২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

অন্ধকার জগতের সম্রাজ্ঞী পাপিয়ার সাথে ঝালকাঠির কেকার সম্পর্ক, নতুন আলোচনা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:২৮ অপরাহ্ণ, ১৬ মার্চ ২০২০

সময়ের সবচে আলোচিত নারী নরসিংদী জেলা মহিলালীগ নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়ার ন্যায় ঝালকাঠির আওয়ামী লীগ শারমিন মৌসুমী কেকাও কী একই পথের পথিক? রাজধানী ঢাকায় র‌্যাবের হাতে আটকের পর পাপিয়ার কু-কীর্তি ও কাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে তা নিয়ে অনুসন্ধান প্রাক্কালে ঝালকাঠি জেলা আ’লীগ নেত্রী কেকার যোগাযোগ ছিল এমনটি প্রমাণ মিলেছে। উভয় নেত্রীর অন্তরঙ্গ বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গত দু’দিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে- পাপিয়ার সাথে কেকার সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু? ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় দুই নেত্রীর যোগাযোগ বা সম্পর্ককে অনেকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে- কেকাও বিতর্কিত পাপিয়ার ন্যায় একই পথে হাঁটছেন কী না? যদিও সম্পর্কের বিষয়টি কেকা অস্বীকার করে বলছেন- তিনি পাপিয়াকে চেনেনই না (!)

একাধিক সূত্রের দাবি- প্রয়োজনের স্বার্থেই পাপিয়ার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলা কেকা প্রায় ঢাকায় দুইজনে মিলিত হতেন। একটি বাস্তবমুখী প্রমাণও মিলেছে। ঢাকার মিরপুরের সাবেক একজন সাংসদের বাসায় কেকা ও পাপিয়া একত্রে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফটোশেসনে হাস্যোজ্জ্বল ছবি তুলেছিলেন।

সূত্রের দাবি- মিরপুরের সংরক্ষিত আসনের নারী সাবেক সাংসদ সাবিনা আক্তার তুহিনের মাধ্যমে পাপিয়ার সাথে কেকার সম্পর্কের যোগাসূত্র তৈরি হয়। সেই সূত্র ধরে নরসিংদী ও ঝালকাঠির এই দুই নেত্রীর সাবেক ওই সাংসদের বাসায় প্রায় যাতায়াত ছিল। সাবেক সাংসদ তুহিন তাদের আগলে রেখে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিতেন। উল্লেখ্য, কেকার বিরুদ্ধে পাপিয়ার ন্যায় নানা অভিযোগ দীর্ঘদিনের। রাজনৈতিক উচ্চমহলসহ বরিশাল অঞ্চলের অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তির সাথে কেকার সখ্যতা নিয়ে নানা মুখরোচক গল্প-কাহিনী শোনা যায়। কখনও শ্বশুরালয়ে বরিশালে আবার কখনও পিতৃালয় ঝালকাঠির রাজনীতিতে কেকার পদচারণা দেখা গেলেও এখন তিনি নিজ জেলাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। এক সময়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রয়াত আ’লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরনের সহচর হিসেবে মহিলালীগের রাজনীতির সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। এই সময়কালে কেকার ছিল দুর্দান্ত দাপট। নগরীর কাটপট্টি এলাকায় জনৈক এক ধনাঢ্য ব্যক্তির সাথে তার হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক নিয়ে কথা উঠেছিল। এনিয়ে তার স্বামী লিটুর সাথে দূরত্ব তৈরি ও ঘরও ছেড়েছিলেন।

জনশ্রুতি রয়েছে- হিরনের মৃত্যুর পর হঠাৎ করে কেকার রাজনৈতিক মঞ্চ পাল্টে যায়। ঝালকাঠির সাংসদ আমির হোসেন আমু শিল্পমন্ত্রী মন্ত্রিত্ব লাভের পর বরিশালের এই নেত্রী তার পিছু নিতে দেখা যেতো। সেই থেকে কেকা ঝালকাঠিতে আমুর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ঝালকাঠি জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বরিশালের মহিলালীগ নেত্রী অনেককে টপকে ঝালকাঠি আ’লীগের শীর্ষ পদ কিভাবে পেলেন তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে ঝালকাঠির রাজনৈতিক অঙ্গনের পদবঞ্চিতদের মুখে কেকার এই উত্থ্যান নিয়ে তীর্যক মন্তব্যও শোনা গেছে। তাদের দাবি- আমির হোসেন আমু শিল্পমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তদ্বির বাণিজ্য করে এই নেত্রী বেশ অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন। ঢাকার রাজনৈতিক উচ্চমহলের সাথেও যোগাযোগ তৈরিতে সহায়ক হন। ওই সময়ে সচিবলায়ে তাকে প্রায় দেখা যেতো।

একাধিক সূত্রের ধারণা- সেই সেময়ই নরসিংদী বাসিন্দা কিন্তু ঢাকায় বসবাস পাপিয়ার সাথে কেকার পরিচয় লাভ। ঢাকার অন্ধকার জগতে পাপিয়ার যে দাপট তার অনুকরণে কেকা অতটা অগ্রসর না হলেও ঝালকাঠির রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে বেশ প্রভাব সৃষ্টি করেছেন। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তিদের বাসভবনে যাতায়াত করতে যায় বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি। আবার কেউ বলছে- নেশার রাজ্যেরও কেকার অবাধ বিচারণসহ একটি নারী চক্রকে তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। অনিন্দ্য সুন্দরী এই নারীদের বিভিন্ন স্বার্থে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা তৈরিতে বা তাদের মনোরঞ্জনে এই অনিন্দ্যদেরই কেকা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরুপ ঝালকাঠির সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেত্রী নাছিমা কামালের একটি নগ্ন ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল। প্রবাসী এক যুবকের সাথে সম্পর্কের তিক্ততা থেকে ওই ছবি ছড়িয়ে পড়ে। নিশ্চিত হওয়া গেছে- কেকার অনুসারী এই নাছিমা কামাল বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে ‘ভিডিও চ্যাটে’ সেক্সচুয়াল ভার্সন তৈরি করে আনন্দ দেন। বিস্ময়কর বিষয় হলো- এই নাছিমা কামালের নগ্ন ছবির পক্ষে সাফাই গেলে কেকা বললেল এটা ষড়যন্ত্র। আবার দেহ দেখালে দোষের কী আছে, বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেই ভাল হয়। এ থেকেই প্রমাণ তার নারী চক্রের নমুনা। নাছিমাকে নিয়ে যখন ঝালকাঠিতে তোলপাড় চলছে ঠিক সেই সময় পাপিয়ার সাথে কেকার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় এই নেত্রীকে নিয়ে ঝালকাঠি টু বরিশাল নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য কেকা আত্মপক্ষ সমর্থন করে মিডিয়ার কাছে দাবি করেছেন- তিনি পাপিয়া নামের মহিলালীগের কাউকে চেনেন না। দেশব্যাপি পরিচিত আলোড়ন তোলা নেত্রী পাপিয়াকে চেনেন না এমন মন্তব্যে প্রমাণ করে তার অদূরদর্শীতার পরিচয়।

তবে এ প্রতিবেদক যখন বললেন এই সেই পাপিয়া যে কী না ঢাকার অন্ধকার জগতের সম্রাজ্ঞী, তার সাথে দেখা গেল আপনার ছবি। কিছুটা খেই হারিয়ে ফের স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় হ্যা-সূচক জবাবে বলেন- পাপিয়াকে দেখেছিলাম ঢাকার সাবেক নারী সাংসদ তুহিন আপার বাসায় খেচুড়ি খাবার আয়োজনে। সেটা বছর দু’য়েক আগের কথা। কিন্তু র‌্যাবের হাতে আটক এই পাপিয়া যে সেই পাপিয়া তা তিনি পরে অনুমান করেন। তার দাবি- যে কেউ একত্রে ছবি তুলতেই পারে, এখানে দোষণীয় কিছু নয়। তিনি পাপি কী না তা কী বোঝার উপায় আছে?

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন