১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

কী মধু বাউফল থানায়, নিয়মতান্ত্রিক বদলি হলেও নতুন কর্মস্থলে যেতে পুলিশ সদস্যদের অনাগ্রহ!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৩০ অপরাহ্ণ, ০৫ মে ২০২৪

কী মধু বাউফল থানায়, নিয়মতান্ত্রিক বদলি হলেও নতুন কর্মস্থলে যেতে পুলিশ সদস্যদের অনাগ্রহ!

মো.জসীম উদ্দিন, বাউফল: পটুয়াখালীর বাউফল থানায় কর্মরত একাধিক পুলিশ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে নিজেদের বলয় তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই থানায় প্রায় তিন বছরের অধিক সময় কর্মরত থাকায় তারা বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ জনিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় বাউফল থানা পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন। এমনকি এই সমস্ত পুলিশ সদস্য ইতিমধ্যে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত থেকে একটি পক্ষকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও সরাসরি পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়েছেন। এসআই নাসির উদ্দিন ২০২১ সালে জুলাই মাসে বাউফল থানায় তৃতীয় বারের মতো যোগদান করেন।

অভিযোগ আছে, বাউফলে তার শশুর বাড়ি থাকার সুবাধে তিনি আত্মীয়দের নিয়ে একটি বলয় তৈরি করেছেন। প্রায় তিন বছর একই স্টেশনে কর্মরত থাকায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় অপরাধীদের অবাধ বিচরণসহ চুরি-ডাকাতি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাছাড়া তিনি (নাসির) স্থানীয় এমপি’র বিশ্বস্ত সিপাহশালা হিসেবে পরিচিত এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারেফ হোসেন খানের জামাতা বলে এনিয়ে নানান কানা ঘুষা শোনা যায়। তার চাহিদা পূরণ করতে না পারায় কালিশুড়ি ইউনিয়নের কালিশুড়ি গ্রামের মৃত লালু মোল্লার ছেলে বাপ্পি মোল্লাকে রাজনৈতিক ভাবে দমনের জন্য ইয়াবা বিক্রির একটি মামলায় আসামি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বাপ্পি মোল্লার ভাই ফয়সাল মোল্লা। এছাড়া কেশবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক (একাংশ) সাদ্দাম হোসেন মিঠু বলেন, সম্প্রতি পূর্ব বিরোধের সূত্র ধরে কেশবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর বাজারে দু পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনায় মামলা রুজু করিয়ে দেয়ার নামে ১৬হাজার টাকা নেয় এসআই নাসির স্যার। কিন্তুু টাকা ফেরত না দিয়ে দুই দিন পরে বলে ওসি স্যারে মামলা নিতে রাজি না। আপনারা কোটে গিয়ে মামলা করতে বলে পরামর্শ দেয়।

এসআই প্রসেনজিৎ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাউফল থানায় যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি কোন বদলির মুখ দেখেননি। সম্প্রতি তার বদলীর আদেশ হলেও বিশেষ তদবিরে তা স্থগিত হয় বলে পুলিশের ভেতরকার একটি সূত্র নিশ্চিত করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ হয়ে আরেকটি পক্ষকে দমন পীড়নের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

এসআই ফিরোজ আল মামুন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যোগদান করলেও বদলির ক্ষেত্রে তারও একই অবস্থা। তিনিও একই এলাকায় দীর্ঘদিন কর্মরত থাকায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন।

উপজেলার বগা ইউনিয়নের শাপলাখালী গ্রামের খলিল মৃধা (৭০) বলেন, যুবদল নেতা শফি মৃধাকে মার ধরের ঘটনায় তিনিসহ তার দুই ছেলে মামুন মৃধা ও মাসুদ মৃধা এবং বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে হাসিব হাওলাদারসহ নির্দোষ কয়েকজনের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য মোটা দাগের টাকা নিলেও রাজনৈতিকভাবে দমন করার জন্য তাদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এ বিষয়ে বাউফল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

149 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন