৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

বেপরোয়া বরিশাল পুলিশের ঝালকাঠিতে সন্ত্রাস!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৫০ অপরাহ্ণ, ১০ মে ২০১৬

বরিশাল: কিছুতেই যেন বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দিয়ে প্রতিনিয়ত সংবাদপত্রের শিরোনাম হচ্ছে এখানকার পুলিশ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার বরিশাল পুলিশের এক সদস্য ঝালকাঠিতে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে মাধ্যমে ফের আর একটি বিতর্ক সৃষ্টি করে রীতিমত শোরগোল ফেলে দিয়েছেন।

 

তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই পুলিশ সদস্য এক অটোচালককে হাতকড়া দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। অত:পর স্থানীয় উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে বাঁচতে ১হাজার টাকা জরিমানা গুনেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রায়াপুর কাচারিবাড়ি এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠি সড়কে। হামলায় গুরুতর আহত অটোচালক খলিলুর রহমানকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

হামলাকারি বেপরোয়া পুলিশ সদস্য হলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানা পুলিশের কম্পিউটার অপারেটর সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রিয়াদ হাসান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চালক খলিলুর রহমান কাচারিবাড়ি এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠি সড়কের পাশে অটোটি রেখে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই সময়ই এএসআই রিয়াদ হাসান বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেযোগে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।

 

কিন্তু বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রাক আসায় তিনি মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোরিকশায় ধাক্কা দেন। এমনকি মোটরসাইকেল থেকে নেমে জানতে চান কেন সড়কের পাশে অটো রাখা হয়েছে। এসময় প্রতিত্তোরে চালক খলিলুর রহমান অটোটি সাইড করে রাখার বিষয়টি জানালে ক্ষুব্ধ এএসআই রিয়াদ তাকে হাতকড়া দিয়ে বেধড়ক পিটুনী দেন। এতে অটোচালক গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ার দৃশ্য দেখে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ সদস্য রিয়াদ হাসানকেও একচোট গণপিটুনী দেয়। এমনকি তাকে আটকে রেখে উত্তেজিত জনতা সড়কটি অবরোধ করে রাখে।

 

ফলে ওই সড়কের দু’প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে ঝালকাঠির সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল এমএম মাহামুদ হাসান ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু শত শত উত্তেজিত জনতা ওই হামলাকারি পুলিশ সদস্যের বিচারের দাবি সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকে। আধাঘন্টা পরে অবশ্য পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। তবে উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে রক্ষা পেতে তাৎক্ষণিক ১ হাজার টাকা আহত ব্যক্তিকে দিতে হয়েছে ওই পুলিশ সদস্যর। আহত অটোবাইক চালক খলিলুর রহমান নলছিটি উপজেলার ডুবিল গ্রামের মৃত জয়নাল খলিফার ছেলে।

 

স্থানীয়দের ভাষ্য হচ্ছে, একজন পুলিশ সদস্য এতটা সন্ত্রাস প্রকৃতির হতে পারে তা ধারণাও করা যায় না। তার হামলার দৃশ্য প্রত্যক্ষদর্শীদের হতবাক-বাকরুদ্ধ করেছে। যে কারণে স্থানীয়রা আর নিশ্চুপ থাকতে না পেরে ওই পুলিশ সদস্যকে ধরে প্রথমে একচোট গণধোলাই দিয়েছে। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন সিনিয়র সাংবাদিকের অভিব্যক্তিও এমনটাই। এক্ষেত্রে ঝালকাঠির সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল এমএম মাহামুদ হাসানের ভাষ্য হচ্ছে, খবর পেয়ে তিনি একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

 

এবং উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তেজিত জনতাদের নিবৃত করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন। সেই তিনি হামলাকারি ওই পুলিশ সদস্যকে অটোচালকের ক্ষমা প্রার্থনাও করার বলে জানান। তবে হাতকড়া দিয়ে পিটিয়ে আহত করার বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত নন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। হামলাকারি পুলিশ সদস্য রিয়াদ হাসানের ভাষ্য হচ্ছে, ভুল বোঝাবুঝির কারণে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে ওই অটোচালক রক্তাক্ত হলেন কিভাবে এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি পুলিশ সদস্য।

18 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন