২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

উজিরপুরে হঠাৎ চোর আতংক: একরাতে ৮ ঘরে চুরি, আটক-৫

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:২৮ অপরাহ্ণ, ০৮ জুলাই ২০১৯

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এক রাতে আট বসতঘরে দূর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে। ওই ৮টি ঘর থেকেই সংঘবদ্ধ ওই চোরচক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে স্বর্নালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।

এ ঘটনার পরপরই উজিরপুর থানা পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মনিরুল ইসলাম গুঠিয়া ইউনিয়নের পূর্ব নারায়নপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে স্থানীয় মোক্তার হাওলাদারের ছেলে প্রিন্স হাওলাদারকে (৩০) গ্রেফতার করে।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত প্রিন্সের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ওই এলাকা থেকে আরও চারজনকে আটক করে। তারা হলেন- কবির সরদারের ছেলে তুফান সরদার (২০), ফরিদ মিয়ার ছেলে সফিক মিয়া (১৯), জিতেন গাইনের ছেলে রতন গাইন (৩০), মোস্তফা সরদারের ছেলে আজাদ সরদার (২২)।

এদের মধ্যে প্রিন্স হাওলাদারকে সোমবার (৮ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে আটক রেখেছে পুলিশ।

এদিকে এক রাতের এই সিরিয়াল চুরির ঘটনায় সোমবার (৮ জুলাই) সকালে উজিরপুর মডেল থানায় পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের শাহিন খান নামে ভুক্তভোগী এক বাসিন্দা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ জুলাই দিবাগত রাতে পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের শাহিনের বসতঘরের জানালা ভেঙে অজ্ঞাতনামা একদল চোরচক্র ঘরে প্রবেশ করে স্বর্নালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

এছাড়া ওই রাতে একই এলাকার আমির হোসেন, খবির খান, মালেক হাওলাদার, শাহাদাত সরদার, আকবর খান, নাজমুল ও মামুন ফকিরের বসতঘরেও হানা দিয়ে চোর চক্রটি নগদ টাকাসহ মূল্যবাস জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী মামুন ফকির জানিয়েছেন, ‘ওই রাতে অজ্ঞাতনামা চোরেরা ঘরের চালার ফোকড় দিয়ে ঢুকে তার ঘুমন্ত কন্যা শিশুকে টানা-হেচড়া করে। এ সময় শিশুটি চিৎকার দিলে ঘরের সকলে জেগে উঠলে চোরেরা পালিয়ে যায়।’

একই গ্রামের খবির খান জানিয়েছে, ‘সেই রাতে তার ঘরের জানালা দিয়ে চোরেরা চেতনা নাশক দ্রব্য স্প্রে দিয়ে পেছনের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশের চেষ্টা। এ সময় তার ছেলে টের পেয়ে ডাক-চিৎকার করলে চোরেরা পালিয়ে যায়। তবে চোর চক্রটির চেতনানাশক স্প্রে’র কারনে তিনি ও তার মেয়ে অসুস্থ্য হয়ে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।’ এদিকে এক রাতে একাধিক বসতঘরে চাঞ্চল্যকর এ চুরির ঘটনায় গোটা গুঠিয়া ইউনিয়ন জুড়ে চোর আতংক বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারিদের প্রশয়দাতা প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি পুলিশি তৎপরতা জোড়দার হয়েছে। তাই মাদকের সাথে জড়িত ওই সকল প্রভাবশালীদের মদদে একটি চক্র আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের আতংক সৃষ্টি করছে। তাছাড়া চোর সন্দেহে আটককৃত তুফান ও আজাদের বিরুদ্ধে উজিরপুর মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা রয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এ সকল বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল মুঠোফোনে জানিয়েছেন, ‘চুরির ঘটনাগুলোতে একজন ভুক্তভোগী অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করলে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আটককৃত অন্যান্যদের থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন