২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নমানের খাবার, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৪ অপরাহ্ণ, ১৭ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ইফতারের খাবার সরবরাহ করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এসব খাবার নিম্নমানের, পচা বাসি ও দুগর্ন্ধযুক্ত। ফলে সে খাবার খেতে না পেরে ফেলে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সারাদিন রোজা রেখে একটা মানুষ এ খাবার কীভাবে খায়? প্রশাসনের খাবারে মানের বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত ছিল। বরং তারা বারংবার এভাবেই করে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই।

এ নিয়ে শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলটির নিচতলায় বিক্ষোভ করেন ও প্রশাসনের কাছে জবাব চেয়ে শ্লোগান দেন। ইফতারের পরে নামাজ শেষে শেরে বাংলা ও বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবারের মান নিয়ে প্রশাসনকে কটুক্তি করে চিল্লাচিল্লি করতে দেখা যায় ও থালাবাসন নিয়ে বাজনা বাজিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।

এই বিষয়ে দুই হলের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা জানান, পোলাওর সাথে মাংসের পিস ছিল ছোট। রাইস অনেক বেশি হলেও ঝোল ছিল পরিমাণে খুবই কম। রাইসটা ভালো সিদ্ধ ছিল না। পোলাও থেকে একধরনের খারাপ ঘ্রাণ আসছিল। তাই শিক্ষার্থীরা খেতে পারে নাই। তাদের ভাষায় এগুলো খাদ্য নয় বরং অখাদ্য। এছাড়াও ইফতারের সাথে আলুর চপ ছিলো নষ্ট। তবে এতো খাবারের মধ্যে জিলাপিটাই শুধু ভালো ছিল।

ডায়নিং পরিচালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থী প্রতি ইফতারের জন্য ১৫০ টাকা বাজেট দেয়া হয়েছে তাদেরকে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আবাসিক হলগুলোতে ইফতারির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চারটি হলে মোট ৪০ হাজার টাকা বাজেট দিয়েছে বাকি টাকা হল কর্তৃপক্ষ বহন করেছে।

শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল মোমেন বলেন, শেরেবাংলা হলে ইফতারির জন্য টোকেন বিড়ম্বনার সমাধান হওয়ার পরপরই আজকে হল কতৃপক্ষের দেওয়া পঁচা, নিম্নমানের খাবার শিক্ষার্থীরা খেতে পারেনি। প্রশাসনের এর থেকে লজ্জার আর কি হতে পারে! সারাদিন রোজা রাখার পর যদি এমন পঁচা, নিম্নমানের খাবার খেয়ে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়, এর দায়ভার হল প্রসাশনের নিতে হবে। হল প্রশাসনের এমন অবহেলায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ।

বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, হলের জীবনে সবচেয়ে জঘন্য স্বাদের খাবার খেলাম। ধিক্কার প্রশাসনকে।

শেরে বাংলা হলের ক্যান্টিন পরিচালক মামুন দোষ স্বীকার করে বলেন, আসলে আমরা খাবারে মুরগির ঝোলটা কম দিয়েছি যাতে বাটিতে খাবারটা যেন নষ্ট না হয়ে যায় সেজন্য। মানহীন ও পচা খাবারে কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরাও আসলে বিব্রত যে এমনটা কেন হলো আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন ভালো মানের খাবারটা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। আসলেই আমি দুঃখিত এমন বিষয়ের জন্য।

শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টের কাছে এমন নিম্নমানের খাবার পরিবেশন সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, সাতশত জনের খাবার রান্না করা হয়েছে, আপনি কতজনের কাছ থেকে শুনেছেন? আর এ বিষয়ে আমি এখনও জানি না।

বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট মো. আরিফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসে নাই। এটা এক ধরনের ভুল তথ্য।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড মো বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রভোস্টের সাথে কথা বলুন। হলের বিষয় প্রভোস্টরা দেখে ৷

এর আগে টোকেন পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে হল প্রশাসন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা এই টোকেন পদ্ধতিকে বিতর্কিত ও বিড়ম্বনা উল্লেখ করে উপাচার্যের কাছে টোকেন পদ্ধতির বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি চেয়ে লিখিত আবেদন করে। শেরে বাংলা হল সে দাবি রাখলেও বঙ্গবন্ধু হলে টোকেন নিয়েই খাবার পরিবেশন করেছে হল কর্তৃপক্ষ।’

27 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন