১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

পিরোজপুরে তীব্র গরমে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪:১৩ অপরাহ্ণ, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালে তীব্র গরমে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এদিকে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। ১০০ শয্যার কাজ চলমান থাকায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে রোগীদের। এতে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেওয়া দিয়েছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়াতে তীব্র দাবদাহে স্বাভাবিক জনজীবনে ভোগান্তি নেমেছে। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪২ সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। ফলে জনজীবনে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগী। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে। জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।

আউটডোরে দেখা গেছে, অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, কেউ বা আবার ফেরত যাচ্ছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা না থাকার কারণে। হাসপাতালে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৯ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন। তা ছাড়া জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য আক্রান্তের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।

শিশু ওয়ার্ডে সন্তান সুমাইয়াকে নিয়ে বসেছিলেন মঠবাড়িয়া উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের তন্নী খাতুন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার চার মাস বয়সী বাচ্চার হঠাৎ করে জ্বর-সর্দি -কাশি। ২৫ তারিখ থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। প্রচণ্ড গরমে বাচ্চার কষ্ট হচ্ছে।

হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছি। ডাক্তাররা ঠিক মত দেখতে আসেন না। গরমে আমার বাচ্চা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। বাচ্চার পায়ে পরানো ক্যানেলা বারবার কেটে যাচ্ছে। নার্সদের কাছে গেলে তারা বিরক্ত বোধ করছেন- এমন অবস্থায় চিকিৎসা নেওয়াটা খুবই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।

অপর আরেক রোগীর দাদি ফাহিমা আক্তার (৫০) বলেন, আমার বাড়ি মঠবাড়িয়ার চান্দুখালীতে। আমার নাতি সিয়াম অসুস্থ। বয়স পাঁচ বছর। নিউমোনিয়া হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ভালো চিকিৎসা পাচ্ছি না। রাতের বেলা অনেক জ্বর উঠলেও নার্সদের ডাকলে তাদের কোনো সাড়া পাই না বরং আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা সবসময় সরকারি হাসপাতালে ভালো স্বাস্থ্যসেবা পেতে চাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ফেরদৌস ইসলাম বলেন, তীব্র দাবদাহের রোগীর চাপ রয়েছে, তাই তাদের সেবার মানোন্নয়নের জন্য মিটিং করেছি। আমাদের এখানে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি সহ অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন। একবারের জায়গায় তিনবার করে ডাক্তারদের রাউন্ড দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ভর্তিকৃত রোগীরা অধিকাংশই চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। রোগীদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে শিশুদের বিষয়ে বেশি যত্নবান হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়াও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়া থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

77 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন