Bkash

বরিশাল

বরিশালে চাঁদা দাবির প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

Barishal Times Desk

Barishal Times Desk

১৬ জুন, ২০২৫ ১৭:৫২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বরিশালে চাঁদা দাবির প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার টরকী বন্দরের এক ব্যবসায়ীর কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে বন্দরের সহস্রাধিক ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের টরকী বন্দর এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়ার পর মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।

ওই বন্দরের চাল ব্যবসায়ী কালাচাঁন মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, টরকী বন্দরের বাসিন্দা ও সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস সিকদার শফিকুর রহমান রেজাউল গত কয়েকদিন থেকে তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে পূনরায় রেজাউল তার দুই সহযোগীকে নিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে দাবিকৃত চাঁদার টাকা চায়। এসময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে (কালাচাঁন) হত্যার হুমকি দেয়।

কালাচাঁন মন্ডল আরও জানান, বিষয়টি তাৎক্ষনিক বন্দরের ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। পরবর্তীতে সব ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে টরকী বন্দর বণিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। পরবর্তীতে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি টরকী বাসষ্ট্যান্ডে এসে মহাসড়ক অবরোধ করে। প্রায় আধাঘণ্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধের ফলে উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত রেজাউল সিকদারকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়ার পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

টরকী বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, টরকী বন্দরে দীর্ঘদিন থেকে একটি অসাধু চক্র ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে আসছে। ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে এ ধরনের কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সরেজমিনে অভিযুক্ত সিকদার শফিকুর রহমান রেজাউলের বাসার সামনে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি)'র গৌরনদী উপজেলা শাখার প্রধান কার্যালয়ের একটি ব্যানার ঝুলানো রয়েছে।

চাঁদা দাবির অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত রেজাউল সিকদার সাংবাদিকদের জানান, জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে তার ওপর মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে। চাঁদা দাবির কোন ঘটনা ঘটেনি।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া বলেন, চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় ব্যবসায়ী কালাচাঁন মন্ডলকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন:

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নুর উদ্দিন মাফির শুভেচ্ছা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

৩১ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:৪৫

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নুর উদ্দিন মাফির শুভেচ্ছা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বরিশাল জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সহ সভাপতি,ডি ই এব, নুর উদ্দিন মাফির পক্ষ থেকে সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি এই দিনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মোঃ নুর উদ্দিন মাফি তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, “১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে গঠিত বিএনপি ৪৭ বছরে পদার্পণ করছে। এটি শুধু একটি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নয়, এটি বাংলাদেশের আপামর জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।”

তিনি আরও বলেন, “জিয়াউর রহমান শুধু একজন মহান স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। তার হাত ধরেই বাংলাদেশে কৃষি বিপ্লব, শিল্পায়ন, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটেছিল। স্বল্পসময়ের শাসনামলে তিনি দেশকে একটি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন।”

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে মোঃ নুর উদ্দিন মাফি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে আপোসহীন ভূমিকা পালন করেছেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তার নেতৃত্ব অবিস্মরণীয়। গণতন্ত্রের জন্য তিনি বারবার কারাবরণ করেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কিন্তু জনগণের অধিকার আদায়ে তিনি কখনও পিছপা হননি। বর্তমানেও তিনি গুরুতর অসুস্থ তার জন্য সবার কাছে দোয়া চান।

দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারেক রহমান দেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করছেন। ফ্যাসিবাদী সরকারের রোষানলে পড়ে তিনি আজ নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।

কিন্তু দূর থেকেও তিনি দলকে সুসংগঠিত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে এবং দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”

তিনি আরও প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, “ স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে এবং এবার জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ, খালেদা জিয়ার আপোসহীনতা এবং তারেক রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিএনপি আবারও দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করবে এবং একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।” পরিশেষে মোঃ নুর উদ্দিন মাফি বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলের সকল নেতাকর্মীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং দেশ ও জাতির অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করেন।

লুটের টাকায় ভারতে নানকের বিলাসী জীবন

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

৩১ আগস্ট, ২০২৫ ১৮:০২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

লুটের টাকায় ভারতে নানকের বিলাসী জীবন

বরিশাল থেকে ঢাকা আসেন লঞ্চে এক কাপড়ে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। চলার মতো অর্থ ছিল না। ছিল না খাবার টাকা। শেখ সেলিমের ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকায় চাকরি নেন বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের। রাতে ঘুমাতেন বাংলার বাণী অফিসেই নিউজ প্রিন্ট বিছিয়ে। বাংলার বাণীতে যে বেতন পেতেন, তা দিয়েই চলতেন কোনো রকমে। বেতনও ঠিকঠাক মতো হতো না। অভাব-অনটনে কাটত জীবন। কাগজে কলমে আইনের ডিগ্রি থাকলেও কোনো দিন আইন পেশায় যুক্ত থাকেননি। কিন্তু গত ৫০ বছরে গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ। স্ত্রী ব্যাংকে চাকরি করতেন। সেই চাকরি পান রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবুকে ধরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি নেন। সেই টাকায় চলত সংসার। নিজের কোনো বৈধ উপার্জন ছিল না। কিন্তু রাজনীতিই তার কাছে ছিল দুর্নীতি এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের প্রধান উপায়। রাজনীতি করেই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। বর্তমানে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। লুটের টাকায় কাটাচ্ছেন বিলাসী জীবন। বৈধ কোনো উপার্জন ছাড়াই তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন ব্যাপকভাবে। দলের ভিতর কমিটি বাণিজ্য এবং মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন লাগামহীন। দুর্নীতির দাম কমিশনের প্রাথমিক হিসাব মতে, গত ১৫ বছরে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ গুণ। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন যে, এই হিসাবটি খুবই তুচ্ছ এবং হাস্যকর। বাস্তবে তার সম্পদের পরিমাণ আরও কয়েকশ গুণ বেশি। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী নানক ও তার স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকা। ২০২৪ সালের জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের সময় হলফনামায় নানক সম্পদের যে বৈধ হিসাব দিয়েছিলেন তার পরিমাণ ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকা। শুধু দেখানো হিসাবেই তার সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ। আওয়ামী লীগের এই নেতার কোনো বৈধ আয় নেই। তাহলে সম্পদ বাড়ল কীভাবে? একমাত্র উপায় রাজনীতি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথমে মন্ত্রী হতে পারেননি। কয়েক দিন পরে তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সৈয়দ আশরাফ মন্ত্রণালয়ে যেতেন না। মন্ত্রণালয়ের কাজেও তার মনোযোগ ছিল না। আর এই সুযোগ নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিভিন্ন টেন্ডার এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পর নানক আরও ক্ষমতা কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ হয়ে যান, হয়ে পড়েন বেপরোয়া। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তার সম্পৃক্ততা ছিল। সেটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের পর জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতিনির্ধারকে পরিণত হন। এরপর থেকেই তিনি একের পর এক সম্পদ গড়তে থাকেন। নিঃস্ব রিক্ত থেকে তিনি হয়ে যান হাজার কোটি টাকার মালিক। ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রথম বড় দুর্নীতি আসে ডেসটিনির ঘটনায়। ডেসটিনির কাছ থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কোনো সহায়তা করেননি নানক। ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ডেসটিনি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য নানককে প্রায় দুই শ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়েছিল। সেই সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পল্লী উন্নয়ন সচিব মিহির কান্তি মজুমদার যৌথভাবে এই টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডেসটিনি ছাড়াও এই সময় নানক এরকম আরও কয়েকটি কোঅপারেটিভ সোসাইটির কাছ থেকে বিপুল অর্থ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘যুবক’। ‘যুবক’ সমবায় সারা দেশে প্রচুর জমি-জমা এবং সম্পদ করেছিল। ঢাকা শহরেও তাদের বিপুল সম্পদ ছিল। যুবকের ধানমন্ডির জমিটি জাহাঙ্গীর কবির নানক দেন তার ঘনিষ্ঠ সহচর মির্জা আজমকে। নামমাত্র মূল্যে ধানমন্ডির এক বিঘা জমি মির্জা আজম গ্রহণ করেন। যেখানে তিনি এখন বহুতল ভবন করেছেন এবং একটি ফ্ল্যাটে নিজে থাকতেন। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, বসিলা, কেরানীগঞ্জে যুবকের বিভিন্ন সম্পদ দখল করে নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। যুবকের লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়া হবে, যুবককে নতুন করে কাজ করতে দেওয়া হবে- এরকম আশ্বাস দিয়েও নানক বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানকের আরেকটা টার্গেট ছিল আর্থ ফাউন্ডেশন। আর্থ ফাউন্ডেশনেও কোঅপারেটিভ সোসাইটি ছিল, যারা জনগণকে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা গ্রহণ করত। আর্থ ফাউন্ডেশনের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যাদের কাছ থেকে তিনি অর্থ নিয়েছেন, তাদেরকেই তিনি ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। কারও কোনো উপকার করেননি। এটি ছিল নানকের অভিনব একটি কৌশল। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ নামে সেই প্রকল্পটির দিকে নজর দেন। শেখ হাসিনার অন্যতম প্রিয় এই প্রকল্প ছিল, যেখানে গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তাদেরকে একখণ্ড জমি এবং সেই জমির ওপর বাড়ি এবং একটি খামার করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই পুরো টাকাই লুটপাট করা হয়। ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে’র নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পাঁচ বছরের মন্ত্রিত্বকালের সময় সেখানে মোট ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অথচ কোনো গরু বা বাড়িঘর দেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুরো টাকাই প্রায় লুটপাট হয়ে গেছে। এ সময় ‘একটি বাড়ি একটি খামারে’র নাম হয় ‘অর্ধেক তোমার, অর্ধেক আমার’।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রশান্ত কুমার হালদার নামে একজন প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আরও কতিপয় ব্যক্তি মিলে এই প্রকল্প লুণ্ঠন করেন। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় মিল্কভিটা সমবায় সমিতি ছিল জাহাঙ্গীর কবির নানকের অর্থ উপার্জনের একটি অন্যতম জায়গা। মিল্কভিটাতে হস্তক্ষেপ করে, মিল্কভিটার বিভিন্ন বিষয় তদারকি করে বানিয়ে ফেলেন বিপুল পরিমাণ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অন্যতম বিভাগ স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় প্রচুর। জাহাঙ্গীর কবির নানক এখানে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি কে প্রধান প্রকৌশলী হবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে কারা প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তদারকি শুরু করেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।

২০০৯ থেকে ২০১৫ সালে নানকের অন্যতম বড় কেলেঙ্কারি ছিল যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার প্রকল্প। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্প দুর্নীতিপূর্ণ এবং অযৌক্তিক হিসেবে ফাইল আটকে দেন। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্পকে অনুমতি না দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ নোট লিখেছিলেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এই প্রকল্পটি যেন পাস হয় সেজন্য শেখ হাসিনার কাছে যান এবং তার সঙ্গে এক দিন দেনদরবার করেন। জানা যায়, এই প্রকল্প পাস করানোর জন্য নানককে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার বিনিময়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হাসিনাকে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে সৈয়দ আশরাফকে ডেকে নিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এই ফ্লাইওভারের ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশের একটি বড় দুর্নীতির ঘটনা। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার এখন একটি বিষফোঁড়া হিসেবে জাতির সামনে এসেছে। নানকের এসব দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মন্ত্রণালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার কথা সবাই জানত। এ কারণেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জাহাঙ্গীর কবির নানককে মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়নি। কিন্তু মন্ত্রী না হলে কী হবে? জাহাঙ্গীর কবির নানক তার দুর্নীতি এবং লুটপাট অব্যাহত রাখেন। হিসাব করে দেখা গেছে যে, পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর কবির নানক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যে টাকা দিয়ে তিনি বেনামে দেশেবিদেশে সম্পদ করেছেন। এসব অধিকাংশ সম্পদের হিসাব তিনি গোপন করেছেন। তার ব্যক্তি চাকর-বাকর, দেহরক্ষীর নামে ফ্ল্যাট, জমি কিনে তিনি নিজেকে নিরাপদে রেখেছেন। এভাবেই আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রথম পাঁচ বছরেই নানক হয়ে যান অন্যতম ধনী। যিনি এক সময় দুবেলা খেতে পারতেন না, তিনি পাঁচ বছরের মধ্যেই হয়ে ওঠেন এক ধনাঢ্য হাজার কোটি টাকার মালিক।

সংবাদসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

৬ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

৩১ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:৫৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

৬ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ

গজারিয়া নদীর তলদেশের বিদ্যুতের কেব্‌ল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় টানা ছয় দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা। এতে উপজেলার প্রায় চার লাখ বাসিন্দা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা; ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা, পানি সরবরাহ, স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও মোবাইল যোগাযোগব্যবস্থা।

পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মঙ্গলবার রাতে একটি মালবাহী জাহাজের নোঙরের আঘাতে কেব্‌লটি ছিঁড়ে যায়। এরপর থেকেই পুরো উপজেলা অন্ধকারে রয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সূত্র জানায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাটি নদীবেষ্টিত ও মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ২০০৪ সালে নলবুনিয়া এলাকায় গজারিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে কেব্‌লের মাধ্যমে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়।

বিদ্যুৎ না থাকায় উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন। ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে আছে ব্যাটারিচালিত যানবাহন। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। রেফ্রিজারেটর না চলায় ইনসুলিন, টিকা ও অ্যান্টিবায়োটিকের মতো জরুরি ওষুধপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা কার্যক্রমও প্রায় ভেঙে পড়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট যোগাযোগও প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাজার ও দোকানপাটে বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে।

সঞ্জীব কর্মকার নামের একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, 'ভেবেছিলাম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ চলে আসবে, কিন্তু পাঁচ দিন পেরিয়ে গেছে। জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে।'

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, 'গজারিয়া নদীর নিচের সাবমেরিন কেব্‌লটি সম্ভবত কোনো নৌযানের নোঙরের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত ২৬ আগস্ট থেকে ১৭টি ইউনিয়নের বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ আছে। ডুবুরিরা এরই মধ্যে ত্রুটি শনাক্ত করেছেন এবং মেরামতের কাজ চলছে। মেরামত সম্ভব না হলে নতুন কেব্‌ল স্থাপন করতে হবে।'

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী যোগ করেন, ডুবুরিরা টানা চার দিন ধরে কাজ করছেন, কিন্তু সাড়ে চার কিলোমিটের বেশি প্রশস্ত এই নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় মেরামতকাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.