২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

দুঃখের শেষ নেই রসূলপুরবাসীর

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ, ০৫ জুলাই ২০১৮

বরিশাল নগরী থেকে একটু বাইরে রসূলপুর কলোনী। কীর্তণখোলা নদী মাঝে একটি চরের উপর অবস্থিত এই কলোনীটি। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পূর্বে প্রার্থীরা বহু আশা বা প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবে রুপ নেয় না এই কলোনী বাসীর জন্য।

বিশাল এলাকাজুড়ে গড়া এই কলোনী বাসীর জন্য নেই যেমন কোনো ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা, তেমনি ভালো নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও। নগরীর এই বর্ধিতাংশের কলোনীটি অবস্থিত ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যে।

রসূলপুরবাসীর অভিযোগ, ভ্যাট ট্যাক্স দিয়েও মিলছে না যথাযথ সেবা। আমরা যে সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা সেটা হয়তো কেউই বিশ্বাস করবে না। বলা যায় নগরীর মধ্যে আমাদের রসূলপুর একটি গ্রাম। আর এই গ্রামের মানুষের কষ্ট শহুরে কাউন্সিলরের কানে পৌছায় না। যে কারণে আমাদের কষ্টও লাঘব হচ্ছে না।

সূত্র মতে, এই ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যেই রয়েছে বরিশাল নগরীর ব্যবসার মূল ক্ষেত্র চকবাজার, গীর্জা মহল্লা, পোর্ট রোড ও কাটপট্রি এলাকা। এছাড়া বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টিও এই ওয়ার্ডে। তবে বেশী অভিযোগ রয়েছে রসূলপুর ও পোর্ট এলাকা নিয়ে।

রসূলপুর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, এই এলাকাটি পুরোই সমস্যা নিয়েই তৈরী। স্বল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও মূল নগরীর সাথে যোগযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। এই কলোনীতে একটু বৃষ্টিতে মানুষের চলাচলেরও উপায় থাকে না। বেশ দুর্ভোগের মধ্যে পোহাতে হয় সকলকে। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর হারুন অর রশীদকে একাধিবার জানানো হলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি।

রসূলপুর এলাকার বাসিন্দা খলিফা খাতুন জানান, আমাদের এই চরে সব থেকে মূল সমস্যা হচ্ছে নগরীর সাথে যাতায়াত ব্যবস্থা। নৌকা আমাদের মাধ্যম নগরীতে যাতায়াত করার জন্য। নৌকা ছাড়া আমরা নগরীতে কোনো কাজের জন্যই আসতে পারিনা। এই সমস্যার কারণেই জর্জরিত আমরা। এখান থেকে যদি কোনো বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত তাহলে অনেক সুবিধা হত আমাদের।

আরিফ নামে এক ভোটার জানান, রসূলপুর কলোনীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নগরী থেকেও অনেক শিশু শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করতে আসে। কিন্তু তাদের প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে হয় প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে।

শাহানাজ বেগম নামে এক গৃহবধূ বলেন, অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় আটকে থাকতে হয় এখানকার লোকজনকে। ঘরের মধ্যে দূষিত পানিতে ভরে যায়। এতে এই কলোনীর লোকজনের পিছন থেকে রোগ বালাইও ছাড়ছে না। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও খুব খারাপ। কোনো কিছুতেই সুরাহা মিলছে না।

রসূলপুর কলোনীর মজিদ মিয়া জানান, এসব সমস্যা বাদেও রয়েছে মাদক সংক্রান্ত সমস্যাও। এই কলোনীতে চিহ্নিত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীরও বসবাস রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও রয়েছে একাধিক। এই সমস্যার কারণে আমরা আতংকে থাকি।

ছগির উদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তি জানান, ভোটের আগে সকল প্রার্থী এসে আমাদের অনেক খোঁজ খবর নেয়। কিন্তু ভোট শেষে আর কোনো খবর নেয় না। রসূলপুর কলোনীর ভোটাররা জানান, আমাদের এখানে বিদ্যুৎ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। যেটা বর্তমান কাউন্সিলরও জানেন। নগরীর মধ্যে হয়েও বিদ্যুতের এই সমস্যা ভোগান্তি সৃষ্টি করছে আমাদের।

পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বরিশাল পোর্ট এলাকার ব্যবসায়ী আবদুস কালাম জানান, এই এলাকায় যেমন রয়েছে যানজট। তেমন রয়েছে পরিচ্ছন্নতার অভাব। কাউন্সিলর হারুণ অর রশীদের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকার অবস্থা অনেকটাই খারাপ।

এই বিষয়ে জানতে ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুণ অর রশীদের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে না পাওয়া যাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।##

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন