বরগুনার পাথরঘাটায় এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণের টাকা দিয়েও এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ৪০ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা সবাই বিভিন্ন বিদ্যালয়ে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় জালিয়াঘাটা এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মোটা অংকের টাকা দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
সরেজমিনে জানা গেছে- উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের জালিয়াঘাটা এসইডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালে তাদের নিজস্ব ৬৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য নিবন্ধিত হয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয়ে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিস দুলি আক্তার। দীর্ঘদিন টালবাহানা করেন ওই শিক্ষক। টাকাও ফেরত দেননি এবং পরীক্ষাও দিতে পারেনি ৪০ শিক্ষার্থী।
পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘কালমেঘা মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের টেস্ট পরীক্ষায় ইংরেজি ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে অকৃতকার্য হই। মিস দুলি আক্তার প্রতিশ্রতি দিলে তাকে ১২ হাজার টাকা দিই।’
একইভাবে লেমুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টেস্টে ইংরেজির দুই বিষয় ,গণিত ও ফিজিক্সে অকৃতকার্য হয়ে ১৩ হাজার টাকা দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল বেতমোর গ্রামের শিক্ষার্থী মো. রাব্বি। সে জানায় ৪০ জন সবাই দুই থেকে চার বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থী। বেশি টাকা দিলেও পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা।
জালিয়াঘাটা এসইডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘মহৎ উদ্দেশ ওই শিক্ষার্থীদের এ বছর পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করি। এ জন্য ৪০টি আবেদন ফরমে আমি স্বাক্ষর করি। আমি কোনো টাকা নিইনি। সহকারী শিক্ষক মিস দুলি আক্তার টাকা গ্রহণ করেছেন। শিক্ষাবোর্ডে তিনিই যোগাযোগ করেছেন আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।
অভিভাকরা বরিশালটাইমসকে জানান, স্কুল টেস্ট পরীক্ষায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এ বছর পরীক্ষার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন ও প্রলোভন দেখান প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান ও দুলি আক্তার।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘কোনো লিখিত অভিযোগ না পেলে ব্যবস্থা নেওয়া অসম্ভব। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ে নিজস্ব ৬৪ পরীক্ষার্থী থাকা সত্তেও কেন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তাদের বিদ্যলয় থেকে পরীক্ষা দিতে উৎসাহিত করা হলো এবং টাকা নেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা দেখব।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমাউন বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান ও অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তারকে চলমান এসএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
শিরোনামOther