২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

যে গাছের রক্তপাত হয়…ধাতব রক্ত!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫৩ অপরাহ্ণ, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নিকেল এবং জিঙ্কের মতো ভারী ধাতুর উৎস থেকে দূরেই জন্মাতে চায় উদ্ভিদ। কিন্তু এদের বিশেষায়িত একটি দল আছে। এদের নাম হাইপারঅ্যাকুমুলেটর্স। এরা স্বাভাবিকভাবেই এসব বিষাক্ত ধাতব পদার্থকে তাদের কাণ্ডে, পাতায় এমনকি বীজে পর্যন্ত ধারণ করে নিতে সক্ষম হয়েছে।

দক্ষিণ প্রশান্তের নিউ ক্যালেডোনিয়া দ্বীপে এক ধরনের উদ্ভিদ জন্মে। এসব পাইসনান্দ্রা অ্যাকুমিনাটাদের নিয়েই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের ধারণা, পতঙ্গের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই নিকেল গ্রহণ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে তারা। এদের দেহ থেকে যে কষ বের হয় তাদের রং অস্বাভাবিক নীলাভ সবুজ। কারণ, এদের দেহে ২৫ শতাংশ নিকেল রয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের প্রফেসর ড. অ্যান্টনি ভ্যান ডার এন্ট জানান, পাইসনান্দ্রা অ্যাকুমিনাটা ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। কিন্তু এরা খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে। এদের ফুল এবং বীজ হতেও কয়েক যুগ অপেক্ষা করতে হয়। বনাঞ্চল উজাড় করে ফেলা আর খনি সৃষ্টির কারণে এ উদ্ভিদগুলো বিলুপ্তির পথে রয়েছে।

হামবুর্গে পাইসনান্দ্রা এবং অন্যান্য হাইপারঅ্যাকুমুলেটরদের ‘ডেজি সিঙ্ক্রোট্রন’ পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে এক্স-রে পদ্ধতি। আরেক বিশ্লেষক ড. ক্যাথিরিন স্পায়ার্স বলেন, আপনি গতানুগতিক মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করেই এদের কাঠামো পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু তাতে বলা যায় না এরা কি দিয়ে তৈরি।

তাই বিশেষ পদ্ধতিতে এদের পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। এতে করে এসব গাছে থাকা ভিন্ন ঘরাণার উপাদানগুলো স্পষ্ট করা সম্ভব হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, কেবল এই উদ্ভিদগুলোই কেন বিরূপ মাটির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে? এই উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রজাতি সময়ের সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে। এর জন্যে হয়তো লাখ লাখ বছর সময় লেগেছে। এ কারণেই উদ্ভিদগুলোকে ধাতব পদার্থ সমৃদ্ধ মাটিতে বেশি দেখা যায়। উ

বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী আশা করছেন, এসব উদ্ভিদের মাধ্যমে হয়তো কোনো অঞ্চলের মাটি ও পরিবেশে মনুষ্যসৃষ্ট বিষাক্ত উপাদানগুলোকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব। কারণ, এরা বিষাক্ত উপাদানগুলোই শুষে নেয়।

এদের দেহ থেকে এমন অদ্ভুত রংয়ের কষ এমনভাবে বের হয় মনে হচ্ছে রক্তপাত হচ্ছে। তাই এসব উদ্ভিদের রক্তপাত হয় বলেই মনে করে বিজ্ঞানীরা।

8 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন