২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

কোটি মানুষের স্বপ্ন জোড়া লেগেছে অভিন্নরুপে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০৬ অপরাহ্ণ, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বৈশাখের ওই রুদ্র ঝড়ে আকাশ যখন ভেঙে পড়ে, ছেঁড়া পাল আরও ছিড়ে যায় তখনও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরী বেয়ে চলেন। আর বাংলাদেশের মানুষ ভোরের পাখির গান শোনে। বিশ্বব্যাংক যখন ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ১২০০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল আটকে দেয় যখন নিন্দুকের নিন্দার ঝড়ে দেশ ভেসে যাচ্ছিল, তখন বীরের বেশে রাষ্ট্রনায়কোচিত ভঙ্গিতে পদ্মা সেতুর কাজ চালিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসার মধ্য দিয়ে রাজধানী আর দক্ষিণবঙ্গের কোটি মানুষের স্বপ্ন আজ অভিন্নরুপে জোড়া লাগতে শুরু করেছে। তারপরে বাকি রইবে শুধু তুলির শেষ পোঁচ টুকুই, সড়ক যোগাযোগ । আগামী মার্চের মধ্যেই সেটিও সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়।

আসলে, এই ‘দোজখপুর নিয়ামত’ বাংলাদেশ একটা প্যারাডক্স। এখানের মানুষ নিরীহ, ভাত খেয়ে ঝামেলাহীনভাবে থাকে। আবার সেই জাতিই করোনা কালে দেশের অর্থণীতি যন্ত্রকে সচল রেখে ৫.২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের মত পরাশক্তিগুলা মন্দায় প্রবেশ করে। একাত্তরে পৃথিবীর অন্যতম প্রশিক্ষিত পাক হানাদার বাহিনীকে সোভিয়েত কিংবা ভারতের পরিত্যক্ত অস্ত্র দিয়ে হারিয়ে দিয়েছিল এই বাঙ্গালী জাতি।

মহাপরাক্রমশালী স্বৈরশাসক এরশাদ যার শাসনকাল শেষ হবে না মনে করা হচ্ছিল, তার বিরুদ্ধে এক নূর হোসেন দাঁড়িয়ে দেখিয়ে দিল। কয়েক বছরের মাঝে এমন বিদায় নিল যার ক্ষমতার মঞ্চে আর কোনদিন ফেরা হয় নাই। কখনো আওয়ামী লীগ বা কখনো বি এন পির ‘বি টিম’ হয়ে থাকতে হয়েছে।

পদ্মা সেতু বাঙালি জাতির ধ্বংসের মধ্য দিয়ে জেগে ওঠার গল্প। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের রাস্তাঘাট, অফিস আদালত ছিল না। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে বলেছিল ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। সেই ঝুড়িই আজ মধ্যম আয়ের দেশে কাতারে প্রবেশ করেছে, উচ্চ আয়ের দেশ হওয়ার প্রত্যয়ের কথা জানান দিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার পথে প্রতিদিনই এগিয়ে যাচ্ছে অল্প অল্প করে। বঙ্গবন্ধু দেখিয়ে দিয়ে গেছেন পশ্চিমা প্রতাপের সাথে কিভাবে চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হয়। বিশ্বব্যংককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শেখ হাসিনা নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে পিতার পথেই হাঁটলেন, সাথে করে নিয়ে গেলেন জনতাকে।

বিশ্বব্যাংকের কপটচারী মনোভাব সেদিনই প্রকাশিত হয়ে যায় যেদিন কানাডার একটি আদালত পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগে জড়িত কানাডার প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে খারিজ করে দেয়। ‘বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের নামে এলার্জি আছে বিশ্বব্যংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিকের’ এমন মন্তব্যও করেছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠিত সরকারই বৃহৎ এ কর্মযজ্ঞের সমাপ্তি রেখায়, নেপথ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আজ রবার্ট জোয়েলিক এসে দেখে যান কি দুর্মর এই জাতি। সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন