২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরিশালে হাসপাতালের প্রিজনসেলে আসামি খুনের ঘটনায় হত্যা মামলা

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:৩০ অপরাহ্ণ, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালের প্রিজন সেলে আসামির হাতে আরেক আসামি মোতাহার হোসেন (৬০) খুনের ঘটনায় তিন কারারক্ষীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত মোতাহারের মেয়ে নাসরিন আক্তার বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ নালিশী মামলাটি করেন।

বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা নম্বর সিআর ৬৩৫/২৪ (সদর)। আদালতের বিচারক নালিশী মামলাটি গ্রহণ করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী আলাউদ্দিন হাওলাদার। এছাড়াও এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত মোতাহারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম।এ মামলার আসামিরা হলেন – স্থানীয় একটি হত্যার মামলার আসামি ও ঘটনার সময় প্রিজনসেলে বন্দী থাকা পটুয়াখালীর বাসিন্দা ও হামলাকারী তরিকুল ইসলাম (২৫), বরগুনার বেতাগীর বাসিন্দা নজরুল ইসলাম (৪৭), মোস্তফা হাং (৫০), মো. ফারুক (৫৫), সফিকুল ইসলাম (২৮), নাসির উদ্দিন হাং (৩৫), জাহাঙ্গীর হাং (৪০) ও কামাল হাং (৫৫)। এছাড়া ঘটনার সময় দায়িত্বরত তিন কারারক্ষীকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন – আ. সালাম, মিরাজসহ নাম না জানা একজন কারারক্ষী। এ মামলায় আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ অভিযোগ করেন, বরগুনার বেতাগীতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেই দ্বন্দ্বের জেরে বেতাগী থানায় প্রতিপক্ষরা আমার বাবা মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলায় আমার বাবাকে বরগুনা কারাগারে পাঠায় আদালতের বিচারক।

এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরগুনা কারাকর্তৃপক্ষ বরিশাল কারাকর্তৃপক্ষের কাছে তাকে পাঠায়। এরপর চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী আমার বাবাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাই তিনি শেবাচিম হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরই মধ্যে প্রিজন সেলের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষী মিরাজসহ অন্যান্যরা আমার বোন নাসরিনের কাছে টাকা দাবি করে।

নিহত মোতাহারের ছেলে আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে আমাদের পারিবারিক শত্রু নজরুল, মোস্তফা, শফিকসহ অন্যান্যরা শেবাচিমের প্রিজন সেলের সামনে হাঁটাহাঁটি করে আমার বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। গত ১৩ এপ্রিল এ বিষয়টি আমার বাবা আমাকে জানিয়েছিলেন।

তাই আমার বাবাকে হত্যা করতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কারারক্ষীদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক শত্রুরা পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রিজন সেলের কারারক্ষীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আরেক আসামিকে দিয়ে আমার বাবাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ফলে তার মৃত্যু হয়। এ সময় কারারক্ষীদের একজন প্রিজনসেলের চাবি নিয়ে বাইরে চলে যায়। আরেকজন কারারক্ষী ঘুমিয়ে ছিলেন। তাই পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে আদালতে নালিশী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাদীর আইনজীবী আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, বিচারক নালিশী মামলাটি গ্রহণ শেষে বাদীর জবানবন্দীও গ্রহণ করেছেন। মামলাটিতে তদন্তের জন্য বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নোটিশ পাঠিয়েছে আদালত।

যেহেতু এ ঘটনায় আগেই কারাকর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে তিন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। তাই নিহত মোতাহারের মেয়ের দায়ের করা মামলাটি আগের মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে একক মামলা হিসেবে পরিচালিত হবে। নতুন দায়ের করা মামলার তদন্তে যাদের নাম বেরিয়ে আসবে তাদেরও প্রথম মামলার আসামি হিসেবে যুক্ত করা হবে।

74 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন