২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পটুয়খালীর মির্জাগঞ্জে বৌভাতের অনুষ্ঠানে বরের মৃত্যু

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৪৩ অপরাহ্ণ, ০৩ ডিসেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, মির্জাগঞ্জ:: বৌভাতের অনুষ্ঠানের সকল কার্যক্রম চলছিল ধুমধাম করে। কনে পক্ষ ঢাক ডোল পিটিয়ে আনন্দ উল্লাস করে গাড়ি বহর নিয়ে উপস্থিত হন বরের বাড়িতে। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানেই খবর ছড়িয়ে পড়ে বর মারা গেছেন। এমনই ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার (২ডিসেম্বর) মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বাজিতা গ্রামে। এলাকায় এ রকম প্রথম কোন ঘটনায় সর্বত্রই শোকের মাতম ছড়িয়ে পড়েছে। বিয়ের সব আয়োজন রেখেই বিকাল ৫টায় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয় বর মো.রফিকুল ইসলামের লাশ।

জানা যায়, গত সোমবার (৩০ নভেম্বর) মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বাজিতা গ্রামের সফেজ মিয়ার ছেলে মো. রফিকুল ইসলামের সাথে পাশর্^বর্তী বেতাগী উপজেলার বাসন্ডা গ্রামের মো. মন্নান মিয়ার মেয়ে ময়না আক্তারের সাথে কন্যার বাড়িতে বরযাত্রী নিয়ে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিবাহ কাজ সম্পন্ন হয়। ওই দিনই মেয়েকে বৌ সাজিয়ে নিয়ে আসা হয় বরের বাড়িতে। একদিন পরই মঙ্গলবার রাতে বর রফিক নিজের বাড়িতে স্বাভাবিক জ¦র নিয়ে একটু অসুস্থ বোধ করে। বুধবার সকালে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বরিশাল শেবাচিমে। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে বুধবার বর রফিকের বাড়িতে কনের পক্ষের জন্য বৌভাতের আয়োজন করা হয়। বৌভাতে কনে পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে পৌঁছলেই খবর আসে রফিক আর বেচেঁ নেই। বিয়ের আনন্দ ওখানেই থেমে যায়।

একমাত্র সন্তান ছেলেকে হারিয়ে বাবা- মা উভয়েই পাগল প্রায়। আত্মীয়-স্বজন এলাকাবাসীর সান্তনা দেয়ার কোন ভাষা নেই। ঘরের চার পাশ বিয়ের সাজে সবই পরে রয়েছে। মেহমানদের জন্য রান্না করা খাবার উঠানে পাতিলেই রয়ে গেছে।

এদিকে স্বামীর মৃত্যুর খবরে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পরে নব-বধূ ময়না আক্তার। তার শরীরেও স্বাভাবিক জ¦রের উপশম দেখা দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের তিনি ৪র্থ তালায় ৫নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।

নিহত রফিকুল ইসলামের চাচা পশ্চিম চৈতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আনসার উদ্দিন বরিশালটাইমসকে জানান, রফিকের বাবা সেনাবাহিনীর রেকর্ড অফিসে সিভিলে চট্রগ্রাম ক্যান্টেনমেন্টে কর্মরত আছেন। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মা বাড়িতে থাকতেন। রফিক ও আমি রবিবার একত্রে বিয়ের বাজারঘাট করি। আজ আমাদের মাঝে সে আর নেই। সব কিছুই শেষ হয়ে গেল।’

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন