২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

চরফ্যাশনে আ’লীগ নেতার নেতৃত্বে বাসা লুটপাট, মামলা নেয়নি পুলিশ!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:২০ অপরাহ্ণ, ৩১ মে ২০২০

বার্তা পরিবেশক, ভোলা:: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও দখলের ঘটনায় এমপির নির্দেশের পরও তেমন কোন পদক্ষেপ নেয় নিয়নি পুলিশ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে একাধিকবার বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও দখলের ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. আলী হোসেন মুন্সী পরিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, ইউএনও, ওসিসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পায়নি। বর্তমানে তার বাড়ি ঘর লুটপাট করে জবর দখল করে রেখেছে ভুমিদস্যুরা। তাকে প্রাণনাশসহ বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আলী হোসেন মুন্সী।

শনিবার ভোলার স্থানীয় এক পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী মো. আলী হোসেন মুন্সী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে মো. আলী হোসেন মুন্সী জানান, চরফ্যাশন উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামে দীর্ঘ ৩৭ বছর আগে ৭৪ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়িঘর, পুকুর বাগান করে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন। ওই জমির হাল দিয়ারা রেকর্ড করাইতে না পারায় বিজ্ঞ আদালতে দেওয়ানী নম্বর ২০৪/২০০৬ইং মোকদ্দমায় মামলা করেন আলী হোসেন। এছাড়াও তিনি আদালতে ৩টি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন।

বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে আদালত ও শালিশী উপেক্ষা করে এওয়াজপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, ১নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি রফিক হাওলাদার, সম্পাদক জাহাঙ্গীর মিস্ত্রী, ৩ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি শাহে আলম হাওলাদারের নেতৃত্বে ভূমিদস্যু আল আমিন, নুরে আলম, আবুল কালাম, আলী আজগর, নুরুল ইসলাম, আক্তার হোসেন, মনির হোসেন, মিরাজ, কবির, আব্দুর রব ফরাজী, মোঃ হোসেন, মোঃ হাসান, ইমাম হোসেন, মোঃ হানিফ, মোঃ ইব্রাহিম, মোঃ আনোয়ার, মোঃ সবুজ, মোঃ ইলিয়াস, মোঃ রাকিব, শাহানুর বেগম, রুমা বেগম, সাজু বেগম, মরিয়ম বেগম দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে গত ২৪ মে আলী হোসেন মুন্সীর বসতবাড়িতে প্রবেশ করে হামলা ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট করে। ভূমিদস্যুরা আলী হোসেনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। এরপর গত ০৯ মে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ভূমিদস্যুরা পুনরায় আলী হোসেনের বসতবাড়িতে হামলা করে সুপারী গাছ, ফলফলাদী কেটে নিয়ে যায় এবং ওই বাড়িতে নতুন করে ঘর উত্তোলন করে। বিষয়টি আলী হোসেন চরফ্যাশনের সিনিয়র নেতাদেরকে জানালে নেতারা শশীভূষণ থানায় পাঠায়। থানায় গেলে অজ্ঞাত কারণে আলী হোসেনের অভিযোগ আমলে নেয়নি পুলিশ।

গত ১১ আলী হোসেন বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানালে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ভূমিদস্যুরা আলী হোসেনের বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তানদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এসময় তারা আলী হোসেনের বসতঘর দখল করে নিয়ে যায়। বিষয়টি পুনরায় উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র নেতাকর্মীদেরকে জানালে তারা শশীভূষণ থানায় পাঠালে সেখানে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। বিষয়টি চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী পুলিশ সুপারকে জানিয়ে কোন সুফল পাননি আলী হোসেন মুন্সী। নিরুপায় হয়ে আলী হোসেন বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে জানালে তিনি থানার ওসি ও আ’লীগ নেতাদেরকে নির্দেশ দিলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ মামলা দেয়নি। বর্তমানে ইউনিয়ন আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে আলী হোসেনের বাড়িঘর জোর করে দখল করে রেখেছে ভূমিদস্যুরা। বর্তমানে আলী হোসেন মুন্সীর পরিবার ভূমিদস্যুদের হুমকি-ধামকির ভয়ে নিরাপত্তাহীন জীবন যাপন করছেন। তিনি এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত এওয়াজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সাংবাদিকদের জানান, দু’পক্ষের বিরোধ নিয়ে শালিস সমঝোতা চলমান আছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কে বা কারা পরিবারটির ওপর হামলা করেছে তা আমার জানা নেই। হামলার ঘটনা দুঃখজনক। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি কোন জমি দখলে সহায়তা করিনি।

শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ দেওয়ানী মামলা নেয় না, থানায় শুধু ফৌজধারী মামলা নেওয়া হয়। বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা দেওয়া হয়েছে। সেটির দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন