২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

আদালতে পল্টনের মতো বক্তব্য দিলে হবে না: ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:২৫ অপরাহ্ণ, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা বলেছেন, আদালতে পুরানা পল্টনের মতো বক্তব্য দিলে হবে না। মামলায় জয়ী হতে হলে আদালতে জ্ঞানসমৃদ্ধ বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে। আর জ্ঞান অর্জন করতে হলে বেশি করে বই পড়তে হবে।

রবিবার বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ভবন প্রাঙ্গণে বইমেলার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এই বইমেলার আয়োজন করেছে। সপ্তাহব্যাপী চলবে এই বইমেলা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অনেক আইনজীবী কোর্টে আর্গুমেন্ট করতে যান বই ছাড়া। যদি বলি বই কোথায়, তখন এদিকে তাকায়, ওদিকে তাকায়।’ তিনি বলেন, ‘জজ সাহেবদের কাত করতে হলে, তাদের কাছ থেকে কিছু আদায় করতে হলে জ্ঞানসমৃদ্ধ আদালতে বক্তব্য দিতে হবে। বক্তব্যের মধ্যে সারমর্ম থাকতে হবে। আইনের কথা থাকতে হবে। আইনের ব্যাখ্যা থাকতে হবে।

ওয়াহহাব মিয়া বলেন, ‘বার জ্ঞানের দিকে সমৃদ্ধ হলে বেঞ্চ সমৃদ্ধ হবে। বার যদি জ্ঞানের দিকে অসমৃদ্ধ হয় তাহলে বেঞ্চও অসমৃদ্ধ হবে। সুতরাং বিচারককে ফিট করবে কে? আইনজীবীরা। আইনজীবী যদি সমৃদ্ধ হয় তাহলে রায়ও সমৃদ্ধ হবে।’

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু বইমেলা করলে হবে না, আপনাদের বই কিনতে হবে। পয়সা দিয়ে বই কিনবেন। পয়সা দিয়ে বই কিনলে তার প্রতি দরদ বেশি হবে। আবার বইটা পড়তে ইচ্ছে হবে।

মক্কেলদেরে খুশি করার জন্য অনেক আইনজীবী বইয়ের কাভার দিয়ে লাইব্রেরি সাজান উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে মক্কেলকে খুশি করার জন্য, তার অনেক বইপুস্তক আছে দেখাবার জন্য, বইয়ের কভার লাইব্রেরিতে রেখে দেন। এই কাজটা করবেন না। বই কিনবেন। বই শুধু মানুষকে দেখাবার জন্য কিনবেন না, বই পড়বেন।

ভালো আইনজীবী হতে হলে বই পড়তে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনি যদি ভালো উকিল হইতে চান, কত টাকা দরকার আপনার, যদি আপনার জ্ঞান থাকে তাহলে টাকা আসবে। তিনি বলেন, আমি যখন উকালতি করেছি, তখন কোনো ফিস পেলে ফিসের একটা অংশ দিয়ে বই কিনতাম। পাঁচ হাজার টাকা ফিস পেলে দুই হাজার টাকা দিয়ে বই কিনতাম।

তরুণ আইনজীবীদের বই কেনার জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি বই কেনা শুরু করেন তাহলে যারা তরুণ আইনজীবী আছেন দেখবেন তাদের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি হয়ে গেছে। বই না কিনলে পড়ার প্রতি মনোযোগী হতে পারবেন না।

ওয়াহ্হাব মিয়া বলেন, ডক্টর মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, উনি ভাষা জানতে ৫২টা, ১৭ ভাষার মাস্টার ছিলেন। উনি কিন্তু নামের আগে লার্নেড লিখতে পারতেন না। আমরা লেখি, লার্নেড জাজেস অ্যান্ড লাইয়ার্স।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন। অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দীন খোকন।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন