২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশালকে সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত করতে ৬ মেয়র প্রার্থীর অঙ্গীকার

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৩৯ অপরাহ্ণ, ১৩ জুলাই ২০১৮

নির্বাচিত হলে বরিশাল নগরীর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ৬ মেয়র প্রার্থী। শুক্রবার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার মিলনায়তনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে ৬ মেয়র প্রার্থী এ অঙ্গীকার করেন। তবে এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ অনুপস্থিত ছিলেন।

দর্শকদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, সংক্ষিপ্ত কথামালা আর প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র পদ প্রার্থীদের বক্তব্যে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত এ অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে তিন মেয়র প্রার্থী হাত উঁচিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক রাখার অঙ্গীকার করেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাধারণ মানুষও সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীকে ভোট দেয়ার শপথ নেন।

সুজনের বরিশাল মহানগর কমিটির সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সুজনের জেলা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আক্কাস হোসেন, কমিটির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার দত্ত, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দিলীপ সরকার।

পুরো অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন- আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোটের মাধ্যতে বিজয়ী করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার জনতার প্রশ্নের জবাবে বলেন- নির্বাচিত হলে নগরীকে সন্ত্রাসমুক্ত করা, সিটি করর্পোরেশন থেকে পার্সেন্টেজ প্রথা বিদায়, অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা এবং দল থেকে নির্বাচিত হলেও নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণের জন্য শতভাগ বরাদ্দ ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দেন। বক্তব্যে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির (এরশাদ) মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস তার বক্তব্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের ওয়াদা চান জনগনের কাছে। তিনি নির্বাচিত হলে নগর ভবনকে ‘সেবক ভবন’ এবং নগর পিতার বদলে ‘নগরের সেবক’ নাম ধারন করবেন। আর খালগুলো দখলমুক্ত ও নর্দমা পরিষ্কারের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন তার প্রথম কাজ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কমিউনিস্ট পার্টির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ নির্বাচিত হলে কৃষি ভিত্তিক শিল্প নগরীর গড়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন, সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত এবং নারী ও শিশু বান্ধব বরিশাল নগরী গড়া এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।

বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনিষা চক্রবর্তী নির্বাচিত হলে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন, জনগণের মতামত নিয়ে শিল্পভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ইলিশসহ কৃষি উৎপাদনের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে এগ্রোবেজ শিল্প প্রতিষ্ঠান , ফুড প্রসেসিং জোন, কর্মজীবী নারীদের জন্য ডে কায়ার সেন্টার, আবাসিক ব্যবস্থা,নারীদের জন্য পৃথক শৌচাগার, চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য এলাকায় এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব নির্বাচিত হলে সিটি কর্পোরেশন পার্সেন্টেজ মুক্ত করাসহ কর্পোরেশনের নিজস্ব আয় দিয়ে যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া নাগরিকদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদানের নিশ্চয়তা দেন।

জাতীয় পার্টির (এরশাদ) বিদ্রোহী প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু নির্বাচিত হলে পার্সেন্টেজমুক্ত সিটি কর্পোরেশন গড়া, দুর্নীতি ছুড়ে ফেলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত এবং ক্যাথলিক চার্জের ধর্ম যাজকদের সিটি ভাতা দেয়া, জলাবদ্ধতা নিরসন,মাদকমুক্ত নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ এই অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে না থাকা প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে তার প্রচারণায় ছিলেন এমন এক ব্যক্তি বলেন- সকাল থেকেই তিনি (সাদিক আব্দুল্লাহ) প্রচারণায় রয়েছেন। বিকেলেও তিনি গণসংযোগে ছিলেন। ওই কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন