২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস আটকে চাঁদাবাজি: জড়িত ২ পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৩৭ অপরাহ্ণ, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস আটকে চাঁদাবাজি: জড়িত ২ পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: ডিবি পুলিশ (গোয়েন্দা) পরিচয়ে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস আটকে চাঁদাবাজির অভিযোগে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এসআই (উপ-পরিদর্শক) মর্যাদার ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করা হয়েছে। ইব্রাহিম এবং মেহেদী হাসান নামের এই কর্মকর্তাদ্বয়কে কোতয়ালি মডেল থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। গত ২৭ সেপ্টম্বর রাতে কুয়াকাটা থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস শহরের বাংলাবাজার এলাকায় আটকে পর্যটকদের কাছে এক লক্ষ টাকা উৎকোচ দাবি করেন এই দুই কর্মকর্তা। এবং দেনদরবার শেষে ওই মাইক্রোবাসটির যাত্রীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে দেন। এনিয়ে স্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘বরিশালটাইমস’ পর্যটকদের একজনের বক্তব্যনির্ভর একটি সংবাদ প্রকাশ পেলে সেটি বরিশাল পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি নিবন্ধিত হয়। পাশাপাশি সংবাদের সূত্র ধরে অপর একটি আইশৃঙ্খলা বাহিনীও তদন্তে নামে।

পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বরিশালটাইমসে প্রকাশিত সংবাদটি শীর্ষ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের নজরে আসলে তিনি ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পরীক্ষা করেন এবং এতে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের দুই এসআই ইব্রাহিম এবং মেহেদী হাসানের সম্পৃক্ততা পান। শীর্ষ এই পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে মাঠপুলিশের ওই দুই কর্মকর্তাকে শাস্তিস্বরুপ বুধবার রাতে থানা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা স্বীকার করলেও এনিয়ে বেশিকিছু বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিভিন্ন মাধ্যম জানা যায়, গত সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত সোয়া ১০টার মধ্যে বরিশাল শহরের বাংলাবাজার এলাকায় ১১ পর্যটকবাহী একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালান সাদা পোশাকধারী কয়েকজন ব্যক্তি। ওই সময় তারা নিজেদের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দেন এবং তল্লাশি চালিয়ে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস থেকে ৪ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করেন। এরপর ওই মাইক্রোবাসের যাত্রীদের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করা করেন। দেনদরবার শেষে ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারীরা পর্যটকদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

পর্যটকদের একজন শহরের আলেকান্দা এলাকার বাসিন্দা তিনি উল্লেখিত ঘটনাটি সংবাদকর্মীদের কাছে বর্ণনা করেন। এবং এর প্রতিকার চেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সুদৃষ্টি কামনা করেন। পাশাপাশি বিষয়টি তুলে ধরে বরিশালটাইমস সংবাদ প্রকাশ করলে এনিয়ে সুশীলমহলে ক্ষোভের দেখা দেয়। পরে ঘটনাটি তদন্ত করতে মাঠে নামে র‌্যাব-পুলিশ।

এরই মধ্যে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হয়। এবং ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের দুই এসআইয়ের সম্পৃক্ততা মেলে। এসআই ইব্রাহিম এবং মেহেদী হাসান নামের এই দুই কর্মকর্তা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোতয়ালি মডেল থানা মেহেদী হাসান নামের তিন পুলিশ কর্মকর্তা থাকলেও যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তিনি মেহেদী হাসান-৩ বলে জানা গেছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁইয়া এই তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করলেও বিস্তর কিছু বলেননি।

পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে- মাঠপর্যায়ের এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রাথমিক শাস্তিস্বরুপ থানা থেকে সরিয়ে নেওয়া হলেও ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগটি প্রমাণিত হলে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

 

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন