
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১৪:১০
চলতি বছরের ১০ জুলাই। রাজধানী ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ব্লাড ব্যাংক থেকে তিন ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেন এক রোগীর স্বজন। যা নেওয়া হয় মহাখালীর একটি সরকারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসায়। কিন্তু স্ক্রিনিং (রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন রোগ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত) করা রক্ত ফের স্ক্রিনিং করে রক্তদাতা এইচআইভি পজিটিভ (এইডস সংক্রমিত) শনাক্ত হন। এ নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের বিবাদ চলমান রয়েছে, যা গোটা দেশের রক্ত পরিসঞ্চালন সেবার চিত্র তুলে ধরে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের মতো অতিস্পর্শকাতর স্বাস্থ্যসেবা চলছে অনিরাপদ পদ্ধতিতে। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অনুযায়ী কোনো রোগীর রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে নির্ধারিত পাঁচটি সংক্রামক রোগের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ওপি (অপারেশনাল প্ল্যান) বাতিল হওয়া এবং আইনি জটিলতায় হাসপাতালগুলোর পক্ষে এই পাঁচটি পরীক্ষার ব্যয় বহন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কোনো হাসপাতালে দুটি, আবার কোনো কোনো হাসপাতালে তিনটি পরীক্ষা করে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি একাধিকবার মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে সংক্রামক রোগগুলো ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় সাড়ে নয় লাখ ব্যাগ রক্ত পরিসঞ্চালন হয়। সেই হিসাবে দিনে পরিসঞ্চালন হয় প্রায় দুই হাজার ৬০০ ব্যাগ। অর্থাৎ প্রতিদিন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ রক্ত গ্রহণ করে। যদি সেই রক্তে হেপাটাইটিস বা এইচআইভির মতো সংক্রামক রোগের জীবাণু থাকে তাহলে ওই রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে নতুন রোগে আক্রান্ত হবেন এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবেন। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত এসব সংক্রামক রোগ যদি বাড়তে শুরু করে তাহলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আইন অনুযায়ী রক্ত পরিসঞ্চালনের জন্য পাঁচটি সংক্রামক রোগের স্ক্রিনিংয়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এগুলো হলো—ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি এবং এইচআইভি। বর্তমানে স্ক্রিনিং বাবদ সরকারি হাসপাতালের নির্ধারিত ফি ৩৫০ টাকা। একজন রক্তদাতার পাঁচটি সংক্রামক রোগের পরীক্ষায় রি-এজেন্ট ও আনুষঙ্গিক বাবদ প্রয়োজন ২২২ টাকা। কিন্তু আইন অনুযায়ী আদায়কৃত অর্থের ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৭৫ টাকা রি-এজেন্ট ও অন্যান্য কেনাকাটা বাবদ ব্যয় করা যাবে। এর মধ্যে আবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ও ট্যাক্স (১০ + ৫) ১৫ শতাংশ। ফলে এই টাকার মধ্যে তিনটির বেশি পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই হাসপাতালগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া এবং হেপাটাইটিস-সি পরীক্ষা করা হচ্ছে না। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, পরীক্ষা না করার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রকাশ না করে উল্টো পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সংক্রমণ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে রিপোর্ট দিচ্ছে।
পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা বলেন, আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় কিটস ও রি-এজেন্ট সরবরাহ করা হতো। ফলে কখনো এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি; কিন্তু গত আগস্টের পর থেকে সংকট শুরু হয়, যা বর্তমানে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা আরও বলেন, বিএমইউ বা ডিএমসিএইচের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে এই বিভাগে অনেক পরীক্ষা হয়, ফলে সেখানে আয় বেশি। তাই তারা সামলে নিতে পারত; কিন্তু অপেক্ষাকৃত ছোট মেডিকেল কলেজগুলো বা জেলা হাসপাতালের পক্ষে বিভাগের আয়ের টাকায় এই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। সম্প্রতি সিফিলিস রোগী পাওয়া যাচ্ছে, যা এতদিন ছিল না বলেও জানান পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা।
রক্ত পরিসঞ্চালন আইন-২০০৮-এর ২৪ ধারা অনুযায়ী, হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে রক্ত পরিসঞ্চালন সেবার মাধ্যমে এবং ব্লাড গ্রুপিং, ক্রসম্যাচিং, স্ক্রিনিং ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে কেবিন, পেয়িং বেড, জেনারেল ওয়ার্ড ও প্রাইভেট রোগী থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিম্নরূপে প্রাপ্ত হবেন—স্থানীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের রক্ত পরিসঞ্চালন তহবিল ৪৫ শতাংশ। জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ কমিটির তহবিল ৫ শতাংশ। রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা অধ্যাপক, ইনচার্জ বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তারা সমভাবে ১২ শতাংশ। সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক বা সমমানের কর্মকর্তারা সমভাবে ১০ শতাংশ। মেডিকেল অফিসার বা সমমানের কর্মকর্তারা সমভাবে ০৮ শতাংশ। ৩য় শ্রেণির কর্মচারীরা সমভাবে ১৪ শতাংশ এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরা সমভাবে ৬ শতাংশ।
রক্ত পরিসঞ্চালন আইন-২০০৮-এর ২৬-এর (৮) ধারায় বলা হয়েছে, রক্তবাহিত রোগ নির্ণয়, রক্তের অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রক্ত সংরক্ষণ ইত্যাদি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত রি-এজেন্ট, কিটস ও রক্তব্যাগ ইত্যাদির সরবরাহ সরকার বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে। তবে জরুরি ক্ষেত্রে রি-এজেন্ট, কিটস, রক্তের ব্যাগ ও ট্রান্সফিউশন সেট, ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ, নিডল ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ইনস্টিটিউট হাসপাতাল সর্বাধিক ১০ হাজার টাকা, জেলা হাসপাতাল সাত হাজার টাকা ও অন্যান্য হাসপাতাল পাঁচ হাজার টাকা রাখতে পারবে এবং জরুরি প্রয়োজনে এসব সামগ্রী কেনা যাবে।
উপধারা (১১)-তে বলা হয়েছে, কমিটির সদস্য সচিব রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের জন্য জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো রি-এজেন্ট, যন্ত্রপাতি কেনা বা অন্য প্রয়োজনীয় খাতে রক্ত পরিসঞ্চালন তহবিল থেকে ব্যয় করতে পারবেন।
এক পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পরিসঞ্চালনের জন্য রোগীদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা নিতে পারি। রক্তপরিসঞ্চালন আইন ও বিধি ২০০৮ অনুসারে এর ৪৫ শতাংশ ফের ডিভাইস কিনতে ব্যবহার করা যাবে। সেই হিসাবে আমাকে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ ১৫০ টাকায় সব কেনাকাটা করতে হয়। কারণ ব্লাড গ্রুপ রি-এজেন্ট, টেস্টটিউব, সিরিঞ্জসহ যাবতীয়র জন্য বরাদ্দ থাকে মাত্র ২৫ টাকা। তালিকায় অনেক পরীক্ষা আছে, তবে সেটা বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনির্ভাসিটি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে হয় না। তাই বাকিদের আয় ৩৫০ টাকাই। পরিসঞ্চালনের সব পরীক্ষার কিট আগে সরকার কিনে দিত। তখন এই টাকায় অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা সম্ভব ছিল। এখন আমরা পরীক্ষার কিট কিনেছি; কিন্তু ব্যবহার করছি না। এক মাসের ম্যালেরিয়া, এইসসিভি কিট ছয় মাস ধরে ব্যবহার করব।’
জ্যেষ্ঠ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘নিরাপদ রক্তপরিসঞ্চালনে নির্ধারিত পাঁচটি সংক্রামক রোগের পরীক্ষা অবশ্যই করতে হবে। সেটা যদি না হয় তাহলে দেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাবে, যা কল্পনাতীত। এসব সংক্রামক রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থায় যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। আইন অনুযায়ী এটা সরকারের নিশ্চিত করার কথা। সরকারের সংশ্লিষ্ট যাদের অবহেলায় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন ব্যাহত হচ্ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাতিল হওয়া এইচএসএম অপারেশনাল প্লানে একটি অনুষঙ্গ ছিল নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন, যেখান থেকে সারা দেশের ২০৭টি ব্লাড সেন্টারের ওপর নজরদারি করা হতো, সেন্টারগুলোর মাসিক তথ্য যাচাই-বাছাই করা হতো। এ ছাড়া এসব সেন্টারে নিয়মিত ব্লাডব্যাগ, কিট ও রি-এজেন্ট সরবরাহ করা হতো; কিন্তু গত বছরের আগস্টের পর থেকে সরকারিভাবে কোনো হাসপাতালে পরিসঞ্চালন সামগ্রী দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার ওপি বন্ধ করার মধ্য দিয়ে সেইফ ব্লাড কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি সিএমএসডিতে (কেন্দ্রীয় ঔষধাগার) কিট, রি-এজেন্ট বা ব্লাডব্যাগ মজুত নেই। ফলে সারা দেশে সংকট তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে জানালেও সেখান থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্ক্রিনিংয়ের পরীক্ষাগুলো করা না হলে সারা দেশে হেপাটাইটিস-বি/সি ও এইচআইভির মতো মারাত্মক সব রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।’ এই সমস্যার সমাধানে একটি ন্যাশনাল ব্লাড সেন্টার করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন আসাদুল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ মুহূর্তে দেশের বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো রক্ত পরিসঞ্চালন-পূর্ববর্তী স্ক্রিনিং কিট ও রি-এজেন্টের সংকট নেই। পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল মেডিকেল কলেজে আগামী পাঁচ-ছয় মাসের রি-এজেন্ট অগ্রিম মজুত আছে। হৃদরোগ হাসপাতালেও কোনো সংকট নেই। তার পরও অন্যান্য হাসপাতালে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সংকট না হয়, সে ব্যাপারে জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
যদিও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মেডিকেল কলেজের একটির পরিচালক নিজেই কমিশন নিয়ে থাকেন। তাই তিনি বিভাগের আয় ও এমএসআর-এর টাকা থেকে কিট ও রি-এজেন্ট কিনছেন। কারণ পরিসঞ্চালন বন্ধ থাকলে বা কম হলে মাস শেষে কমিশন অনেক কম হয়। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনোটিতেই ছয় মাস তো দূরের কথা, দুই মাসেরও মজুত নেই।
চলতি বছরের ১০ জুলাই। রাজধানী ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ব্লাড ব্যাংক থেকে তিন ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেন এক রোগীর স্বজন। যা নেওয়া হয় মহাখালীর একটি সরকারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসায়। কিন্তু স্ক্রিনিং (রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন রোগ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত) করা রক্ত ফের স্ক্রিনিং করে রক্তদাতা এইচআইভি পজিটিভ (এইডস সংক্রমিত) শনাক্ত হন। এ নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের বিবাদ চলমান রয়েছে, যা গোটা দেশের রক্ত পরিসঞ্চালন সেবার চিত্র তুলে ধরে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের মতো অতিস্পর্শকাতর স্বাস্থ্যসেবা চলছে অনিরাপদ পদ্ধতিতে। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অনুযায়ী কোনো রোগীর রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে নির্ধারিত পাঁচটি সংক্রামক রোগের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ওপি (অপারেশনাল প্ল্যান) বাতিল হওয়া এবং আইনি জটিলতায় হাসপাতালগুলোর পক্ষে এই পাঁচটি পরীক্ষার ব্যয় বহন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কোনো হাসপাতালে দুটি, আবার কোনো কোনো হাসপাতালে তিনটি পরীক্ষা করে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি একাধিকবার মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে সংক্রামক রোগগুলো ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় সাড়ে নয় লাখ ব্যাগ রক্ত পরিসঞ্চালন হয়। সেই হিসাবে দিনে পরিসঞ্চালন হয় প্রায় দুই হাজার ৬০০ ব্যাগ। অর্থাৎ প্রতিদিন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ রক্ত গ্রহণ করে। যদি সেই রক্তে হেপাটাইটিস বা এইচআইভির মতো সংক্রামক রোগের জীবাণু থাকে তাহলে ওই রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে নতুন রোগে আক্রান্ত হবেন এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবেন। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত এসব সংক্রামক রোগ যদি বাড়তে শুরু করে তাহলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আইন অনুযায়ী রক্ত পরিসঞ্চালনের জন্য পাঁচটি সংক্রামক রোগের স্ক্রিনিংয়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এগুলো হলো—ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি এবং এইচআইভি। বর্তমানে স্ক্রিনিং বাবদ সরকারি হাসপাতালের নির্ধারিত ফি ৩৫০ টাকা। একজন রক্তদাতার পাঁচটি সংক্রামক রোগের পরীক্ষায় রি-এজেন্ট ও আনুষঙ্গিক বাবদ প্রয়োজন ২২২ টাকা। কিন্তু আইন অনুযায়ী আদায়কৃত অর্থের ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৭৫ টাকা রি-এজেন্ট ও অন্যান্য কেনাকাটা বাবদ ব্যয় করা যাবে। এর মধ্যে আবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ও ট্যাক্স (১০ + ৫) ১৫ শতাংশ। ফলে এই টাকার মধ্যে তিনটির বেশি পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই হাসপাতালগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া এবং হেপাটাইটিস-সি পরীক্ষা করা হচ্ছে না। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, পরীক্ষা না করার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রকাশ না করে উল্টো পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সংক্রমণ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে রিপোর্ট দিচ্ছে।
পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা বলেন, আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় কিটস ও রি-এজেন্ট সরবরাহ করা হতো। ফলে কখনো এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি; কিন্তু গত আগস্টের পর থেকে সংকট শুরু হয়, যা বর্তমানে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা আরও বলেন, বিএমইউ বা ডিএমসিএইচের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে এই বিভাগে অনেক পরীক্ষা হয়, ফলে সেখানে আয় বেশি। তাই তারা সামলে নিতে পারত; কিন্তু অপেক্ষাকৃত ছোট মেডিকেল কলেজগুলো বা জেলা হাসপাতালের পক্ষে বিভাগের আয়ের টাকায় এই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। সম্প্রতি সিফিলিস রোগী পাওয়া যাচ্ছে, যা এতদিন ছিল না বলেও জানান পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা।
রক্ত পরিসঞ্চালন আইন-২০০৮-এর ২৪ ধারা অনুযায়ী, হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে রক্ত পরিসঞ্চালন সেবার মাধ্যমে এবং ব্লাড গ্রুপিং, ক্রসম্যাচিং, স্ক্রিনিং ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে কেবিন, পেয়িং বেড, জেনারেল ওয়ার্ড ও প্রাইভেট রোগী থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিম্নরূপে প্রাপ্ত হবেন—স্থানীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের রক্ত পরিসঞ্চালন তহবিল ৪৫ শতাংশ। জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ কমিটির তহবিল ৫ শতাংশ। রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা অধ্যাপক, ইনচার্জ বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তারা সমভাবে ১২ শতাংশ। সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক বা সমমানের কর্মকর্তারা সমভাবে ১০ শতাংশ। মেডিকেল অফিসার বা সমমানের কর্মকর্তারা সমভাবে ০৮ শতাংশ। ৩য় শ্রেণির কর্মচারীরা সমভাবে ১৪ শতাংশ এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরা সমভাবে ৬ শতাংশ।
রক্ত পরিসঞ্চালন আইন-২০০৮-এর ২৬-এর (৮) ধারায় বলা হয়েছে, রক্তবাহিত রোগ নির্ণয়, রক্তের অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রক্ত সংরক্ষণ ইত্যাদি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত রি-এজেন্ট, কিটস ও রক্তব্যাগ ইত্যাদির সরবরাহ সরকার বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে। তবে জরুরি ক্ষেত্রে রি-এজেন্ট, কিটস, রক্তের ব্যাগ ও ট্রান্সফিউশন সেট, ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ, নিডল ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ইনস্টিটিউট হাসপাতাল সর্বাধিক ১০ হাজার টাকা, জেলা হাসপাতাল সাত হাজার টাকা ও অন্যান্য হাসপাতাল পাঁচ হাজার টাকা রাখতে পারবে এবং জরুরি প্রয়োজনে এসব সামগ্রী কেনা যাবে।
উপধারা (১১)-তে বলা হয়েছে, কমিটির সদস্য সচিব রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের জন্য জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো রি-এজেন্ট, যন্ত্রপাতি কেনা বা অন্য প্রয়োজনীয় খাতে রক্ত পরিসঞ্চালন তহবিল থেকে ব্যয় করতে পারবেন।
এক পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পরিসঞ্চালনের জন্য রোগীদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা নিতে পারি। রক্তপরিসঞ্চালন আইন ও বিধি ২০০৮ অনুসারে এর ৪৫ শতাংশ ফের ডিভাইস কিনতে ব্যবহার করা যাবে। সেই হিসাবে আমাকে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ ১৫০ টাকায় সব কেনাকাটা করতে হয়। কারণ ব্লাড গ্রুপ রি-এজেন্ট, টেস্টটিউব, সিরিঞ্জসহ যাবতীয়র জন্য বরাদ্দ থাকে মাত্র ২৫ টাকা। তালিকায় অনেক পরীক্ষা আছে, তবে সেটা বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনির্ভাসিটি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে হয় না। তাই বাকিদের আয় ৩৫০ টাকাই। পরিসঞ্চালনের সব পরীক্ষার কিট আগে সরকার কিনে দিত। তখন এই টাকায় অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা সম্ভব ছিল। এখন আমরা পরীক্ষার কিট কিনেছি; কিন্তু ব্যবহার করছি না। এক মাসের ম্যালেরিয়া, এইসসিভি কিট ছয় মাস ধরে ব্যবহার করব।’
জ্যেষ্ঠ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘নিরাপদ রক্তপরিসঞ্চালনে নির্ধারিত পাঁচটি সংক্রামক রোগের পরীক্ষা অবশ্যই করতে হবে। সেটা যদি না হয় তাহলে দেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাবে, যা কল্পনাতীত। এসব সংক্রামক রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থায় যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। আইন অনুযায়ী এটা সরকারের নিশ্চিত করার কথা। সরকারের সংশ্লিষ্ট যাদের অবহেলায় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন ব্যাহত হচ্ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাতিল হওয়া এইচএসএম অপারেশনাল প্লানে একটি অনুষঙ্গ ছিল নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন, যেখান থেকে সারা দেশের ২০৭টি ব্লাড সেন্টারের ওপর নজরদারি করা হতো, সেন্টারগুলোর মাসিক তথ্য যাচাই-বাছাই করা হতো। এ ছাড়া এসব সেন্টারে নিয়মিত ব্লাডব্যাগ, কিট ও রি-এজেন্ট সরবরাহ করা হতো; কিন্তু গত বছরের আগস্টের পর থেকে সরকারিভাবে কোনো হাসপাতালে পরিসঞ্চালন সামগ্রী দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার ওপি বন্ধ করার মধ্য দিয়ে সেইফ ব্লাড কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি সিএমএসডিতে (কেন্দ্রীয় ঔষধাগার) কিট, রি-এজেন্ট বা ব্লাডব্যাগ মজুত নেই। ফলে সারা দেশে সংকট তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে জানালেও সেখান থেকে এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্ক্রিনিংয়ের পরীক্ষাগুলো করা না হলে সারা দেশে হেপাটাইটিস-বি/সি ও এইচআইভির মতো মারাত্মক সব রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।’ এই সমস্যার সমাধানে একটি ন্যাশনাল ব্লাড সেন্টার করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন আসাদুল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ মুহূর্তে দেশের বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো রক্ত পরিসঞ্চালন-পূর্ববর্তী স্ক্রিনিং কিট ও রি-এজেন্টের সংকট নেই। পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল মেডিকেল কলেজে আগামী পাঁচ-ছয় মাসের রি-এজেন্ট অগ্রিম মজুত আছে। হৃদরোগ হাসপাতালেও কোনো সংকট নেই। তার পরও অন্যান্য হাসপাতালে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সংকট না হয়, সে ব্যাপারে জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
যদিও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মেডিকেল কলেজের একটির পরিচালক নিজেই কমিশন নিয়ে থাকেন। তাই তিনি বিভাগের আয় ও এমএসআর-এর টাকা থেকে কিট ও রি-এজেন্ট কিনছেন। কারণ পরিসঞ্চালন বন্ধ থাকলে বা কম হলে মাস শেষে কমিশন অনেক কম হয়। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনোটিতেই ছয় মাস তো দূরের কথা, দুই মাসেরও মজুত নেই।

০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:৩৪
নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুলিশের অভিযানের সময় ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ইমরান তৌহিদ (৩২) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ। ইমরান তৌহিদ শহরের বাঁশবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা এবং শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে শহরের দিকে আসেন। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ইমরান এজাহারভুক্ত আসামি।
রোববার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইমরান বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ দৌড়ে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এতে তিনি আহত হলে তাকে সৈয়দপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুলিশের অভিযানের সময় ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ইমরান তৌহিদ (৩২) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ। ইমরান তৌহিদ শহরের বাঁশবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা এবং শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে শহরের দিকে আসেন। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ইমরান এজাহারভুক্ত আসামি।
রোববার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইমরান বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ দৌড়ে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এতে তিনি আহত হলে তাকে সৈয়দপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:৪৩
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচ থেকে ১৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মো. সাবলু মিয়া (৪২) নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামার ভাতী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
সাবলু মিয়া ওই এলাকার মৃত বছর উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামার ভাতী এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই এলাকার মৃত বছর উদ্দিনের ছেলে মো. সাবলু মিয়াকে তার বসতবাড়ি থেকে আটক করা হয়।
পরে বাড়ির পূর্ব দুয়ারী ঘরের উত্তর পাশে, পিছনের দরজার রাস্তার মাটির নিচে লুকানো তিনটি পোটলায় ১৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা গাঁজার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচ থেকে ১৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মো. সাবলু মিয়া (৪২) নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামার ভাতী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
সাবলু মিয়া ওই এলাকার মৃত বছর উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামার ভাতী এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই এলাকার মৃত বছর উদ্দিনের ছেলে মো. সাবলু মিয়াকে তার বসতবাড়ি থেকে আটক করা হয়।
পরে বাড়ির পূর্ব দুয়ারী ঘরের উত্তর পাশে, পিছনের দরজার রাস্তার মাটির নিচে লুকানো তিনটি পোটলায় ১৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা গাঁজার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৬
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে প্রাথমিকের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে থাকবেন। ফলে সারা দেশের প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ে বন্ধ থাকবে পাঠদান কার্যক্রম। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ রবিবার সকাল থেকে তাদের এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে বলেন, দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রবিবার থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানের পাশাপাশি সারা দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে।
আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানের পর বিকেলে শাহবাগে এলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পুলিশ। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান শিক্ষকরা। এ সময় একাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে আটক করা হয় কয়েকজন শিক্ষককে।
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে প্রাথমিকের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে থাকবেন। ফলে সারা দেশের প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ে বন্ধ থাকবে পাঠদান কার্যক্রম। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ রবিবার সকাল থেকে তাদের এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে বলেন, দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রবিবার থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানের পাশাপাশি সারা দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে।
আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানের পর বিকেলে শাহবাগে এলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পুলিশ। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান শিক্ষকরা। এ সময় একাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে আটক করা হয় কয়েকজন শিক্ষককে।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.