২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পিরোজপুরে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে ২৪ শিক্ষার্থী অসুস্থ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ০৯ এপ্রিল ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, পিরোজপুর :: পিরোজপুরের নাজিরপুরে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে ২৪ শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অসুস্থ ওই শিক্ষার্থীদের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) উপজেলা নাওটানা বিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলী আশ্রাফ জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মী মৃণাল হালদার তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ান। এর আধা ঘণ্টা পরই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে শুরু করে। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী লক্ষ্মী রানী শিকদার অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর কিছু সময় পরে একই শ্রেণির সুমি শিকদার, সুমাইয়া আক্তার, লিজা আক্তার, ইভা সরকার, ইলা সরকার, সাকুরা কনা, সপ্তম শ্রেণির মানছুরা আক্তার, লামিয়া আক্তার, স্বর্না বড়াল, রামিয়া আক্তার, নার্গিস আক্তার, দশম শ্রেণির মীম আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। পড়ে তাদের অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।

এর পরে বিকাল সোয়া ৪ টার দিকে একই বিদ্যালয়ের শিবানী হালদার, সাদিয়া আফরিন, অঞ্জলী রানী, ফাল্গুনী আক্তার, শিউলী আক্তার, লাইজু আক্তার, মানসুরা আক্তার, রিমা খানম, তন্নী খানম, সুমাইয়া খানম, তামান্না আক্তার ও আজাহার মল্লিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ২৫ শিক্ষার্থীকে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই কষ্টে চিৎকার করছে। তাদের সকলের হাতে সেলাইন দেয়া। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া আক্তার জানায়, কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ার ১৫/২০ মিনিট পরই তার প্রথমে বমি বমি অনভব হয়। পরে প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা ও হাত-পায়ে খিচুনি হয়।

ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সাকুরা খানম জানায়, কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ার কিছু সময় পর প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা ও মাথা ঘোরানো অনুভব হয়। সে কয়েক বার বমিও করেছে।

খবর পেয়ে নাজিরপুর থানার ওসি মো. মুনিরুল ইসলাম মুনির অসুস্থ ওই শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার ঢালী জানান, খালি পেটে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর কারণে গণহিস্ট্রোরিয়া আক্রান্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। এটা একজনের হলে এর দেখা দেখি অন্যরাও আক্রান্ত হয়ে পড়ে। কৃমিনাশক ঐষধের কোনো সমস্যায় এ ঘটনা ঘটেনি। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। আক্রান্তরা সবাই শঙ্কামুক্ত।

এ বিষয়ে পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডা. ফারুক আলম জানান, এটি কৃমির ওষুধ খাওয়ার জন্য কোনো সমস্যা নয়। বিষয়টি ‘মাক্স সাইকোজেনিক ইলনেস’ জনিত ঘটনা। একজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তা অন্যরা দেখে ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ জাতীয় সমস্যা একটু কাউন্সিলিং করলেই ঠিক হয়ে যাবে। বড় ধরনের কোনো সমস্য নয়।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন