথমে গ্রামের বাড়ি মুলাদী বলেছিল, সেখানে খোঁজ নেওয়া হলে কোন তথ্য উপাত্ত¡ পাওয়া যায়নি। পরে মেয়েটিকে মানসিক চাপমুক্ত করতে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস ইউনিটে (ওসিসি) প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু সার্বিক আলামত শিশুটিকে ধর্ষণের কোন আলামত দিচ্ছে না।

তারপরেও মেয়েটি পুরোপুরি সুস্থ ও বাবা-মায়ের পরিচয় না জানার আগে কিছু বলা সমীচীন হবে না বলে মন্তব্য করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।’