বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১১:২৪ অপরাহ্ণ, ১২ নভেম্বর ২০১৮
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী, রাজগুরু, রমজানকাঠী, রহিমগঞ্জ, মোল্লারহাট, লামচর, ঘোষকাঠীসহ ভাঙনকবলিত বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে এসব বালু।
এতে হুমকির কবলে পড়ছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘরসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
জানা যায়, বরিশাল জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত বালুমহাল ২৮টি। মামলা মোকদ্দমার বেড়াজালে ২৩টি বালুমহালের ইজারা দেয়া বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বাকেরগঞ্জ উপজেলায় তিনটি ও বাবুগঞ্জ উপজেলায় দুটি মহালকে ইজারা দেয়া আছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার লামচর ঘোষকাঠী সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর ২৫ একর এবং পূর্ব ভূতেরদিয়া সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদের ২৫ একর মহাল ইজারা দেয়া রয়েছে। তবে বালু ব্যবসায়ীরা ইজারার সীমানার বাইরে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বালু উত্তোলন করে চলছেন দিনরাত।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী, বিএনপি নেতা হারুন অর রশিদ হাওলাদার, আবদুল হালিম বেপারী, ইউপি সদস্য বাবুল বেপারী, জাপা নেতা শামীম আহসান, আব্বাস উদ্দিন ঘরামী, মোয়াজ্জেম হোসেন একাধিক ড্রেজার দিয়ে নদীর একাধিক পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে এসব বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার রহিমগঞ্জে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সন্ধ্যা নদী। নদী ভাঙনে হুমকির মধ্যে রয়েছে রহিমগঞ্জ লঞ্চঘাট ও মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে নদীরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করলেও বালু উত্তোলনের ফলে বাঁধের একাধিক স্থানে ফাটল ধরেছে।
এছাড়া বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের অনেক কৃষকের আবাদি জমি ভেঙে গেছে। নদীরক্ষা বাঁধের এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজিত হাওলাদার বলেন, বালুমহাল ঘোষণা এবং ইজারা ছাড়া কেউ নদী কেটে বালু উত্তোলন করতে পারেন না। অবৈধভাবে নদী কেটে বালু উত্তোলনের অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, নদীর তীর থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বালু উত্তোলন করলে বা কাটলে তেমন ক্ষতি নেই। তবে তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করা হলে আশেপাশের এলাকা অবশ্যই ভাঙনের কবলে পড়বে। এসব বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।