২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

উজিরপুরে জব্দ ভিজিএফের চাল বিতরণ ও সরকারী কোষাগারে জমা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:৩০ অপরাহ্ণ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নে জব্দ করা ভিজিএফের ২ হাজার ২৬০ কেজি (৪৫ বস্তা) চাল এলাকার কার্ডধারী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ওই ইউনিয়নের কারফা বাজার-সংলগ্ন ইউপির অস্থায়ী গুদামের সামনে এ চাল বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা আক্তার।

এ সময় সেখানে উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মফিজুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. হেল্লাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

ওই ইউনিয়নের কার্ডধারী ১ শত ১৩ জন দরিদ্রের মধ্যে ৭৪ জনকে ২০ কেজি করে ১ হাজার ৪৮০ কেজি চাল দেওয়া হয়। অনুপস্থিত থাকায় বাকী ৩৯ জনের ৭ শত ৮০ কেজি চাল সরকারী কোষাগারে (শিকারপুর খাদ্য গুদামে) জমা করেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও)। তিনি এই প্রতিবেদককে এ সকল তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আত্মসাতকৃত দরিদ্রদের ভিজিএফের জব্দ করা ওই চাল বিতরণের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এলাকাবাসীর দাবী, চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু এক সময়ের আলোচিত সর্বহারা নেতার সহযোগী ছিলেন।

বর্তমানে সে উপজেলা চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ সহচর হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি জব্দকৃত ভিজিএফের চাল বিতরণ করেছেন।

এদিকে চাল চুরির ঘটনায় চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের পর বাদী এরশাদ হাওলাদারকে অভিযুক্তরা হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়া ওই ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানের চাল চুরির প্রতিবাদ করতে গিয়ে তারা এখন হামলা-মামলা আতঙ্কে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ঈদুল আযহা উপলক্ষে উপজেলার জল্লা ইউনিয়নে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র প্রাপ্ত চাল না দিয়ে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু নিজেই আত্মসাত করে গুদামে মজুদ করে রাখেন।

ঈদ পরবর্তী গত ২৮ আগস্ট ওই চাল পাচারকালে স্থানীয়রা তা আটক করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের কবল থেকে ২ হাজার ২৫০ কেজি ভিজিএফ’র চাল জব্দ করে। সিলগালা করা হয় ইউনিয়ন পরিষদের চালভর্তি অস্থায়ী গুদাম।

এ ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও রহস্যজনক কারণে উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এতে ক্ষুব্ধ ইউনিয়নবাসীর একজন বাহেরঘাট গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ হাওলাদার বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর চাল চুরির অভিযোগ এনে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছেন, ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত হালদার নান্টু, ওএমএস ডিলার প্রিতম বিশ্বাস ও তাদের সহযোগী সুশান্ত হালদার, রমেশ বিশ্বাস, দুলাল বিশ্বাস।

আদালতের নির্দেশে মামলাটি বর্তমানে দূর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্তাধীন রয়েছে।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন