২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

‘উন্নয়নে নতুন দিগন্ত’ বরিশালের সাহেবেরহাট সেতু

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:০২ পূর্বাহ্ণ, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই দরবার শরিফসহ গোটা ইউনিয়নের সাথে বরিশাল মহানগরীর সরাসরি সড়ক সংযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষে সংযোগ সড়কসহ সাহেবেরহাট সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নদী বেষ্টিত এ ইউনিয়নটিকে বরিশাল মহানগরীর সাথে সংযুক্ত করার লক্ষে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যায়ে পৌনে ৭শ ফুট দীর্ঘ একটি পিসি গার্ডার সেতু এবং এক কিলোমিটার সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ সম্প্রতি শেষ করেছে।

এর ফলে বরিশালের সাথে চরমোনাই হয়ে বিচ্ছিন্ন উপজেলা হিজলা-মুলাদী ও মেহেদিগঞ্জের সড়ক যোগাযোগও সহজতর হলো। এমনকি এ সেতুটি নির্মাণের ফলে প্রতি বছর দু’বার বার্ষিক মাহফিলে দেশের দূর-দুরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের চরমোনাই দরবারে যাতায়াতও সহজতর হলো।

এতদিন মুসল্লিগণ কীর্তনখোলা ও সাহেবেরহাট নদী নৌকায় পার হয়ে দরবারে যাতায়াত করতেন। ফলে প্রায় প্রতিবছরই ছোট-বড় দুর্ঘটনায় অনেক জানমালের ক্ষতি হত।

বিআইডব্লিউটিএ-র আপত্তির মুখে দু’দফায় নকশা সংশোধন করে সেতুটির উচ্চতা বৃদ্ধি ও সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ সম্প্রসারিত করে নির্মাণ শেষে সম্প্রতি তা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছে এলজিইডি। দু’টি এ্যাবাটমেন্টের ওপর প্রায় ৬৬০ ফুট দৈর্ঘ ও ১৮ ফুট প্রস্থ এ সেতুটি ৪টি পিয়ারে ৫টি স্প্যানে নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার টাইপের এ সেতুটির নকশা প্রনয়নও করেছেন এলজিইডির প্রকৌশলীগণ। সেতুটির মূল স্প্যানটি সাহেবেরহাট নদীর সর্বোচ্চ জোয়ার থেকে ২৬ ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে সেতুটির তলদেশ দিয়ে অনধীক ১শ’ ফুট দৈর্ঘের যাত্রীবাহী নৌযান ছাড়াও ৩শ’ টন বহনক্ষম পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করতে পাড়ছে।

সেতুটি নির্মাণের ফলে নদী বেষ্টিত চরমোনাই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধীক মানুষ বরিশাল মহানগরী হয়ে সারা দেশের সাথেই সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসল।

এতোদিন বরিশাল মহানগরীর দুটি খেয়াঘাট থেকে দেশীয় যন্ত্রচালিত নৌকায় করে উত্তাল কীর্তনখোলা নদী পাড় হয়ে চলাচল করতে হতো এ ইউনিয়নসহ সন্নিহিত এলাকার মানুষকে। আবার কেউ কেউ সড়ক পথে বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের শাহেবের হাট ঘাটে এসে সেখান থেকেও নদী পাড় হয়ে চরমোনাই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতেন।

এমনকি জেলা ও বিভাগীয় সদরের সাথে নিবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ না থাকায় এতদিন চরমোনাই ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ অবকাঠামোর তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোও খুব ভাল কাজ করছে না। এসব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ মানুষ কাঙ্খিত সেবা না পাবারও অভিযোগ রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ না থাকায় এসব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তেমন কোন নজরদারীও ছিল না। অথচ বরিশাল জেলা ও বিভাগীয় সদর থেকে এ ইউনিয়নটির দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।

সাহেবেরহাট সেতু নির্মাণের ফলে ‘আলোর নিচে অন্ধকার’ খ্যাত চরমোনাই ইউনিয়ন দেশের উন্নয়নের মূল ধারায় সংযুক্ত হবে বলেও আশা করছেন এলাকাবাসী।’

12 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন