২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

রাজাপুরে সোহাগ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:০৫ অপরাহ্ণ, ২৬ জুলাই ২০১৮

ঝালকাঠির রাজাপুরের সোহাগ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় লামিয়া আক্তার নামে আট বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে শিশুটির অ্যাপেনডিক্স অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয়। ক্লিনিক মালিক আহসান হাবিব সোহাগ লাশ রেখে রাতেই লামিয়ার স্বজনদের দুই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন।

লামিয়া পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আবুল কালাম চুন্নুর মেয়ে। সে স্থানীয় নেকপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- গত এক মাস ধরে পেটের ব্যাথায় ভুগছিল শিশু লামিয়া। ১০ দিন পূর্বে শিশুটিকে নিয়ে তাঁর মা রাজাপুরের সোহাগ ক্লিনিকের চিকিৎসক মহিউদ্দিনকে দেখান। মহিউদ্দিন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে লামিয়ার অ্যাপেনডিক্স হয়েছে বলে জানান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁর অপারেশন করানোর পরামর্শ দিয়ে ওষুধ লিখে দেন ওই চিকিৎসক। লামিয়াকে অপারেশনের জন্য বুধবার বিকেলে ক্লিনিকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে রাতে অ্যাপেনডিক্স অপারেশনের জন্য অস্ত্রপচার করা হয়।

কিন্তু ভুল অস্ত্রপচারের কারণে শিশু লামিয়ার অপারেশন থিয়েটারে বসেই মৃত্যু হয়। পরে ক্লিনিক মালিক আহসান হাবিব সোহাগ লামিয়া গুরুতর অসুস্থ বলে ক্লিনিকের ম্যানেজারকে সাথে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানান। লামিয়ার মা কমলা বেগম মুঠোফোনে বলেন- সোহাগ ক্লিনিকের ভুল চিকিৎসায় লামিয়ার মৃত্যু হয়েছে। মৃত লামিয়াকেই ক্লিনিক থেকে বের করে বরিশাল পাঠানো হয়।

সোহাগ দুইলাখ টাকা দিয়ে সমঝোতা করতে চায়। আমরা পাঁচ লাখ টাকার কথা বলেছি। বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার জন্য অনেকেই আমাদের বাড়িতে এসেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লামিয়ার এক স্বজন মুঠোফোনে বলেন, লামিয়ার মৃত্যুর পরে ক্লিনিক মালিক ও তাঁর লোকজন বরিশালে গিয়ে ধরপাকড় করছে। অবশেষে দুইলাখ টাকায় বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে। তাই লামিয়ার পরিবার থানায় কোন অভিযোগ করতে রাজি হচ্ছে না।

লামিয়ার মৃত্যুকে একটি দুর্ঘটনা বলে দাবি করে ক্লিনিক মালিক আহসান হাবিব সোহাগ মুঠোফোনে জানান, লামিয়ার অপারেশন সঠিকভাবেই হয়েছে। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে বরিশালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। লামিয়ার হার্টে সমস্যা ছিল।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে ঘটনার তদন্ত করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন