বরিশাল শহরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে কলাডেমা কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের কারণে ক্রমশই আতঙ্কের জনপদ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। বিমানবন্দর থানা সংলগ্ন এই এলাকাটিতে অনেকটা ওপেন চলছে সন্ত্রাসের রাজত্ব। জসিম ও রানা নামে দুই ভয়াত্বক সন্ত্রাস এখন এই আঞ্চলে আতঙ্কের নাম। তাদের বাহিনী দিন দুপুরে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও রাহজানিসহ কোপাকুপি পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিকালে স্থানীয় রেজাউল কবির রুবেল নামে এক যুবককে সন্ধ্যা রাতে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে এই বাহিনী। যেই ঘটনায় বাহিনী নিয়ন্ত্রক রানা হাওলাদার বর্তমানে হাজতবাস করছেন।
কিন্তু থেমে নেই তাদের সন্ত্রাস। বাকি আসামি অর্থাৎ রানার সহযোগি জসিম বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে মামলার বাদী মো. জালাল তালুকদারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি মামলা না তুলে নিলে তাকে হত্যা ও গুমের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় চহঠা গ্রামের বাসিন্দা জামাল তালুকদার জীবন সংশয়ে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশও তাকে বা তার পরিবারকে সহযোগিতা করছে না। বরং মামালার এজাহার থেকে বেশ কয়েকজনকে বাদ দিতে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। পুলিশের এই প্রশ্নবিদ্ধ ভুমিকায় জালাল তালুকদারের পরিবার এখন বেশি মাত্রায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিরাপদ নয় এমন ভাবনায় মামলার বাদী এখন আইনি সহায়তা না পেয়ে মিডিয়ার দুয়ারে ঘুরছেন। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি)তিনি বরিশালটাইমসকে জানিয়েছেন মামলায় ক্ষুব্ধ রানা-জসিম বাহিনীর সন্ত্রাসীরা কিভাবে হয়রানির ওপরে রাখছে।
একদিকে সন্ত্রাসীদের ক্রমাগত হুমকি অপরদিকে ছেলের চিকিৎসাভার বহন করা অস্বচ্ছল জালাল তালুকদারের পক্ষে চালানো কষ্টসাধ্য। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, জালাল তালুকদারের ছেলে রেজাউল করিম রুবেলের সাথে গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ক্রিকেট খেলা নিয়ে অভিযুক্তদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষুব্ধ জসিম-রানা বাহিনী ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা রাতে বিমানবন্দর থানা লাগোয়া কলাডেমা রেন্ট্রিতলা নামক স্থানে রুবেলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। একপর্যায়ে রানা ও জসিমসহ ১০ থেকে ১৫ জন একত্রিত হয়ে তাকে এলোপাতারি পিটুনী দেয়।
এতে রুবেলের বাম চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ওই সময় তার সাথে থাকা মোটরসাইকেল ভাংচুরের পাশাপাশি নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে শেবাচিমে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসায় ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এই ঘটনার পরপরই বাহিনী প্রধান কলাডেমা এলাকার শাহিন হাওলাদারের ছেলে মো. রানা হাওলাদার, মোক্তার হোসেন তালুকদারের ছেলে মো. সুমন তালুকদার, সোনা মিয়ার ছেলে মো. রাজিব, বাহাদুর সরদারের ছেলে শান্ত সরদার, আবুল সরদারের ছেলে শাওন সরদার, দেলোয়ার মাস্টারের ছেলে মো. জসিম, কাজল মিয়া ছেলে মো. সজলসহ আরও অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দেন।
কিন্তু অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছিল না। পরবর্তীতে আদালতে মামলা করার বিষয়টি শুনে দুই দিন বাদে পুলিশ মামলা নেয়। কিন্তু কোনা আসামিকে আটকে ভুমিকা রাখেনি। তবে গ্রেফতারের ভয়ে অভিযুক্তরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
সেখান থেকে রানা হাওলাদার বাদে সকলে জামিনে মুক্ত হয়ে মামলার বাদি রুবেলের পিতা জামাল তালুকদারকে হত্যা ও গুমের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এমন বাস্তবতায় মামলার বাদী পুলিশের সহায়তা না পেয়ে মিডিয়াপাড়ায় ঘুরে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।’’
শিরোনামOther