২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বালিশকান্ড নিয়ে রিট: তদন্ত রিপোর্ট দেখবে হাইকোর্ট

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:১৯ অপরাহ্ণ, ২০ মে ২০১৯

পাবনার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ, আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে কেনা ও তা ভবনে তোলার ঘটনায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতের অবকাশকালীন ছুটির পর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি মুলতবি রেখেছেন আদালত। সোমবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সরওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, ‘রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে দুইটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। তাই এ মূহুর্তে আদালতের হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।’

এর আগে গতকাল ১৯ মে পাবনার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ, আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে কেনা ও তা ভবনে তোলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করেন।

রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব,পাবনার গণপূর্ত অফিসার সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘সম্প্রতি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীর ভবনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে গত ১৬ মে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

রিটকারী আইনজীবী সুমন জানান, ওইসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে এ আবেদনটি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘ওই প্রকল্পের জন্য গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীর কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য যে ভবন সেখানকার ফার্নিচার থেকে শুরু করে অন্যান্য জিনিস অস্বাভাবিক দামে কেনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তা ভবনে তোলায়ও অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে। রিট আবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছি, এটি তদন্ত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছি।’

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিনসিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা ৮টি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা।

আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১টাকা। একেকটি খাটের মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট ওপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা।

প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওপরে ওঠাতে দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকার খরচ। বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে। তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা।

আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ। এরকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন