৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

মুলাদীর সেই হাজী ও আকন গ্রুপে ফের সংঘাত, বিস্ফোরণে একজন নিহত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:১৫ অপরাহ্ণ, ২৭ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নে হাজী এবং আকন পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় হাতবোমার বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের জোড়া ব্রিজ এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত মোদাচ্ছের সিকদার টুমচর গ্রামের মৃত মোসলেম সিকদারের ছেলে। তাঁর মৃত্যু নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। আকন পক্ষের দাবি, হাজী পক্ষের হাতবোমা হামলায় আহত হয়ে মোদাচ্ছের মারা গেছেন।

হাজী পক্ষের লোকজনের দাবি, মোদাচ্ছের সিকদার কালকিনি উপজেলার পৈন্তারচর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বসে হাতবোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত হয়ে মারা গেছেন।

আকন পক্ষের লোকজন আজ বুধবার ভোরে এলাকায় প্রবেশের সময় হাজী পক্ষের লোকজন প্রতিহত করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানায়, চলতি বছর ৩ জানুয়ারি বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের হাজী পক্ষের রুবেল শাহ হত্যার ঘটনায় ৪৫ জনের নামে মামলা হলে আকন পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এরপর ওই এলাকায় হাজী পক্ষের আধিপত্য চলছে। রুবেল শাহ হত্যা মামলার আকন পক্ষের বেশ কিছু আসামি ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বিভিন্ন তারিখে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিয়ে আজ বুধবার ভোররাতে এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন।

সংবাদ পেয়ে হাজী পক্ষের লোকজন আজিজ ডাক্তারের বাড়ির কাছে জোড়া ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেয় এবং তাদের প্রতিহত করে। এ সময় উভয় পক্ষ ব্যাপক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। মূহুর্মুহু হাতবোমার বিস্ফোরণে টুমচর ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে জাগরণী ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

বাটামারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. মিন্টু সাংবাদিকদের জানান, হাজী ও আকন পক্ষের আধিপত্যের দ্বন্দ্বে হাতবোমার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত মোদাচ্ছের সিকদারের চাচাতো ভাই দাদন সিকদার সাংবাদিকদের জানান, বুধবার ভোররাতে মোদাচ্ছের ও অন্যরা নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে টুমচর এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। টুমচরের জোড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে সুলতান সরদারের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন লোক হামলা চালায় এবং আতঙ্ক ছড়াতে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণে মোদাচ্ছের সিকদারের দুই হাত ও মুখমণ্ডল ঝলসে যায় এবং হারুন ঢালী, রমজান খান, মাসুদ ঢালী, তোফাজ্জেল হাওলারসহ ১০–১১ জন আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মোদাচ্ছের সিকদার মারা যান। আহতদের কালকিনি ও মাদারীপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লাশ বর্তমানে নতুন আন্ডার চরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছে।

এ ব্যাপারে হাজী পক্ষের তরিকুল ইসলাম পলাশ হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘রুবেল শাহ হত্যা মামলার আসামিরা বুধবার ভোররাতে টুমচর এলাকায় ঢুকে ২০–২৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করে। ওই সময় স্থানীয় লোকজন ডাকাত সন্দেহে তাদের ধাওয়া করলে তারা গুলি করে এবং হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে কালকিনির নতুন আন্ডারচর এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে হাতবোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে মোদাচ্ছের সিকদার, হারুন ঢালী ও দাদন ঢালী আহত হয়েছেন বলে শুনেছি।’

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া গুলি ও হাতবোমা বিস্ফোরণের বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, মুলাদী উপজেলার মধ্যে হাতবোমা বিস্ফোরণে কারও মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে কালকিনি উপজেলায় বিস্ফোরণে এক ব্যক্তির খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

146 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন