১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

‘বাসর’ শেষে পালালেন বর, খুঁজতে গিয়ে হাতুড়িপেটায় হাসপাতালে নববধূ

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:২০ অপরাহ্ণ, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ফেসবুকে পরিচয় দুই তরুণ-তরুণীর। এরপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। নয় মাস পর পরিণয়। বিয়ে হয় তরুণীর বাড়িতেই। কিন্তু বাসর রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে খোঁজ মিলছিল না নতুন বরের। একপর্যায়ে স্বামীর খোঁজে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ওঠেন নববধূ। তবে অভিযোগ উঠেছে, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হাতুড়িপেটা করেছে। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত স্বামী ফুলবাড়িয়া গ্রামের মো. দুলাল শেখের ছেলে নিশাত শেখ। আর ভুক্তভোগী তরুণী পাশের সোনাপুর ইউনিয়নের চান্দাখোলা গ্রামের সিদ্দিক সর্দারের মেয়ে মোর্শেদা খানম।

মোর্শেদা খানম বলেন, ‘নিশাতের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয়। এরপর টানা ৯ মাস প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সুবাদে নিশাত মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে আসত। ৯ এপ্রিল তার সম্মতিতে আমাদের বাড়িতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমার সঙ্গে বাসর রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে আমাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে। এরপর এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে স্বামীর স্বীকৃতি পেতে বুধবার সকালে আমি আমার স্বামীর বাড়িতে চলে আসি। আমি এখানে এসে বাড়ির সবাইকে বলি আমাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ থাকবে না। এ কথা শুনে বাড়ির সবাই পালিয়ে যায়।

কিন্তু সন্ধ্যার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে এসে আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।’ যদিও পুলিশ বলছে, নিশাত অপ্রাপ্তবয়স্ক। তবে মেয়ের পরিবারের দাবি, ছেলেটি প্রাপ্তবয়স্ক। এসব বিষয়ে নিশাত বা তার পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার বাড়িতে গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।

এই অভিযোগকারী নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি। তার শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সরকার বলেন, ‘মোর্শেদা নামের এক তরুণী হাসপাতালে ভর্তি আছে। তবে তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টি আমরা প্রকাশ করব না। যদি ওই তরুণীর পরিবার আইনি আশ্রয় নেয়, তাহলে লিখিতভাবে সব তথ্য দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই তরুণী ট্রিপল নাইন নম্বরে ফোন করে বিষয়টি আমাদের জানান। তবে তিনি লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।’ জানতে চাইলে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তবে অভিভাবক ছাড়া ওই তরুণীর পরিবার কীভাবে একটা অপ্রাপ্ত বয়সি ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে দিল, এটাও দেখার বিষয়। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি ওই তরুণীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দেয়, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

80 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন