২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সাজা মওকুফ হচ্ছে বাউফলের অ্যাসিড সন্ত্রাস আব্বাসের, এলাকায় আতঙ্ক

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:০৯ অপরাহ্ণ, ২৮ জুলাই ২০১৭

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি ৫৩ বন্দীর সাজা মওকুফের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। ওই তালিকায় রয়েছে পটুয়াখালীর বাউফলের অ্যাসিড সন্ত্রাস আব্বাস হাওলাদার।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের কৌখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস হাওলাদার এক শিক্ষার্থীকে অ্যাসিড মেরে শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে দেন। এ মামলার বিচারে তাঁর ফাঁসির রায় হয়। পরে উচ্চ আদালত যাবজ্জীবন সাজা দেন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বখাটে আব্বাস ছাড়া পেলে ঘটনার শিকার ওই ছাত্রীর পরিবার ঝামেলায় পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এলাকাবাসী জানান, একই মামলার আরেক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নিজাম উদ্দিন প্রায় আড়াই বছর আগে মুক্তি পেয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অভিযোগ। ভয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না। অবশ্য নিজাম উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আব্বাস মুক্তি পেতে পারেন এমন খবর শুনে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হওয়া সেই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আব্বাস মুক্তি পেলে তিনি এবং তাঁর পরিবার নিশ্চিত হুমকির মধ্যে পড়বে।

এই সন্ত্রাসীকে কেন মুক্তি দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বিতর্কিত কারও জন্য এ ধারা প্রযোজ্য হওয়ার কথা নয়। এখন যে তালিকা করা হচ্ছে, তা নিয়মনীতি মেনেই হচ্ছে। এরপরও যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থেকে থাকে, তবে সেটা বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ আছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুসারে কোনো বন্দী তাঁর সাজার মেয়াদের দুই-তৃতীয়াংশ খাটলে, সেই বন্দীর বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ না থাকে, তবে সরকার চাইলে বিশেষ সুবিধায় তাঁকে মুক্তি দিতে পারে। এ জন্য রাষ্ট্রপতির কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।

এই সুবিধায় মুক্তি দেওয়ার জন্য এ বছর দেশের সব কারাগার থেকে ২৯৭ বন্দীর তালিকা তৈরি করা হয়। বন্দীদের বয়স, সাজার ধরন, মেয়াদ, শারীরিক অবস্থা এবং কারাগারে তাঁরা কোনো অপরাধ করেছেন কি না, তা বিবেচনায় নিয়ে ৫৩ জনের নাম চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়। সেই তালিকা খতিয়ে দেখার জন্য (ভেটিং) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। এরপর তা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে এক মাসের মধ্যে এসব বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

এভাবে বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ক্ষমতায় এসব বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার যে সুযোগ আছে, তা প্রয়োগ করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। যাঁরা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন, খুন করেছেন, যাঁরা বিতর্কিত বা শীর্ষ সন্ত্রাসী, আদালত যাঁদের সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন, তাঁদের এই সুবিধায় মুক্তি দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হবে না।”

 

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন