২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

‘টেস্টের সেরা বোলারকে দেখতে পাচ্ছি’

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:১৪ অপরাহ্ণ, ২০ অক্টোবর ২০১৮

অস্ট্রেলিয়াকে একাই গুঁড়িয়ে দিলেন মোহাম্মদ আব্বাস। পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় উপহার দিলেন তিনি। দুই ইনিংস মিলিয়ে নিলেন ১০ উইকেট। ২০০৬ সালের পর পাকিস্তানের হয়ে এই প্রথম কোনো বোলার এক টেস্টে ১০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালো। শুধু তাই নয়, আরব আমিরাতের মাটিতে প্রথম বোলার হিসেবে নিলেন ১০ উইকেট। শুধু তাই নয়, আরব আমিরাতের মাটিতে প্রথম বোলার হিসেবে এক সিরিজে ১৫ কিংবা তার অধিক উইকেট নেয়ারও কৃতিত্ব দেখালেন তিনি।

এশিয়ান দেশগুলোতে এসে বরাবরই অস্ট্রেলিয়া স্পিনের সামনে ধুঁকতে থাকে। এবারও তাদের তেমন কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে- হয়তো এমন ভাবনা ছিল অসি ক্রিকেটার এবং টিম ম্যানেজমেন্টের। যে কারণে তাদের স্পিন মোকাবেলার প্রস্তুতিই ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু আরব আমিরাতের মাটিতে কি না অস্ট্রেলিয়ানদের সবচেয়ে বেশি ধুঁকতে হলো পেসের সামনে। বিশেষ করে মোহাম্মদ আব্বাসকে মোকাবেলা করাটাই ছিল তাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন।

কি এমন সমস্যা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ানদের? মূলতঃ আব্বাসের বলের গতি-প্রকৃতিই তারা বুঝতে পারেনি। ধরতে পারেনি। যে কারণে এতটা সংগ্রাম করতে হয়েছে তার বোলিংয়ের সামনে।

অস্ট্রেলিয়ান বোলিং কোচ ডেভিড স্যাকার বলেন, ‘বল হাতে সবচেয়ে নিখুঁত হচ্ছেন আব্বাস। এবং অবশ্যই আমাদের প্রস্তুতিটা ছিল মূলতঃ স্পিন নিয়েই সবচেয়ে বেশি। যে কারণে বিস্ময়ের সঙ্গেই আমাদেরকে এই পেসারকে গ্রহণ করতে হয়েছে।’

ইএসপিএন ক্রিকইনফো টুইট করেছেন, ‘বিস্ময়কর! অস্ট্রেলিয়া পেসের সামনেই বিধ্বস্ত হয়ে গেলো।’ তবে সবচেয়ে সাড়া জাগানো কথাটি বলেছেন, আইসিসি র্যাংকিংয়ের এক সময়ের শীর্ষে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইন। তিনি তো আগামী দিনের সেরা বোলার হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়ে দিলেন মোহাম্মদ আব্বাসকে।

টুইটারে আব্বাসের প্রশংসা করে ডেল স্টেইন লিখেছেন, ‘আমি তো দেখতে পাচ্ছি, টেস্ট ক্রিকেটে নতুন নাম্বার বোলারের আগমণ ধ্বনি। তিনি হচ্ছেন মোহাম্মদ আব্বাস।’

মোহাম্মদ আব্বাসের বোলিং দেখে যারপরনাই বিস্মিত, মুগ্ধ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘গত এক বছরে পেসারদের মধ্যে মোহাম্মদ আব্বাসের বোলিং দেখে আমি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে বাধ্য হয়েছি যে, তাকে যদি আমি মোকাবেলা করতাম, তাহলে প্রতি ৬ বলে একবার করে আউট হয়ে যেতাম। সে এমন এক ধরনের বোলার, যার বোলিংয়ের সামনে আমাকে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলতে হতো। মনে হলো সবাইকে এটা জানানো যাক।’

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার জেসন গিলেস্পি বিস্মিত তার বোলিং দেখে। তিনি টুইট করে লিখেন, ‘চ্যালেঞ্জ দ্য স্ট্যাম্প’। গিলেস্পির টুইটের জবাবে রিটুইট করেছে দ্য ক্রিকেট প্রফেসর। তারা সেখানে পরিসংখ্যান দিয়েছে এভাবে, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে দেখা গেছে মোহাম্মদ আব্বাস ছিলেন সবচেয়ে কম গতির ফাস্ট বোলার। কিন্তু তার বোলিংয়ের লাইন এবং লেন্থ এতটাই নিখুঁত যে প্রায় প্রতিটি বলেই ছিল সুইং এবং স্ট্যাম্প টু স্ট্যাম্প। তার বলেই সবচেয়ে বেশি ছিল স্ট্যাম্প বরাবর। মোট ডেলিভারির প্রায় ৩৫ ভাগ। ওই ম্যাচে অন্য পেসারদের চেয়ে সবচেয়ে বেশি।’

অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দলের সদস্য রেনে ফারেল টুইট করেন, ‘যখন আমি ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে উঠেছি, তখন থেকেই মোহাম্মদ আব্বাসের বোলিংয়ের মত করে বল করার স্বপ্ন দেখতাম।’

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ লিখেছেন, ‘পাকিস্তান সব সময়ই পেসারদের স্বর্গরাজ্য। অসাধারণ সব পেসার জন্ম দিয়ে থাকে তারা। মোহাম্মদ আব্বাসকে দেখে মনে হচ্ছে অবিশ্বাস্য এক প্রতিভাবান ফাস্ট বোলার।’

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক পল কলিংউড তো তাকে স্বীকৃতিই দিয়েছেন, ‘আনপ্লেয়েবল’ বলে। সত্যিই কি আনপ্লেয়েবল? বোঝাই যাচ্ছে, আগামী দিনে পেস বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিতে আসছেন পাকিস্তানি এই পেসার।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন