৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

লঞ্চডুবির ১২ ঘন্টা পর জীবিত উদ্ধারের ঘটনা রহস্যঘেরা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:২৬ অপরাহ্ণ, ০৩ জুলাই ২০২০

বার্তা পরিবেশক অনলাইন:: রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গায় মনিং বার্ড লঞ্চডুবির ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারীকে উদ্ধার নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, লঞ্চডুবির পর উদ্ধার আভিযান পরিচালনা করার সময় এক ট্রলারে মানুষের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন সুমন বেপারীর চেহারার আদলে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি সদরঘাট নৌ ফাঁড়ির একজন বাবুর্চি।

সদরঘাট টার্মিনালের একাধিক ভ্রাম্যমাণ হকারের দাবি, লঞ্চডুবির পর সুমনকে তারা সদরঘাট এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন। সুমনকে হিরো সাজাতে গিয়ে পানির ভিতর ১৩ ঘণ্টা থাকার মিথ্যা গল্প তারা সাজিয়েছেন। সুমন নিজেকে একজন ফল ব্যবসায়ী দাবি করলেও তিনি গত দুই বছর ধরে সদরঘাট নৌ ফাঁড়ির একজন বাবুর্চি হিসাবে কাজ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গত ২৯ জুন রাত ১১ টায় সুমন ব্যাপারীকে ভর্তি করার পর পর্যায়ক্রমে আট জন চিকিৎসক তাকে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করেছেন। চিকিৎসকদের মতে, কোন ব্যক্তি একটানা ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা পানির নিচে ডুবে থাকলে তার শরীরের চামড়া, লোম, মাথার চুল, হাত পা সহ মখমণ্ডল ফ্যাকাসে হয়ে যাবে। শরীরের চামড়া নরম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সুমনের বেলায় এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। পানির নিচে ১২/১৩ ঘণ্টা থাকার পর শরীরে যে ধরনের চিহ্ন বা লক্ষণ দেখা দেয়- উদ্ধারকৃত সুমনের শরীরে তার কোনো বিন্দুমাত্র ছাপ নেই।

নৌ পুলিশের ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ব্যক্তির ছবি প্রকাশ হয়েছে, তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়ার সুমন বেপারীর চেহেরার যথেষ্ট মিল আছে। প্রকৃতপক্ষে যে ছবি প্রকাশ হয়েছে, সেটি সদরঘাট ফাঁড়ির এসআই আক্কাসের ছবি। তবে ১৩ ঘন্টা পর উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারীকে পুলিশ এখনও জিজ্ঞাসা করেনি। তার উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি সাজানো নাকি সত্যি-তা নিয়ে নৌ পুলিশ কোনো তদন্ত করছে না। তবে এটা নিশ্চিত যে ফেসবুকে প্রকাশ করা ছবির সঙ্গে উদ্ধার হওয়া সুমনের চেহারার মিল নেই।

সুমনকে উদ্ধার করার সময় নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, সোমবার রাত সোয়া ১১ টার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চের স্থান থেকে হঠাৎ এক ব্যক্তি সাঁতরিয়ে উঠার চেষ্টা করলে ডুবুরিরা তাকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়ার পর সুমন জানিয়েছিলেন, তিনি সদরঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রি করেন। মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটে পৌঁছার সময় তিনি লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের পাশে একটি লোহার রড ধরে বসে ছিলেন। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে কিভাবে যেন তিনি ইঞ্জিন রুমের ভিতরে ঢুকে পড়েন। সেখানে কোনো পানি ঢোকেনি। এরপর লঞ্চটি ভেসে তোলার পর সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন