Bkash

বরিশাল

সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম, অদ্ভুদ ‘অস্ত্র’ নিয়ে সন্ত্রাসীদের মহড়া, অস্ত্রগুলো উদ্ধার দাবি এলাকাবাসী

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৯ মে, ২০২৫ ২৩:০১

প্রিন্ট এন্ড সেভ

সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম, অদ্ভুদ ‘অস্ত্র’ নিয়ে সন্ত্রাসীদের মহড়া, অস্ত্রগুলো উদ্ধার দাবি এলাকাবাসী

শহরের উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকায় প্রকাশ্যে সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম এবং তাদের ভাইদের কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা পূর্বাপর এক অদ্ভুদ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায় বিএনপি নেতা মিরাজ-সেলিম, সাকিন, সবুজদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে। তিন ফুট লম্বা লোহার বাট, খুব ধারালো এই অস্ত্রগুলোর প্রকৃত নাম কেউ না বলতে পারলেও অনেকে দাবি করেছে এটি আধুনিক মডেলের ‘চাইনিজ কুড়াল’। প্রায় দুই হাত লম্বা এই অস্ত্রটি লোহার বাটের মাথায় আছে, স্টিলের তৈরি গোলাকারের দা, যা দিয়ে কাউকে যদি আঘাত করা হয়, তাহলে যে কোনো অঙ্গ বিচ্ছিন্নসহ প্রাণ যাওয়ার সম্ভবনা প্রবল। শনিবার সিকদারপাড়া মসজিদের সম্মুখে সাংবাদিক তারিকুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করার মিরাজ, সেলিমদের বাহিনীর এমন অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার পরে উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকার জনমনে ঘোর আতঙ্ক ভর করেছে। সুশীলমহলসহ এলাকাবাসী এই মারণাস্ত্র উদ্ধার এবং বহনকারীদের গ্রেপ্তারে জোরালো দাবি তুলেছে।

স্থানীয়রা বলছে, মিরাজসহ মাত্র দুটি বিএনপি নেতার পরিবার উত্তর আমানতগঞ্জকে অশান্ত করে তুলেছে, যারা গোটা জীবন পার করেছে এলাকায় ভূমিদস্যুতা, চুরি, ছিনতাই এবং পার্শ্ববর্তী তালতলী বন্দর থেকে চাপিলা, জাটকা ও রেণুপোনা পাচারের মতো নোংরামিতে। তাদের যন্ত্রণায় এলাকার সাধারণ মানুষ ওষ্ঠাগত হলেও মুখ খোলে না ইজ্জত হারানোর ভয়ে। তবে সাংবাদিক হাসিবুল ইসলামের ভাইদের মারধর এবং কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা ঘটনার পর শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ করতে শুরু করেছেন।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, সাংবাদিকের ভাইদের যারা কুপিয়েছে, তাদের হাতে দেশীয় তৈরি বেশকিছু অদ্ভুদ অস্ত্র দেখা গেছে, তাদের মহড়ার চিত্র স্থানীয় বাসাবাড়ির সিসি ক্যামেরা ফুটেজে ধরা পড়েছে। এমন অস্ত্র নিয়ে জনসাধারণে যেমন ভীতি ধরিয়ে দিয়েছে, তেমনই চাঞ্চল্য বাড়িয়েছে। এখনই এই অস্ত্র উদ্ধার না হলে উত্তর আমানতগঞ্জে তা ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকছে। বিশেষ করে এই ভীতি আরও বাড়িয়ে দেয় অতীত কিছু ভাবনায়, ২০০০ সালে উত্তর আমানতগঞ্জের সন্তান মাছুম সিকদারকে হাত কেটে হত্যার পরে লাশ পার্শ্ববর্তী শফি মিয়ার গ্যারেজের পেছনে ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম এবং সবুজ, নয়নরা ওই মামলায় অভিযুক্ত। কয়েক মাস পলাতক থাকার পরে বাদীর সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে তারা এলাকায় ফিরে এসে ফের ত্রাস শুরু করে।

অভিযোগ আছে, তারা বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকলেও যখন যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কোনো সেই দলের শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের লোক বনে যায়। কখনও কখনও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিবেদ বাধিয়ে দিয়ে ফায়দা লুটতে দেখা গেছে। এতদিন এরা সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ’র সেকেন্ড ইন কমান্ড নিরব হোসেন টুটুলের ছত্রছায়ায় থেকে এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করলেও এখন গা বাচাঁতে বর্তমান সিটি মেয়র এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দিকে ধাবিত হতে চাইছে।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সাদিক আব্দুল্লাহ বিসিসির চেয়ার হারানোর পরে নিরব হোসেন টুটুলের রাজনৈতিক শক্তি হ্রাস পায়। তখন পল্টি মেরে মিরাজ, সেলিম এবং সাকিন, সবুজ, নয়নেরা একাধিকবার বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে, প্রতিমন্ত্রীর সান্নিধ্য লাভের আশায়। কিন্তু তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে, তাই নেতা পাত্তা দেননি, কর্মীরা তাদের মেনে নেয়নি, বিমুখ হয়ে ফিরে গেছে।

সর্বশেষ রাজনৈতিক শেল্টারদাতা না পেয়ে তারা নিরব হোসেন টুটুলের সাথে আছে এবং অতীতের ন্যায় উত্তর আমানতগঞ্জে ক্রমাগতভাবে রক্তাক্ত করে চলছে মারণস্ত্রে, যা নিয়ে শনিবার সাংবাদিকের ভাইদের ওপর হামলা করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, এমন কয়েকটি অদ্ভুত অস্ত্র নিয়ে বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম এবং সুবজের ছেলে তামিল ও জহিরকে মহড়া দিতে দেখা যায়, যারা আলোকিত বরিশাল পত্রিকার সাংবাদিক তারিকুল ইসলামকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি। শনিবার সকালের ওই ঘটনায় গভীর রাতে ‘নিউজ এডিটরস্ কাউন্সিল, বরিশাল’র সভাপতি হাসিবুল ইসলাম কোতয়ালি মডেল থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, সকালে সাংবাদিক এবং তার ভাইদের মারধরের পর হামলাকারীরা বিকেল পর্যন্ত এলোমেলাভাবে বাসা বাড়িতে লুকিয়ে থাকলেও গভীর রাতে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। মামলার খবর পেয়ে শহরের দক্ষিণপ্রান্ত অর্থাৎ শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) কাছে একটি বাসায় অবস্থান নিয়ে আছে। জানা গেছে, সেই বাসাটি মাছুম হত্যা মামলার আসামি সেলিমের বড় ভাই সিরাজের, যিনি পেশায় একজন মহুরি।

স্থানীয়দের দাবি, সাংবাদিক ও তার ভাইদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করাসহ ওই অদ্ভুদ আকৃতির অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। নতুবা এই মারণাস্ত্র দিয়ে আরও অপরাধ সংঘটিত করার সমূহ সম্ভবনা থাকছে।

অবশ্য স্থানীয় সুধীমহল টুটুলের এই গুন্ডা বাহিনীর ত্রাসের জন্য অনেকাংশে কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আসাদুজ্জামানকেই দোষারোপ করছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ওসি মাসোহারা নিয়ে উত্তর আমানতগঞ্জের এই গুটি কয়েক বিএনপি নেতাকর্মীকে মাথায় তুলে বসে আছেন, যা নিয়ে ওই থানার অনেক সদস্যই তিক্ত-বিরক্ত। উদাহরণস্বরুপ যদি বলা হয়, ঈদের আগে সাংবাদিক মাহাবুবকে মারধরের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে যেমন ওই থানারই এসআই পদমর্যার এক কর্মকর্তা তাদের উদ্দেশ করে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেই ফেলেন ‘খালি ওসি স্যারের রুমে আসো যাও! আর এলাকায় একের পর এক আকাম-কুকাম করে বেড়াও। ফলে আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে ওসি আসাদুজ্জামানের শক্তিতেই বলিয়ান বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম, সাকিনেরা।

যদিও এই প্রমাণ এর পূর্বেও একাধিক পাওয়া যায়। সাদিক আব্দুল্লাহ মননোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় যখন তাদের ঘাট বাজার দখল হয়ে যাচ্ছিল, তখন ওসি আসাদুজ্জামানই ঢাল হয়ে মিরাজদের পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কাউনিয়া থানা পুলিশ টহল গাড়ি নিয়ে তালতলী বন্দরে দাঁড়িয়ে ছিল, অন্যদিকে কালু-মিরাজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন করছিল। সাংবাদিক এবং ভাইদের মারধরের পর যা এখনও চলমান রেখেছে কালু।

এই সন্ত্রাসী গ্রুপটি বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রণের দাবি এসেছে উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষে পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে তারা কাউনিয়া থানা পুলিশের ওপর ভরসা না রাখতে পেরে পুলিশ কমিশনার মো. জিহাদুল কবির, বরিশাল র‌্যাবপ্রধান এবং প্রতিমন্ত্রী-মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অবশ্য ইতিমধ্যে পুলিশ কমিশনার সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে মাঠপুলিশকে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন। কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা নথিভুক্তের পর পুলিশের কয়েকটি টিম তাদের গ্রেপ্তার করতে কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করায় পুলিশের কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। ওসি মো. আরিচুল হক জানিয়েছেন, হামলাকারী সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, উত্তর আমানতগঞ্জের ওই সংঘাতের ঘটনায় সিসি ফুটেজ যুবকদের হাতে মারণঘাতী অস্ত্র দেখা গেছে, তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। এবং এসব অস্ত্র দ্রুত উদ্ধার করাসহ প্রদর্শনে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।’

আরও পড়ুন:

হিজলা মেহেন্দিগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এ এম ব্যারিস্টার মাসুম

সেলিম রাঢ়ী, হিজলা

সেলিম রাঢ়ী, হিজলা

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:০৯

প্রিন্ট এন্ড সেভ

হিজলা মেহেন্দিগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এ এম ব্যারিস্টার মাসুম

বরিশালের হিজলা মেহেন্দিগঞ্জ আসনের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম। শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলা ডাকবাংলোয় হিজলা উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ব্যারিস্টার এ এম মাসুম ও তার পরিবারের সদস্যরা এলাকার অসহায় দুঃস্থ গরিব মানুষের মাঝে দীর্ঘদিন গরু ছাগল সহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দান করে আসছেন।

জানাযায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্মীয় মসজিদ মাদরাসা এতিমখানা সহ অনেক প্রতিষ্ঠা করেন। এ এম বরিস্টার মাসুম মতবিনিময় সভায় বলেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে আকাঙ্ক্ষা আগামী নির্বাচনে ক্লিন দূর্নীতি মুক্ত দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে পারবেন তাঁকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। ইনশাআল্লাহ এ বিষয়ে আমি দলের জন্য যোগ্য মনে করি। তাছাড়া দলের জন্য তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত নিবে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত মনে করবো।


বরিশালে ৯২ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:৫৩

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বরিশালে ৯২ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে উপজেলার ২১১নং দক্ষিণ শিয়ালগুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯২ জন। আর তাদের পাঠদান করেন মাত্র একজন শিক্ষক। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

অভিভাবকরা বলেছেন, মো. হাবিবুর রহমান নামে একজন শিক্ষক রয়েছেন। তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটিতে আর কোনো শিক্ষক না থাকায় তিনি একাই সব শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। এমনকি বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজে তাকে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। সে কারণে বর্তমানে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের দক্ষিণ শিয়ালগুনি গ্রামে ১৯৮৭ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালে সরকারিকরণ হয় বিদ্যালয়টি। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৯২ জন এবং শিক্ষক পদসংখ্যা ৬টি, এর মধ্যে মাত্র একজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন।

জানা গেছে, কাওসার হোসেন নামে এক সহকারী শিক্ষক গত বছরের নভেম্বর থেকে পিটিআই ট্রেনিং করেছেন, অপর দুজন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে একজন নুসরাত জাহান আছেন ৬ মাস ধরে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং আরেকজন শিক্ষক মাধবী আক্তার এক বছর ধরে সাসপেনশনে আছেন। বাকি দুজন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষক একজন এবং সহকারী শিক্ষক একজনের পদ শূন্য রয়েছে।

বিদ্যালয়ে দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, দুই শিফটে ক্লাস হয়। কোনোভাবে চালাই। আবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কাজ থাকলে স্কুল ছুটি দিয়ে যায়। এ ছাড়া করার তো আর কিছু নাই।

এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, এই উপজেলায় দুই সপ্তাহ হলো যোগদান করেছি। বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি আমার জানা নেই। দ্রুত বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।

বাবুগঞ্জে অসহায় শাহিনুরের পাশে মানবিক ইউএনও ফারুক আহমেদ

আরিফ আহমেদ মুন্না

আরিফ আহমেদ মুন্না

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:১৩

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বাবুগঞ্জে অসহায় শাহিনুরের পাশে মানবিক ইউএনও ফারুক আহমেদ

পঞ্চাশোর্ধ শাহিনুর বেগমকে তার স্বামী ত্যাগ করেছেন বহুকাল আগেই। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তার ঠাঁই হয় পাংশা গ্রামের বাবার বাড়িতে। দারিদ্র্যের চরম কষাঘাতে জর্জরিত হয়েও শাহিনুর তার ছেলেকে ঘিরে বাঁচার স্বপ্ন দেখতেন। ছেলে বড় হয়ে তার সব অভাব অনটন দূর করে দেবে। কিন্তু অভাগিনী যেদিকে তাকায় সেদিকে সাগরও নাকি শুকিয়ে যায়! শাহিনুর যখন ভেবেছিলেন ছেলে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করলেই সংসারের হাল ধরবে, ঠিক তখনই ছেলে রাহাত হাওলাদার (১৭) অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। প্রথমে জ্বীন-ভূতের আছর মনে করে ঝাড়ফুঁক করানো হয় তাকে। তবে শেষ পর্যন্ত জানা যায়, রাহাত এক জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত। ডাক্তার জানায়, তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে হলে এক দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা দরকার। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে শাহিনুরের। যেখানে তিনবেলা খেয়ে বেঁচে থাকাই দায়, সেখানে সন্তানের এই দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়বহুল চিকিৎসা হবে কীভাবে?

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার পাংশা গ্রামের শাহিনুর বেগমের দুঃখের গল্পটা ছিল এমনই। তবে এই কষ্টের গল্পটা সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে পৌঁছে যায় বাবুগঞ্জের মানবিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারুক আহমেদের কাছে। মানুষের দুঃখ-কষ্টে যার হৃদয় কেঁদে ওঠে সেই মানবিক ইউএনও এই খবর শুনে কি আর চুপ করে বসে থাকতে পারেন? তিনি ছুটে যান শাহিনুর বেগমের জীর্ণ কুটিরে। তার দুরবস্থা দেখে তাকে একটি সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর উপহার দেওয়ার প্রস্তাব করেন। সেইসঙ্গে তার ছেলের সুচিকিৎসার জন্য অনুদান দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শাহিনুর বেগমের হাতে তার সন্তানের চিকিৎসা অনুদানের সেই চেক তুলে দেন তিনি। ইউএনওর এই অনন্য মানবিক কর্মের সাক্ষী হয়ে থাকেন বাবুগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিকরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ওই অনুদানের চেক বিতরণকালে বিমানবন্দর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহাব উদ্দিন বাচ্চু, বাবুগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুর রহিম, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বিমানবন্দর প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য আবু হানিফ ফকির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এসময় শাহিনুর বেগমকে বাবুগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে খালি থাকা সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের মধ্য থেকে তার সুবিধাজনক এলাকায় একটি ঘর বেছে নেওয়ার অপশন দেন মানবিক ইউএনও ফারুক আহমেদ। তবে শাহিনুর বেগম তার বাবার বাড়ি পাংশা গ্রামেই থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করে পৈত্রিক জমিতে একটি বসতঘর নির্মাণ করে দেওয়ার অনুরোধ করেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারুক আহমেদ বলেন, 'আমি মানুষের সেবা করতে এসেছি। সাধ্যমতো সেটা করে যেতে চাই। মানুষের অভাব, অভিযোগ, চাহিদা অনেক। সব পূরণ করার ইচ্ছা থাকলেও আমার সাধ্য সীমিত। তবুও সবসময় চেষ্টা করি সীমিত সাধ্যের মধ্যেই সরকারি বিধিবিধানের ভেতরে থেকে যতটুকু সম্ভব মানুষের খেদমত করা যায়। স্বামী পরিত্যক্তা শাহিনুর বেগমের অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে সাধ্যমতো অনুদান দেওয়া হয়েছে। এখন তার চাহিদা তাদের পৈত্রিক জমিতে একটি পাকা বসতঘর। ভবিষ্যতে জমি আছে ঘর নাই এমন ক্যাটাগরির জন্য অর্থ বরাদ্দ পেলে তার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।'

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.