২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

বরগুনায় তিন চেয়ারম্যানসহ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:২৩ অপরাহ্ণ, ০৮ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরগুনার তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান, দুই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের মামলা হয়েছে। কিশোরীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানোর অভিযোগে বুধবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেছেন ওই কিশোরীর বাবা।

ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান মামলাটি গ্রহণ করে পটুয়াখালীর পিবিআইয়ের প্রধানকে ৭ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবীর জোমাদ্দার, উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া, পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আ. রাজ্জাক হাওলাদার ও তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান। জানা যায়, আমতলী উপজেলার বাসিন্দা ওই ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন- তার নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার ফোনে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে বাদীর মেয়েকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে ও ঢাকা-বরিশালগামী লঞ্চে একাধিকবার ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে।

ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বাদীর মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বাদীর মেয়ে বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে ভিডিওগুলো চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, রেজবি-উল কবির ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুকে দেয়। ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারাও ধর্ষণ করে।

চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া ৮ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে বাদীর মেয়েকে চেয়ারম্যান আ. রাজ্জাক হাওলাদারের বাসায় আসতে বলেন। সেখানে গেলে চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক হাওলাদারের বাসার একটি রুমে বাদীর মেয়েকে আটকে রেখে পালাক্রমে ওই চারজন ধর্ষণ করেন। তখনো ধর্ষণের ভিডিও করে রাখে।

বাদী বলেন, আমার মেয়ে কৌশলে ছুটে আসে। আমি তালতলী থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। উপরন্তু আমার মেয়ের বিরুদ্ধে কামরুজ্জামান বাচ্চু মিথ্যা মামলা করে। ওই ট্রাইব্যুনালে জেলখানা থেকে আমার মেয়েকে তলব দিয়ে আনা হলে আমার মেয়ে বলেছে ওই আসামিরা তাকে ধর্ষণ করেছেন।

চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, সুপার এডিট করে আমাদের নামে ভিডিও বানিয়ে আমাদের শত্রুপক্ষ আমাদের মানসম্মান নষ্ট করেছে। আমরা কোনো অপরাধ করিনি। তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমি ও অন্য দুই চেয়ারম্যানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি আইনগতভাবে মোকাবেলা করব।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আনিচুর রহমান মিলন বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তালতলী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি।

107 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন