২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

মেজর রাশেদ হত্যার দৃশ্য বর্ণনা করে যা জানালেন সঙ্গে থাকা সিফাত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৫৮ অপরাহ্ণ, ১৩ আগস্ট ২০২০

বার্তা পরিবেশক অনলাইন:: কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়েছেন সেদিনের পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিফাত।

সিফাত জানান, গত ৩১ জুলাই, কক্সবাজার শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যদের তল্লাশি চৌকিতে গাড়ি থামান মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মো. রাশেদ খান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারা ছেড়ে দিলেও গাড়ির সামনে ড্রাম ফেলে পথরোধ করে টেকনাফ থানা পুলিশ।

মেজর (অবঃ) সিনহার সফরসঙ্গী সিফাত বলেন, ‘আমাদের হাতে ট্রাইপড ছিল, সম্ভবত এটা তারা ভুল বুঝতে পারে। গাড়ি থেকে নামার সময় আমাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। সিনহার ব্যক্তিগত অস্ত্রটিও ছিল গাড়িতে, সিনহা নেমেছিলেন হাত উঁচু করেই। গাড়ি থেকে নামতেই গুলির শব্দ, তারপর মাটিতে লুটিয়ে পড়ার দৃশ্য। যেন কল্পনাকেও হার মানায় সেদিনের ঘটনা।’

সিফাত আরও বলেন, ‘উনি (সিনহা) নামার সময়ে দুই হাত উঁচু করে নামেন। এরপর আমি পিছনে চলে যাই। কিন্তু গাড়ির কারণে আমি আর কিছু দেখতে পারি নাই। যখন নামেন তখন বলেন, কাল্ম ডাউন, কাল্ম ডাউন আওয়াজ শুনতে পাই। যে অফিসার বন্দুক তাক করেছিলেন (তিনি বলছিলেন)। এর ভিতরে গুলির শব্দ শুনি। পরে দেখি সিনহা সাহেব শুয়ে পড়েন। আমি ভাবছি হয়তো উনার শরীরে গুলি লাগেনি। ফাঁকা আওয়াজ হয়েছে। তারপর দেখি উনার শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে।’

সেদিনের পুরো ঘটনার সাক্ষী সিফাত গত ১০ আগস্ট কক্সবাজার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। যদিও পুরো ঘটনা সবার সামনে তুলে ধরতে ক্ষানিকটা সময়ও চেয়েছেন সিনহার সঙ্গী সিফাত ও শিপ্রা।

প্রসঙ্গত, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা প্রামাণ্যচিত্র তৈরির জন্য ৩ জুলাই কক্সবাজার এসেছিলেন। এই কাজে তার সহযোগী ছিলেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সিফাত, শিপ্রা রানী দেবনাথ এবং তাদের সহপাঠী তাহসিন রিফাত নুর। প্রামাণ্যচিত্রের প্রযোজক ছিলেন সিনহা। তারা সবাই উঠেছিলেন হিমছড়ি সৈকত তীরের নীলিমা রিসোর্টে। গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ। এ সময় তার সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছিলেন সিফাত। পুলিশের মামলায় সিফাতের বিরুদ্ধে পরস্পর (সিনহা ও সিফাত) যোগসাজশে সরকারি কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশে অস্ত্র তাক করা ও মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

এছাড়াও তারা হিমছড়ির যে রিসোর্টে ছিলেন সেখান অভিযান চালিয়ে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিপ্রা রানী দেবনাথ ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী তাহসিন রিফাত নূরকে আটক করে পুলিশ। পরে রামু থানায় শিপ্রার বিরুদ্ধে মদের বোতল রাখার অভিযোগে মাদক আইনে একটি মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো। আর তাহসিন রিফাত নূরকে মুচলেকা রেখে এক আত্মীয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ৫ই আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ই আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্নসমর্পণ করেন।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন