২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

উজিরপুরে নদী দখল করে প্রভাবশালীর ভবন নির্মাণ

Zahir Khan

প্রকাশিত: ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ, ১৭ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক,বরিশাল: বরিশালের উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নের প্রবাহমান সন্ধ্যা নদীর শাখা কঁচা নদী ও নদী পাড়ের সরকারি খাস জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন স্থানীয় এক ভূমিদস্যু ও তার সহযোগীরা। এতে বাঁধা প্রদান করায় স্থানীয় এক শিক্ষক পরিবারকে বসতঘরে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দক্ষিণ হারতা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, নদীর যে স্থানটি দখল করে বালু ভরাটের পর সুভাষ পাকা স্থাপনা নির্মান করছে, পূর্বে ওই স্থানটি দিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা নদীর পানিতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতো। সুভাষের দখলের কারণে বর্তমানে বাজারের ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভূমিদস্যু সুভাষ চন্দ্র সরকার এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তারা (ব্যবসায়ী) সুভাষের হাত থেকে সরকারি খাস জমি ও সন্ধ্যা নদী দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

দক্ষিণ হারতা পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগী অনাথ বন্ধু হালদার অভিযোগ করে বলেন, হারতা মৌজায় ১৫৩৩/১৫৩৫ নং দাগের মধ্যে ২.৫ শতক জমি তিনি দলিল মূলে ক্রয় করে দীর্ঘদিন থেকে বসতঘর উত্তোলণ করে তিনি বসবাস করে আসছেন। তার বসত ঘরের সীসানার পরের সরকারি খাস জমি ও কচাঁ নদীর অবস্থান।

তিনি আরও জানান, গত কয়েক মাস পূর্বে রাতের আধাঁরে সন্ধ্যা নদীর শাখা কচাঁ নদীর আংশিকসহ সরকারি খাস জমি দখল করে বালু ভরাট করেন চিহ্নিত ভ‚মিদস্যু দক্ষিণ হারতা গ্রামের মৃত মনোহর সরকারের ছেলে সুভাষ চন্দ্র সরকার। গত কয়েকদিন থেকে ভ‚মিদস্যুদের দখল করা সরকারি জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এসময় নদী ও সরকারি খাস জমি দখলের প্রতিবাদ করায় প্রভাবশালীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনাথ বন্ধু হালদার আরও বলেন, সরকারি জমি দখলের পর আমাকে বসতভিটে থেকে উৎখাত করতে ভ‚মিদস্যুরা সরকারি জমিতে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করে আমার (অনাথ বন্ধু) ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। উপায়ান্তর না পেয়ে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ওই জমিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ১৪৪/৪৫ ধারা জারি করিয়েছি। এতে ভ‚মিদস্যুরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে (অনাথ বন্ধু) বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।

অভিযুক্ত সুভাষ চন্দ্র সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি খাস জমি তিনি ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন। নদী দখলের ব্যাপারে তিনি বলেন, হয়তো কিছু অংশ নদীর মধ্যে পড়েছে। তবে সরকারি খাস জমি কার কাছ থেকে এবং কিভাবে ক্রয় করা হয়েছে, তিনি (সুভাষ) তার কোন সদূত্তর দিতে পারেননি।

নদী দখলের বিষয়ে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নদী কিংবা সরকারী খাস জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। খুব শীঘ্রই সরেজমিনে কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে দখল মুক্তসহ দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

26 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন