২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

১০ কেজি গাঁজার চালানসহ আটক ৪, কী বলছে পুলিশ…

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০২ অপরাহ্ণ, ১০ মে ২০২৪

রিপন রানা, বরিশাল:: দীর্ঘদিন পরে মাদকের একটি বড় চালান জব্দ করল বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের সিঅ্যান্ডবি রোডে তিন নারীসহ এক পুরুষকে একত্রে ঘুরতে দেখে সন্দেহ করা এবং পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে তারা নেশাদ্রব্য গাঁজার চালান নিয়ে এসেছে। পরক্ষণে চারজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো গাঁজা বের করে নিয়ে আসা হয়। মাদকবিরোধী এই সফল অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন কোতয়ালি পুলিশের পরিদর্শক (ওসি/তদন্ত) বিপ্লব কুমার মিস্ত্রী।

পুলিশ জানায়, বিশ্বস্ত একটি সূত্র নিশ্চিত করে হানিফ পরিবহনের একটি বাস পটুয়াখালীর উদ্দেশে যাচ্ছে, তাতে কয়েকজন আছেন যারা মাদক বহন করছেন। ঢাকা বাসটি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নথুল্লাবাদ পৌঁছানোর আগেই সেখানে পরিদর্শক বিপ্লব কুমার মিস্ত্রীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অবস্থায় নেয়।

পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার জানান, বাসটি নথুল্লাবাদে থামানোর পর যাত্রীরা যে যার মতো করে চলে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তাদের মধ্যে চারজন এক সাথে যাওয়া এবং গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয়। তাৎক্ষণিক তাদের ধাওয়া দিয়ে স্থানীয় জিয়া সড়কের সম্মুখ থেকে আটক করা হয়। এবং জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে স্বীকার করে সংঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ১০ কেজির একটি গাঁজার চালান নিয়ে এসেছে, যা বরিশাল নগরীর জনৈক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে তারা একে একে শরীর থেকে স্কচটেপ মোড়ানো গাঁজা বের করে দেয়।

পুলিশ জানায়, আটক মোশরফা বেগম (৩৫) কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন বড়ইতলা এলাকার, শিমু বেগম (৩৫) চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানাধীন মির্জাপুর এলাকার, সামিয়া আক্তার (১৬) ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানাধীন ইস্টার্ন বাজার এলাকার এবং আবুল হোসেন (২৩) এবং কুমিল্লা জেলার ব্রাক্ষ্মনপাড়া থানাধীন বড় ধুপিয়া এলাকার বাসিন্দা হলেও সংঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মাদক বহন করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গাঁজার চালানটি ঢাকা থেকে নিয়ে আসাসহ স্বীকার করেছে বরিশালের জনৈক ব্যক্তির কাছে পৌছানোর কথা। কিন্তু তার আগেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিদর্শক বিপ্লব কুমার মিস্ত্রীর নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমসহ সর্ঙ্গীয় ফোর্স তাদের কাজীপাড়ার অদূরে পাকড়াও করতে সক্ষম হয়।

কি বলছে পুলিশ

পরিদর্শক বিপ্লব কুমার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চারজনই দাবি করেছেন, তাঁরা এই প্রথমবার মাদকের চালান নিয়ে বরিশালে এসেছেন, যা জনৈক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেই ব্যক্তির পুরো নাম-পরিচয় দেননি, শুধু মাত্র একটি বন্ধ মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। সেই নম্বরটি নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। সেক্ষত্রে ধারণা করা হচ্ছে, মোবাইল নম্বর বরিশাল শহরের কারও এবং তিনি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত মন্তব্য করেন ওসি।

দীর্ঘদিন বড় ধরনের এই মাদক উদ্ধারের ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। সেই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

এর আগে গত বছরের শেষ দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ চার থানাধীন এলাকাসমূহে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান করে, তখনও মাদকের বড় বড় বেশকিছু চালান উদ্ধারসহ বিক্রেতারা গ্রেপ্তার করা হয়। আবার গ্রেপ্তার এড়াতে বড় বড় মাদক বিক্রেতা তখন শহর ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেছিলেন। সেই অভিযানের পরে এটাই সম্ভাবত বড় মাদকের চালান, যা ধরতে সক্ষম হলেন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক বিপ্লব মিস্ত্রী নেতৃত্বাধীন টিম।’

 

141 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন