২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

কাজে আসছে না আড়াই কোটি টাকায় নির্মিত সেতু!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৩৬ অপরাহ্ণ, ২৭ এপ্রিল ২০২২

কাজে আসছে না আড়াই কোটি টাকায় নির্মিত সেতু!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও বরগুনা:: সংযোগ সড়কের জমি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় বরগুনার বামনা উপজেলায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কাজে আসছে না। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর পাশে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকো দিয়ে খালটি পারাপার করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঠিকাদার ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের দাবি, স্থানীয়রা সংযোগ সড়ক নির্মাণের জায়গা ছাড়ছেন না, সে কারণে কাজের ধীর গতি।

বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের উত্তর রামনা খোলপটুয়া, গোলাঘাটা ও ডৌয়াতলা এই চার এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। রামনা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বামনা উপজেলা সদরে যাতায়াতে খোলপটুয়া হয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হয়। ব্রিজের দক্ষিণপাড়ের গোলাঘাটা-ডৌয়াতলা সড়ক, উত্তরপাড়ে উত্তর রামনা থেকে খোলপটুয়া সড়ক। এই দুই সড়কের সংযোগে ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজের উত্তরপাড়ে রামনা শেরেবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের জুন মাসে ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রাক্কলন অনুমোদন দেয় এলজিইডি। এমএম ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায়। ২০১৮ সালের শেষের দিকে ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান পুরোনো লোহার সেতু ভেঙে গার্ডার ব্রিজের কাজ শুরু করে। কিন্তু পিলার বসানো নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় নির্মাণকাজ বন্ধ রাখে। পরে ২০১৯ সালের শেষের দিকে ফের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেন ঠিকাদার। সেতুর উভয় পাড়ের সড়ক অপ্রশস্ত হওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণের জমি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর কাজ ফেলে রেখে চলে যান ঠিকাদার। পরে স্থানীয়রা সেতুর পশ্চিম পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে খাল পার হচ্ছেন স্থানীয়রা। বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও যানবাহন চলতে পারছে না।

রামনা শেরেবাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা আগে পুরোনো সেতু পারাপার করতে পারত। ব্রিজ হওয়ার পরও এখনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাঁশের সেতু পার হতে হয়। শিক্ষার্থীদের অনেকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। এখানে সংযোগ সড়ক নির্মাণ খুব জরুরি।

কলেজ শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে কলেজে যেতে হয়। কিন্তু এখানে এসে যানবাহন থেকে নেমে ওপারে গিয়ে আবার গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এটি খুবই বিড়ম্বনার ও ভোগান্তির।

ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, ‘সংযোগ সড়ক নির্মাণে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার ভিটেমাটির জমি ছাড়তে হবে। এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কাজ বন্ধ হয়েছে। আমি ওই বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্ষতিপূরণ দিলে সংযোগ সড়কের জন্য জমি ছাড়বেন তারা।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যোগদানের পর সেতুটির বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। সেতুর সংযোগ সড়ক পুনর্নির্মাণের জন্য বিভাগীয় প্রকৌশলী ও প্রধান প্রকৌশলীর কাছে প্রাক্কলন করে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করবে।’

8 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন