dreamliferupatolibarisal

বরিশাল

বরিশালে দালালদের দখলে টিকিট, লঞ্চ-বাসের ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ

Barishal Times Desk

Barishal Times Desk

১২ জুন, ২০২৫ ১২:১৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বরিশালে দালালদের দখলে টিকিট, লঞ্চ-বাসের ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ

ঈদের ছুটি শেষে লঞ্চ ও বাসে যাত্রী চাপ বেড়ে যাওয়ায় কাউন্টারে মিলছে না টিকিট। অধিকাংশ বাস কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকেও টিকিট কিনতে ব্যর্থ হচ্ছে যাত্রীরা। তাই বাধ্য হয়ে দেড় থেকে দুই গুণেরও বেশি টাকায় দালালদের কাছ টিকিট কিনতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।

এ কারণে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। তবে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টার্মিনালগুলোতে কাজ করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম।

বুধবার (১২ জুন) বরিশাল নৌবন্দর ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে সরেজমিনে দেখা গেছে। তথ্য মতে, যাত্রী সামাল দিতে প্রতিদিন ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ভায়া ও সরাসরি মিলিয়ে অর্ধ ডজন বিলাসবহুল নৌযান যাত্রী পরিবহণ করছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, এ রুটের লঞ্চে এক হাজার টাকার সিঙ্গেল কেবিন ১২শ ও ২ হাজার টাকার ডাবল কেবিন হয়েছে ২৪০০ টাকায় বিক্রি করলেও তা পাচ্ছে না সাধারণ যাত্রীরা। কারণ এসব টিকিট আগেই দখলে নিয়েছে কালোবাজারিরা।

ফলে কাউন্টার বা নৌবন্দরে গিয়েও মিলছে টিকিট। তাই বাধ্য হয়ে যাত্রীদের দেড় বা দুইগুণ বেশি দামে সেই টিকিট কিনতে হচ্ছে নৌবন্দরে থাকা দালাল চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে। লেদু, ইমাম, বসির, খোকনসহ ডজনখানেক ব্যক্তি টিকিট কালোবাজারি করে থাকেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এছাড়া এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রী হয়রানির অভিযোগে কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চের মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কোস্টগার্ড।

এদিকে ঢাকা-বরিশাল সড়ক পথে অধিকাংশ বাসের অগ্রিম সকল টিকিট বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েবসাইট থেকে উধাও হয়ে গেছে। ফলে সাধারণ যাত্রীরা ওয়েবসাইটে ঢুকে টিকিট কিনতে ব্যর্থ হয়েছে। কাউন্টারেও মিলছে না টিকিট।

পরে সাড়ে ৫শ টাকার টিকিট এক হাজার থেকে ১২শ টাকায় দালালদের কাছ থেকে কিনতে হয়েছে যাত্রীদের। ফলে সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বরিশাল কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল নথুল্লাবাদে কাশেম ও মান্নানের নামে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ রয়েছে।

চালাল চক্রের সদস্যরা অগ্রিম টিকিট বিক্রির সময় বিভিন্ন কৌশলে তা দখলে নিয়ে নেয়। এর সঙ্গে লঞ্চ ও বাসের কাউন্টারের এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারীরাও জড়িত বলে জানা গেছে। তবে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ও বাস কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে তারা নিয়মানুযায়ী ভাড়া আদায় করছে।

বাসযাত্রী ইমতিয়াজ অমিত বলেন, ১৪ তারিখ ঢাকা যাওয়ার জন্য টিকিট কিনতে একটি বাস কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি। তখন বিক্রির জন্য টিকিট উন্মুক্ত করার পর দুটি সিট অবিক্রীত দেখতে পাই। তখন ওই একটি সিট কিনতে চেষ্টা করেও পারিনি। পরে স্বাভাবিক সময়ের সাড়ে ৫শ টাকার বাসের টিকিট দালালদের কাছ থেকে কিনতে হয়েছে ১২০০ টাকায়।

লঞ্চ যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, লঞ্চের কাউন্টারে ঘুরেও কেবিনের একটি টিকিট কিনতে পারিনি। পরে লঞ্চঘাটে থাকা একজন দালালের কাছ থেকে দ্বিগুণ দামে কেবিনের টিকিট কিনতে হয়েছে। আর যাত্রী হয়রানিও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি তার।

বিজ্ঞাপন

বরিশাল সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। দালালদের ধরতে অভিযান চালানো হবে। তাছাড়া আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেব।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের উপ-পরিচালক সেলিম রেজা জানান, দালালদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। যাত্রী হয়রানিসহ যেকোনো অভিযোগ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বরিশাল নগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, লঞ্চ ও বাসটার্মিনালে দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধসহ শতভাগ যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ। এর অংশ হিসেবে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সদস্যরাও রয়েছেন। স্থায়ীভাবে এ সংকট দূর করতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কর্মকর্তাসহ জনসাধারণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা কামনা করেন তিনি।

আরও পড়ুন:

বরিশালের নেতাদের নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

বরিশালটাইমস

বরিশালটাইমস

২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ০২:৫২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বরিশালের নেতাদের নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

সকলকে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা

কয়েক ভাগে বিভক্ত বরিশাল বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছে দলটির হাইকমান্ড। রাজধানী ঢাকার গুলশানে বিএনপির কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাতের এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বরিশালের নেতাকর্মীদের মধ্যেকার বিভাজনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা আলোচনা করেন। এবং ত্রয়োদশ নির্বাচনের আগে বরিশালের নেতাকর্মীদের নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করাসহ শহীদ জিয়াউর রহমানের ধানের শীষের পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা এই তথ্য গভীর রাতে বরিশালটাইমসকে নিশ্চিত করেন।

বিএনপি সূত্র জানায়, ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। বরিশাল সদর উপজেলার কমিটি ভাঙা এবং নতুন কমিটিতে মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা স্থান পাওয়া নিয়ে একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়। এনিয়ে বরিশাল সদর আসনের সাবেক এমপি সরোয়ারকে দোষারোপ করাসহ তাকে বিষাদগার করে নানান বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপি নেতারা। সর্বশেষ এনিয়ে ফেসবুকে তাদের অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি লেখালেখিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সমাজমাধ্যম ফেসবুকও।

সূত্রগুলো জানায়, নির্বাচনপূর্ব বরিশালে নিজেদের মধ্যেকার এই বিরোধ পত্র-পত্রিকায় প্রচার হলে বিষয়টি বিএনপি হাইকমান্ডের নজরে আসে। এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একাধিক মাধ্যম বিষয়টি অবগত হয়ে এই রাজনৈতিক বিবাদ নিরসনে স্থায়ী কমিটির সদস্য এম জেড এ জাহিদ হোসেনকে নির্দেশনা দেন। সেই নির্দেশনার আলোকে বরিশাল সদর আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মজিবর রহমান সরোয়ার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিনকে বৃহস্পতিবার হাইকমান্ড তলব করা হয়।

জানা গেছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বরিশালের নেতাদের নিয়ে এম জেড এ জাহিদ হোসেনের বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় গুলশান বিএনপির কার্যালয়ে বসার সিদ্ধান্ত থাকলেও তা দুই ঘণ্টা বিলম্বে শুরু হয়। এই বৈঠকে সরোয়ার-জিয়াদের সাথে বিএনপি বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নুও অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় নেতা জাহিদের সাথে বরিশালের নেতাদের ফটোশেসনের একটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশ পেয়েছে। এই ছবি বৈঠকে অংশ নেওয়া বরিশাল বিএনপি নেতারা তাদের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বরিশালটাইমসকে জানান, নিজেদের মধ্যকার বিরোধ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচনের আগেই অভ্যন্তরীণ সকল বিবাদ মেটাতে চাইছে বিএনপির হাইকমান্ড।

বরিশাল সদর ০৫ আসনে প্রার্থিতার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে কী না জানতে চাইলে জিয়া সিকদার বলেন, এ নিয়ে হাইকমান্ড কোনো আলোচনা করেনি। তবে ধানের শীষের মনোনয়ন যিনি পাবেন, তার পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ কার নির্দেশনা রয়েছে।

মজিবর রহমান সরোয়ারও একই কথা জানিয়েছেন বরিশালটাইমসকে। বর্ষীয়ান এই নেতা জানান, অন্তর্কোন্দল ভুলে সকলকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল সদর আসনে কাউকে গ্রিনসিগনাল দেওয়া হয়েছে কী না জানতে সরোয়ার বরিশালটাইমসকে বলেন, বিষয়টি এখনও হাইকমান্ড চূড়ান্ত করেনি বা ঘোষণা দেয়নি।’

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:৪২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের দেড় মাস পর ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ২১ শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ২৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অ্যাজেন্ডা রেজল্যুশন আকারে অনুমোদন শেষে বৃহস্পতিবার তা সার্কুলেশন হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের শাহারিয়ার শাওন এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের তরিকুল ইসলাম নয়ন।

এর মধ্যে শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেনকে ছয় মাস বা এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, তরিকুল ইসলাম নয়নকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং শাহারিয়ার শাওনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কেটিং বিভাগের ১০ জন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ শিক্ষার্থীকে তাঁদের অভিভাবকসহ আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টরের কাছে হাজির হয়ে মুচলেকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রক্টর ড. রাহাত বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে এ সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই সংঘর্ষের পর বিষয়টি সিন্ডিকেট পর্যন্ত গড়ায়।

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:০৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

এবার বরিশালের বানারীপাড়ায় শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে উপজেলার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া সেই অপসারিত বিএনপি নেতা সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মামুন ফরাজী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক মো. খোকন হোসেন মামলার অভিযোগ তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে ১৪ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর নির্দেশে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ থেকে বিএনপি নেতা সবুর খানকে অপসারন করা হয়। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মোঃ রফিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত পত্রে সবুর খানকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বায়েজিদুর রহমানকে সভাপতি মনোনীত করে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। 

এদিকে  শুধু পদ থেকে অপসারণই নয় জালিয়াতি-প্রতারণা ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে সদ্য অসারিত সভাপতি আব্দুস সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিচারের দাবি করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির  অনুমোদন দেয়। এতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খানকে সভাপতি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হবে। বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে  সবুর খান নিজেকে বিএ পাস উল্লেখ করেন। কিন্তু এর  অনুকূলে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো কপি জমা দেননি। শিক্ষাবোর্ডে  অভিযোগকারী স্থানীয় মামুন ফরাজীর দাবী ছিল বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান  তার বায়োডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি এসএসসি পাস। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের যোগসাজশে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রায় দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ৫ হাজার টাকা ফি জমা দিয়ে গত ২৮ আগস্ট তিনি আবেদন করেন। মামুন ফরাজীর লিখিত ওই আবেদন করার প্রায় এক মাস  পরে বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে সহকারি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব বিদ্যালয় নিবন্ধন) মোঃ মাছুম মিয়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন। কিন্তু ২২ দিনেও আবেদনকারীকে এর ফলাফল প্রদান ও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছিল না ফলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ১৪ অক্টোবর লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। ফলে ওইদিনই স্কুল সভাপতি পদ থেকে সবুর খানকে অপসারণ করা হয়।

অপরদিকে পরস্পরের যোগসাজশে ওই বিদ্যালয়ের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৫ -৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ, প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পরেও প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন ও তিন হাজার টাকা করে মোবাইল বিল নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সম্প্রতি সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলম ও সদ্য অপসারিত সভাপতি সবুর খানের বিরুদ্ধে  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশালের আঞ্চলিক  পরিচালকের কাছে মামুন ফরাজী লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়টিও তদন্তনাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হল।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.