২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

টিসিবির পণ্য : বরিশালে চাহিদার বিপরীতে অপ্রতুল সরবরাহ, ভোগান্তি মানুষের

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ, ১৩ মে ২০১৯

দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিলাররা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রিতে অনীহা দেখালেও উল্টো চিত্র বরিশাল নগরীতে। এ নগরীতে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাচ্ছেন না ডিলাররা। এতে সরবরাহ সংকটে পণ্য কিনতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ, পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি ডিলার কম হওয়ায় টিসিবির পণ্য কিনতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তীব্র গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে অনেকে পণ্য না কিনেও ফেরত যাচ্ছেন।

পবিত্র রমজানে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে ন্যায্যমূল্যে দেশজুড়ে তেল, ছোলা, খেজুর, চিনি ও মসুর ডাল বিক্রি করছে টিসিবি। ডিলারদের মাধ্যমে এসব পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি হয়। এবার প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, প্রতি কেজি ছোলা ৬০, মসুর ডাল ৪৪, চিনি ৪৭ ও খেজুর ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের তুলনায় দাম কম হওয়ায় বরিশালে এসব পণ্যের চাহিদা ভালো।

টিসিবির বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহানগরীতে ডিলার আছেন ২৫ জন। রোটেশন প্রথায় প্রতিদিন পাঁচজনকে পণ্য দেয়া হচ্ছে। ফলে একজন ডিলার পাঁচদিন পরপর টিসিবি থেকে পণ্য পাচ্ছেন।

টিসিবির ডিলার ও রানা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শেখ মাসুদ রানা বলেন, প্রত্যেক ডিলার পাঁচদিন পর পর ৪০০ লিটার সয়াবিন, ৪০০ কেজি করে চিনি ও ছোলা এবং ১০০ কেজি খেজুর বরাদ্দ পাচ্ছেন। ট্রাকে করে এসব পণ্য বিক্রি করা হয়। ক্রেতার চাহিদা বেশি হওয়ায় একদিনেই সব পণ্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

গতকাল সকালে নগর ভবনের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের পাশে ট্রাক রেখে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন আনোয়ার হোসেন নামের এক ডিলার। ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতারা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও আদালত ভবনের সামনের সড়কে টিসিবি ডিলারের ট্রাক ঘিরেও একই চিত্র দেখা গেল।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে টিসিবির পণ্য কেনার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. আনিছুর রহমান। এক পর্যায়ে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি পণ্য কেনার আশা ছেড়ে লাইন থেকে বের হয়ে যান। এ সময় তিনি বলেন, প্রতিদিনই কম দামে পণ্য কিনতে এসে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রখর রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও বিক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পারিনি। রোজা রেখে আর রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না।

বেলা ২টায় নগর ভবনের সামনে গিয়ে দেখা গেল, মজুদ শেষ হওয়ায় ডিলার আনোয়ার হোসেন পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে পণ্য কিনতে না পেরে ক্রেতারা তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন। আনোয়ার হোসেন জানান, পণ্য শেষ হয়ে গেছে জানানো হলেও ক্রেতারা তা মানছেন না। টিসিবি চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ না করায় প্রতিদিনই ক্রেতাদের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়।

এ ব্যাপারে টিসিবির বরিশাল অফিস প্রধান মো. আনিসুর রহমান বলেন, আমি নিজেও দেখেছি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা আছে। প্রত্যেক ডিলারের ট্রাক ঘিরে ভোক্তাদের জটলার সৃষ্টি হয়। অনেকে পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তবে কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে যেভাবে নির্দেশনা রয়েছে, আমরা সেভাবে পণ্য সরবরাহ করছি। এবার ডিলার বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন