৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

রাতেই পাল্টা আঘাত হানতে পারে পাকিস্তান

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৪৮ অপরাহ্ণ, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নিজেদের চির শত্রু ভারতের আচমকা আঘাতের প্রতিশোধ নিতে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান আজ বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখায় অধিকৃত কাশ্মীর থেকে শুরু করতে পারে পাল্টা আঘাত। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপরের আকাশ চিড়ে দিতে পারে পাকিস্তানিদের বোমারু বিমান। আর তারই প্রস্তুতি হিসেবে ইতিমধ্যেই আঁটঘাট বেঁধেই তৈরি হয়ে আছে ভারত। স্থল পথে প্রস্তুত ভারতীয় সেনারা। আকাশ পথে চক্কর মারছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান।

পাকিস্তানের আকাশে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান গুলোকে আজ দুপুর থেকেই আকাশে উড়তে দেখা গেছে। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় উরি, কুপওয়ারা আর পুঞ্চ সেক্টরগুলি এখন যুদ্ধের উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছে। এইসব সেক্টরগুলিতে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা গ্রামবাসীদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নপ্য সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে গবাদি পশুও। শুধু এই দুই এলাকা নয় যুদ্ধের উত্তেজনায় কাঁপছে রাজৌরি সেক্টরও।

‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে নৌশেরা, আর এস পুরা, সাম্বা ও কাহুটা গ্রামে। অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে এই সব অঞ্ছলের সীমান্তের গ্রামগুলির বাসিন্দাদের। এই সব এলাকার স্কুলগুলিকেও অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। পাঞ্জাবের ৬টি জেলা ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমান্তের অনেক নিকটাবর্তী। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল রাজ্য প্রশাসনকে সব রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন। রাজ্যের ফিরোজপুর, ফাজিলকা, অমৃতসর, তরণ তারণ, গুরুদাসপুর ও পঠানকোট জেলাগুলিতে জারি করা হয়েছে ‘হাই অ্যালার্ট’। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলকে সীমান্তের গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা একশ শতাংশ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতীয় নৌবাহিনী গুজরাত আর পাঞ্জাব সীমান্তের কথা মাথায় রেখে পানি পথেও সমান সতর্ক এবং নজর রাখছে। শত্রু যেহেতু পাকিস্তান তাই তারা কোন দিক দিয়েই অবহেলা করছে না। গভীর সমুদ্রে যাওয়া মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের উপকূলে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে বলা হয়েছে। আপাতত নিজেদের চির শত্রু প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সব ধরনের আঘাত প্রতিহত করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী, আধা সমারিক বাহিনী ও উপকূল রক্ষী বাহিনী পানি পথে, স্থলে, আকাশ পথে সর্বত্র তৈরি হয়ে রয়েছে । গত কাল ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’ একই সাথে প্রায় ঘণ্টা পাঁচেকের এক অভিযানে নামে ভারতীয় পদাতিক ও বিমানবাহিনী। সেই অভিযানে ব্যবহার হয় অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক। এই অভিযানে ভারতীয় সেনারা পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত দুই থেকে তিন কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে আচমকা মিনিট চল্লিশ সময় নিয়ে এক হামলা চালায়। এই হামলায় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় জঙ্গিদের সাতটি দুর্গম ও দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। সজোরে আঘাত হানা হয় কুপওয়ারা আর পুঞ্চ সেক্টরের অন্তত পাঁচ/ছ’টি নির্ভুল নিশানায়। এই অভিযানের পর কোনও ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই নিজেদের পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসে ভারতীয় সেনাবাহিনী। উরিতে পাক সেনা হামলার ঠিক ১১ দিন পর ভারতীয় সেনাবাহিনী এই হামলা চালায়।

আন্তর্জাতিক সীমান্তে মোতায়েন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সবকয়টি ইউনিটকেই ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে জম্মু, কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান আর গুজরাতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে যুদ্ধের সব ধরণের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। বিএসএফের ওই আউটপোস্টগুলিতে সেনাদের সংখ্যা আগের থেকে তিন থেকে চার গুণ বাড়ানও হয়েছে।

আর এদিকে  ভারত সম্ভাব্য পাকিস্তানি হামলার মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি ‘কূটনেতিক লড়াই’ও শুরু করে দিয়েছে। বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী দেশ সহ ২২টি রাষ্ট্রের দূতদের সঙ্গে দেখা করেছেন। পাকিস্তানের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে ভারত ইতিমধ্যেই ‘সার্ক’ বৈঠকে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সার্কভুক্ত অনেক দেশই। বাংলাদেশ, ভূটান ও আফগানিস্তানও এ ব্যাপারে ভারতের দেখানো পথে হাঁটারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সূত্রঃ আনন্দ বাজার

54 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন