৪০ বছর বয়সী আনোয়ার আহমেদ খুবই কৃতজ্ঞ বিনোদ মেহরার কাছে। কারণ, এই মেহরার কারণে ঈদ উল আজহার আগেই তার বাড়ি জুড়ে ঈদের খুশি উপচে পড়ছে। বিনোদ মেহরাও কম কৃতজ্ঞ নয় আনোয়ার আহমেদের কাছে। কারণ, এই আহমেদের কল্যাণে তার বাসায়ও দিওয়ালির রোশনাইয়ের বান ডেকেছে।
আনোয়ার ও বিনোদের ধর্মীয় বিশ্বাস ভিন্ন, কিন্তু মনুষ্যত্ব ও মহত্ত্বে তাদের মনোভাব অভিন্ন। যার প্রমাণ, এই ভিন্ন দুই ধর্মাবলম্বী সম্প্রতি নিজেদের কিডনি একে অপরের অর্ধাঙ্গিনীকে দান করে উৎসবের আনন্দ বয়ে এনেছেন দুই পরিবারে।
‘জাতের নামে বজ্জাতি’র এই সময়ে ঐক্যের নতুন বীজ রোপণ করেছেন ভারতের জয়পুরের বিনোদ মেহরা ও আনোয়ার আহমেদ। আনোয়ারের দেওয়া কিডনিতে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন বিনোদের স্ত্রী। আবার বিনোদের দান করা কিডনিতে প্রাণ পেয়েছেন আনোয়ারের স্ত্রী। সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ জয়পুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে এই বিরল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক আশুতোষ সোনি।
বহুদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন বিনোদের স্ত্রী অনিতা। তার রক্তের গ্রুপ ছিল বি প্লাস। এ প্লাস রক্তের গ্রুপের বিনোদের পক্ষে স্ত্রীকে কিডনি দেওয়া সম্ভব ছিল না। একই সমস্যায় পড়েছিলেন আনোয়ারও। অতিরিক্ত পেইন কিলার খাওয়ার ফলে কিডনি অকেজো হয়ে গিয়েছিল আনোয়ারে স্ত্রী তসলিম জাহানেরও। ঘটনাচক্রে তসলিমের রক্তের গ্রুপ এ প্লাস এবং বি প্লাস রক্তের গ্রুপ আনোয়ারের।
সাধারণত নিকট আত্মীয়দের থেকেই রোগীর জন্য কিডনি নিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, আনোয়ার-অনিতা ও বিনোদ-তসলিমের রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় এই ‘চান্স’ নেন আশুতোষ সোনি। অস্ত্রোপচার সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। আনোয়ার-বিনোদ আগেই ছাড়া পেয়েছেন হাসপাতাল থেকে। সোমবার ছাড়া পাবেন তসলিম ও অনিতা। নতুন জীবনে উৎসবের আনন্দ তাই ভাগ করে নেবে দুই পরিবার।
Other