১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ ও জলবায়ু সুবিচার দাবি বরিশালের তরুণ জলবায়ু কর্মীদের

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৪৫ অপরাহ্ণ, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: জলবায়ু সুরক্ষা ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে নবায়নযোগ্য শক্তির উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ, জীবাশ্ম জ¦ালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ এবং জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানিয়েছে বরিশালের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা। ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানি বিশেষ করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে (এলএনজি) অর্থায়ন বন্ধ এবং এলএনজি আমদানি নির্ভরতা কমাতেও সরকার এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহবান তাদের। তারা ভবিষ্যতের জন্য একটি জলবায়ু ও জ্বালানি-সুরক্ষিত বাংলাদেশ দেখতে চান। পরিবেশের ক্ষতি করে এমন প্রকল্পগুলো বন্ধ এবং জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ না করে টেকসই প্রকল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান বক্তারা।

বৈশি^ক জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার বরিশাল শহরের ত্রিশগোডাউন এলাকায় জলবায়ু ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়। সুইডিস জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের গড়ে তোলা স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিচালিত আন্দোলন ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’র বাংলাদেশ গ্রুপ, প্রতীকি যুব সংসদ ও ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সদস্যরা মিলে জলবায়ু ধর্মঘটের আয়োজন করেন। নানা ধরনের দাবি সংবলিত প্লাকার্ড হাতে তরুণেরা কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

এসময় বক্তব্য রাখেন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের এডভোকেসি এবং ক্যাম্পিইন সম্বনয়কারী আরিফুর রহমান শুভ, জেলা সম্বনয়কারী আশিকুর রহমান সাকিব এবং সদস্য ময়ূরী আক্তার টুম্পা।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্রমাগত মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় উন্নত দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করে এসময় তরুণ জলবায়ু কর্মীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাবের কারণে বিশ্ব এখন একটি জটিল সময় পার করছে, যা ইতিমধ্যে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী মানবতার জন্য রেড অ্যালার্ট হিসেবে ঘোষণা করেছে। উন্নত দেশগুলোকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ এ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। পাশাপাশি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবসায় বিনিয়োগ না করে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে এখনই উদ্যোগী হতে হবে। সরকার এবং বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই ক্ষতিকারক জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে জলবায়ু বিধ্বংসী কার্যকলাপের জন্য দায় নিতে হবে এবং সেখান থেকে সরে এসে অবিলম্বে উল্লেখযোগ্যভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

জলবায়ু দুর্যোগজনিত ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবিলায় কাজ করার এখনই সময়। আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি দূষণকারী দেশগুলো থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। জলবায়ু এবং জ্বালানি সংকট শুধু একটি দুর্যোগই নয়; এটা আমাদের জন্য একটি বড় সতর্ক বার্তাও।’’

এই তরুণ জলবায়ু কর্মী শিল্পোন্নত দেশগুলোর কাছে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর পক্ষে ন্যায়বিচার দাবি করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাদের ক্ষতিপূরণের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যথেষ্ট পরিমাণ আর্থিক তহবিলের ব্যবস্থা করে দ্রুত কৌশল বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে নিঃশর্তভাবে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর আর্থিক ঋণ বাতিলেরও দাবি সকলের।

তরুণ জলবায়ুকর্মীরা বাংলাদেশের চলমান বিদ্যুৎ সংকট ও আর্থিক বোঝার পেছনে ক্ষতিকর ও দামের দিক থেকে অস্থিতিশীল জীবাশ্ম জ্বালানি এলএনজি আমদানির প্রভাব উল্লেখ করে এর সাথে সংশ্লিষ্টদের সমালোচনা করেন। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, বাড়তি বিদ্যুৎ বিল ও ঘন ঘন লোডশেডিং এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জগুলোও তুলে ধরেন। তরুণরা বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের আসন্ন বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য শক্তির অনুপাত উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।’

 

99 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন