২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বিত্তশালী আ.লীগ নেতা পেলেন বয়স্ক ভাতার কার্ড!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:১৮ অপরাহ্ণ, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

বার্তা পরিবেশক, অনলাাইন:::: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এক বিত্তশালী আওয়ামী লীগ নেতার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই ব্যক্তি হলেন, উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চারু চন্দ্র গাইন।

তবে কীভাবে তার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি কেন বয়স্ক ভাতার কার্ড করব? আমি কোনো কার্ডের জন্য আবেদন করিনি। আমি যেহেতু এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান সেহেতু আমার তথ্য ইউনিয়ন পরিষদে থাকতেই পারে। আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ কাজ করা হতে পারে।’

তবে এ বিষয়ে কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা সাংবাদিকদের জানান, ‘চারু চন্দ্র গাইন আমার ইউনিয়ন সচিবের কাছে নিজে এসে তার এবং স্ত্রীর যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে যান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ও সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে যাচাই বাছাই করেই কার্ড দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন দেখেন, স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে হলে এলাকার কিছু কিছু লোকের কাছে আমাদের সামাজিক কারণে হলেও দায়বদ্ধতা থাকে। আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও অনেক কিছু করা লাগে।’

এ বিষয়ে কলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুনীল চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, ‘কলাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান চারু চন্দ্র গাইন বয়স্ক ভাতার জন্য নিজে পরিষদে এসে আমার কাছে তার ছবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছিলেন। সে মোতাবেক আমরা তার কাগজপত্র উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে জমা দিয়ে ছিলাম। তার ইচ্ছায়-ই তার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে।’

সম্প্রতি কোটালীপাড়া উপজেলা অফিসে যোগ দেওয়া সমাজসেবা কর্মকর্তা মো রফিকুল হাসান শুভ বলেন, ‘আমি আসার পর এখন পর্যন্ত এখানে কোনো ভাতার কার্ড প্রদান করা হয়নি। যদি ভাতার কার্ড প্রদানে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তদন্ত করে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারু চন্দ্র গাইনের নামে ২০১৮ সালে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এই বয়স্ক ভাতার কার্ড ইস্যু করা হয়। তার বাবা মৃত চিত্তরঞ্জন গাইনও কলাবাড়ি ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ছাড়া চিত্তরঞ্জন গাইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও ছিলেন।

চারু চন্দ্র গাইনের দুই ছেলে। বড় ছেলে চয়ন গাইন ব্যবসা করেন এবং ছোট ছেলে বিষ্ণু গাইন বেসিক ব্যাংকে অফিসার পদে চাকরি করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘চারু চন্দ্র গাইন পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া অনেক সম্পদের মালিক। তিনি কীভাবে বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিত্তশালী চারু চন্দ্র গাইনের নামে এ ভাতার কার্ড হলেও ওই ইউনিয়নে অনেক দরিদ্র মানুষ এখনো বয়স্ক ভাতার কার্ড পায়নি।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন