২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

ভোলা জেলা নামকরণের নেপথ্যে…

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৪৯ অপরাহ্ণ, ০৩ নভেম্বর ২০১৮

56 হাজার বর্গমাইল আয়তনের দেশ বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, দৃষ্টিনন্দন জীবনাচার মন কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ ও মিনার, নদী, পাহাড়, অরণ্যসহ হাজারও সুন্দরের রেশ ছড়িয়ে আছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত।

দেশের আট বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ) ৬৪ জেলা। প্রতিটি জেলার নামকরণের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস। এসব ঘটনা ভ্রমণপিপাসু উৎসুক মনকে আকর্ষণ করে। তাই বাংলা ট্রিবিউন জার্নিতে ধারাবাহিকভাবে জানানো হচ্ছে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

ভোলা দেশের বৃহত্তম প্রাচীন গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ। ভোলা জেলার নামকরণের পেছনে স্থায়ীভাবে একটি লোককাহিনী প্রচলিত আছে। ভোলা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নামক খালটি এখনকার মতো অপ্রশস্ত ছিল না। একসময় এটি বেতুয়া নদী নামে পরিচিত ছিল। বুড়ো এক মাঝি খেয়া নৌকার সহায়তায় নদীতে মানুষ পারাপারের কাজ করতেন। তার নাম ছিল ভোলা গাজি পাটনি। বর্তমানে যোগীর ঘোলের কাছেই ছিল তার বসতি। এই ভোলা গাজির নামানুসারেই একসময় স্থানটির নামকরণ হয় ‘ভোলা’।

ভোলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা ছিল পর্তুগিজ দস্যুদের দখলে। পরে এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন বসতি স্থাপন করে। এছাড়া চর কুকরি মুকরি, ঢাল চর, দেউলি, মনপুরা ফিশারিজ লিমিটেড, মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশন, খেয়াঘাট সেতু, বক ফোয়ারা, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর, খেয়াঘাট, শাহবাজপুর মেঘনা ট্যুরিস্ট স্পট দেখার মতো।

স্থানীয় সংস্কৃতিতে রয়েছে মিশ্র প্রভাব। ভোলার মেঘনা তেতুলিয়ার তীর ঘেঁষে রয়েছে ছোট ছোট জেলে পল্লী। মাছ ধরা মৌসুমকে সামনে রেখে পল্লীর মহিলা ও শিশু কিশোররা পালাগান গেয়ে রঙ বেরঙের সুতা দিয়ে জাল বোনে। এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এসব জাল টানানো হয়। তখন বাড়িতে বাড়িতে চলে উৎসব।

ভোলায় জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও অনেক জমিদার বাড়ি সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। যেমন— মানিকা মিয়া বাড়ি, কুতুবা মিয়া বাড়ি, দেউলা তালুকদার বাড়ি, পরান তালুকদার বাড়ি, রজনী করের বাড়ি ইত্যাদি। তবে দৌলতখানের জমিদার কালা রায়ের বাড়ি ছিল প্রসিদ্ধ। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এটি।

এছাড়া জাগ্রত মাজার হচ্ছে হযরত উজির চান করনীর মাজার। ভোলার ঘুইঙ্গার হাটের মিষ্টি ও ঘোষের দধির সুনাম দীর্ঘ সময়ের। ভোলা গ্যাস সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত। মহিষের বাথানের জন্যও প্রসিদ্ধ ভোলা। ভোলার বিভিন্ন চরে অর্ধশতাধিক মহিষের বাথান আছে। এসব বাথান থেকে প্রতিদিন শত শত কেজি দুধ উৎপাদিত হয়। এই দুধ থেকেই তৈরি হয় মহিষের দধি, পনির ও ঘি।

39 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন