dreamliferupatolibarisal

বরিশাল

ঐতিহ্য ধরে রাখতে গেলে গুনতে হবে লোকসান!

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

১১ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:৫০

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ঐতিহ্য ধরে রাখতে গেলে গুনতে হবে লোকসান!

দেশবাসীর স্বপ্নের ‘পদ্মা সেতু’ চালুর পরে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে যাত্রী ভাটা দেখা দেয় এবং ক্রমাগত লোকসানের মুখে বেশ কয়েকজন মালিক তাদের লঞ্চ বন্ধ রাখেন। বর্তমানে প্রতিদিন দুই প্রান্ত থেকে রোটেশন করে দুটি বিলাসবহুল নৌযান সেবায় নিয়োজিত থাকলেও সংখ্যাগত দিক থেকে যাত্রী কম হওয়ায় লঞ্চের স্টাফ বিল-জ্বালানি খরচ পোষানো যাচ্ছে না। একাধিক মালিক যাত্রীসংকটে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তাদের নৌযান ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছেন। বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, বরিশাল-ঢাকা নৌপথে যাত্রী নেই এবং যেখানে বিলাসবহুল পরিবহনের সত্ত্বাধিকারীরা প্রতিদিন লোকসান গুণছেন জেনেও এই রুটে ১৫০ বছরের পুরানো স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ চলতি মাসে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ আমলের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে গিয়ে সরকারকে যাত্রীসাধারণকে ভোগানোর পাশাপাশি অতীতের ন্যায় লোকসানে একটি নতুন ক্ষেত্রে তৈরি করতে যাচ্ছে কী না তা নিয়ে লঞ্চ মালিকদের মধ্যে কানাঘুষা চলছে।

লঞ্চ মালিকেরা বলছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে প্রতিদিন গড়ে ৬/৭ টি লঞ্চ যাত্রীসেবায় নিয়োজিত ছিল, এমনকি দুটি ঈদের আগে পরে বেশকিছু দিন ১০/১২ টি করেও চলেছে। এই সময়ে দুপুরের পর থেকে নৌবন্দর যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠত। ২০২২ সালের ২৬ জুন সেতুটি যান চলাচলে উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে সপ্তাহখানের মধ্যে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে যাত্রীসংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। লোকসান কমাতে গত বছর রোটেশন করে ২/৩ টি লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহিত হলেও কোনো অবস্থায় মালিকদের আর্থিক উন্নতি হচ্ছে না। ফলে একে একে বেশ কয়েকটি লঞ্চ আর্থিক দৈন্যতার মুখে যাত্রীসেবা বন্ধ করে দেয়।

বর্তমানে সম্ভব্য লোকশানের বিষয়টি সম্পর্কে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ওয়াকিবহাল থাকলেও শক্তিহীন স্টিমার মাহসুদকে বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে যাত্রীসেবায় যুক্ত করা বড় ধরনের বোকামি মনে করা হচ্ছে। পরিবহনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঐতিহ্য ধরে রাখতে গিয়ে সরকারকে লোকসানতো গুণতে হবে! পাশাপাশি যাত্রী সাধারণকেও ভুগতে হবে। কারণ, ব্রিটিশ আমলে ১৮৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা স্টিমারটি বর্তমানে একদম বলহীন। তাছাড়া এই নৌযানটি অতীতে অসংখ্যবার মাঝনদীতে বিকল হয়ে যাত্রীদের বিড়ম্বনায় ফেলার একাধিক উদাহরণ রয়েছে, যা নিয়ে অনেকে তিক্ত-বিরক্ত।

লক্কর-ঝক্কর নৌযান মাহসুদ বর্তমানে রঙচঙে এসে অতীত ঐতিহ্য বহন করলেও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিলাসবহুল লঞ্চগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে কী না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিশেষ করে যাত্রাপথে স্টিমারটির ধীরগতিতে চলা এবং লঞ্চগুলোর তুলনায় বিলম্বে গন্তব্যে পৌছানো নিয়ে আগে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভও দেখা যেতো। তবে নতুন আঙ্গিকে আসার আগেই ব্যয় ও যাত্রী বিবেচনায় স্টিমারটিকে পর্যটক সার্ভিস হিসেবে সপ্তাহে একদিন শুক্রবার ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকার আশপাশে প্রমোদভ্রমণের জন্য ভাড়া নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দেড়শ বছরের রোগাক্রান্ত মাহসুদ আকস্মিক বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে সেবা দিতে গিয়ে ঐতিহ্যবাহী স্টিমারটি বিভিন্ন সময়ে মাঝনদীতে বহুবার বিকল হয়ে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগে ফেলে দেয়। গত মে মাসে বরিশাল সফরকালে সেই ইতিহাস আবার ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। এর পর থেকে বরিশালবাসী অধীর আগ্রহে ঐতিহ্যবাহী এই জলযান চালুর অপেক্ষা করছেন।

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত কয়লাচালিত প্যাডেল স্টিমার প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ও পরে ঢাকা থেকে খুলনার নৌপথে চলাচল করত। পথে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, মোরেলগঞ্জ, হুলারহাট, সন্ন্যাসী, কাউখালী ঘাটে যাত্রাবিরতি দিত। ঔপনিবেশিক সময়ে খুলনার সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগ শুরু হলে নৌপথে যাত্রী পরিবহন গুরুত্ব পায়। তখন বহরে ছিল ফ্লোটিলা কোম্পানির ১৪টি স্টিমার। পরে পিএস গাজী, পিএস অস্ট্রিচ, পিএস মাহসুদ, পিএস লেপচা, পিএস টার্ন, পিএস সেলার মতো ঐতিহ্যবাহী স্টিমারের সংযোজিত হয়।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, যাত্রী ও নাব্যতাসংকটে ২০১৯ সাল থেকে স্টিমার চলাচল সীমিত হয়ে যায়। খুলনার বদলে যাত্রা থেমে যায় মোরেলগঞ্জে। সর্বশেষ এমভি মধুমতি ও এমভি বাঙালী সপ্তাহে চার দিন ঢাকা-মোরেলগঞ্জ নৌপথে চলাচল করলেও শেষ যাত্রাটি ছিল ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। স্টিমারগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তৎসময়ে লোকসান উল্লেখ করা হয়েছিল। এখন নতুন করে সপ্তাহে একদিন স্টিমার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে বরিশালবাসী সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি জলযানটি প্রতিদিন যাত্রীসেবায় নিয়োজিত রাখার দাবি তুলেছে, যা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, শত বছরের পুরোনো স্টিমারগুলো এখন অনেকটা শক্তিহীন, মেরামত করে পরিচালনার উদ্যোগ নিলেও আগের শক্তিতে ফিরতে পারবে না। তাছাড়া এসব স্টিমারে যাত্রা সময়সাপেক্ষ। যাত্রীদের অবারিত সময় না থাকলে স্টিমারে উঠতে চাইবেন না। ফলশ্রুতিতে ব্যয় পোষানোও অসম্ভব হয়ে পড়বে, সরকারকে লোকসান গুণতে হবে। সুতরাং ক্ষেত্রে আবেগ নয়, বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

অনুরূপ আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (বাণিজ্য) এসএম আশিকুজ্জামান। এই কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিনে দুটি স্টিমারের পুনর্বাসনকাজ শেষ হয়েছে, ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে পানিতে চালানো হয়েছে। সাজসজ্জার কিছু কাজ বাকি, এখন সেগুলো চলছে। এরপর সার্ভেসহ অন্যান্য আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে চলতি মাসের শেষের দিকে একটি স্টিমার ঢাকা-বরিশাল নৌপথে যুক্ত হবে। এবং আপাতত একটি স্টিমার সপ্তাহে এক দিন শুক্রবার যাত্রী পরিবহন করবে। এছাড়া ঢাকার আশপাশে কেউ ভাড়া নিয়ে ভ্রমণ করতে চাইলে সেই সুযোগ রাখা হবে।

বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে যেখানে বিলাসবহুল লঞ্চগুলো যাত্রীসংকটে ধুকছে সেখানে স্টিমারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে গিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জনগণের অর্থ নদীতে ঢালতে যাচ্ছে কী না তা নিয়েও পরিবহনসংশ্লিষ্টদের মধ্যে নানান আলোচনায় শোনা যায়। এনিয়ে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য না করলেও লঞ্চ মালিকেরা বলছেন, বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে সপ্তাহে দুদিন শুক্র-শনিবার কিছু যাত্রী হয়। যাত্রীরা সাধারণত সেবার মান বিবেচনা করেন এবং নিরাপদ ভ্রমণ করতে বিলাসবহুল লঞ্চগুলোকে বেচে নেন। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে দুর্বলগতির স্টিমার মাহসুদ নতুন আঙ্গিকে এসে বিলাসবহুল এমভি এম খান, সুরভী, সুন্দরবনের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে কী না সেটা দেখার বিষয়।’

আরও পড়ুন:

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:৪২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের দেড় মাস পর ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ২১ শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ২৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অ্যাজেন্ডা রেজল্যুশন আকারে অনুমোদন শেষে বৃহস্পতিবার তা সার্কুলেশন হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের শাহারিয়ার শাওন এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের তরিকুল ইসলাম নয়ন।

এর মধ্যে শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেনকে ছয় মাস বা এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, তরিকুল ইসলাম নয়নকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং শাহারিয়ার শাওনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কেটিং বিভাগের ১০ জন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ শিক্ষার্থীকে তাঁদের অভিভাবকসহ আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টরের কাছে হাজির হয়ে মুচলেকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রক্টর ড. রাহাত বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে এ সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই সংঘর্ষের পর বিষয়টি সিন্ডিকেট পর্যন্ত গড়ায়।

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:০৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

এবার বরিশালের বানারীপাড়ায় শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে উপজেলার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া সেই অপসারিত বিএনপি নেতা সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মামুন ফরাজী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক মো. খোকন হোসেন মামলার অভিযোগ তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে ১৪ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর নির্দেশে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ থেকে বিএনপি নেতা সবুর খানকে অপসারন করা হয়। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মোঃ রফিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত পত্রে সবুর খানকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বায়েজিদুর রহমানকে সভাপতি মনোনীত করে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। 

এদিকে  শুধু পদ থেকে অপসারণই নয় জালিয়াতি-প্রতারণা ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে সদ্য অসারিত সভাপতি আব্দুস সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিচারের দাবি করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির  অনুমোদন দেয়। এতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খানকে সভাপতি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হবে। বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে  সবুর খান নিজেকে বিএ পাস উল্লেখ করেন। কিন্তু এর  অনুকূলে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো কপি জমা দেননি। শিক্ষাবোর্ডে  অভিযোগকারী স্থানীয় মামুন ফরাজীর দাবী ছিল বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান  তার বায়োডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি এসএসসি পাস। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের যোগসাজশে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রায় দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ৫ হাজার টাকা ফি জমা দিয়ে গত ২৮ আগস্ট তিনি আবেদন করেন। মামুন ফরাজীর লিখিত ওই আবেদন করার প্রায় এক মাস  পরে বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে সহকারি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব বিদ্যালয় নিবন্ধন) মোঃ মাছুম মিয়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন। কিন্তু ২২ দিনেও আবেদনকারীকে এর ফলাফল প্রদান ও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছিল না ফলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ১৪ অক্টোবর লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। ফলে ওইদিনই স্কুল সভাপতি পদ থেকে সবুর খানকে অপসারণ করা হয়।

অপরদিকে পরস্পরের যোগসাজশে ওই বিদ্যালয়ের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৫ -৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ, প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পরেও প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন ও তিন হাজার টাকা করে মোবাইল বিল নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সম্প্রতি সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলম ও সদ্য অপসারিত সভাপতি সবুর খানের বিরুদ্ধে  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশালের আঞ্চলিক  পরিচালকের কাছে মামুন ফরাজী লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়টিও তদন্তনাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হল।

ফুটপাথে হালিম বিক্রির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য, অবশেষে নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৪৬

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটপাথে হালিম বিক্রির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য,  অবশেষে নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডসংলগ্ন রূপালী ব্যাংকের সামনে হালিম বিক্রেতা জাহিদ ওরফে মামা জাহিদ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। নগরীর সদর রোডে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ এক নারী ও  পুরুষকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের অভিযানিক দল।

সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত ১০টার দিকে কোতয়ালি মডেল থানাধীন সদর রোডে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র সামনে মো. জাহিদ সরদারের হালিম ও চটপটির দোকানের পাশে বসা এক নারীকে তল্লাশি করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৩১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

আটক নারী পারভীন বেগম (৪১) বরিশাল নগরীর গোড়াচাঁদ দাস রোডের বাসিন্দা। একই ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা মো. জাহিদ সরদার (৪৪), কোতয়ালি মডেল থানার দপ্তরখানা এলাকার বাসিন্দাকেও ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়।

সদর রোড এলাকার ব্যবসায়ী কবির জানান, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জাহিদ ওরফে মামা জাহিদ দীর্ঘদিন ধরে সদর রোডে হালিম বিক্রির আড়ালে মাদক বিক্রি করে আসছে। শুধু তাই সদর রোড এলাকাকে গড়ে তুলে মাদক কেনা-বেচার হাট। তার হালিম বিক্রি শুধু লোভ দেখানো। তার মূল ব্যবসাই হলো মাদক। 

হাওলাদার নামে এক দোকান কর্মচারী সাংবাদিকদের বলেন, জাহিদ গরীব ঘরে সন্তান। তিনি আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেতে। তিনি হঠাৎ আলাউদ্দীনের চেরাগ পেয়েছে।  যেমন মাদক বিক্রির টাকায় নগরীর কাশিপুর এলাকায় মাদক বিক্রির টাকায় করেছেন বহুতল ভবন।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, মাদকবিরোধী অভিযানের আটক জাহিদ ও পারভীনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। 

বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন, মাদকসহ নারী এবং পুরুষকে আটকের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে আমরা তাদেরকে আদালতে প্ররণ করি। পরে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠান।’

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.