১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম, না হালাল ?

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:১৪ অপরাহ্ণ, ৩০ আগস্ট ২০১৬

যে সকল মৌলবাদীরা বলেন যে, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন হল যদি কোন ব্যক্তি নামাজের সকল নিয়ম রক্ষা করে নামাজ আদায় করল শুধু নিয়ত মনে মনে বা মুখে বলল না তবে কি তার নামাজ কবুল হবে? অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি নামাজে বিশ্বাস না করে নামাজ পড়ে, তবে কি তাঁর নামাজ কবুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে?

উত্তরে মৌলবাদী ভাইয়েরা নিশ্চয়ই না বলবেন।

অনুরূপ প্রশ্ন হিন্দু দাদাদের  প্রতি, যদি কেহ পূজা করে কিন্তু নিয়ত না করে তবে কি তার পূজা শুদ্ধ  হবে? যদি কেহ হিন্দু ধর্মের দর্শনের সাথে বিশ্বাস পোষণ না করে তবে কি তার পূজা কবুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে? একজন পূজারী সব করল কিন্তু নিয়ত পোষণ করল না, যদিও সে পূজার সকল আচারসর্বস্বতা করল, তাহলে কি তার পূজা কবুল হবে?

উত্তরে নিশ্চই না বলবেন। হিন্দুরা ঈশ্বরের সাকার ও নিরাকারে বিশ্বাস করে ।

অন্যদিকে মুসলমানরা সৃষ্টিকর্তার কেবল মাত্র নিরাকার সত্বায় বিশ্বাস করেন। তাই তারা সৃষ্টিকর্তার একটি মাত্র রুপকে পূজা করেন অন্যদিকে হিন্দুরা নিরাকার সৃষ্টিকর্তার সাকার রুপে অর্থাত তিনি বিভিœ রুপে দনিয়াতে অবতরন করেন মানুষদেরকে সৎপথে আনার জণ্য। যেমন রাম,কালী,শিব,গণেশ,স্বরস্বতী,দূর্গা এমনি তেত্রিক কোটি রুপ আছে সৃষ্টির্তার অন্তত পক্ষে।

অন্যদিকে মুসলমানরা নিরাকার সৃষ্টিকর্তার একটি মাত্র রুপ মনে করে এবং সব কিচু তার সৃষ্টি।  ¯্রষ্টা ও সৃষ্টি এক সত্বা নয়। যেমন আদম (আ:), ্ইসা (আ:) এবং শেষ নবী মুহাম্দ (স:) এরা স্বয়ং খোদার রুপ বা জাত নন তারা হলেন আল্লাহর প্রেরিত বিশেষ ম্যসেঞ্জোর বা পিয়ন বা রানার বা বার্তাবাহক।

অন্যদিকে সনাতন বা হিন্দু ধর্মবলম্বীরা বিশ্বাস করেন রাম,গনেশ,স্বরস্বতী,দূগা প্রভৃতি ব্যাত্তিরা হল নিরাকার সত্বার সাকার রুপ অর্থাত তারা স্বয়ং খোদা বা ঈশ্বর। তাই াতদের কায়া বানিয়ে পূজা করলে খোদকে পাওয়া যাবে। এজন্যই তারা মুর্তি পূজা করেন। আর মুসলমানরা নিরাকারকে নিরাকারই মানেন। এ জন্য তারা কোন সাকার বস্তুর পূজা করেন ন্ াতারা কেবল নিরাকার ও একক সত্বার পূজা বা ইবাদত করেন। সুতারাং হিন্দু ধর্ম ও ইসলাম ধর্মের মাঝে স্পষ্ট পার্থাক্য বিদ্যমান। অবশ্য বেদ বলে ঈশ্বরের কোন পতিমুর্তি হয় না।

মুসলমানরা ধর্মীয় বিশেষ ব্যক্তিদেরকে ঈশ্বরের প্রেরিত মনে করে, আর হিন্দুরা বিশেষ ধর্মীয় ব্যক্তিদেরকে ঈশ্বরের সাকার মনে করে। মূল পার্থক্য হল কনসেপ্টগত বা ধারনা বা দর্শন বা বিশ্বাসগত। এর পরে বিশ্বাস গ্রহনের পরে আসে আচার সর্বস্বতা। সেটা পরের কথা। আগে হল নিজের বিশ্বাসটিকে পরিষ্কার করে নেওয়া, আপনি কি হিন্দু ধর্মের দর্শনে বিশ্বাসী নাকি ইসলাম ধর্মের দর্শনে বিশ্বাসী? (অবশ্য বেদে আছে ভিন্ন কথা,)। আমাদের মূল বিষয় হল শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম কিনা, অতএব আমরা ওগুলি নিয়ে আলোচনায়  যাব না। উল্লেখ করছি যে,হারমা বা হালাল শব্দগুলোর সাথে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত। অতএব,ওসলক ধর্মীয বিষয নিযে আমি আলোচনা করতে চাই না।

যদি হিন্দুদের আচার সর্বস্বতাই ইসলাম মতে হারাম হয় তবে তবে নামাজে সিজদা দেওয়া হারাম হওয়ার কথা ছিল, কেননা সিজদা হিন্দুরাও দিয়ে থাকেন। এক জন নামাজী বা পূজারী সব কার্যক্রম করল শুধু সেজদা দিল না, তবে কি তাঁর পূজা বা নামাজ কবুল হবে?

ইসলামর সাথে সাদৃশ্য মানেই কি হারাম ?? এখানে কেন ইসলামের সাথে পৌত্তালিকতার সাদৃশ্য? এটা কেন হারাম নয়? যদি এটা হারাম না হয় তবে কেন ফুল দেওয়া হারাম?

এ প্রঙ্গে শেষের দিকে কিচু বিষয় তুলে দরব,যার মাধমে তুলে ধরতে চাই যে,ইসলামরে সাথে সাদৃশ্য মনেই হারাম নয়। মুল বিষয় হল কনসেপ্ট বা দর্শনগত,আদর্শগত বা বিশ্বাসগত ব্যাপার।

একজন হিন্দু গনেশ, কার্তিক, কালি, শিব, লক্ষ্মী, স্বরস্বতী তথা বিভিন্ন দেব-দেবীর গলায় যে বিশ্বাসে ফুল দেয় একজন মুসলমান কি সেই বিশ্বাসে শহীদ মিনারে ফুল দেয়? যদি নাই দেয় তবে তা হারাম হয় কেমনে?

একজন হিন্দু স্বরস্বতীর গলায় ফুল পড়িয়ে ভাবে সে তাকে বিদ্যা দান করবে। লক্ষ্মীর গলায় ফুল দিয়ে ভাবে সে তাকে ধন রতœ দেবে। কিন্তু শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে কি এমনটি কেউ ভাবে?

নিশ্চই না। তবে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া আর হিন্দুদের পূজা এক হল কি করে? যেখানে নেই চিন্তাগত  বা বিশ্বাসগত মিল। যদি একই সেজদা  হিন্দু ও মুসলমানের জন্য হারাম না হয়, তবে কেন ফুল দেওয়া হারাম হবে?

হিন্দুরা পূজায় ফুল দেয় বলে মুসলমানরা কোন সামাজিক,সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানে ফুল দিতে পারবেনা,এটা মুর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারন ফুল হল পবিত্রতা,সুন্দর,শান্তি,ভক্তি,শ্রদ্ধা ,ভালবাসা আর নিবেদনের প্রতীক। যে হৃদয় ফুল ভালবাসেনা সে হৃদয় কোন মানুষের হৃদয় হতে পা্ের না। যে চক্ষু ফুল দেখতে চাই না ,সে চক্ষু কোন মানুষের চক্ষু নয়,যে কর্ণ সংগীত শুনতে চায় না সে কর্ণ কোন মানুষের কর্ণ নয়। যে মুখ হাসতে জানে না সে মুখ কোন সুস্থ মানবের নয়।

তাই হিন্দুরা ঢোল বাজায় বলে মুলমনরা  ঢোল বাজতে পরবেনা,হিন্দুরা ফুল দেয় বলে মুসলমানরা ফুল দিতে পারবেনা,হিন্দুরা মুর্তি বা ষ্ট্যাচু বানায় বলে মুসলমানরা তা বানাতে পরবেনা এসব অজ্ঞতা,মুর্খতা,কুর্সস্কার আর চলতে পাওে না। কারন এহেন অজ্ঞ,মুর্খ দৃষ্টিভঙ্গি বরং মুমলমানেরকে পিছনে ফেলে দিবে। যেমনিভাবে ব্রিটিশ  আমলে মুসলি মৌলবাদীরা মুসলমানদেরকে ইংরেজী শিক্ষা হারাম বলার কারনে মুসলমানরা বহু বছর পিছিয়ে ছিল।

এখানে উল্লেখ্য হিন্দুদের গণেশের মুর্তি,স্বরস্বতীর মুর্তি আর ভাষা আন্দোলনের প্রতিকৃতি এক হতে পারে না,কারন উভয়েই একই দৃশ্যমান অবকাঠামো হলেও উভয়ের দর্শনগত বিষয় ভিন্ন। মুসলমানদের মধ্যে  এক জন কবি,সাহিত্যিক,বৈজ্ঞানীক,চিন্তাবীদ,দার্শনীক,দেশ প্রেমিক অবশ্যই শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তিত্ব। তাই তাদের প্রতিকৃতি তৈরী করে এবং ভক্তি করে তা হারাম হল কি করে ??

ছবি আকাঁ,গান রচনা,বাদ্য যন্ত্র,সাহিত্য চর্চা,বিজ্ঞান চর্চা,নাটক,ভাষ্কর্য তৈরী ইত্যাদি এখন আর মুসলিম সমাজে হারম নয়। কারন তারা বুঝতে পেরেছে যে,মানুষ আর পশুর মধ্যে পার্থাক্য এক মাত্র সাংস্কৃতিগত। সংস্কৃতির চর্চা,বিজ্ঞান চর্চা,সাহিত্যের চর্চা ছাড়া মুসলমানরা পিছিয়ে পড়বে এবং অন্য জাতিকেও তার মাশুল দিতে হবে।  যার প্রমান আমেরিকা,ঈ¯্রাইল,সৌদী আরব সহ মুসলীম বিধ্বংসী  পুজিবাদী শক্তিগুলো মুসলমানদেরকে পিছনে ফেলার জন্য তাদেরকে মসজিদ,মাজার,গোরস্থান বানিয়ে দিচ্ছে,কিন্তু কোন ল্যবরেটরী,গ্রন্থাগার,হাসপাতাল,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে দিচ্ছে না। মুসলমানদেরকে পিছনে ফেলার কারনে আজ আমেরিকা নিজেই পিছনে পড়ে যাচ্ছে। কারন কথায় আছে – ”যাকে তুমি পশ্চাতে ফেলবে সে তোমাকেও পশ্চাতে ফেলবে”। যার চাক্ষুস প্রমান আমেরিকার তালেবান,সাদ্দাম,গাদ্দাফী সৃষ্ট্রি এবং তা দমনে কোটি কোটি মার্কিন ডলার যুদ্ধ ব্যায়োর ফলে আমেরিকার অর্থনীতি দিন দিন বিকল হয়ে যাচ্ছে। অধিকন্তু মুসলিম দেশগুলোতে তার ইমেজ নষ্ট হয়েছে এবং তার পন্য বিক্র অনেক কমে গেছে। তাতে ধারনা করা হচ্ছে আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে আমেরিকা আর পৃথিবীর সুপার পাওয়ার বা একচ্ছত্র পরা শক্তি থাকবে না। অতএব,মুসলমানদের কল্যানে অমুসলিদেরকে এগিয়ে আসতে হবে,নতুবা পিছিয়ে পরা মুসলমানরা তাদেরকেও পিছনে টানবে,এটাই বাস্তবতা।

ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফুল দিয়ে রাষ্ট্র নায়ক,শ্রেষ্ঠ বীরদেরকে  বরনের প্রথার প্রচলন ছিল কিনা তা জানি না। তবে ইসলাম যে দেশে আবির্ভাব হয়েছে সে দেশের ভু-প্রকতি,মাটি,জলবায়ু,বৃষ্টি পাত প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা সাপেক্ষ। ধুসর মরুর বুকে ফুল একটি দূষ্প্রাপ্য বিষয় তা ভাবতে হবে। অন্য দিকে চির নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল ভারত বর্ষে ফুল হল মানুষের নিত্য সঙ্গী। তাদের জীবনানুভুতি,সাহিত্য,দর্শন,লোক গীতি,বন্দনা,নিবেদন,আরতী,প্রথা,প্রেম,শুভ্রতা,বন্ধুত্ব সব কিছুতেই জড়িয়ে আেেছ সহজ লভ্য ফুল। এই ভারত বর্ষ চিরকালই সুজলা,সুফলা আর নদী বিধৌত অঞ্চল। এখানে আছে প্রচুর বৃষ্টিপাত,পর্যাপ্ত সূর্যের তাপ,উর্বর ভুমি প্রভতি। এখানকার মানুষের জীবন-জীবীকা মুলত কৃষি ভিত্তিক।  সুতারাং এখানে দেবতার চরনে পুষ্প,মনের মানুষকে পুষ্প,শ্র্দ্ধা-ভক্তিতে পুষ্প,বিয়ে-শাদী,জন্ম দিন,মেল,পূর্জা-পার্বনে ফুল এটাই স্বাভাবিক। ফুল জড়িয়ে আছে আমাদেরে এই অঞ্চলের  গভীর অন্তরাঙ্গ অনুভতি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে। তাই এটি কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের রীতি-নীতি আর অন্য সম্প্রদায়ের জন্য হারাম হতে পারে না ।

একজন মুসলমান যখন শহীদ মিনারে ফুল দেয় তখন এটা ভাবে কি যে, সালাম, জব্বার, রফিক, শফিক প্রমুখ মহান ব্যক্তিরা তাদের খাদ্য দেবে? বস্ত্র দেবে? বিদ্যা দেবে? ধন-রত্ম দেবে? উত্তরে আপনি নিশ্চই না বলবেন। আবার আমার এ বিশ্বাসে ও ফুল দেই না যে, শহীদদের আত্ম শান্তি  পাবে। বরং এটা ভেবে দেই যে মারা গেল তাদের স্বত্তার কত দাম! এবং জীবিত মানুষকে ভাল কাজে  উদ্বুদ্ধ করার জন্য যে, তোমরাও দেশের জন্য, ভাষার জন্য তথা ভাল কাজের জন্য মারা গেলে তোমাদেরকেও এভাবে সম্মান দেখানো হবে। সুতরাং এটা হারাম হল কি করে? তবে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম হল কি করে? একজন মানুষ সৎ কর্ম করল তার মৃত্যুর পর তাকে সম্মান করল, এটা ঐ সৎ কর্মীর জন্য অপরাধ নয় বরং কৃতিত্ব। আর তাই যারা আমাদের ভাষার জন্য জীবন দিল, স্বাধীনতার জন্য জীবন দিল সেই শহীদ মিনার, কিংবা জাতীয়  স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়া হারাম হতে পারে না। বরং এটি সেই চাটুকদার পাকিস্তানীদের  গড়া অপইসলামী সংস্কৃতি, যার আদল এখনও রয়ে গেছে আমাদের সমাজে।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা মুসলমান তবে সৌদী আরব আমাদের দেশ নয়,কারন গোট আরব দেশ আমাদেরকে আরবী শিক্ষার ফলে চাকুরী দেবে না,আরব দেশে নাগরিকত্ব দেবে না। তারা শুধু ইসলাম ও মুসলমানদের নামে তাদের ধর্ম ব্যবসা তথা ইসলামী পুজিবাদ আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে আমাদের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর তাদের প্রতিনিধি হচ্ছে আমাদের ধর্মীয় পুজিবাদী দলগুলো বা ধর্মব্যবসায়ীরা। এরা মুসলমানদের মধ্যে দাড়ি,টুপি,তসীব,লেবাজ,কবজের নামে ইসলামী ধর্ম ব্যবসা বা ইসলামী পুজিবাদ মহা ধুমধামে চালাচ্ছে এবং চািিলয়ে যেতে চায়,কারন বাঙালী জাতীয়তাবাদে তাদের আয়-বাণিজ্য হবে না এ জন্যই দেখা যায় যখনই কোন মুক্ত মনা লেখক কোন অভিমত প্রকাশ করেন বা ইসলামের কোন দুর্বোধ্য বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তখনই মৌলবাদী ও ইসলামী পুজিবাদী গোষ্ঠী লাঠি-সোঠা,চাপাতি,রাম দা নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন। ইদানিং তারা মধ্য প্রাচ্যের আদলে গেরিলা কায়দায় মুক্ত মনা লেখক ও প্রকাশকদের একের পর এক হত্যা করে চলেছে। এমনকি আজ এক মৌলবাদী আরেক মৌলবাদীকে খুন করছে শুধু।

আমাদের দেশে মানুষকে বিচার করা হয় নামজ পড়া না পড়া দিয়ে,তাতে এক জন লোক যিনি নামজ পড়েন অথচ মস্ত বড় ভন্ড ও দেশদ্রোহী তিনি আমাদের সমাজে ভাল মানুষ। অন্যদিকে এক জন লোক  মোল্লা নন,তিনি এক জন সাধারন বিশ্বাসী মুসলমান কিংবা প্রচলিত ধর্ম আচারস্বর্বস্বতায় অভ্যস্থ নন,কিংবা তিনি কোন প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসী নন অথচ ঈশ্বরে বিশ্বাসী, কিংবা আদৌ তিনি নিরিঈশ্বরবাদী যতই বিদ্যান,বিজ্ঞানী,সাহিত্যিক,দার্শনিক,ইতিহাসবিদ,শিল্পি,খেলোয়ার বা মনীষীই হন না কেন তাদের কোন মুল্য নেই সমাজে। এমনকি অনেক গুনীজন আছেন যারা ঈশ্বর বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মাচারে খুব একটা অভ্যস্থ নন তারাও মৃত্যুর পরে জানাজা পান না বা মোল্লারা তাদের জানাজা দিতে অস্বীকৃতি করেন। অন্যদিকে এক জন ধর্মীয় পোশাক পরা শত ভন্ডের প্রধান ইবলিশ শয়তানও এদেশে মহামুল্যবান ব্যাক্তি হিসেবে পরিগনিত হচ্ছে। এর কারন হচ্ছে আমাদের সমাজ বিজ্ঞান বিমুখ, বিভ্রান্তিকর সেক্যুলারিজমে অভ্যস্থ,সংস্কৃতিক ভাবে অনগ্রসর ও বিশ্ব ইসলামী পুজীবাদী অপইসলামের আদর্শে ডুবন্ত,যা স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে এই অপ ইসলামী দর্শন ও ধর্মীয় পুজিবাদী দর্শনের মহা ছড়াছড়ি।

আমাদের প্রধান আদর্শ হল ৫২ ও ৭২ যার উপর ভিত্তি করে এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছে এবং এই মুল দর্শনের উপর ভিত্তি করেই দেশ পরিচালিত হওয়া উচিত এবং এই দর্শনের প্রচার ব্যাপক ভাবে হওয়া উচিত।

ইদানিং মুক্তমনা লেখক ও প্রকাশকদেরকে একের পর এক হত্যা করা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হল ঐ সকল মৌলবাদীদের প্রতি যে,ধর্মে বিশ্বাস না করা বা ধর্মের আচার স্বর্বস্বতা পালন না করা বা অভ্যস্থ না থাকা কি মানুষের অপরাধ ?? তাদের কি অধিকার নাই পরিবারে,সামাজে,দেশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার ??

অন্যদিকে ধর্মে বিশ্বাস পালন ও বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী থাকাটা কি অপরাধ ??

পূন্য ও অপূন্য কোনটা,ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করা,নাকি ধর্মের নামে সকল মানুষকে পরিবারে,সমাজে,রাষ্ট্রে ধারন করা ??

জিহাদ কি ??  ভিন্ন মতকে ধ্বংস করা,নাকি ভিন্ন মতকে শ্রদ্ধা করে মানুষের মঙ্গলের জন্য দুর্নিতী,লুটপাট,স্বজনপ্রীতী ও গনতন্ত্রের জন্য লড়াই করা ?

মানুষের ভত,কাপড়ের জন্য,ঔঘধের জন্য সংগ্রাম করা কি জিহাদ নয় ?

অসুস্থ রোগীর বিছারনার পাশে সারারাত সেবা করা কি জিহাদ নয় ??

বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স:) কি মুলত এই জিহাদ করেননি ??

তবে আজ ইসলামের নামে ও ইসলাম বিদ্ব্যুষীর নামে চলছে কোন জিহাদ বা কোন ক্রুশেড ?

আাজ আমাদের দেশের মানুষ আস্তিক আর নাস্তিক নিয়ে গবেষনায় ব্যাস্ত আর পাশ্ববর্তী দেশ ভারত মহাকাশ গবেষনা নিয়ে ব্যাস্ত যদিও সেখানে আছে  সাম্প্রদায়িক নেতিবাচক প্রভাব,তবুও তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে তা মুল্যায়ন করে না। ফলে ভারত আজ বিশ্বের একটি উজ্ঝল নক্ষত্র। অন্যদিকে বাংলাদেশে ও পাকিস্তানে পারিবারিক,সামাজিক ও রাজনৈকি  ও রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারনের ক্ষেত্রে অপইসলামী দর্শনের সমুদ্র সমতুল প্রভাবে দেশ দুটি পৃথিবীর দুটি ব্যার্থ ও পশ্চাদ পদ দেশ রায়ে গেছে।

আস্তিক বা নাাস্তিক কাকে বলে ?? আমি বোঝার চেষ্ট করছি কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না। কারন ইংরেজী ও বাংলা ডিকশোরনারীতে নাস্তিক বা এ্যথিষ্ট এর অর্থ করা হয়েছে- নাস্তিক হল সেই ব্যাক্তি যিনি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করেন না,আর যিনি বিশ্বাস করেন তিনি হলেন আস্তিক । কিন্তু আমি মনে করি পৃথিবীর সকল মানুষই কোন না কোন দিক দিয়ে নাস্তিক। কারন হল একেক ধর্মে সৃষ্টি কর্তার নাম ও বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। এর পরে এক ধর্মের অনুসারী অন্য ধর্মের ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। যেমন – সম্ভবত মুসলমানরাই পৃথিবীতে এক মাত্র সম্প্রদায় যারা শুধু মাত্র  সৃষ্টিকর্তার এক রুপে বিশ্বাস করে। অন্যদিকে হিন্দুরা ঈশ্বরের এক ও বহু রুপে প্রকাশে বিশ্বাস করে,অর্থাত ঈশ্বর এক ও বহু,যা ইসলাম ধর্মের পরিপন্থী। সুতারাং ইসলাম ধর্ম মতে হিন্দুরা নাস্তিক এবং হিন্দু ধর্ম মতে মুসলমানরা নাস্তিক,কারন এক অপরের ঈশ্বরের সংজ্ঞায় আস্থা রাখেন না। অন্যদিকে ক্রিশ্চিয়ানরা এক ঈশ্বরের তিন রুপে অর্থাত ঈশ্বর এক জন ও তিনি জন এই মতবাদে বিশ্বাস করে যা ইসলাম ধর্মের পরিপন্থী। সুতারাং  ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের সৃষ্টিকর্তা বা ইসলাম ধর্মের আল্লাহর সংজ্ঞা ও রুপ,বৈশিষ্ট্য এক নয়। এর ফলে এক ধর্মের বিশ্বাসীগন অন্য ধর্মের কাছে বিধর্মী বা নাস্তিক,কারন হিন্দু ভগবান,ক্রিশ্চিয়ান গড,মুসলমান আল্লাহর সংজ্ঞা এক ও অভিন্ন নয়। এভাবে বিশ্বে চার হাজারের উপরে ধর্ম আছে। যা চলছে সংঘাত,সংঘর্ষ বা কখনও শান্তির মধ্য দিয়ে। অন্যেিক আরেক দল আছেন যারা মানুষ হয়ে মানববৈশিষ্ট্য সম্পন্ন গড,ভগবান বা আল্লাহতে বিশ্বাস করেন না। তাদের বিশ্বাস ঈশ্বর শুধু মাত্রই নিরাকার। নিরাকার ঈশ্বরকে কখনও সাকার বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করা যাবে না। এই নিরাকার স্বত্বাকে পাওয়া যাবে ল্যাবরেটরীতে কোন প্রচলিত ধর্মের ধর্মীয় স্থানে নয়।  এই শেষাক্ত মতবাদের উপরই মুলত ভিত্তি করে পৃথিবীতে ভিত্তি রচনা হয় বিজ্ঞান নামক এক মহা আশীর্বাদী মানবীয় শক্তির,যাকে বিভিন্ন ধর্মীয় মহল তাদের নিজেদের বেল ডাকচিৎকার করছেন,যা মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। আবার ষ্টিফেন হকিংসরা বিশ্বাস করেন যে মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে কোন অতীন্দ্র শক্তির হাত নেই,তা প্রাকৃতিক নিয়মে গড়ে উঠেছে। এরা হল নিরিশ্বরবাদী।

প্রচিলিত ধর্মে বিশ্বাসীরা আবার এদেরকে দলে নেওয়ার জন্য আবার অপব্যাখ্য দেন।

এটা ইসলামের আদর্শ নয়,বরং স্বার্থের লড়াই। ধর্মকে এখানে টুলস বা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে তারা। সুতারাং এরা আমাদের বাঙালী জাতীয়তাবাদ,স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য মহা হুমকি। শুধু যে ইসলামী মৌলবাদ আমাদের জন্য হুমকি  নজরদতাই নয়,বরং হিন্দু মৌলবাদও সমান ক্ষতিকর। কারন আমাদের দেশে অনেক মৌলবাদী হিন্দু আছে যারা ভারতে অর্থ,সম্পদ,বিদ্যা,প্রযুক্তি,সামরিক,দেশের গোপনীয় বিষয় প্রভৃতি ভারতে পাচর করছে যার কুফল ইতিমধ্যে আমরা ভোগ করছি। নাটকীয় বিডি.আর বিদ্রোহ তারই স্বাক্ষর বলে দেশের কোটি কোটি মানুষ মনে করে। সুতারাং দেখা যাচেছ বিশুদ্ধ বাঙালী জাতীয়তাবাদ গড়তে আমাদেরকে হিন্দু ও ইসলামী মৌলবাদকে হঠাতে হবে। শুুধূু মাত্র র‌্যাব,পুলিশের অভিযানে সীমাবন্ধ থাকলে চলবে না। আদর্শ ও অভিন্ন শিক্ষঅ পদ্ধতি চালু করতে হবে। মৌলবাধীদের উপর কঠোরদারি করতে হবে। আইনের প্রকৃত প্রয়োগ থাকতে হবে।

ভারতে মুসলমানদের উপর চলছে চরম নির্যাতন। তাই বলে মুসলমানরা দলে দলে বাংলাদেশ,পাকিস্তান বা অন্য কোন মুসলিম দেশে চলে যাচ্ছে না,কারন তারা তাদের মাতৃভুমি ভারতে জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসেন,আর আমাদের দেশের হিন্দুদের চিত্র উল্টো। তারা সামান্য কারনে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা পায় না প্রকৃত নাগরিকের মর্যাদা। সুতারাং বাঙালী জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশই হওয়া উচিত তাদের পূজনীয় বিষয়,হিন্দু উগ্র জাতীয়তাবাদ বা ভারত নয়।

বিশ্বের বুুকে এই বাংলাদেশই এক মাত্র বাঙালীর বাংলা। কারন এখানে প্রায় সকল মানুষের মায়ের ভাষা বাংলা,সংস্কৃতি বাংলা। পৃথিবীতে এদেশের বাঙালীরাই তাদের মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছে এবং এই বাংলা ভাষার  উপর ভিত্তি করে এই দেশের নামকরন করা হয়েছে বাংলাদেশ। সুতারাং এই বাংলাদেশই হল পৃথিবীর বুকে সকল বাঙালীর এক মাত্র স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র। তবে রাষ্ট্রটিকে অর্থনৈতিক,সামাজিক,রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক,সামরিক প্রভৃতি নানান দিক দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে মর্যাদাসম্পন্ন একটি দেশে রুপন্তরিত করতে হবে,নতুবা এর স্বাধীনতা মানুষের কাছে ধোয়াশার বিষয় থেকে যাবে । এতে স্বাধীনতা বিরোধীরা আরও বেশি সুযোগ পাবে দেশের পতাকা বিলিন করতে। আর তখন বাংলাদেশ নামক একটি বাঙালীর তীর্থভুমি বিলিন হয়ে যাবে,যা পুরো বাঙালীর জাতির জন্য ট্রাজেডি। আমরা নিশ্চয়ই তা চাই না।

তাই বড় আপসোসের সাথে বলতে হয়, চলে গেল পাকিস্তাানিরা,  কিন্তু রেখে গেল তাদের বিষাক্ত বীজ, যা আজ আজ অঙ্কুরোদগম হয়ে এক বিশাল বিষ বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। এই বিষ বৃক্ষকে এখনই উপড়ে ফেলতে না পারলে একদিন এই বিষ বৃক্ষ ডালপালা মেলে ছেয়ে ফেলবে গোটা বাংলাদেশকে। আর তখন যেটুকু অর্জন আমরা করেছি তা কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে। তখন এদেশের নেতৃত্বে থাকতে পারবে না কো নারী। তারা হয়ে যাবে গৃহবন্দী। দেশ পিছিয়ে যাবে হাজার বছর পিছনে। বাঙালী জাতীয়তাবাদের তখন কবর রচিত হবে। পাকিস্তাানী  এই বিষাক্ত মৌলবাদ আর্সেনিকের মত ধীরে ধীরে ৪৩ বছর বেশ এগিয়েছে আমাদের দেশে। যা আমাদেরই ব্যর্থতা। আমাদের যুব সমাজকে বুঝাতে হবে যে, সঠিক পথ কোনটা, আর ধোয়শাচ্ছন্ন পথ কোনটা ?? মানবতার পথ কোনটা আর মানবতাবিরোধী পথ কোনটা ?? জ্ঞানের পথ কোনটি আর অজ্ঞানতার পথ কোনটা ?? প্রকৃৃত বিজ্ঞান কোনটা আর বানোয়াট বিজ্ঞান কোনটা ??

ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:

বায়ন্নর ভাষা আন্দোলন একটি সাংস্কৃতিকিক আন্দোলন,যা আমাদের নিজস্ব জাতীয় সংস্কৃতি ও ভাা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ছিল এক বিব্লবী আন্দোলন। তাই সেই পথ,লক্ষ্য রেখেই আমােেদর কাজ করতে হবে। বিপরীতে করলে জামি তার আপন স্বত্ত্বা হারিয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। একুশের চেতনায় আমাদের বাংলা ভাষা,সাহিত্য,সংস্কৃতি হতে হবে। কারন নিজস্ব সংস্কৃতি ভিত্তিক সাহিত্যই একটি জাতিকে আত্ম-শক্তিকে বলীয়ান করতে পারে। বিপরীতে জাতি তার আপন স্বত্ত্বা হারিয়ে ফেলে। ফলে নানান বিজাতীয়,বিদেশী সংস্কৃতি ঢুকে পড়ে ঐ জাতির অস্তত্ব বিলীন করে দেয়। এক পর্যায়ে স্বাধীন,সার্ববৈাম রাষ্ট্রটির অবলুপিত্ত ঘটে। তাই অবশ্যই আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির দূর্গ গড়ে তুলতে হবে।

ভাষা আন্দোলন মূলত একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। যা মুলত শুরু হয়েছিল ১৯৩৭ সালে ভারতে  মুসলমানদের লিঙ্গুয়া-ফ্রাঙ্কা প্রসÍাব প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে। ১৯৪৮ সালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষনা করা হয়। যার প্রতিবাদে এদেশের আপামর জনতা টর্নেডো রুপ ধারণ করে। দিনটি ছিল ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী(৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ)। মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষার দাবীতে ছাত্ররা রাস্তায় বেরিয়ে আসে। তারা আরোপিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে পাক মদদপূষ্ট পুলিম ছাত্রদের উপর গুলি চালায়। এতে শহীদ হন সালাম, জব্বার, রফিক, শফিক বরকত সহ ্অনেক এদেশীয় তরুন। অবশেষে তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময় বাংলা ভাষাকে ১৯৫৬ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে রাষ্ট্র ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০০০ সালে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনেস্কো বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দান করেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৫৬ সাল থেকেই ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে আমাদের ভাষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছি। অতএব, এ থেকে বোঝা যায় আমরা একটি স্বতন্ত্র জাতি। যাদের রয়েছে স্বতন্ত্র ভাষা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, জীবন কথা, উপকথা,  প্রভৃতি।

পটভূমি:

বর্তমান পাকিস্তান এবং বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্র দুটি পূর্বে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারত বর্ষের অন্তভূক্ত ছিল। উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে উর্দূ ভাষাটি কিছু সংখ্যাক মুসলিম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় নেতা স্যার খাজা সলিমুল্লাহ, স্যার সৈয়দ আহমদ খান, নবাব ওরজকার-উল-মুলক মৌলবী এবং মৌলবী আবদুল হক প্রমুখদের চেষ্টায় ভারতীয় মুসলমানদের নিঙ্গুয়া-ফ্রাঙ্কায় উন্নিত হয়। উর্দু একটি ইন্দো আর্জ ভাষা বা ইন্দো ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠীর সদস্য। এ ভাষাটি আবার ইন্দো  ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তভূক্ত। উর্দু ভাষাটি অপভ্রংশের (মধ্য যুগের ইন্দো আর্য ভাষা পালি-প্রাকৃতের সর্বশেষ ভাষাতাত্বিক অবস্থা)  এর উপর ফারসী  আরবী এবং তুর্কির ঘনিষ্ট প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে দিল্লী-সুলতানাত ও মুঘল সম্রাজ্যের সময়ে এশিয়া বিকশিত হয়। এর পার্শ্বিক-আরবী লিপির কারণে উর্দুকে ভারতীয় মুসলমানদের ইসলামী সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্র্ণ একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেভাবে হিন্দী এবং দেব নাগরী লিপিকে হিন্দু ধর্মের উপাদান বিবেচনা করা হত। অথচ উর্দু ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি গ্রীলকৃষ্ট ছিলেন একজন অমুসলিম। উর্দুর ব্যবহার ক্রমেই উত্তর ভারতের মুসলমানদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে, কিন্তু বাংলার বৃটিশ ভারতের পূর্বাঞ্চলের একটি প্রদেশে মুসলমানরা বাংলা ভাষাকে তাদের প্রধান ভাষা হিসেবে ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিল। বাংলা পূর্বাঞ্চলীয় মধ্য ইন্দোভাষা সমূহ থেকে উদ্ভুত একটি পূর্বাঞ্চলীয় ইন্দো আর্য ভাষা। যা বাংলায় নবজাগরনের সময়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার লাভ করে। উনিশ শতকের শেষ ভাগ থেকেই মুসলিম নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা শুরু করেন এবং আধুনিক ভাষা হিসেবে বাংলার বিস্তার  তখন থেকেই বিকশিত হয়। বাংলা ভাষার সমর্থকরা ভারত ভাগের পূর্বেই উর্দুর বিরোধিতা শুরু করেন। যখন ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের লক্ষেèৗ অধিবেশনে বাংলার সভ্যরা উর্দুকে ভারতের লিঙ্গুয়া-ফ্রাঙ্কা মনোনয়নের প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন। মুসলিম লীগ ছিল বৃটিশ ভারতের একটি রাজনৈতিক দল। যা ভারত বিভাজনের সময়ে পাকিস্তানকে একটি মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে।

বাঙালী জাতির গৌরাবান্বিত সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও ঐতিহ্য:

বাঙালী জাতি হল বঙ্গদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বসবাসকারী সম্প্রদায়। যাদের ইতিহাস অন্তত চার হাজার বছরের পুরোনো। এদের মাতৃভাষা বাংলা। এই নৃগোষ্ঠীর সর্বাধিক ঘনত্ব দেখা যায় অধুনা বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। তবে এছাড়াও অনেক বাঙালী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভারতের আরো নানা রাজ্যে। যেমনঃ ত্রিপুরা, আসাম, ঝারখন্ড, বিহার,উড়িষ্যা, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র ,দিল্লী, কর্নাটক  এবং ভারতের উত্তর পূর্ব সীমান্তের রাজ্যগুলিতে (অরুনাচল প্রদেশ,মনিপুর, মেঘালয়, নিজোরাম, নাগাল্যান্ড)। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, জাপান, মালয়শিয়া, মায়ানমার, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশেও অনেক বাঙালী আছেন। প্রাচীন তাম্রম্ম(ঈযধষপড়ষরঃযরশ) যুগের নিদর্শন পাওয়া গেছে। সেখানে দ্রাবিড়, তিব্বতী, বর্মী, ও অষ্ট্র-এশীয় নরসম্প্রদায়ের বাস ছিল ধারণা করা হচ্ছে। বঙ্গ বা বাংলা শব্দটি সম্ভবত দ্রাবিড় ভাষা বং নামক একটি গোষ্ঠী থেকে এসেছে। যারা এই অঞ্চলে আনুমানিক ১০০০ বছর খ্রিষ্টপূর্বাব্দে বসবাস করত। ড. অতুল সুরের মতে বয়াংশি অর্থাৎ পঙ্কি এদের টোটেম ছিল। বৈদেশিক রচনায় বাংলার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় গ্রিকদের লেখায়। ১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে। তাতে বর্ণিত আছে গঙ্গেয় সমতল ভূমিতে বাসকারী গংগারিডি নামে জাতির শৌর্যবীর্যের কথা শুনে মহাবীর আলেকজান্ডার তার বিশ্বজয় অসম্পূর্ন রেখে বিপাশার পশ্চিম তীর থেকেই প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। গঙ্গারিডি শব্দটি হয়তো গ্রীক শব্দ এধহমধযৎধফ (গঙ্গারদ) থেকে এসেছে। গঙ্গারদ অর্থাৎ গঙ্গাহৃদয়ে যে ভূমির অবস্থান। খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতকে মগধে গুপ্ত রাজবংশের পতন হয়। বাংলার ১ম স্বাধীন রাজা বলা হয় শশাংককে, যার রাজত্ব ছিল ৭০০ শতকের দিকে। তারপর  আসে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বি পাল বংশ, তার পর আসে ব্রাহ্মান্য হিন্দু ধর্মী সেন বংশ। বাংলা অঞ্চলে প্রথম  ইসলামের যাত্রা হয় সুফী ধর্ম প্রচারকদের দ্বারা। পরবর্তীতে বাংলার প্রায় সর্বত্র ইসলাম রাজত্ব করলে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। দিল্লী দাসবংশের সুলতানীর একজন তুর্কী সেনাপতি বখতিয়ার খলজি সেন বংশের রাজা লক্ষন সেনকে পরাজিত করে বাংলায় এক বিশাল অংশ  দখল করেন। এর পর মুর্শিদাবাদের নবাবদের রাজত্ব শুরু হয়, যারা মুঘল সরকারের শাসন কেবল নামে মানত। বাংলাার শেষ স্বাধীন নবাব বলা হয় সিরাজউদৌলাকে । তাকে পরাজিত করে পুরো ভারত বর্ষই চলে যায় ইংরেজদের হাতে। এরপর বৃটিশদের ২০০ বছরের শাসন। ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত করেন কিছু শিক্ষিত বাঙালী, বুদ্ধিজীবী, যাদের পুরোধা ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাস, সত্তেন্দ্রনাথ, রাশবিহারী বসু, খুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, সুর্যসেন প্রমূখ বীর বিপ্লবী বর্গ।

বঙ্গভঙ্গ:

বঙ্গভঙ্গ ইতিহাসে ঘটে দুবার, ১৯০৫ সালে ও ১৯১১ সালে। আর চিরতরে ঘটে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি মৌলবাদী রাষ্ট্রের জন্মের  সাথে সাথে।ু

এবার আসুন আমরা কোন দর্শনে উদ্ভদ্ধ হয়ে শহীদ মিনারে ফুল দেই। প্রথমত বাঙ্গালীর স্বাধীনতার বীজ বুনিত হয়েছিল মূলত ১৯৩৭ সালে, যার নবযৌবন ছিল ১৯৫২ সালে আর চুড়ান্ত ফল হলো ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। শহীদ মিনার শুধু ভাষা আন্দোলনের প্রতীক নয়, বরং এটি  সমগ্র বাংলাদেশী ও সমগ্র বাঙালীর অহংকার। এটি এমন একটি বেদী যেখানে হিন্দু মুসলিম বৈদ্ধ্য, ক্রিষ্টিয়ান উপজাতি আদিবাসী, নৃগোষ্ঠী, সকলেই একসাথে দাড়াতে পারে, যা কোন দর্শন বা বিশ্বাসগত বেদীকে তারা হয়তে পারবে না। তবে এর চেয়ে উত্তম বেদী আর কি হতে পারে যা সবাইকে ধারণকরে? এটাকে বলছেন হারাম?

দ্বিতীয়ত, যারা আমাদের মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিল, যারা মহান স্বাধীনতার জন্য জীবন দিল, যে সকল মা বোন স্বাধীনতার জন্য ইজ্জত দিল তাদের স্বত্তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি।

তৃতীয়ত, আমরা যেমন আমাদের প্রিয় কারাবরণকারী নেতাকে ফুলের শুভেচ্ছা দিয়ে, লাল গালিচা দিয়ে বাদ্যযন্ত্রবাজিয়ে, সংগীতপরিবেশন করে সাদোরে গ্রহণ করি, তেমনি ভাবে যারা আমাদের ভাষা আন্দোলন তথা বাঙালী জাতি স্বত্তার বীজ বুনন করেছিল সেই সকল মহাবীরদেরকে সম্মান জ্ঞাপন করছি। তারা জীবিত হোক বা মৃত হোক এটি হারাম হল কি করে?

চতুর্থত, যারা জীবিত তাদের দেখানোর জন্য যে তোমরাও দেশের জন্য কিংবা ভাষার জন্য মারা গেলে তোমাদেরকেও এভাবে সম্মান করা হবে।

অতএব, এর চেয়ে উত্তম কনসেপ্ট আর কি হতে পারে?

পঞ্চমত, এক ধর্মের অনুষ্ঠানে অন্য ধর্মের বিশ্বাসীরা অংশ্র গ্রহন করেন না। তাই শহীূদ মিনার এমন একটি অসাম্প্রদয়িক স্থান যেখানো সকল সম্প্রাদয়ের লোকেরা অংশগ্রহন করতে পারে, এতে ধর্মীয়,সামাজিক বা রাষ্রীয় বাঘা  থাকার কথা নয়। বরং এটিকে স্বাগত জানায়। এ প্রসঙ্গে আমার একটি প্রশ্ন হল কেন একই ব্যাক্তি একই সাথে একাধিক ধর্ম পালন করতে পারবেন না ??

যদি পারত তবে হয়ত মামুসের মাঝে ঐক্য হতে পারত।

২১ শে ফেব্রংয়ারী ,  ২৬ মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বর, ১লা বৈশাখ আমাদের মনে কি প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় ?  এই প্রতিক্রিয়াটি কি ভাল না মন্দ? যদি ভালই হয় তবে তাকে কেন হারাম বলা হচ্ছে?

মোহাম্মদ(সঃ) যখন মক্কাবাসীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে তার নিজ মাতৃভূমি ত্যাগ করেছিলেন তখন তিনি বলেছিলেন, ”হে আমার মক্কা, তুমি কতই না সুন্দর, আমি তোমায় ভালবাসি,  আমার স্বজাতিরা যদি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র না করত তবে আমি কখনো তোমায় ছেড়ে যেতাম না”। মহানবীর  এই বানী আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়? স্বদেশের. স্বভাষার জন্য যারা নিজেদের সবচাইতে প্রিয় জিনিসটিকে কোরবানী করল,বলি দিল তাদের আত্মার প্রতি সম্মান দেখাতে না হারাম ঘোষনা করতে? পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভাষার জন্য দেশের জন্য কিংবা গনতন্ত্রের জন্য যারা জীবন দিয়েছিলেন সকল জাতি তাদের কৃতিসন্তানদেরকে শ্রদ্ধা ভরে সম্মান করে। তা সে হোক হিন্দু, মুসলিম, বৈদ্ধ্য্য ক্রিষ্টিয়ান, ইহুদী কিংবা অন্য ধর্মে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ সম্প্রতি ভারতে মিজাইল ম্যান নামে খ্যাত সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পরমানু বিজ্ঞানী  এ.পি.জে আবদুল কালামের মৃত্যুতে হিন্দু রাস্ট্র ভারত একজন অহিন্দু লোককে যে রাষ্টীয় সম্মান দেখালো তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তবে আমরা কেন আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে স্মরণ করব না? জাতি হিসেবে তবে আমাদের ¡ অস্তিত্ব কোথায়?

যদি আজ বাংলাদেশ স্বাধীন না হতো তবে আমাদের অবস্থা কি যে হতো আমরা নিশ্চই পাকিস্তানের  দিকে তাকালে দেখতে পাই। পাকিস্তান আজ পৃথিবীর সব চেয়ে জঙ্গীবাদী রাষ্ট্রূ। যদি আমরা পাকিস্তানের অঙ্গ রাজ্য থাকতাম তবে আমদেরকেও তো সেই বিভৎস পরিস্থিতি পোহাতে হতে। আজকে যে তোমরা মৌলবাদীরা মনের তৃপ্তি মিটিয়ে খোদাকে ডাক, যে ভাষায় সে ভাষা কাদের অর্জন? মা বলে যে মধুর সুরে ডাক দেও তা কাদের অর্জন? প্রিয়তম বা প্রিয়তমার সাথে যে হৃদয়ের আদান প্রদান কর তা কাদের রক্তগোলাপের বিনিময়ে? মাতৃভাষার রবীন্দ্রনাথ, নজরংল ,জীবনানন্দ, জসীম উদ্দিন, কামিনী রায়, সুফিয়া কামাল, প্রমূখ কযি- সাহিত্যিকদের সে সুন্দর লেখাগুলো পড় ও উপভোগ কর তা কাদের ত্যাগের বিনিময়ে? তুমি যে তোমার পরম ভক্তিয় গ্রন্থ পবিত্র কোরআনের অর্থ বোঝ তা কোন ভাষায় এবং কাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে? কোরআনের তাফসির লিখছেন কোন ভাষায়? তুমি যে  স্বপ্ন দেখ তা কোন  ভাষায়? এবং কাদের আত্মোৎসর্গের বিনিময়ে? তুমি কি পার তাদের সর্বোৎকৃষ্ট ত্যাগকে অস্বীকার করতে? হে মৌলবাদী ভাইয়েরা তোমরা যে দেশে বাস করছ মাকে মা বলে ডাকছ, আল্লাহকে আল্লাহ বলে ডাকছ, তা কাদের আত্মত্যাগের বিনিময়? তবে কিভাবে তোমরা বাংলা ভাষাকে বাংলা সংস্কৃতিকে লাল সবুজের পতাকাকে, বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে, হারামও হিন্দু সংস্কৃতি বলছ?

সংস্কৃতি একটি জাতির আত্মপরিচয়। একটি জাতি একধর্ম থেকে অন্য ধর্মে রূপান্তরিত হলেও সংস্কৃতি কিন্তু বদলায় না। উদাহরণস্বরুপঃ মোহাম্মদ (সঃ)  এর ইসলাম প্রচারের পূর্বে আরবী ভাষা সাহিত্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য ছিল আরবীয় অমুসলিমদের সম্পদ। দলে দলে তারা ইসলাম গ্রহণ করলেও তাদের সংস্কৃতি ও ভাষা পূর্বের গুলিই রয়ে গেছে।

যেমনি ভাবে, আমরা দেখি ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ও পরে তাদের নামের তেমন কোন পরিবর্তন হয় নাই, ভাষার কোন পরিবর্তন হয় নাই, খাদ্য পোষাক, জীবনাচরণ প্রভৃতির তেমন একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। অতএব, সংস্কৃতি একটি জাতির আদিম ও অকৃত্রিম সম্পদ। যা হল কিছু বিশ্বাস মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি, কথা-উপকথা, যা প্রজন্ম থেকে প্রপন্মান্তরে হাস্তান্তরিত হচ্ছে। অতএব, এ থেকে বোঝা যায়-ধর্ম ও সংস্কৃতির মাঝে গভীর যোগসূত্র থাকলেও তা ভিন্ন বিষয। আমরা বড়ই হতবাক চোখে দেখি যে, অধিকাংশ মাদ্রসা পন্থি মৌলবাদীরা আমাদের বাঙালীর শিল্প. সাহিত্য, দর্শন, কলা, জীবনানুভূতি প্রভৃতি বিষয়ের প্রতি তারা কেন উদাসীন বা বিদ্বেষপরায়ন এই দর্শন তাদেরকে পথ ভ্রষ্ট পাকিস্তাানিরা শিখিয়েছিল। বাংলাদেশে যতগুলো উপনিবেশ শাসন ছিল আমার মনে হয় তার মধ্যে পাকিস্তানীরা সবচেয়ে সফল, কেননা ওরা এদেশ ছেড়ে চলে গিয়েও এদেশে দাপটের সাথে প্রভাব বিস্তার করছে।  এদেশের সর্বোচ্চ পবিত্র স্থান জাতীয় সংসদে ওরা বসেছে এবং যে পতাকার বিপক্ষে ওরা ছিল সে পতাকা উড়ছে ওদেরই গাড়ীতে। যে স্বপ্নে আমরা পাকিস্তানের  কাছ থেকে আলাদা হয়েছি সে স্বপ্ন আজও পূরন করতে পারি নাই। স্বপ্ন তো সেটা নয় যেটা আমরা ঘুমিয়ে দেখি বরং স্বপ্ন সেটাই যেটা পুরনের প্রত্যাশা আমাদেরকে ঘুমোতে দেয় না। আজ মনে হয় আমরা ঘুমিয়েই শুধু স্বপ্ন দেখছি। যে মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালী জাতির বীজ রোপিত হয়েছিল, যার চূড়ান্ত পরিনতি মহান মুক্তিযুদ্ধ। তা আজ নিরর্থক হতে চলেছে নাকি সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি। জাতি ভুলে যেতে চলেছে তাদের প্রকৃত ইতিহাস। বাংলাদেশ প্রচলিত কোন ধর্ম দর্শনের ভিত্তিতে স্বাধীন হয়নি। বাংলাদেশ কোন অলৌকিক রাষ্ট্র নয় বরং একটি লৌকিক রাষ্ট্র। এটি লোকের রাষ্ট্র ,এটি জনতার রাষ্ট্র। লক্ষ লোকের রক্ত, জীবন আর ইজ্জতের বিনিময় অর্জিত আমাদের সবুজের মাছে লাল বৃত্ত খচিত পতাকা, যা আমরা কোন ধর্মের অলৌকিক ক্ষমতায় পাইনি। আজকে দেখি আমরা  ধর্মীয় ফতুয়া নিয়ে কাদা ছড়াছড়ি। অমুক হুজুর এটা বলেন তো সমুক হুজুর বলেন। আবার এও বলেন যে ইসলাম নাকি সেক্যুলার ধর্ম। টেলিভিশনের টকশো দেখে চমকে গেলাম। সেখানে দেখলাম টকশোতে অংশগ্রহণকারী হুজুরগন ইসলামকে সেক্যুলার ধর্ম বলছেন। তবে ইসলামে আছে আল্লাহর ইচ্ছা তত্ত্ব এবঙ মানুসের ইচ্ছা তত্ত্ব। তবে মানুষের ইচ্ছা তত্ত্ব ইসলাম পুর্বেও প্রচলিত ছিল। কিন্তু আরব দুনিযায মুতাজিলা বা মানুষের ইচ্ছা তত্ত্বে বিশ্বাসীাদের কঠোর হস্তে দমন করা হযেছে। আবার অনেকে মনে করেন ভাল মন্দ বুঝতে মানুষের ইচ্ছা লাগবে তবে আল্লাহর বাণীও লাগবে ভাল মন্দ বুঝতে। তবে কোনটার গুরুত্ব আগে সে নিযে মতভেদ হাজার বছর ধরে রযে গেছে। এটি ইসলামের কনট্রাডিকশন। সুতারাঙ টকশোতে এস অর্ধেক উপাত্ত দেওযা উচিত নয। এ প্রসঙ্গে ইসলামের ইতিহাস পড়লে পাওযা যাবে। যেখানে একটি ধর্ম আরেকটি ধর্মকে স্বীকারই করে না, সেখানে প্রচলিত ধর্ম সেক্যুলার হয় কি করে? সেখানে ঐ ধর্মের ভিত্তিতে গড়ে একজন অনুসারী সমান মর্যাদা পাবেন? যদি আবার তার হয় ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র তবে তার অবস্থা যে কি হবে তা নিশ্চয়ই তলেবানদের দিকে দৃষ্টিপাত করলে বোঝা যাবে।

এদেশে যেভাবে হু হু করে মাদ্রাসা, মাজার গড়ে উঠছে তাতে আমরা সংকিত। এজন্যই যে, মাদ্রাসাগুলো হলো মূলত জঙ্গিদের লক্ষ্যবস্তু। কারণ তারা ধর্মের নামে স্বার্থবাদী পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই মূলত অন্যের মাথায় লবন রেখে কাঠাল খাচ্ছে। তাই আমাদের সন্তানদের  প্রতি আমাদের বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে। যাতে তারা ইসলামের নামে কোন ধরনের জঙ্গিসংগঠনের সাথে জড়িয়ে না পড়ে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল,বিশেষ করে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থা দেখলে দেখা যাবে যে,তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশেই ভোটের বাক্স প্রায় শূণ্য। তাই তারা দেখতে পাচ্ছে যে,গণতান্ত্রিক ভাবে তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। কারন মুসলমানরা ধর্মের নামে রাজনীতি পছন্দ করেন না। তারা চান হুজুররা সম্মানিত লোক,তারা রাজনীতি থেকে দূরে থাকুক,এত তাদের সম্মান অক্ষুন্ন থাকবে। তাছাড়া রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞানে তারা যোগ্য নয়। ত্ইা আমাদের দেশের ও বহিবির্শ্বের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো জিহাদের নামে রক্তপাতের পথ বেছে নিচ্ছে শুধু মাত্র ক্ষমতা দখলের জন্য,যার বলি বা কোরবানীর শিকার হচ্ছে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের বিশেষ করে মুসলমান উদীয়মান সম্ভাবনাময় ছেলেরা। যে বয়সে ঐ মুসলিম ছেলেরা সাহিত্য চর্চা করবে,গান গাইবে,দেশকে নিয়ে ভাববে,ল্যবরেটরীরে গবেষনা করবে সেই বয়সে তারা খুন করছে এবং খুন হচ্ছে জিহাদের নামে। এতে মুসলিম সমাজ পিছিয়ে পড়ছে এববং পিছিয়ে পড়া মুসলিরা বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে। আর এতে লাভ হচ্ছে মুলত আমেরিকা,ঈ¯্রাইল,সৌদীআরব সহ বিশ্বের পুজিবাদী,সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর। এটি ঐ অপশক্তিগুলোর নীল নকঁশা।

প্রচলিত ধর্মসমুহ মানবের ইতিহাসে আলোচিত ও সমালোচিত,শান্তি ও রক্তপাত,মানবতাবাদী ও মানবতাবিরোধী,জ্ঞান ও অজ্ঞান,স্পষ্ট ও অস্পষ্ট প্রভৃতি বিষয়সমুহের কারনে প্রচলিত ধর্ম বিতর্কিত ও বিভেদ সৃষ্টিকারী বিষয় হওয়ায় কোন বিশেষ ধর্মই আন্তর্জাতিক মর্যাদার আসন পায়নি। সভ্যতা নির্মান ও ধ্বংস,শান্তির বানী ও অশান্তির বানী উভয় মিলে মানুষের মাঝে তা কনফিউশন বা সংশয়ের সৃষ্টি করছে। কোন ধর্মই নিজেকে চ’ড়ান্ত সত্য বলে প্রমাণ করতে পারেনি। তাই মানুষ যার যার মত করে বেছে নিয়েছে বিভিন্ন ধর্মসমূহ। আবার ধর্মের মাঝে আছে উপ ধর্মসমূহ যা ঘটাচ্ছে ঐ একই সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্ত পাত। যার প্রমান বিশ্ব জুড়ে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে শিয়া বনাম সুন্নী মুসলমানদের মধ্যে আদর্শগত যুদ্ধ।

যে সংগ্রাম অগনতান্ত্রিক অমানবিক ও বিভৎস, যা মানুষকে হত্যা করে, রক্ত ঝড়ায় পৃথিবীর দর্শনীয় স্থাপনা ধ্বংস করে, মানুষকে মৌলিক  চাহিদা না মিটিয়ে শিশু ভোলানোর গল্প বলে তা কখনোই আমাদের সচেতন, বুদ্ধিমান, ও মুক্তমনা মানুষের কাম্য হতে পারে না। কারণ, এ দর্শন মানবতাকে ভূলন্ঠিত করে। আজ কেন সৌদি আরব মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের মহানান্বিত রাষ্ট হয়ে অপর একটি মুসলিম রাষ্ট্র ইয়েমেনে বিমান হামলা করছে? যাতে প্রায় এ পর্যন্ত ৫০০০ মুসলিম জনতা মারা গেছে। এ কি তবে ইসলাম? নাকি ইসলামের নামে বিশ্ব পুঁজিবাদের আসল চেহারা। আমরা যেমন চাই না বাংলাদেশ একটি মৌলবাদী রাষ্ট্র ্হউক তেমনি এও চাইনা ধর্মের নামে আমাদের বাঙালী সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাক। তাছাড়া ধর্ম মানুষকে পরোক্ষ ভাবে হযত দিযেছে অনেক কিছু,কিন্তু একই সাথে কেড়েও নিযেছে অনেক কিছু। ধর্ম মানুষের ভিতর প্রেমের সৃষ্টি করেছে আবার বিদ্বেষও সৃষ্টি করেছে। তাই ধর্মের ইতিহাস এক দিকে শুভকর ও অশুভকর। শান্তির ও অশান্তর। রক্ত গোলাপের ও রক্তপাতের। শুভ ও অশুভ উভযের ছাযা পরিলক্ষিত হয ধর্মে। সমস্ত ধর্মের ভাবনাই মানব জাতিকে নিযে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে শেষ বিচার বিশ্লেষনে ধর্ম হযে দাড়িযেছে সম্প্রদাযগত বিষযে। সকল মানব সম্প্রদাযের জন কোন ধর্ম সৃষ্টি হতে পারেনি। এই বাস্তব সীমাবদ্ধতাই ধর্মকে তথা ধর্মের মাঙ্গলিক বিষযকে ঘৃণা=বিদ্বেষ-ঈর্শা-বিরোধের দিকে ঠেলে দিযেছে। তাই দেখা যায স্বধর্মঅনুশীলনকারী মানুষ সর্বমানবিক মানুষ হযে গড়ে উঠেছে এমন দৃষ্টান্ত দৃর্লভ। তাই সেকুলারিজম সকল ধর্মমতকে মানবের সমসা সমাধনের উপয হিসেবে গ্রহন করেনা।  এটি আবার ধর্মমতকে উচ্ছেদও করে না। এ প্রসঙ্গে পরে আলোচনা করব। একটি জাতিকে মেধাশূন্য করতে হলে তার সংস্কৃতিকেই  প্রথমে ধ্বংস করতে হয়। তাই তো ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তাানিরা নিশ্চিত পরাজয় দেখে এদেশের কবি সাহিত্যিক দার্শনিক, শিল্পী গীতিকার ডাক্তার শিক্ষক প্রভৃতি সন্তানদেরকে হত্যা করেছিল। সেদিন তো আমরা দেখি নাই পাকিস্তানীরা  নির্বিচারে কোন মাদ্রাসার মৌলবাদীদেরকে হত্যা করছে। এর কারন কি ??এর কারণ সম্ভবত দুটো।

একটি হলো এদেশের মৌলবাদীরা বাংলাদেশের জন্মের বিরোধীতা করেছিল এবং তারা ভবিষ্যতে ধর্মের নামে এদেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করবে এই আশায়। আজ মৌলবাদীরা ধর্মকে বিজ্ঞানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করছে। আমার প্রশ্ন কেন তারা ধর্মকে বিজ্ঞানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করছে। কেন ধর্মকে বেঁচে থাকতে, শ্রেষ্টত্ব প্রমান করতে বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে? বিজ্ঞান তো তার অস্তিত্বের জন্য ধর্মের ধার ধারে না । তবে ধর্ম কেন তার অস্তিত্ব প্রমানের  জন্য বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে?  এ প্রসঙ্গে হুমায়ুন আজাদের একটি কথা না বললেই নয় তিনি বলেছেন, ‘‘যারা ধর্মকে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানের চেষ্টা করছে তারা বৈজ্ঞানিকও না আবার ধার্মিকও না।” আসলে এরা বিভ্রান্তিকারী। মৌলবাদীরা এও বলে যে, ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। এর চেয়ে ডাহা মিথ্যা কথা আর কি হতে পারে?

ধর্ম হলো কিছু অবৈজ্ঞানিক, অপ্রামানিত ও বিমুর্ত জিনিসের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে   চলে আসছে হাজার হাজার বছর ধরে। যেখানে নেই কোন যুক্তি খন্ডনের অবকাশ। আমাকে সৃষ্টি করলেন আল্লাহ, ভগবান, ঈশ্বর, তাকে কে সৃষ্টি করলেন? এ প্রশ্নের  উত্তর খোাঁজা ধর্মে নিষেধ। কিন্তু এই নিষেধের বেড়াজাল ডিঙিয়ে কিছু অবিশ্বাসি ও সংশয়ীরা জগতের মূল খুজতে থাকে। থেলিস, এনাক্সিগোরাস, এরিষ্টটল, সক্রেটিস, প্লেটো, ডারউইন, কোপারনিকাস, গ্যালিলিও আইনষ্টাইন, স্টিফেন হকিংকস এরা হলেন সেই সকল সংশয়ী যারা প্রচলিত ধর্মের বাইরে গিয়ে চিন্তা করে আবিষ্কার করলেন যে, এই মহাবিশ্ব কোন পূর্ব নির্ধারিত বিষয় নয় বরং তা মহাবিষ্ফোরনের সম্প্রসারিত রূপ। বিবর্তনই হল যার আসল কথা। বিবর্তনবাদের মূল হলো বস্তুবাদ, যা আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি। প্রকৃতির মূল উপাদানসমূহ বিশ্লেষনের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার কারণসমূহ। ঝড়,ঝঞ্জা বৃষ্টিপাত, জলপ্রপাত, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি উল্কাপিন্ড প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিষয়ের মূল কারণ বস্তু বিেেশ্লষণের মাঝেই নিহিত। অতএব, এক্ষেত্রে কোন অতিন্দ্রীয় কারনকে খোজার দরকার হচ্ছে না। বিজ্ঞান হলো মূলত বিশেষ জ্ঞান যা নির্দিষ্ট কিছু তত্ত উপাত্ত, নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে বিশেষ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় ল্যাবরেটরিতে বা ল্যাবরেটরির বাইরে প্রাপ্ত প্রমানিত সত্য। তবে বিজ্ঞানের সকল সত্যই শাশ্বত নাও হতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞান এক্ষেত্রে বিনয়ী। কারণ যুক্তিপ্রমান, পরীক্ষা -নিরীক্ষার মাধ্যমে যখন কোন নতুন ফলাফল আসে বিজ্ঞান তার পূরানো ফলাফলকে বাতিল করে অবনত চিত্তে মেনে নেয়। এটাই বিজ্ঞানের দর্শন। অন্যদিকে ধর্ম দর্শন হল স্থির ও শাশ্বত। তাই আজকে যারা ইসলামেকে বিজ্ঞানের ধর্ম বলছেন অথবা অন্য কোন ধর্মকে বিজ্ঞানের ধর্ম বলছেন তারা বরং ধর্মকে খাটো করছেন। কারণ বিজ্ঞান পরিবর্তশীল। আর ধর্ম স্থির। পৃথিবীতে প্রায় ৪০০০ এর উপরে ধর্ম আছে। যা একটির সাথে আরেকটি সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আছে। কিন্তু মূল বিষয়বস্তু হলো মানুষ সমাজ মানবতা, ভক্তি ও প্রেম। অতএব, মানবতাই হলো সকল ধর্মের কমন বিষয়। অনেক মৌলবাদীরা দাবী করেন যে তাদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলো বিজ্ঞানে ভরপুর। যদি তাই হত তবে মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক একজন ছাত্র বা হুজুর হতেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। মন্দিরের সাধুই হতেন পৃথিবীর শ্রেষ্ট জ্যোতিষি। আর গির্জার পুরোহিতরা হতেন শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ। পৃথিবীর যে আধুনিক সভ্যতা তার বিনির্মানে চৈনিক সভ্যতা মিশরীয় সভ্যাত বৈদিক সভ্যতা, গ্রিক সভ্যতা, রোমান সভ্যতা, প্রভৃতি সভ্যতাগুলো বিশেষ ভাবে মহিমান্বিত। বিশেষ করে গ্রিক সভ্যতার কাছে এই মানব সমাজ ও আধুনিক বিজ্ঞান বিশেষ ভাবে ঋনী। আজকে যে বিজ্ঞানে জয়গান তা মূলত গ্রিকদেরই অবদান। মানুষ যে চাঁদ থেকে মঙ্গলগ্রহে এবং আরো দূর গ্রহে গবেষান চালাচ্ছে তা মানুষের মানুষের মুক্ত চিন্তারই ফল। তাই জ্ঞান সাধনার জন্য চাই মুক্ত চিন্তা। মানুষের মন মহাশূন্যে  উড়ন্ত মুক্ত পাখির মত।কাঠামো বদ্ধ কোন চিন্তা দ্বারা বিজ্ঞান ও মানবতার পরিপূর্ণ সমাধাণ হয় না। তাই মানুষকে মুক্ত ভাবে চিন্তা করতে, গবেষণা করতে এবং তা বলতে মুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে আমি বলতে চাই যদি ইসলামের সাথে বিজ্ঞানের কোন মতভেদ না থাকে তবে মোহাম্মদ (স) যে মেরাজে গেছেন তা কি পারবেন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমান করতে কোন মৌলবাদী গোষ্ঠী? মৃত্যুর পরে যে জীবন জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, শয়তান, পুলসিরাত প্রভৃতি বিষয় কি পারবেন বিশ্বাসীরা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমান করতে? তবে কেমনে তারা বলেন, যে বিজ্ঞান ও ইসলামের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।

এ  প্রসঙ্গে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত বিষয় সমূহের বৈজ্ঞানিক সত্যতা প্রমান করার দায়িত্ব মুক্ত মনা মানুষ বা বৈজ্ঞানিকদের নয়। বরং ও সকল বিষয়ে যারা অন্ধ বিশ্বাস করে ও যান্ত্রিকভাবে তার প্রয়োগ করতে চায় তা প্রমানের দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে। এভাবে অসংখ্য প্রশ্ন তুলে ধরা যায়। আমাদের কথা হলো ধর্ম কোন ব্যক্তির নিজস্ব বিশ্বাস আবেগ আর অনুভুতির ব্যাপার। তা সার্বজনীন হতে পারে না। যখনই প্রচলিত ধর্মকে কেউ সার্বজনীন মনে করবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে তখনই সৃষ্টি হবে যত সমস্যা। তখন ধর্মের নামে হবে অমানবিকতা, দ্বন্দ্ব সংঘাত, রক্তপাত, ভেদাভেদ আর বাকবিতন্ডা। পৃথিবীতে যতগুলি ধর্ম আজ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে তার একটি ও বিলীন হয়নি ও হবেনা। কারণ ধর্ম মানুষের আবেগ আর বিশ্বাসের ব্যাপার। যা কোন দিনও  ধ্বংস হয় না। তাই পৃথিবীতে আছে অসংখ্য ধর্ম। ইসলাম ধর্ম ,ক্রিষ্টিয়ান ধর্ম, হিন্দু ধর্ম, ইহুদী ধর্ম. জৈন ধর্ম, বৈদ্য ধর্ম, প্রভৃতি ধর্ম সমূহ হল পৃথিবীর বড় ধর্মগুসমুহ। আবার এসকল ধর্মের মধে আছে উপধর্ম। পৃথিবীতে একটি আন্তর্জাতিক ভাষা আছে। কিন্তু কোন  আন্তর্জাতিক ধর্ম আছে কি? যদি নাাই থাকে তবে তাহা সার্বজনীন হয় কিভাবে? যদি সকল ধর্মের মিলগুলোকে  আর্ন্তর্জাতিক বলা হয় তবে মানবতাই হলো আন্তর্জাতিক ধর্ম। যার প্রমান যখন কোন দেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোন সমস্যায় পড়ে তখন অন্য দেশ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। রাস্তায় যখন কোন মানুষে বিপদে পড়ে তখন অন্য মানুষ তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। এটা কোন প্রচলিত ধর্মের বলে নয়, বরং এটা মানবধর্মের শক্তির টানে। পৃথিবীর সকল প্রচলিত ধর্মকে ছাপিয়ে মানব ধর্ম চিরকালই উপরে রয়েছে এবং থাকবে। প্রচলিত ধর্মসমূহ যতই বলুক মানবতার কথা সাম্যের কথা, মুক্তির কথা বাস্তবে এক ধর্মের মানুষে র সাথে অন্য ধর্মের মানুষের বিবাহ, বন্ধুত্ব ভালবাসা, প্রভৃতি বিষয়সমূহকে নিষেধ করে। আর এখান থেকেই সৃষ্টি হয় ধর্মের নামে মানুষের ভেদাভেদ। কিন্তু মানবধর্মের কাছে বিজ্ঞানের কাছে সবাই সমান। এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাত পাত ধর্ম বর্নের মানুষের মাঝে বিবাহ হচ্ছে ,বন্ধুত্ব হচ্ছে, ব্যবসাবানিজ্য হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন হচ্ছে। এটি কিসের বলে? নিশ্চয়ই বিজ্ঞান ও মানবতার বলে। কারণ বিজ্ঞান তার প্রযুক্তি বলে বিশাল  এই পৃথিবীকে ছোট্ট একটি গ্রামে পরিনত করেছে। যেখানে সবাই সবাইকে চেনে জানে, সুখ দুখ ভাগাভাগি করে। এখানে উল্লেখ্য যে বর্তমান বিশ্বে যা ঘটে যাচ্ছে তার জন্য বিশ্ব মানব সম্প্রদায় দায়ী নয়,দায়ী হল মুলত বিশ্বের কিছু পুজিবাদী পরাশক্তির রাজনীতিবীদগন। প্রচলিত ধর্ম যতই গালভরা কথা বলুক না কেন পৃথিবীর মানবসম্প্রদায় তা আর মানতে পারছে না। তাই আধুনিক এই বিজ্ঞানের যুগে কোন দেশেই ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র কাম্য নয়। যার প্রমান আমাদের দেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রায় শুণ্যের কোঠায় ভোট প্রাপ্তি। এ দেখে মৌলবাদীদের শিক্ষা গহণ করা উচিত যে এদেশ সহ পৃথিবীর মানবসম্প্রদায় ধর্মকে ব্যক্তিগত দর্শনে দেখতে চায় বৈজ্ঞানিক বা রাষ্ট্রীয় দর্শনে নয়। অতএব আমাদের দেশে যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করছে ক্ষমতা দখলের স্বপ্নে বিভোর, তাদের বরং লজ্জা পাওয়া উচিত। বাস্তবে তাদের কি তা আছে? গনতন্ত্র ও ধর্মতন্ত্রের মূল কথা এক নয়। গনতন্ত্রের মূল কথা হলো জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস। অন্যদিকে ধর্মতন্ত্রের মূল কথা হলো ঈশ্বর বা আল্লাহ সকল ক্ষমতার উৎস। এখানে ধর্মের নামে একটি খোড়া যুক্তি দাড় করানোর অপচেষ্টা চলছে। কারণ আমাদের প্রশ্ন হলো খোদাতায়ালা তো আর আকাশ থেকে এসে রাষ্ট্র চালাবেন না। খোদার নামে চালাতে হবে খোদার প্রিয় পুত্র দাবীকারী কিছুলোকদেরকে। আমাদের প্রশ্ন হলো খোদার নামে রাষ্ট্র চালাবেন কে বা কারা?  কাঠমোল্লারা যেখানে আজ পর্যন্ত কোন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা রাখতে পারে নি অন্তত বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নয বরং করেছে বিরোধিতা। তবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে চালক হওয়ার অধিকার ওদের থাকে কেমনে?

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের একটি ইসলামী দলের কথা টানতে চাই যারা যুক্তি দেখাল যে গনতন্ত্র ইসলামের পরিপন্থী,অতএব,গনতন্ত্রে বিশ্বাস কাফেরের দর্শন। কারন গনতন্ত্রের মুল কথা হল – জনগন সকল ক্ষতার মুল” ” ও ”রাষ্ট্রের চোখে,আইনের চোখে সবাই সমান”। কিন্তু ইসলামের মুল মন্ত্র হল -” আল্লাহ সকল ক্ষমার মুল ও রাষ্ট্র চলবে আল্লাহর নামে আল্লাহর মদদপুষ্ট ওলামাদের দ্বারা। ওদের তো এদেশে রাজনীতি করার অধিকারই নাই। যখন আমরা দেখতে পাই আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হচ্ছে তখনই দেখি সেই চিরচেনা ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তাানের আসল চেহারা। তারা তাদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্থান পার্লামেন্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করে। তারা তাদের দোষরদেরকে সাচ্চা পাকিস্তানি বলছে। আন্তর্জাতিক ভাবেও তারা একণ তৎপর হচ্ছে। তাদের দোষরদেরকে রক্ষা করতে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ব্রিটেন, জাতি সংঘ, আজ আমাদের দেশে বিচার হচ্ছে তাতে তাদের কাছে নাকি মানবতা লঙ্ঘিত হচ্ছে? অথচ গোয়ান্দা নামক নির্যাতন শালায় কত মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে তাতে কি মানবতা লঙ্ঘিত হচ্ছে না ? ইরাক আফগানিস্তান লিবিয়া সিরিয়া ফিলিস্তিন, ইয়ামেন, প্রভৃতি দেশে আমেরিকা বৃটেন, সৌদি আরব, ইসরাইল, ও জাতিসংঘ যা করছে তা কি মানবতার চরম লঙ্ঘন নয় ? নাকি ওরা মানুষই না। আমাদের প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারে যখন চলছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অমানবিক নির্যাতন তখন কোথায় থাকে জাতিসংঘ, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কেন তাদের এ দ্বৈত নীতি। আমাদের মায়েদের ইজ্জত যারা হরণ করেছিল আমরা তাদের বিচার করছি। এটা আমাদের রক্তের অধিকার। আমরা বিচার করছি তাদের যারা আমাদের বাবা মা ভাই বোনকে হত্যা করেছে বিচার করছি তাদেরই। যা আমাদের  শাশ্বত অধিকার। ২য় বিশ্বযুদ্ধে বিচার যদি এখনো চলতে পারে তবে  এ বিচার কেন চলবে না। অতএব যারা আমাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছে তাদের জানাই ধিক্কার। এ বিচার আসলে বাঙ্লাী জাতীয়তাবাদের অবমাননার বিচার। বাঙ্লাী জাতীয়তাবাদ এমন একটি জাতীয়তাবাদ যা ধারণ করে হিন্দু মুসলিম বৈদ্য খিষ্টান চাকমা মারমা খাসিয়া গারো, মুরং, অধিবাসী আদিবাসী, নৃগোষ্ঠী সবাইকে। অতএব, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদেয় সার্টিফিকেট গুলিতে জাতীয়তা দেখা উচিত বাঙালী। এবং নাগরিকত্ব (ঈরঃরুবহংযরঢ়) নামে আরেকটি অপশন থাকতে হবে যেখানে লিখতে হবে বাংলাদেশী । অর্থাৎ আমরা প্রথমে বাঙালী পরে বাংলাদেশী। মাদ্রাসা নাকি সবচেয়ে পবিত্র নীতি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। সেখানের শিক্ষই নাকি মানুষক্ েউত্তম নৈতিক চরিত্রের অধিকারী করে। এই তো সেদিনের কথা আমার এক প্রতিবেশী ছেলে এস,এস,সি পরীক্ষায় প্রচুর ফেল করায় বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে নি। পরের বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষা দিল এবং ভাল পাশ করল। আমার প্রশ্ন হলো স্কুলে অকৃতকার্য একজন ছেলে হঠাৎ করে মাদ্রাসায় গিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রচন্ড মেধাবী হয়ে পাশ করে ফেলল? মাদ্রাসার লেখাপড়া কি এতই সহজ হয়ে গেল ঐ ছেলেটির কাছে?  নাকি অলৌকিক জগতে গিয়ে ছেলেটি অলৌকিক ক্ষমতা পেয়ে পাশ করে ফেলল? কি সেই অলৌকিক রহস্য। সেই অলৌকিক রহস্য হলো ছেলেটির অভিভাবক মাদ্রাসার হুজুরদেরকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করানোর ব্যবস্থা করে এবং অলৌকিক হুজুরদের অলৌকিক দোয়ায় ছেলেটি অলৌকিকভাবে পাশ করে অলৌকিকতার সার্র্টিফিকেট পেল। শুধু ঘটনার শেষ এখানেই নয় মজার ব্যাপার হলো ছেলেটি পাশ করে ভর্তিহলো একটি কলেজে। একাদশ শ্রেনীতে চুড়ান্ত পরীক্ষায় সে ছয়টি বিষয়ই অকৃতকার্য হয়ে দ্বাদশ শ্রেনিতে উত্তীর্ন হতে পারল না। এখানেই তার চিরসমাপ্তি হলো অলৌকিক শিক্ষা জীবনের। আরেকটি বাস্তব ঘটনা আমার এক প্রতিবেশী ছেলের ক্ষেত্রে। সারাদেশে এস,এস,সি চলছে। ছেলেটিও যথারীতি যায়। তবে কোথায় যায় জানি না। তার হাতে নাই বই খাতা কলম আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। প্রতিটি পরীক্ষায় সে শুধু যায়। কিন্তু কোথায় সে যায়, কোন সেন্টারে পরীক্ষা দিতে যায় কেউ জানে না। এবার রেজাল্ট প্রকাশের পালা। রেজাল্ট প্রকাশিত হলো। ছেলেটি পাশ করল। সেও কিন্তু স্কুলের অকৃতকার্য ছাত্র ছিল। যে মাদ্রাসাওয়ালারা অতি উচ্চ কন্ঠে বলেন যে, মাদ্রাসাই মানুষকে প্রকৃত মানুষ করে, তাহলে প্রশ্ন হলো এই কি মানুষ গড়ার নমুনা? আমরা ভুলে যাই নি সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রি এহসানুল হক মিলন,  একটি মাদ্রাসা থেকে বস্তার পর বস্তা নকল উদ্ধার করেছিলেন। তিনি অবাক হলেন যেখানের শিক্ষার মূল মন্ত্র হল নৈতিকতা সেখানে প্রচুর নকল ও ধান্দাবাজি হয় কেমনে? এ্্ই হল আমাদের দেশের নৈতিক উৎকর্ষতা সাধনে উত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উত্তম কর্ম। এদের আবার বড় গলা। কথায়  আছে চোরের মার বড় গলা।

আমরা বাস করছি একবিংশ শতাব্দিতে। এযুগ ধর্মের নয় এযুগ বিজ্ঞানের। এযুগ অবতারদের নয়  এযুগ মানুষের।

এ যুগের দর্শনের মুল বিষয় হল মানবতা, কোন অতিন্দ্র সত্তাকে খোজা নয়। এ যুগ বাস্তবতার যুগ, কোন অলীক যুগ নয়। এ যুগের মানুষ যুক্তিবাদী, ভাববাদী নয়। তাই এ যুগে আর মানুষকে শিশু ভোলানো গাল-গল্প দ্বারা ঘুম পড়ানো যাবে না।

জনৈক কবির ভায়ায় – ”সবার উপরে মানুষ  সত্য, তাহার উপওে নাই”।

”কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তাহা বহুদূরে ? মানুষের  মাঝেই স্বর্গ নরক,মানুষেতে সুরাসুর”।

বুদ্ধ দেব, সক্রেটিস, লালন ফকির, আইনস্টাইন, এরিষ্টটল, সক্রেটিম. প্লেটো. আরজ আলী মাতুব্বর এদের  দর্শনের মুল ছিল অতীন্দ্র সত্বার সন্ধান বা সাধন নয়, বরং মানবতাকে খোজা, মানবতার সাধন।

তাই আজ সারা প্রৃথিবীতে মানবতার চর্চা বড়ই দরকার। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া, লেবানন, ফিলিস্তিন, বার্মা, চেচনিয়া, বসনিয়া, ইয়েমেন আর কাশ্মীরে ধর্মের ধুম ধারাক্কার কোনই অভাব নেই, আছে শুধু মানবতার অসহায় কান্না। যে সকল পুজীবাদী গোষ্ঠী ধর্মেও নামে, গণহন্তের নামে, সামাজতণেÍ্রর নামে, শান্তি রক্ষার নামে আজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে তাদের দেশেও চলছে  প্রচলিত ধর্মেও মহা ধূমধাম। অভাব শুধু মানবতার।  প্রচলিত ধর্মের চর্চা আজ সারা পৃথিবেিত চলছে মহা যৌবনে  কিন্তু তা হচ্ছে মানবতাকে পদ পিষ্ট করে।  মানুষই যদি পৃথিবীতে না থাকে তবে ধর্মসমূহ কাদের জন্য ?

তাই তো  আমাদের জাতীয় কবি কাজি নজরুল ইসলাম বলেছেন – ” আরতীর থালা আর তসবীর মালা লাগিবে না কোন কাজে, মানুষের সেবা মানুষ করিবে আর সব বাজে”।

আজমাদের বাঙালী সংস্কৃতি সত্যিই মানবতার দর্শন। আমাদের বাউল সংগীতে আছে বুদ্ধ দেবের দর্শন, কনফুসীয় দর্শন, ইসলাী সুফীবাদী দর্শন, বেদান্তবাদী দর্শন। অর্থাৎ আমদের বাউল গান মানবতার মহা মিলন কেন্দ্র। তাই তো জাতিসংঘ আমাদের  মানবতার গান হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ নির্বোধ মৌলবাদীরা উহা বোঝে না, বরং তারা বলে গাণ – বাজনা হারাম !!

অথচ তারা পবিত্র কোরান সুর করে পড়ছে। অথচ তারা নামাজের জন্য আহবান সুর করে লাউড স্পীকারে গাইছে।

কেন এই দ্বৈততা ???

ব্াাউল, জারি, সারি, ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতী, পালা গান, যাত্রা, নাটক, বাশির সুর, বৈশাখী মেলা, বাসন্তী শাড়ী, পাঞ্জাবী, হস্ত শিল্প, ছবি অংকন প্রভৃতি আমাদের  বাঙালী সংস্কৃতির বড় সম্পদ। অথচ মৌলবাদী গোষ্ঠীরা এসবের ধার ধারে না। তারা খোড়া যুক্তি দেখায় যে বছরে শুধু কয়েকটি দিন বাঙালী হলেন আর তার পর সব কিছু বাদ?  এ তো ভন্ডামী, অপচয়, বেদাত ছাড়া কিছুই নয় প্রভৃতি হল তাদের আমাদের বাঙালী সংস্কতির প্রতি আপত্তিকর যুক্তি।

ভাল কথা, আমাদের  কথা আমাদের উচিত সারা বছর বাঙালপিনা দেখানো,কিন্তু  আমরা পারছি না। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের ব্যার্থতা বটে। তাহলে আপনারা মৌলবাদীরা এক জন ভাল বাঙালী মুসলমান হয়ে দেখান না কেন ??

আমরা তো তবু বাঙালী জাতীযতা বাদে বিশ্বাস অন্তত করি, আর আপনারা তো স্বীকারই করেন না। তবে আমাদের সমাচোলনা করার অধিকার আপনাদের আছে কি??

২১ ফেব্রুয়ারী, ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ, ১৪ ডিসেম্বর, পহেলা বৈশাখে আপনাদেরকে কেন দেখিনা এসকল বাঙালীর জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে ??

অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজের সমালোচনা সম্ভবত ভাল।

মেলা শব্দের অর্থ মিলন কেন্দ্র। অর্থাৎ বহু মানুষের মিলন যেখানে সেটাকেই মেলা বলা যোতে পারে। যেমন হিন্দুদের রথযাত্রা, মুসলমানদের হজ্ঝ¦, ক্রিশ্চিয়ানদের পিলগ্রিমেজ প্রভতি ও হল  নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মিলন মেলা। এ সকল মেলায় নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক মানুষ অংশ নেবে, বাকিরা নয়। কিন্তু আমাদের বাঙালীর বৈশাখী মেলা এমন একটি মেলা বা মিলন কেন যার মিলন কেন্দ্রে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, ক্রিশ্চিয়ান, চাকমা, মারমা, খাসিয়া, রাখাইন, মুরং সবাই মিলিত হতে পারে। এটি সকল ধর্মের,বণের, গোত্রের মানুষের মিলননের দিন। ভোরে পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ খ্ওায়া, পাঞ্জাবী, শাড়ী পড়া প্রভতি আমাদের বাঙালী সংস্কতি।

আমাদের মনে রাখতে হবে অমুসলিম, পেীত্তলীক আরব গণ দলে দলে ইসলাম গ্রহন করেছেন কিন্তু তারা তাদের পৌত্তলীক ভাষা, সংস্কৃতি ত্যাগ করতে পারেন নি।

অতএব, আরবী ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি মুসলমানদের নয়, বরং তা অমুসলিদের পৌত্তলীকদের।

ত্্্ইা সংস্কৃতি ও ধর্মের মাঝে গভীর মিল থাকলে ও এ দুদ্বয়ের মাঝে একটা সীমা রেখা টানা অবশ্যই দরকার যেন ধর্মের নামে মৌলবাদীরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে মুছে ফেলতে না পারে।

আমি ভেবে অবাক হচ্ছি যে আমাদের দেশে কত বড় বড় লেখক, গবেষক,ভাষাবিদ, চিন্তাবীদ আছেন। তারা কত কিছুই লেখেন, ভাবেন এবং করেন কিন্তু সমস্যার মুলে কেউ লিখেন বলে আমার মনে হয় না। তাই তো আমার মত এক জন সামান্য লেখকের প্রয়াস মানুষকে সচেতন করার জন্য। অতি সামান্য আমার লেখাটি,কিন্তু আামি মনে করি আামি একটি অসামান্য বিষয় নিয়ে লিখছি।

যে সাম্প্রদায়িক চেতনা  নিয়ে এদশের মানুষ দেশ ও ভাষাকে স্বাাধীন করেছিল তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। হিন্দ, মুসলি, বৌদ্ধ, ক্রিশ্চিয়ান, চাকমা, মারমা, গাঢ়ো,খাসিয়া, মুঢ়ং, ছাত্র, কৃষক, ই.পি.আর, পুলিশ,নারী,পুরুষ তথা এ দেশর আপমর জনতা দেশ ও ভাষাকে সতন্ত্র করেছিল তাদের সর্বোচ্চ আতœত্যাদের বিনিময়ে তা আজও পারিনি আমরা বাস্তবায়ন করেেত।

মৌলবাদীরা কতই না আমাদেরকে ধর্মীয় বীর উত্তমের গাল-গল্প শোনান,যার কোন ঐতিহাসিক, প্রতœতাত্বিক, বৈজ্ঞিনীক, দার্শনিক, মানবিক ভিত্তি আছে কি না জানি না। অথচ আমাদের মহান ২১,, মহান মুক্তিযুদ্ধের রয়েছে সকল বাস্তব প্রমাণ। পৃথিবীর বুকে এই দেশের বাঙালীরাই এক মাত্র জাতি যারা তাদের মাতৃ ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, যা আজ পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অথচ এ্্্ই বাস্তব ও মুর্ত গল্পের কথা মসজিদের মিনারে, গির্জায়, মন্দিওে, প্যাগোডায় কেন শোনা যায় না ??

শৈশব থেকে কত অসংখ্যবারই না গেলাম ইসলাম ধর্মীয় সমাবেশে। অথচ আজ পর্যন্ত আামি কোন দিন শুনলাম না যে কোন হুজুর আমাদরে মহান ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুরে উপর ওয়াজ-নছিয়ত করছেন। কেন ??

দেশ প্রেম নাকি ঈমানে অঙ্গ। তবে তা কি শুধু বলবেন মুখে আর বাস্তবে নয়??

জানিনা এ দেশের ভাষা, ইতিহাস, স্বাধীনতা, সংস্কৃতিকে ভালবাসতে হুজুরদের কেন এত উদাসনিতা ?? নাকি এ তাদের অজ্ঞতা ??

আমরা ভুলতে পারছিনা সালাম,জব্বার,রফিক,শফিক, সাত বীর শ্রেষ্ঠ,বীর বিক্রম,বীর উত্তম,বীর প্রতীক ,তারামন বিবি,সেতারা বেগমদেরকে যাদের জীবন ও ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি  স্বপ্রে স্বাধীনতা আর মায়ের ভাষা বাংলা।

তাইতো কবি অতুল প্রসাদ সেন বলেছেন – ”মোদের গরকব,মোদের আশা, আমরি বাংলাা ভাষা”।

তাইতো বরিশালের রুপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাসের ভাষায় –

আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির এই তীরে- এই বাংলায়

হয়ত মানুষ নয়- হয়ত বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে,

হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে

কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল –ছায়ায়:

হয়তো বা হাাঁস হবো-কিশোরীর-ঘুঙুর বহিবে লাল পায়,

সারাদিন কেট যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে-ভেসে:

আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে

জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙায়:

কবি সৈয়দ শামসুল হকের ভাষায়

সূর্য ওঠার পূর্বদেশ

বাংলাদেশ।

আপমার প্রিয় আপন দেশ

বাংলাদেশ।

আনের দেশ গানের দেশ

তেরোশত নদীর দেশ

বাংলাদেশ।

আমার ভাষা বাংলা ভাষা

এা শেখালেন মাতৃভাষা

এই ভাষাতে ভালোবাসা

মােেয়র দেশ।

বাংলাদেশ

আমাদের এই বাংলাদেশ।

কবি আহসান হাবীবের ভাষায়-

এই যে ছবি এমন আঁকা

ছবির মতো দেশ,

দেশের মাটি দেশের মানুষ

নানা রকম বেশ,

বাড়ি বাগান পাখপাখালি

সব মিলে এক ছবি

নেই তুলি নেই রঙ,তবুও

আঁকতে পারি সবি।

কতই গভীর, মধুর আর আবেগ ঘন বাংলাভাষা ও সাহিত্য। এ ভাষা যদি আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ত তবে এ ভাষা হত সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষা। কি নেই এই ভাষায় ??

অ  আ  ক  খ  থেকে সব কিছুই।

যারা দাবি করেন আরবী ভাষা ইসলামী ভাষা এবং সব চেয়ে দামী ভাষা। তাদের সাথে আমি দ্বিমত প্রকাশ করে বলতে চাই যে আরবী ভাষা ইসলামী ভাষা নয়, বরং তা অনৈসলামীক ভাষা। কারণ ইসলামের আবির্ভারে  পূর্বে ও  আরবী ভাষা ছিল।  ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বে আরবরা সবাই যে বর্বর,অশিক্ষিত ও সাংস্কৃতিবিহীন ছিল তা কিন্তু নয়। আরব পৌত্তলীকদের  মধ্যেও বড় বড় কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বৈজ্ঞানীক ছিলেন যাদের  অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করেননি। তাদের গ্রীক জ্ঞানের সাথে ভালই পরিচয় ছিল। কোরানের ভাষা মুলত আরবের শিক্ষিত ও সভ্য লোকদের ভাষা, তা বর্বর , অশিক্ষিত আর সাংস্কতিবিহীন নিচু শ্রেণীর লোকদের  ভাষা নয়। আমার প্রশ্ন আরবী ভাষায় প,ট প্রভৃতি উচ্চরনের কোন বর্ণ নেই কেন ? ও ভাষা তো খোদর সৃষি,ওতে আবার ঘাটতি কেন ?

সে দিন দলে দলে অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করেছিল, কিন্তু সবাই কিন্তু না। যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল তারা কিন্তু পৌত্তলীকতা ত্যাগ করলেও পৌত্তলীকদের  ভাষা, ইতিহাস, দর্শন, কলা,সাহিত্য,কথা-উপ কথা, বিশ্বাস, আচার,খাদ্য, বস্ত্র প্রভৃতি বিষয় ত্যাগ করতে পারে নাই।

সারা পৃথিবীর অধিকাংম মানুষ বিশ্বের প্রকৃতির নিয়ম-নীতি দেখে একটা মহা শক্তিকে বিশ্বের যাবতীয় কিছুর আদি কারন বা অনুঘটক ধরে নিয়েছেন যাকে বলে হাইপোথিসিস বা অনুমান নির্ভর হিসাব। আবার নিরীঈশ্বরবাদ ও সুপ্রাচীন কাল থেকৈ পাশাপাশি চলে আসছে। সে যাই হোক এক মহা শক্তির বিশ্বের বিভিœ ভৌগোলীক সীমানায় বিভিন্ন নাম আছে। যেমন আরবে এই মহা শক্তির নাম আল্লাহ, ভারতবর্ষে এর ভগবান,ইংল্যান্ড ও ইউরোপীয় অঞ্চলে গড,প্রাচীন ইরানে এই মহা শক্তির নাম অহুর-মজদা,প্রাচীন মিশরে ক্ষুণুম,ফিনিসিয় অঞ্চলে ক্রনস,আদিম আফ্রকানদের কাছে মাল্টিস,আদিম অষ্ট্রেলিয়ানদের কাছে পঞ্জজিল,প্রাচীন পলিনেশিয়ায় তাঙ্গালোয়া প্রভৃতি নানান নামে নামকরন করেছে মানুষ এক মহা শক্তিকে ধরে নিয়। তবে বিভিন্ন দেশে,ধর্মে,ভৌগোলিক অবস্থাভেদে সৃষ্টিকর্তা বা মহা শক্তির বৈশিস্ট্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

কিন্তু আমরা একটি বিষয় স্পষ্ট দেখতে পাই যে সংস্কৃতির ভেতরে আছে ধর্ম একটি উপাদান হয়ে আবার ধর্মের মধ্যেও আছে সংস্কৃতির আধিপত্য।

অতএব, আমরা দেখতে পাই সংস্কৃতির ভিত ধর্মের চেয়েও মজবুত।  আমরা যেমন ব্রিটিশদের উপমহাদেরশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি কিন্তু ব্রিটিশদের ভাষা, সাহিত্য, দর্শন,কলা, আইন, নিয়ম-কানুন তাড়াতে পারিনি, আর পারবও না। কারণ একটি জাতির ভাষা ততই দামী যে ভাষায় যতটা আছে বিজ্ঞান,দর্শন, সাহিত্য, ইতিহাস,প্রতœ তত্ত্বেরে  আচড় সে ভাষা ততই দামী। তাইতো আমরা দেখি দুনিয়া জুড়ে ইংরেজী ভাষা সমধিক সমাদৃত,কারণ হিসেবে অনেকে ব্রিটিশদের সা¤্রাজ্যবাদী নীতির কথা বলে। আসলে এটি একটি খোাড়া যুক্তি মাত্র। ইংরেজী ভাষা পৃথিবীতে সমধিক সমাদৃত কারণ এই ভাষা সমৃদ্দ হয়েছে অনেক বড় বড় কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বৈজ্ঞানীক, ইতিহাসবিদ,চিন্তাবিদদের জন্য। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর সাধনার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা থেকে জ্ঞান আহরণ করে ইংরেজী ভাষাকে করেছেন বিশ্বেও সব চেয়ে সমদ্ধ ভাষায়। এ ভাশা গ্রহণ করেছে গ্রীক,রোমান, চৈনিক,মায়া, সিন্ধু, বৈদীক সহ নানান সভ্রতার জ্ঞানকে। তাই এই ভাষা আজ পৃথিবীর সবচেয়ে  স্বাস্থ্যবান আর পুষ্টিকর ভাষা। এ ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন জেফ্রি চসার, উইলিয়াম ওয়ার্ডওয়ার্থ, জন কিটস, জন ডান, রবার্ট ফ্রষ্ট, শেসকপীয়র, আইনষ্টাইন,জন অষ্টিটন সহ অনেক কবি, সাহিত্যিক,দার্শনক, বৈজ্ঞানীক।

তাই আমাদের বাংলা ভাষাকেও সমৃদ্ধ করারা কাজ পুরোদমে নিতে হবে। শুধু মাত্র বাংলা একাডেমী নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেেল চলবে না।

এখনও আমরা দেখি উচ্চ শিক্ষার বই পুস্তক,বৈজ্ঞানী,দার্শনিক, প্রতœতাত্ত্বিক বই পুস্তক সমূহ বাংলা ভাষায় খুব বেশি পাওয়া যায় না। ওগুলি পড়তে হচ্ছে ইংরেজীতে । তাই প্রচুর পরিমানে উচ্চ শিক্ষার বই  পুস্তক  বাংলা ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা নিয়ে আমাদের গবেষণা করতে হবে। কারণ পৃথিবীর সকল ভাষায়ই কিছু না কিছু মহা মূল্যবান জ্ঞান আছে, যা আহরন করে বাংলা ভাষা বিশ্ব দরবারে অধিক মর্যাদার আসন অর্জন করতে পারে।

তাই আমাদের ২১ ফেব্রয়ারী শুধু আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেল এতে আনন্দিত হয়ে আমাদের বসে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে অনেক পথ হাটতে হবে। কিন্তু আমরা দেখি এ ক্ষেত্রে বরং দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে। কারণ পরাধীন পাকিস্তানের অধীনে বাংলা ভাষাকে নিয়ে যতটা চর্চা হত, আজ স্বাাদীন বাংলাদেশে তা হচ্ছে না। এর চেয়ে পরিতাপের আর কি থাকতে পারে আমাদের জন্য??

আজ এদেশে কত ভুড়ি ভুড়ি বাংলায় ¯œাতক আর ¯œাতোকোত্তর ডিগ্রধারী লোক,কিন্তু নেই আজ রবীন্দ্র নাথ, নজরুল,জসীম উদ্দীন, কায়কোবাদ, কামীনী রায়,জীবনানন্দ। অতীেেত গীতাকার ও সুরকাররা সৃষ্টি করেছিলেন অবিনাশী,কালজয়ী গান। আজ বাংলা গান শুনলে মনে হয় কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে। এখনকার বাংলা কবিতা,গল্প,গান,নাটকে নেই তেমন কোন গভীর সাহিত্য স্পর্শ। এত অসংখ্য লোক বাংলায় ডিগ্রী নিচ্ছে অথচ এহেন দূর অবস্থা কেন বাংলা ভাষার ??

বাংলা ভাষায় সব কিছুই কি রবীন্দ্র,নজরুল,জসীম উদ্দীন, কায়কোবাদ,জীবনানন্দ,মধুসূধন  সৃষ্টি করে ফেললেন ?? সৃষ্টির কি আর কিছুই নেই ??ং

পুরানো গানগুলোই কোন রকমের জোড়া-তালী দেওয়া হচ্ছে,নতুন কোন গান,কবিতা,নাটক,গল্প সৃষ্টি তেমন একটা করতে পারছি না। এতে অনেক সময় মুল মহা মূলব্যবান গান গুলো তাদের মহিমা হারিয়ে ফেলে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভালও হচ্ছে,তবে তা কম।  বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরানো অবিনাশী গানগুলোর মান নষ্ট হচ্ছে আধুনিক কালের কল-কুশলীদের দ্বারা। তাই নকলায়ন ঠেকাতে আইন তৈরী ও বাস্তবায়ন দরকার।

বাঙালী জাতিসত্ত্বা ও সেকুলারিজম ( ঝবপঁষধৎরংস) সেকুলারিজম শব্দের বাংলা আভিধানিক অর্থ হল ইহবাদ । এটি এমন একটি কনসেপ্ট যা রাষ্ট্রীয় ও সরকারী শিক্ষা ব্যবস্থাকে সকল ধরনের প্রচলিত ধর্মেসমূহের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে চায়, এটি রাষ্ট্র ও ধর্মসমুহকে আলাদা করে। (ওঃ রং ঃযব ংবঢ়বৎধঃরড়হ ড়ভ ৎবষরমরড়হং ধহফ ংঃধঃবঃং ”   তবে এটি প্রচলিত ধর্মের কোন তত্ত্ব বা তথ্যের ব্যাপারে সরাসরি প্রশ্ন তুলতে অনাগ্রহী। এর মুল মন্ত্র হল সকল মানুষ সমান। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ বলে কিছু নেই। ধর্ম যার যার ব্যাক্তিগত বা গোষ্ঠগিত ব্যাপার, তা সার্বজনীন হতে পারে না। কারন প্রচলিত কোন ধর্মকেই সার্বজনীন বলা যায় না,কারন একই বিষয়ে তারা ভিন্ন ভিন্ন কথা বলে। আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রচলিত ধর্মসমূহের প্রদত্ত তথ্য আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শন দ্বারা সমর্থিত নয়,বরয়ং অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত ও বটে। প্রত্যেকটি প্রচলিত ধর্মই নিজেকে এক মাত্র সত্য ধর্ম বলে দাবী করে এবং অন্যের অস্তিত্ব স্বীকার ও অনেক ক্ষেত্রে করে না। প্রচলিথ ধর্ম সমূহের যেমন আছে কল্যাণমুল দিক,তেমনি আছে মানবতা পদদলিত করার ইতিহাস।  প্রচলিত ধর্ম মত হল ঈশ্বর ,আল্লাহ বা ভগবান তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। যেখানে সব কিছু উপরাল্লার ইচ্ছায় হয়ে থাকে। এখানে ব্যাক্তির কোন স্বাতন্ত্র স্বত্ত্বা নেই। সে শুধূ খোদার হাতের পুতুল। সে যতই ভাল বা মন্দ করুক না কেন সব কিছুই নাকি পূর্ব নির্ধারত।

কিন্তু সেকুলারিজমে এসকল অতীন্দ্র দর্শনকে রাষ্ট্র,সমাজ,প্রতিষ্ঠানের মাপ কাঠি হিসাবে দেখা হয় না। এখানে ব্যাক্তিই প্রধান। ভল বা মন্দ ব্যাক্তির ক্রিয়া। এ জন্য পুরস্কার বা তিরস্কার ব্যাক্তিরই প্রাপ্য। এটি ঈশ্বরের ইচ্ছা তত্বে¦ও উপর প্রতিষ্ঠিত দর্শন নয়,বরং এটি মানুষের ইচ্ছা তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত দর্শন। এখানে মনে করা হয় মানুষ চাইলে ভাল বা মন্দ যে কোন কাজই  স্বাধীন ভাবে করতে পারে। বিজ্ঞান, দর্শন,ইতিহাস, প্রতœতত্ত্ব যার ভিত্তি। অন্য দিকে ধর্ম হল কিছু অবৈজ্ঞানীক,বিমুর্ত,অপ্রমাণিত বিষয়ের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস।  যুক্তি,বিজ্ঞান, দর্শন এখানে চলে না । যদিও ধর্মীয় জ্ঞানকে দর্শন হিসেবে দাবি করা হয়। তবে তবে মুলত ওগুলোকে বড় জোড় ধর্ম দর্শন ছাড়া কিছুই বলা যায় না।

অতএব সেকুলারিজম এ কারনেই  রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যাপারে এসকল বিষয় গ্রহন কওে না।

কেুলারিজম শ্বদটি প্রথম ব্যবহার করেন ব্রিটিশ লেখক কর্জ জ্যাকোব হলিয়ক ১৮৫১ সালে। যদিও এই টার্মটি নতুন মনে হতে পারে,কিন্তু বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাস জুড়েই আছে মুক্ত চিন্তার চর্চাা, যার পথ ধরেই  সৃষ্টি হয়েছিল দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান,শিল্প, ইতহাস রচনা প্রভৃতি। আজকে যে আমরা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগে বাস করছি তা মানুষের মুক্ত চিন্তার ফল। কোন বদ্ধমুল চিন্তা চেতনা থেকে জ্ঞান সাধনা করা যায় না। তাইতো আমরা সেকুলার চিন্তা দেখতে পাই সেউ সুদুর প্রাচীন কালের গ্রীক দার্শনিক এরিষ্টটল, সক্রেটিস,থেলিস, এনাক্সিগোরাস, পীথাগেরাস প্রমুখ মণীষীদের  মাঝে।

আজকে যে বিজ্ঞানের সকল আবিষ্কার প্রচলিত ধর্ম যে আমার আমার করছে তাহা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়।

সেকুলারিজমের বৈশিষ্ট্য সমূহ মোটামুটি-

ব্যাক্তি স্বত্ত্বার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা
মানুষের সমতা
প্রত্যেক ব্যাক্তিকে তার নিজস্ব মেধাকে উপলদ্ধি করতে সাহায্য করা
শ্রেণী ও সম্প্রদায়িক বাধা ভেঙে ফেলা
মুক্ত ভাবে মানুষকে জ্ঞান চর্চা করতে দেওয়া প্রভৃতি।

সেকুলারিজম এর নীতি সমূহ জর্জ হলিয়কের মতে যা তিনি ১৮৯৬ সালে ব্যাখ্যা করেছিলেন তা হল =

তিনি বলেন সেকুলারিজম এমন একটি দায়িত্ব ও কর্তব্য যা সম্পূর্ণ মানবিক ব্যাপার এবং এটি মুলত ঐ সকল মুক্ত চিন্তার মানুষদের জন্য যারা ধর্ম দর্শনকে চ’ড়ান্ত আদর্শ বলে বিশ্বাস করেন না অথবা অপর্যাপ্ত, অবিশ্বাসমুলক ও অনির্ভরমুলক আদর্শ মনে করেন।  থেলিস, এনাক্সিগোরাস, এরিষ্টটল,প্লেটো, সক্রেটিস, পীথাগোরাস, আইনষ্টাইন, লালন, রবীন্দ্র নাথ, বার্টান্ড রাসেল প্রমুখ মণীষীগণ হলেন সেকুলার চিন্তার বা মুক্ত চিন্তায়  ভাস্বর  ও মুর্ত মানব।

এরা বিশ্বাস করতেন মানব একটি মুর্ত স্বত্ত্বা এবং তার সমাজ ও মুর্ত বা বাস্তব প্রতিষ্ঠান। তাই মুর্ত ও মুক্ত জ্ঞানের চর্চা ও ব্যবহারের মাধমেই মানবের মঙ্গল সম্ভব, এখানে বিমুর্ত স¦ত্ত্বা বা জ্ঞানের দরকার পড়ে না। বরং বিমুর্ত জ্ঞান মানুষকে গোলক ধাধাঁয় ফেলে দেয়।

তাই সেকুলারিজম হল রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মুর্ত,মানবতা,বিজ্ঞান,দর্শনের ব্যবহার। আর মানবতা হল সেকুলারিজমের মুল উপজীব্য বিষয়। যদিও প্রচলিত প্রায় সকল ধর্মেও সেকুলারজিম এর অংশটি আছে, তবে তার সাথে আছে বিমুর্ত ও বিতর্কিতক বিষয় যার সমাধান দেওয়ার কোন কতৃপক্ষ নেই, যেহেতু প্রচলিত ধর্মসমূহ সবাই নিজেকে ঈশ্বর, আল্লাহ,গড বা ভগবানের সম্পদ দাবি করে  থাকে। ফলে কার সাধ্য আছে ওসব গ্রন্থের  ব্যাপারে সংস্কার, পরিমার্জন,পরিবর্তন বা পরিশোধন করার ??

তাই সেকুলারিজম মুলত ওসব বিমুর্ত বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে বরং মুর্ত মানুষের সমস্যা মুর্ত প্রক্রিয়ায় সমাধানে বিশ্বাসী। যার দর্শন হল বিজ্ঞান , মানবতাভিত্তিক দর্শন, সাহিত্য,কলা,শিল্প প্রভৃতি। যাই হোক সেকুলাারিজম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে রুপ লাভ করেছে। অনেকে এর অপব্যাখ্যা,ঘোলাটে ব্যাখ্যাও দিয়ে  থাকেন।

তবে এক কথায় সেকুলারিজমের মুল কথা হল মানুষই প্রথম, মানুষই অগ্রগণ্য। তবে আমাদের এই দেশে সেকুলারিজম কিছুটা ভিন্ন মাত্রা পাবে,কারন বাংলাদেশের মানুষ অধিকাংশ ধর্মপ্রান। এখানে যুক্তিবাদী,মুক্ত চিন্তার লোকের সংখ্য অতি নগন্য।  তাই এখানকার সেকুলারিজ হতে হবে সকল কিছুর মিশ্রন,সমঝোতা ভিত্তিক ও বহু মাত্রিক। এখানে সেকুলারিজম হতে হবে বিজ্ঞান,ধর্ম,দর্শন,অসাম্প্রদয়িকতা,জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি সকল কিছুর একটা যথোপযুক্ত মিশ্রন। কারন এ দেশের ইতিহাস,ঐতিহ্য,পল্লী জীবন,কথা,উপ-কথা,রীতিনীতি সব কিছুর সাথেই মিলে আছে বিভিন্ন ধর্ম দর্শন। তবে উল্লেখ্য যে সকল মৌলবাদকে হটিয়ে দিতেই হবে। ধর্ম প্রান আর ধর্মান্ধ এক নয়। অনুরুপ ভাবে ঈশ্বর বিশ্বাসী আর মৌলবাদী এক হতে পারে না। যারা ধর্মকে যান্ত্রিক ভাবে প্রয়োগ করে ব্যাক্তি বা গোষ্ঠিগত স্বার্থ আদায় করতে চায়,আমাদরে ভাষায় তারা মৌলবাদী। আর যারা ধর্মকে মানুষের আতœা,অংশ,মানবতার সোপান মনে করে আমাদের ভাষায় তারা ধার্মিক ও মানবিক। কমন বিষয়গুলো বিবেচনা করে একটা অসাম্প্রয়িক সমাজ গড়তে উৎসাহী তারা ধার্মিক ও সামাজিক মানব।  আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষই ধার্মিক,মৌলবাদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত কম। তবে দিদ দিন মৌলবাদীদের সংখ্যা আশঙ্খাজনক ভাবে বেড়ে চলেছে,যা উদ্গের ব্যাপার। আমাদের দেশের অধিকাংম মানুষই ধর্মকে ব্যাক্তিগত ভাবে,সামাজিক ভাবে,গোষ্ঠীগত ভাবে দেখতে চায়,রাষ্ট্রীয় ভাবে নয়। যার প্রমান ধর্ম ভিত্তিক দলগুলোকে ভোট না দেওয়া।  অন্যদিকে এক জন বিজ্ঞান মনষ্ক ব্যাক্তিকে সাধারন মানুষ শ্রদ্ধা করে, আর মৌলবাদীরা বিজ্ঞন মনষ্কদের হত্যা করে। আমাদের সেকুলারিজম গঠিত হয়েছে বিভিন্ন ধর্ম,ভাষা,সংস্কৃতি,বিশ্বাস,রীতিনতির সমন্বয়ে। তাই বাঙালী সংস্কৃতি একটি আদর্শ সেকুলার সংস্কৃতি। কিন্তু এবার একটু দেখতে চাই আমাদের সঙবিধানের মুলনীতিসমুহ কতটুকু বর্তমানে সমতা বজায রাখছে। বাঙলাদেশের সঙবিধানের মুলনীতি সমুহ হচ্ছে Ñ

১) জাতীযতাবাদ

২) সমাজতন্ত্র

৩) গনতন্ত্র

৪) সেকুলারিজম

সেকুলারিজমের মুল দর্মন হল রাষ্ট্র পরিচালনায় মানবীয় জ্ঞানের সর্বোচ্চ প্রয়োগ তা রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মীয় মতবাাদকে জড়াতে চায় না।

এ নীতি অনুসারে এক জন  নিরঈশ্বরবাদীও রাষ্ট্রর নাগরিক। তারও অধিকার আছে রাষ্ট্রে,সমাজে,পরিবারে বসবাস করার। কিন্তু আমরা অবাক হই দেখে যে ২০১৪ সালে দলে দেল হুজুররা নাস্তিকদের  ফাঁসি চাই বলে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ল।

চারটি মুলনীতি অনুসারে এ দেশে কিভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বিরজ করে আমরা বুঝতে পারছি না। তাছাড়া মসজিদ,মকাদ্রাসা কেন্দ্রিক রাজনীতি জঙ্গীবাদের মুল হোতা বা আধার। যার প্রমান তালেবান নামক জোঙ্গী দল,যাদের জন্ম মাদ্রাসায এবঙ পরবর্তীতে রাজনীতি,পরবর্তীতে আফগানিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল এবঙ আমেরিকার প্রতিনিধি হযে রাশিযাকে বিচ্ছিন্নকরন এবঙ পরে তাদেরই প্রভু কতৃক বিতাড়িত শযতান। যার মাশুল দিচ্ছে আফগানিস্তান সহ সারা বিশ্ব। বিশ্বের মুসলমানরা ধর্মকে রাজনীতির সাথে মেলাতে চাযনা,যার প্রমান কোন মুসলিম রাষ্ট্রে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ভোট না পাওযা। তাছাড়া ইসলাম ও গনতন্ত্র পরস্পর বিরোধী মতবাদ। সেকুলারিজম থেকে জন্ম নিযেছে গনতন্ত্র। এমনকি তুরসক্ত ১৯২৩ সালে অটোমান শাসন থেকে গনতন্ত্র বা সেকুলারিজমে ফিরে আসে। কারন ধর্মের বর্তমানে কোন কতৃপক্ষ না থাকয তা নিযে একই ধর্মপালনকারীদের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে বিবাদ। যার প্রমান ইরান বনাম সেওদীআরব যুদ্ধ। যার এক পক্ষে আছে আমেরিকা ও তার মিত্র এবঙ অপর পক্ষে আছে রাশিযা ও তার মিত্র।

এ দেশের মানুষ ধর্মীয় আচার স্বর্বস্বতা পালন করছে,আবার একই সাথে নাচছে,গাইছে,ছবি আঁকছে। আর মুর্খ মৌলবাদীরা বলে বেড়াচ্ছে  গান-বাজনা হারাম,ছবি আঁকা হারাম,টিভি দেখা হারমা,ভাষ্কর্য নির্মান হারাম প্রভৃতি। কিন্তু এ দেশের মানুষ সব কিছুই হাজার বছর ধরে জীবনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে পালন করে আসছে। তাই তো দেখি আমাদের বাংলাদেশ বড়ই বিচিত্র। আর এই বিচিত্রতাই হল পৃথিবীর নিয়ম,যা আমাদের  অহংকার।

জনৈক কবির ভাষায়- ”সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপওে নাই”

এটিই হল সেকুলারিজমের মুল কথা।

আমাদের বাঙালী জাতির সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি হল সেকুলার চিন্তার বিজয়গাথা ইতহাস। কারন  পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানীরা অধিকাংশই মুসলমান।  উভয় অঞ্চলের মানুষের মাঝে ইসলাম ধর্ম ও ইসলামী দর্শন গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। কিন্তু তবুও পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানগণ বহু আগে থেকেই স্বতন্ত্র ভাষা,কৃষ্টি,কালচার,প্রথা ইত্যাদি পালন করে আসছে। যদিও তারা অধিকাংশ মুসলমান তবুও তারা পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমান থেকে ভিন্ন একটি মুসলিম সম্প্রদায়,যাদের রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য,শিল্প, সংস্কৃতি,কথা-উপকথা প্রভতি, যা তারা বহু আগ থেকেই পালন করে ও ধারন করে আসছে। ধর্ম এমনি একটি সংবেদনশীল বিষয় যার উপর ভিত্তি করে পৃথিবীর বহু দেশে জাতীয়তা গঠিত হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে তা হয়নি। দেখানে দুদেশের মাঝে জনতার মাঝে কতনা ধর্মীয় সমাবেশ,অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু তার পরেও এদেশের মুসলমানগণ একটা স্বতন্ত্র ধারায় চলতে বিশ্বাসী ছিলেন। অন্য দিকে এই বাঙালী জাতিরই দুটি শাখা বিরাজমান ভারত ও বাংলাদেশে। ভারতে যে বাঙালী জাতি আছে তা মুলত হিনু জাতীয়তাবাদ দ্বারা প্রভাবিত। ফলে তারা রয়ে হেল চিরকাল ভারতের অঙ্গ রাজ্য। এই অংশের হিন্দু অধ্যুষ্যিত বাঙালীরা পারেনি নিজেদেরকে হিন্দু মৌলবাদ বা হিন্দু জাতীয়তাবাদ থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিতে। কিন্তু পূর্ব বঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী মুসলিম জাতি নিজেদেরকে ইসলামী জাতীয়তাবাদ বা ইসলামী মৌলবাদ থেকে আলাদা করে এতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের  জন্ম দিয়ে একটি সম্পূর্ণ স্বাাধীন জাতিতে পরিনত হয়েছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে পশ্চিম বাংলা ও বর্তমান বাংলাদেশে বাঙালী জাতীয়তাবাদ থাকলেও তার মাঝে সুক্ষন পার্থাক্য আছে এবং তা রাখতে হবে,কারণ তা না হলে এই দেশটা একদিন ভারতে অঙ্গ রাজ্য হয়ে যেতে পারে। আর এই পূর্ব বঙ্গের মুসলমানদেরকে যে একটি আলাদা বাঙালী জাতির স্বত্ত্বা দান করলেন তার মহা নায়ক হলেন বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তাই এই অংশের মুসলমানরা চিরকাল বঙ্গ বন্ধুর কাছে চির ঋণী। এর অর্থ এই নয়,যে তারা ইসলমা ধর্ম ত্যাগ করেছে। তারা মুসলমান এবং বাঙালী।  তবে তাদের এ অর্জনের পিছলে অমুসলিম ও অবাঙালীদেরও অবাদন আছে। তাই তারা তাদের এ অর্জনকে একচ্ছত্র দাবী করেনা। পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশে একই বাঙালী হলেও তারা মুলত হিন্দু মৌলবাদে উজ্জেবীত বাঙালী। আর তাই তো তারা হিন্দু রাষ্ট্র ভারতের অঙ্গ রাজ্য। তাই অব্য্রই তাদের সাথে একটা সাংস্কৃতিক পার্থাক্য বজায় রেখে চলতে হবে। কারণ বাঙালীদের মধ্যে আমরাই শ্রেষ্ঠ বাঙালী কারণ বাংলা ভাষার জন্য যুদ্ধ এক মাত্র এই বাংলাদেশের বাঙালীরাই বরেছেন। স্বাধীন বাংলা ভূ-খন্ড কেবল আমরাই অর্জন করতে পেরেছি। তবে শুধু পতাকার পরিবর্তনই জাতির মুক্তি নয়,চাই মৌলমানবিক চহিদার যোগান ও সাংস্বকতিক মুক্তি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা এই দেশকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছি ভারতের অঙ্গ রাজ্য হবার জন্য নয়,বরং একটি পরিপূণ স্বাধীন ও সার্বভোম বাংলাদেশ গড়ার জন্য। তবে পশ্চিম বঙ্গের যে সকল সেকুলার বাঙালী যারা আমাদের এই বাঙালী জাতি স্বত্ত্বায়  বিশ্বাস করে তাদেরকে ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে। অতএব দেখা যায় যে, আমাদের পূর্ব বাংলার

জাতীয়তাবাদ হল একটি সেকুলার জাতীয়তাবাদ। কিন্তু দেখা যায় আমাদের মুল

এর সংবিধান আজও কার্যকর হয়নি। কারন বলা হয়েছে বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র,আবার বলা হয়েছে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম। সেকুলারিজম তো সকল ধর্ম মতের উর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। ধর্ম হবে যার যার,রাষ্ট্র হবে সবার। ধর্মীয় তাত্তিব্ক বিষয় দিয়ে তো রাষ্ট্র পরিচালনা করা যায় না। তাই সেকুলারিজম রাষ্ট্র পরিচালনায় সকল ধর্ম মতের উর্ধ্বে অবস্থান করে। এ জাতীয়তাবাদ ধারন করেছে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ,ক্রিশ্চিয়ান, চাকমা,মারমা,মুড়ং,খাসিসা,তংচঙ্গা প্রভতি সকল মানুষকে।

তাই বলা যায় বাংলাদেশের জন্ম মানে পৃথিবীর   বুকে একটি আদর্শ সেকুলার রাষ্ট্রের জন্ম। এখন  প্রƒশ্ন হল আমরা তা কতটুকু বাস্তবায়িত করতে পেরেছি ??

কারণ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা বড় কথা।

এত সুন্দর,সৃজনশীল,মানবিক,সেকুলার জাতীর জাতীয় সংস্কতিকে হারাম বলছে আবার এদশেরই সন্তান। কইনা অবাক লাগে !!

এটি কি বাঙালী জাতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র নাকি মৌলবাদীদের মুর্খতা ??

যদি মুর্খতা হয় তবে তাদের মস্তিষ্কে সঠিক জ্ঞান  ঢোকানোর ব্যাবস্থা করা হোক।  এ কাজটি কথনও কেউ  আমরা কিেছ কি ??

আমরা কি কথনও মৌলবাদী গোষ্ঠীদের সাথে বা হুজুর সমাজের সাথে উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব,প্রশ্ন পর্ব,সভা-সমাবেশের ব্যবস্থ্যা করেছি ??

আমরা কি কেউ কথনও তাদেও  জিজ্ঞেস কিেছর আপনারা কেন শহীদ মিনারে ফুল দিতে যান না ??

আপনারা কেন প্রভাত ফেরীতে অংশ নেন না? দরকার হলে আপনারা হুজুররা আলাদাভাবে শহীদ মিনারে পুষ্প দান,প্রভাত ফেরীর আয়োজন করেন না কেন ??

আর যদি হয় তা মৌলবাদীদের ষড়যন্ত তবে তা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে কঠোর হস্তে দমন করা হোক। মানুষকে সচেতন করা হোক যাতে তাদেরকে ভুল বোঝাতে না পারে যে শহীদ মিনারে  ফুল দেওয়া হরাম ।

আমাদের বিশাল জনতাকে বোঝাতে হবে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম   নয় বরংতা হালাল !!!

আমাদের দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে ও বোঝাতে হবে যে, এই বাংলার জন্য তারা ও রক্ত দিয়েছেন। তারা যেন ভারতের হিন্দু মৌলবাদরে দ¦ারা প্রভবিত না হন।কারন ভারত সাংবিধানিক ভাবে একটি সেকুলার রাষ্ট্র হলেও বাস্তবে তারা সেকুলারিজম কায়েম করতে পারেনি। যার প্রমাণ নরেন্দ্র মোদীর মত এক জন উগ্র হিন্দু মৌলবাদী  ব্যাক্তির বিপুল ভোটে জয়লাভ।  এ থেকে বোঝা যায় ভরতের অধিকাংশ জনগণ হিন্দু মৌলবাদ নামক এক মহা আর্সেনিক ভাইরাসে হাজার বছর ধরে আক্রান্ত।অতএব, ভারত চাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছ,তারা আমাদের  বসবাসকারী হিন্দু জনগোষ্ঠীর মাঝে ও হিন্দু মৌলবাদ ঢুকিয়ে দিবে এবং তার স¤্রাজ্যবাদী বাসনা পরিতৃপ্ত করবে। তাই আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে।

আমি দেখে কষ্ট পাই যখন দেখি এ দেশ থেকে হিন্দুরা দলে দলে ঝাকে ঝাকে ভারতে পাড়ি জমায়।  এ জন্য সংখ্যা গড়িষ্ঠ মুসলমানদেরকেই বেশি আমি দারী করব। কারণ সংখ্যালঘু হিন্দু বা অন্য  সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য তাদেরকেই বেশি ভ’মিকা রাখতে হবে। তাদের অত্যাচারেই অতিষ্ট হয়ে তারা অনেকে এেেদশ ছাড়ছেন।

দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশের হিন্দুদেরকে মনে রাখতে হবে যে ভারত তাদের ভগবান রাষ্ট্র নয়। তাদের ভগবান রাষ্ট্র,মাতা  রাষ্ট্র এই বাংলাদেশ। এদেশে অর্জিত সম্পদ,অর্থ, বিদ্যা নিয়ে ভারতে চলে যাওয়া যাবে না। আমার এক জন ছোট বেলার স্কুল শিক্ষক আছেন যিনি বর্তমানে চিরস্থায়ীভাবে ভারতে চলে গেছেন। স্যার এক  জন সাংস্কৃতিমনা ও পন্ডিত ব্যাক্তি ছিলেন।  বাংলাদেশ হারালো একটি সম্পদকে। এভাবে শুধু আমার শিক্ষক নয়,এদেশের হাজারো শিক্ষিত হিন্দুরা বিদ্যা-বুদ্ধি, অর্থ,সম্পদ অর্জন করে তা নিয়ে ভারতে পাড়ি জমাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের মেধা,সম্পদ,অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। শুধু ভারতে নয় এমনি ভাবে অন্য দেশে ও  সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যা লঘুরা চলে যাচ্ছে।   ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তথা মুসলি পরিবারের সন্তান এ.পি.জে আব্দুল কালাম। যাকে ভারতে বলা হয় মিসাইল ম্যন। যিনি হলে ভারতে পারমানবিক প্রযুক্তিকর মহা নায়ক। যদি আজ ভারতে কাছে পারমানবিক শক্তি না থাকত তবে কি ভারত নামক রাষ্ট্র বিশ্ব মান চিত্রে থাকত??

এই শত কোটি হিন্দু অধ্যুষ্যিত ভারতকে রক্ষা করলেন না হিন্দুরে কোন দেবতা,অবতার,কোন পন্ডিত,কোন তার্কিক,কোন সাধু-সন্যাসী। রক্ষা করলেন এক জন মুসলমান।  আর ইনি এমনই এক জন খাটি দেশপ্রেমিক যিনি মৌলবাদের  মদ্য পান করলেন না। তিনি পারতেন তার প্রযুক্তি নিয়ে পাকিস্তান বা অন্য কোন মুসলিম দেশে পালিয়ে যেতে এবং সে দেশকে শক্তীশালী করতে। অথচ তিনি তার মাতৃ ভৃমি ভারতকে ভালবেসে তার জ্ঞানকে দিয়ে ভারত নামক একটি হিন্দু অধ্যষ্যিত দেশকে রক্ষা করলেন চির বৈরী পাকিস্তানের পারমানবিক আক্রমন থেকে।  তাই এ.পি.জে আব্দুল কালম সমগ্র ভারত,উপ মহাদেশ তথা বিশ্বের মানবতার ও দেশ্র প্রেমের দৃষ্টান্ত। যে ভারতের হিন্দুরা ভারতের উন্নয়নকে হিন্দুদের একচ্ছত্র দাবী করে ,মুসলমনা বা অন্য সম্প্রদায়ের লোককে অবজ্ঞা করে সেই এক শত কোটি হিন্দুদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন দেশ প্রেম কোন সংখ্যা গরিষ্ঠ বা সংখ্যা লঘুর নয়,বরং দেশ প্রেম হল অসম্প্রদয়িক চেতনার ফল।  তাই ভারত তার জীবদ্দশায় এবং প্রয়ানের পরে তাকে দেখালো নজিরবীহিন সম্মান।  তাকে দেওয়া হল দেশের সব চেয়ে রাজনৈতিক ও বে-সামরিক শ্রেষ্ঠ পদগুলো( রাষ্ট্রপতি ও ভারত রতœ)।

এ থেকে আমাদের দেশের সংখ্যগরিষ্ঠ ও সংখ্যা লঘুদের শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের দেশে যে সকল সংখ্য লঘুরা  মুসলিম বিরোধী মনোভাব পোষন করেন,তারা কি একবারও ভেবে দেখেছেন নীরবে যে আপনারা যে দেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে,বিশ্ববিদ্যালয়ে,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন তার অর্থের বেশির ভাগ যোগানদার এই মুসলমানরা ?? মুসলমানের পয়সায় লেখা – পড়া করে মানুষ হয়ে ভারতে যাচ্ছেন এবং মুসলীম বিরোধী মনোভাব  প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শিশুরেদর শিখাচ্ছেন ?? (তবে এ দেশে খাটি দেশপ্রেমিক হিন্দুও আছেন)।

এটি কি বুদ্ধিমান,দেশ প্রেমিকের পরিচয় নাকি মুর্খ,অকৃতজ্ঞ আর মৌলবাদদের  পরিচয় ?

নিজ দেশে ঠাকুর হওয়া যায়,কিন্তু অন্য দেশে হওয়া যায় কুকুর। এ দেশে বসবাসকারী  হিন্দু বা অন্য সংখ্যালঘু সম্পদায়কে মনে রাখতে হবে যে মুসলিম বিরোধী মনোভাব তাদের  জন্য শুভকর নয়,বরং মুসলমানদের সমর্থন,সহযেগীতা তাদের জন্য শুভকর। মুসলীমপ্রতি মনোভাব তাদের রাখতে হবে।

ভারতের গুজারাটে ২০০২ সালে হিন্দু-মুসলীম দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ মুসলমানদের  পাশে কিন্তু দাড়িয়েছিল উদার পন্থী,অসাম্প্রদায়িক বিত্তবান হিন্দুরা। অতএব,এ দেশের সংখ্যলঘুদের জীবন,সম্পদ,ইজ্জত রক্ষায় সংখ্যাগুরু মুসলমানরাই পারবে সব চেয়ে বেশি ভুমিকা রাখতে। তই আপনারা যদি মুসলিম বিরোধী মনোভাব রাখেন তবে আপনাদের  পাশে কাউকে পাবেন না। অন্য দেশ থেকে ভগবান এসে আপনাদের সাহায্য করতে পারবে না। তাছাড়া ধর্মের ভিত্তিতে সংখ্যার হিসেবটি কেন ???

আমাদের দেশে যে হিন্দু মৌলবাদ আছে তার সামান্য একটি উদাহরন দিচ্ছি। এক দিন এক হিন্দু ভদ্র লোকের বাসায় তার চতুর্থ শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়েকে পড়াতে গেলাগ। প্রথম দিন আমার ছাত্রীটিকে প্রশ্ন করলাম,আমাদের স্বাধীনতার ঘোষক কে ? সে বলল – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এবারে তাকে আবার প্রশ্ন করলাম,আমাদের জাতীয় কবি কে? সে বলল –  হিন্দুদের জাতীয় কবি হল – রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর এবং মুসলমানদের জাতীয় কবি হল – কাজী নজরূল ইসলাম। আমি অবাক হলাম আমার কোমলমতি ছাত্রীটির কথায়। এই যে কবি,সাহিত্যিকদেরকে নিয়ে সাম্প্রদায়িকতা সে ছোট্র শিশু হয়ে কোথায় পেল ? সে তো তা আকাশ থেকে নিয়ে আসেনি। নিশ্চয়ই তার পরিবার তাকে এহন সাম্প্রদায়িক বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে। এমনি ভাবে আমাদের পরিবার,গোত্র,বিদ্যালয় প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান আমদেরকে সাম্প্রদায়িক মনোভাব শেখাচ্ছে। তাই আমাদের পরিবার থেকেই মুলত উদার,মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি শেখাতে হবে।

এ দেশে অনেক উদার পন্থী,অসাম্প্রদায়িক মুসলমান রায়েছেন যারা সংখ্যাঘুদের জীবন,সম্পদ,অধিকার,ইজ্জত রক্ষায় সদাজাগ্রত। অতএব,সংখ্যগুরু মুসলমানদেরকে পাশ কাটিয়ে নয়,বরং তাদেরকে সাথে নিয়ে ঐক্য বন্ধ ভাবে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। মৌলবাদের মোকাবেলা মৌলবাদ দিয়ে নয়,বরং মৌলবাদকে মোকাবেলা করতে হবে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও আন্দোলনের মাধ্যমে।

মৌলবাদকে মোকাবেলা করতে হবে মুক্ত জ্ঞান দিয়ে।

সারা বিশ্বে বর্তমানে যেখানে চলছে সংখ্যালঘু নির্যাতন,সেখানে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে অসম্প্রদয়িকতার একটি উজ্জ্বল ধ্রুব তারা।

আামদের দেশে কেন হিন্দু,বৌদ্ধ,ক্রিিিশ্চয়ান ঐক্য পরিষদ ?? এথাসে কমিটিতে নেই কেন উদার পন্থী,অসাম্প্রদায়িক চেতনার মুসলমানগন ?? সংখ্যাগুরুদের পাশ কাটিয়ে,উপেক্ষা করে সংখ্যালঘুর উন্নয়ন সম্ভব কি ?? এটি কি তবে একটি মৌলবাদী সংগঠন ??  এটিকি মুসলীম বিদ্বেষী সংগঠন নয় ??

আমারা চাই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। তাই মৌলবাদের প্রতিযোগিতা নয়,বরং চাই অসম্প্রদায়িক চেতনার প্রতিযোগিতা। যে প্রতিযোগিতায় আমরা  এগিয়ে থাকতে চাই প্রতিবেশী দেশ ভারত,পাকিস্তান,নেপাল,ভুটান,শীলঙ্কা তথা সারা বিশ্বের তুলনায়। এটি কি আমাদের কাম্য নয়??

এ দেশে লেখা-পড়া করে,ব্যবসা-বানিজ্য করে,সম্পদ অর্জন করে যে সকল বাবুরা পাশ্ববর্তী ভারতে চলে যাচ্ছেন,তারা কি বাস্তবতা উপলদ্ধি করেছেন সেখানে গিয়ে ?? সেখানে আছে এখনও উচ,নিচু,বাঙারী,অবাঙালী হিন্দুদর চরম ভোদভেদ,যা আছে হাজার বছর ধরে। তবে স্বাগত জানাই ঐ সকল দেশপ্রেমি হিন্দুদের যারা ভারতে বাস্তব অবস্থা উপলদ্ধি করে,দেশের মায়ায় পুনরায় ফিরে আসছেন বাংলাদেশে। এরা যাবে না ভগবান রাষ্ট্র ভারতে। কারন এদের ভগবান বা মাতা রাষ্ট্র ভারত নয়,বরং এই ছোট্র লাল সবুজের বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে একটি বাস্তব ঘটনা অবতর করছি। প্রতিদিন উষাতে হিন্দু নর-নারী আমার অনুমতি ছাড়াই আমার গাছের ফুল নিযে যায। আমি একদা তাদের জিজ্ঞেস করি ফুল দিযে তারা কি করেন ? উত্তরে তারা বলল দেবতার চরনে দেন। ভাল কথা,এবারে আমি প্রশ্ন করলাম চুরি করা ফুল দেবতার চরনে দিলে দেবতা তুষ্ট হবেন না রুষ্ট হবেন?? তাও আবার অহিন্দু লোকের ফুল?

আমার এহেন কথায তারা স্তমিত ও বিব্রত হল। আমি তাদের আশ্বস্ত করলাম প্রতিদিন ফুল দেওযার। তারা খুশি হল আমার প্রতি। আমি তাদেরকে বললাম,দেখুন দাদারা-দিদিরা সমাজে বসবাস করতে হলে সবাইকে সবার উপরে নির্ভর করতে হয। একর সহযোগিতা,সহমর্মিতা ছাড়া অপরের জীবন ধারন সম্পুর্ণ হযনা। তাই আপনাদের উচিত মুসলমানদের প্রতি সুন্দর মনোভার রাখা এবঙ মুসলমানদের উচিত আপনাদের প্রতি সুন্দর মনোভাব রাখা। এটাই সমাজ,এটাই আমাদের কামনা করা উচিত। প্রতি বছর আপনারা দুর্গা পুজা করে,আলোজ সজ্জা করে কোটি কোটি টাকার বিদুত বিল উঠান,যা পরিশোধ করতে হয মুসলমানদের। মুসলমানদের পযসায পুজা করলে সেই পুজা কি শুদ্ধ হয??

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মুক্ত মনা,সাংস্কতি মনা,প্রগতিশীল লোকেরা প্রাণ ভয়ে জার্মানি,অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও ইংল্যান্ড সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে।   বর্তমানে  যে ভাবে একর পর এক মুক্ত চিন্তার মানুষদেরকে হত্যা ও বিচার না হওয়ার মত ঘটনা ঘটছে তাতে আমরা শঙ্কিত। এর পরে  আবার সরকার মুক্ত  জ্ঞানের চর্চার উপরে বিধি – নিষেধ আরোপ করেছে।  তাহলে প্রশ্ন হলো কালি কলম ফেলে কি তবে আমরা বসে থাকব ??

এই দেশটা তো মুক্ত চিন্তার ফসল। তবে কেন এ দেশে মুক্ত চিন্তা আজ হারাম ঘোষনা করা হল ??

আমরা ভুলতে পারছি না সালাম, জব্বার, রফিক,শফিক, সাত বীার শ্রেষঠ, বীর বীক্রম, বীর উত্তম, বীর প্রতীক আর সেই তারামন বিবি ও সেতারা বেগমদের যাদের ইজ্জতের বিনিময়ে আজ আমরা পেয়েছি স্বপ্ন পূরনের বাংলাদেশ।

ভুলতলে পারি না হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গ বন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে। যার জন্ম না হলে হয়ত আমরা স্বাানীধ বাংলাদেশ পেতাম না। তাই তিনি সকল দল , মত,ধর্শ,বর্ণ ও বিতর্কের উর্ধ্বে। তাকে নিয়ে কোন সমালোচনা হতে পারে পার না। তাকে নিয়ে কোন স্বার্থের রাজনীতি হতে পার না। এই পূর্ব বঙ্গের বাঙালদেরকে এক মাত্র তিনিই পেরেছেন জাতি হিসেবে অস্তিত দান করতে, যা পারেনি ভারতে বসবাসকারী বাঙালীরা। তাই শেখ মজিব শুধু পূর্ব বাংলার নেতা নন, তিনি সমগ্র বাঙালীর তথা বিশ্বের নন্দিত নেতা। আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই কিভাবে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তাকে তাদের সহোদর ও পৃথিবীর মহানায়ক হিসেবে বরণ করে নেন। সমগ্র বিশ্ব অবাক হেেয় দেখেছে সেই দিন বাংলাদেশকে ও বাংলাদেশের সেই রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে, তখা বাংলার বন্ধুকে। তিনিই প্রথম বাংলাদেশ নাামটির নামকরণ করেন। স্বাধীনতার পরে তিন যখন সৌদী আরব সফরে যান তৎকালী সৌদী বাদশা তাকে বাংলাদেশের নামকরণ ইসলামী আদলে করার পরামর্শ দেন। তার জবাবে শেখ মুজিব বলেণ মুসলি জাতির কেন্দ্রবিন্দু আপনার সৌদী আরবের নামে তো ইসলাম  শব্দটা নেই। কেন প্রাত্তন বাদশা সৌদের নাম অনুসারে হল??

বঙ্গবন্ধুর কথায় সৌদী বাদশা খুব ক্ষেপে গিয়ে বললেন, শুনুন রাখুন পাকিস্তান আর সৌদী আরব কেই কথা। পারলে পুনরায় পাকিস্তানের সাথে মিলে যান। জবাবে বঙ্গবন্ধু জবাবে বললেন জাতির সাথে আমি বেইমানী করতে পারি না। এখানে ভিক্ষা নিতে আসেনি।  আমাদেরটা স্বাধীন করেছে হিন্দু,মুসলিম, বৌদ্ধ, ক্রিশ্চিয়ান, চাকমা, মারমা, মুরং, তথা সমগ্র বাঙালী ও অবাঙালী।  তাই আমি পারি না আমার কোন সন্তানকে কোলে টানতে আর কোন সন্তানকে দূরে ঠেলে দিতে। তাই তিনি নাম এই ক্ষুদ্র দেশটির নাম রাখলেন গণতন্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী  বাংলাদেশ।  অর্থাৎ গণ বাঙালী ও অবাঙালীর দেশ।  তিনি ৭ ই মার্চ ভাষনে বলেছিলেন, – এই বাংলায়  হিন্দু, মুসলিম,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বাঙালী ও অবাঙালী সবাই আমাদের ভাই।  আমাদের মাঝে শত্রুরা ঢুকে পড়েছে,কেউ যেন আমােিদর মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে”।

বঙ্গবন্ধুর এ  উদ্ধিৃত্তি থেকে বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ একটি  সেকুলার অর্থাৎ অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র। তবে এখানে উল্লেখ্য যে সেকুলারিজম কোন ব্যক্তিকে মসজিদে,মন্দিরে,গির্জায়,প্যগোডায় যেতে নিষেধ করে না। সেকুলারিজ নিষেধ করে বিমুর্ত সত্বাকে মুর্ত সত্বার দ্বারা চালিত করতে। আর নির্বোধ মৌলবাদীরা বলে সেকুলারিজ হল ধর্ম হীনতা। আসলে সেকুলারিজ কোন ধর্মীয় বা ধর্ম হীন মতবাদ নয়। বরং এটি একটি নিরপেক্ষ মতবাদ।

যেখানে রয়েছে মানবতার মহা মিলন। কিন্তু আজ আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মৌলবাদী পাকিস্তানের পোষ্য সন্তানরা  আমাদের এই বাঙালী জন্ম দাতকে বিলীন করার জন্য ধর্মের নামে বিভ্রান্তিকর মতবাদ ছড়াচ্ছে। তারা এ জাতির জনক বঙ্গ বন্ধুর শেখ মুজিবুর রহামনের নাম মুছে ফেলাার জন্য মসজিদে বসে সু-কৌশলৈ বলে থাকে- মেওে ভাই দোস্ত বুজুর্গ, আমাদের জাতির পিতা এক মাত্র ইব্রাহীম (আ: ) অন্য কেউ নন। অন্য কাউকে জাতির পিতা মনে করা যাে না। করলে তা শিরক হবে, যা আল্লাহর কাছে হবে ক্ষমার অযোগ্য অপরপাধ। আমি প্রতিবাদ করলাম ইব্রাহীদ (আ: ) কে মুসলমানরা জাতির পিতা মনে করুক তাকে আমার কোন আপত্তি নেই, কিন্তু এই লাল সবুজ পতাকার দেশে সকল ধর্মের মানুষের কাছে বঙ্গ বন্ধুই হলেন জাতির পিতা। কারণ পৃথিবীর বহু দেশেই তাদের  স্বাধীনতার মহানায়কদেরকে  জাতির পিতা হিসেবে  স্বীকৃতি দিয়েছে।  অতএব, এত  আপত্তি কোথায় ??

জবাবে মৌলবাদী কাঠমোল্লাটি বললেন ইসলাম ছাড়া কিছু মানি,বুঝি না আর বুঝতে ও চাই না। আমি বললাম আপনারা আসলে ইসলামই বোঝেন না।  আসলে এরা ধর্মের নামে পুজিবাদী পাকিসসসস্তানী ধর্ম ব্যবসায়ী। ধর্মের  মর্ম এরা বোঝে না। যেখানে আছে স্বাদেশ প্রেম ঈমানে অঙ্গ,সেখানে কতটা সুকৌশলে ছড়াচ্ছে পাকিস্তানের তৈরী ভন্ড ইসলামী দর্শন। আজও মাদ্রাসাগুলোতে পড়ানো হচ্ছে উর্দু। আমাদের কথা হলো উর্দু ভাষা চর্চা করছেন করেন,কিন্তু উর্দুর চর্চা করতে গিয়ে উর্দওয়ালাদের  দ্বারা মগজ ধোলাইয়ের স্বীকার হয়েন না।  এসবগুলোতে আমার্দে দাবি হল দাবি দিতে হবে জাতির প্রগতিশীল শিক্ষা। দিতে হবে জাতির ইতহাস,সংস্কৃতি,সেকুলারিজম আর বিজ্ঞান ভিত্হিতক শিক্ষা। নতুবা মাদ্রাসা থেকে পাশ করা  এক জন ছাত্র চির কালই ধর্মান্ধ ও এ দেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও গনতন্ত্রেও প্রতি পরিপন্থী হবে,এটাই স্বাভাবিক।  অসম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠবে ওরা। তাই ওদের দোষারোপ না করে ওদেরকে সুশিক্ষা দিতে হসে । তবেই এক দিন দেখতে পারব হুজুররা দলে দলে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাচ্ছে।  আর তারা বলবে না যে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া  হারাম।  আর বলবে না বাঙালী সংস্কৃতি হিন্দু প্রভবিত সংস্কৃতি।  তারা বুঝতে পারবে তখন যে, ভাষা,সাহিত্যও সংস্কৃতি তা হিন্দু বা মুসলমানের বিষয় না,বরং তা মাববের সম্পদ। তারা বুঝবে যে আরবী ভাষা মুসলমাদের ভাষা নয়,বরং তা ছিল অমুসলিম,পৌত্তলীক তথা আরবীয় হিন্দুদের  ভাষা।

ওদেরকে পড়তে দিতে হবে সমন্বিত ধর্মের বই যা পড়ে ওড়া জানতে পারনে ইসলাম ধর্ম, ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম, হিন্দু ধর্ম,,বৌদ্ধ ধর্ম তথা মানবের ধর্ম। আর তখন ওদের  মাঝ থেকে মৌলবাদরে বিষবাষ্প চলে যাবে। ওদরকে পাট করতে দিতে হবে এরিষ্টটল, সক্রেটিস, আইনষ্টাইন,রবীন্দ্র নাথ  আর লালন ফকিরের দর্শন।  ওরা জানতে পারবে এদের ঈশ্বর সম্পর্কীয় কনসেপ্ট। ওরা জানতে পারবে যে এই সকল মহামানবেরা কোন প্রচলিত ধর্মের ঈশ্বর কনসেপ্টকে গ্রহণ বা বিশ্বাস করেননি।  তাহলে এক দিন ওরা আর বলবে না যে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম। তখন ওরা আর বাঙালী সঙস্কৃকিতে বলবে না কাফেরের সংস্কৃতি।

মৌলবাদ বলতে আমরা কি বুঝি? ”মৌলবাদ বা মৌলবাদী বলতে আমরা যে বিশ্বাস বা বিশ্বাসীদের বুঝি যারা ধর্ম শাস্ত্রের বালীকে যান্ত্রিক ভাবে প্রয়োগ করতে চায়। যারা নিজ ধর্ম শাস্ত্রের বাইরে অন্য ধর্ম শাস্ত্র সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। যারা বিশ্বাস করেন ধর্মের জন্যই জন্যই মানুষ, মানুষের জন্য ধর্ম নয়।  প্রচলিত ধর্ম মতই এক মাত্র চ’ড়ান্ত এবং শ্বাশ্বত। ধর্ম মতের বাইরে কিংবা ধর্ম মতের বিপক্ষে কোন মত থাকতে পারে না”। যাদের এক মাত্র ও চ’ড়ান্ত ব্রত হল তা প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের সময়,শ্রম,অর্থ এমনকি জীবন পর্যন্ত বিসর্জন করাই মহৎ কাজ”। এরাই মৌলবাদী এবং এদর এই কনসেপ্টই হল মৌলবাদ। যদিও মৌলবাদদের  অর্থ আরো ব্যাপক। অক্সফোর্ড ডিকশোনারী মতে –  (ভঁহফধসবহঃধষরংঃ)  শব্দের অর্থ করা হয়েছে এভাবে- মৌলবাদী বলতে ঐ ব্যাক্তিকে বোঝায় যে প্রচলিত ধর্মের বিধিবিধানকে কঠোর ভাবে চর্চা করতে চায়।

এই ভারতীয় উপমহাদেশে প্রধান দুটি মৌলবাদে কোটি কোটি মানুষের জীবনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এ দুটি মৌলবাদ সমুদ্রের জলের মতই পাশাপাশি অবস্থান করে দুটি মানবের ধারকে বিভক্তি করে রেখেছে। এ দুটি প্রধান মৌলবাদই উপ মহাদেশকে বিভক্ত করেছে।  উপ মহাদেশ বিভক্ত হওয়ায় বুকের উপর চুরি চালানো হয়েছে বাঙালী, পাঞ্জাবী ও কাশ্মীরীদের  উপর। আসলে পাঞ্জাব, কাশ্মীর এবং বৃহত্তর বাংলা আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার কথা। কিন্তু হিন্দু ও মুসলিম দুটি মৌলবাদ তাদেরকে চির তরে  আলাদা করে দিয়েছে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য। আজ তাই ভারত ও পাকিস্তান গুলি চালাচ্ছে কাশ্মীরের জনগনের উপর। চির ভ’ –স্বর্গের দেশ কাশ্মীর এখন চির শ্মশ্মানে পরিনত হয়েছে।  আজ টেলিভিশনের পর্দায় দেখে ব্ড়ই কষ্ট লাগে যে ভারত  বাঙালীর বুকের মাঝ দিয়ে কাটা তাঁর দিয়েছে।  কাটা তাদের উপর ঝুলছে  অসংখ্য ফেলানীর লাশ।  বাবা এপার তো ছেলে কাটা তাাঁরের উপার। কি যে অশু ধারা বাঙালীর চোখে। আজ আমরা বাঙালী হয়েছি বলে জেলের মধ্যে থেকে যেমন এক জন বাবা তার সন্তানকে স্পর্শ করতে চায় কিন্তু পারে না লোহার শিকের জন্য,তেমনি কাটা তাঁর ও রাজনৈতিক দেওয়ালের কারনে হাজার হাজার বাঙালী প্রতি বছর বিশেষ দিনগুলোতে যাচ্ছে সীমান্তে কাটা তাঁরের পাশে তাদের স্বজনদেরকে এক পলক দেখতে। জেলে বন্দী বাবার যেমন তার ছেলেকে স্পর্শ না করার আকুতি যেমন ,তেমনি কাটা তাঁরের এপার আর উপারের মানুষের একই অবস্থা। শুধু অশ্রু ধলছে বাঙালীর চোখ থেকে।

তাই তো বঙ্গ বন্ধু বলেছিলেন – ”বাঙালীর ইতিহাস নির্যাতন আর নিপীড়নের ইতহাস, বাঙালীর ইতহাস চোখ থেকে অশ্রু ঝরার ইতহাস”। অনুরুপ ভাবে পাজ্ঞাবী ও কাশ্মীরী জাতির ইতিহাস রক্ত আর অশু ঝরার ইতহাস। উপমহাদেশে মুলত তিনটি জাতি নিপীড়িত।  আমরা যখন দেখি বা শুনি বি.এস.এফের গুলিতে মরছে কোন বাঙালী,তখন কষ্টে ভরে যায় আমাদের মন । তাও আবার যদি হয় বাংলাদেশের নাগিরিক।

ভারত ও পাকিস্তান আমাদেরকে হিন্দু ও মুসলিম নামক দুটি মৌলবাদের মদ খাইয়ে চিরকালের জন্য বাঙালী জাতি স্বত্ত্বাকে আলাদা ভাবে ঘুমি পড়িয়ে রেখেছে।  তাই তো দেখি আমাদের বাঙালীদেরই প্রতিনিধি পশ্চিম বঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অনিচ্ছার  কারনে ভারত ও বাংলাদেশের মাঝে তিস্তা পানি চুক্তি আজ ও  হচ্ছে না। বাঙালী হিসেবে এটা আমাদের  জন্য লজ্জার নয় কি??

বাঙালী আজ হিন্দু ও মুসলিম দুটি ভাগে বিভক্ত।  অথচ নৃ-তাত্তিক ভাবে এরা সবাই এবই জাতি। ধর্ম গ্রহণ করে বা  বর্জন করে বাঙালী আজ দুটি দলে দলে বিভক্ত। কিন্তু তবুও মাঝে মাঝে আমরা দেখি সকল বাধাঁ ডিঙিয়ে ও বাঙালী কথনও কখনও এক হচ্ছে। যতই থাকুক তাদের মাঝে রাজনৈতিক বা কাটা তাঁরের বেড়া।  যখনই  মধ্য প্রাচ্য, দূর প্রাচ্য, আমেরিকা,অষ্ট্রেলিয়া বা ইউরোপে এক জন বাঙালীর সাথে অপর বাঙালীর দেখ হচ্ছে,কথা হচ্ছে তখনই তারা কান্না বিজড়িত ভাবে ভাই ভাইকে জড়িয়ে ধরছে।  জনৈকি কবির ভাষায় – বিনে স্বদেশী ভাষা,মিটে কি মনের আশা??

আমরা যতই ইংরেজী,হিন্দী,উর্দু,আরবী প্রভৃতি ভাষায় দক্ষ হই না কেন মায়ের ভাষা বাংলা আমাদর হৃদয়ের ভাষা।

বাঙালী জাতি তাই মাঝে মাঝে প্রমাণ করে যে,আমরা একটি পৃথিবীর বুকে স্বতন্ত্র জাতি,যাদের আছে ভিন্ন ভাষা,সংস্কৃতি,ইতহাস,ঐতিহ্য,গান,কথা-উপ কথা প্রভৃতি। কিন্তু বাঙালীর দূর্ভাগ্য যে তারা সম্মিলিত ভাবে একটি বৃহত্তর বাংলা নামক  স্বাধীন রাষ্ট্র হিন্দু ও মুসলি,বৌদ্ধ,ক্রিশ্চিয়ান সবাই মিলে গড়তে পারেনি। তাছাড়া বাংলাদেশ নামক যে একটি অধুনা রাষ্ট্র তারা গড়েছে সেটিও তেমন একটা অর্থনৈতিক ভাবে,রাজনৈতিক ভাবে,সাংস্কৃতিক ভাবে সমৃদ্ধ নয়। ফলে পৃথিবীর বুকে বাঙালীরা ভিন্ন জাতি হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছে না। এমনকি ভারতেই বাঙালী হিন্দু ও হিন্দি ভাষী হিন্দুর মর্যাদা এক নয়।  মধ্য প্রাচ্য সহ অনেক দেশেই বাঙালীকে দেখা হয় মিসকিন বা ভিক্ষুকের জাতি হিসেব। অথচ এক দিন এই বাংলায় আসত মধ্য প্রাচ্য সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ভিক্ষা নিতে,ব্যবসা করতে।

দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য যে বাঙালীরা আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দ্বারে দ্বারে ঘুড়ছে,সেই বাঙালী কাছেই ওরা এক দিন ভিক্ষা চাইত।  ডাচ,ওলন্দাজ,পর্তুগী,ইংরেজ,আরব,পারস্য প্রভৃতি কত জাতিই না এসেছিল আমাদের দ্বারে !!

অথচ আজ বাঙালী যাচ্ছে ওদের দ্বারে।  কোথায় গেল বাঙালীর সেই প্রবাদ – মাছে ভাতে বাঙালী??

এবার অন্য প্রসঙ্গে একটু আলোকপতা করি।  এক দিন এক মৌলবাদী ব্যাক্তির সাথে  আমার আলাপ হয় এই ব্যাপারে যে, ্আপনারা যদি ২১ ফেব্রুয়ারি,১৬ ডিসেম্বর সহ বিশেষ দিনগুলিতে দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করতে পারেন শহীদ মিনারে তবে আমরা হুজুররা দলে দলে যাব শহীদ মিনারে। আমি বললাম ভাল কথা আপনি শহীদদের জন্য দোয়া করবেন,করেন।  কিন্তু আপনি এমন একটা  স্তম্ভ দেখান যেখানে সকল সম্প্রদায়ের লোকেরা এক সাথে মিলিত হতে পারে। মৌলবাদী লোকটি কোন সদুত্তর দিতে পারলেন না। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি  অস্মপ্রদায়িকতার ভিত্তিতে, ধর্মের ভিত্তিতে নয়। অসাম্প্রদয়িকতার স্তম্ভ হল একুশে ফেব্রুয়ার, ১৬ ই ডিসেম্বর, পহেলা বৈশাখ প্রভৃতি।  বাঙালীর জাতি সত্ত¦ার স্তম্ভ হল অসাম্প্রদায়ক সÍম্ভ।  এই মিনারে বা বেদীতে বা স্তম্ভে দাড়িয়ে আছে হিন্দু,মুসলমান,বৌদ্ধ,ক্রিশ্চিয়ান, চাকমা,মারাম,খাসিয়া,মুরং,চনচঙ্গা,গারো সবাই।

আজ কোথায় আমাদের অবস্থান ?? এ দেশে জ্ঞান চর্চার পরিবেশ। বাস করিিছ মৌলবাদ নামক এক বিশাল জেলখানায়া। মানুষের মন উন্মুক্ত আকশে উড়ন্ত পাখির মত। সে উড়তে চায় বাধা বিহীন দিগন্ত জুড়ে। তার নেই কোন সীমানা। তেমনি ভাবে খোলা আকাশে উড়ন্ত পাখিীদের মত। সে জানতে চায় এটা কি,ওটা কি? এটা কেন? ওটা কেন??  কিভাবে হচ্ছে? প্রভৃতি নানা প্রশ্ন। কিনÍু প্রচলিত ধর্ম মানুষকে প্রশটœ করতে নিষেধ করে ধমক দেয়। যারা বলেন ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধে কোন পার্থাক্য নেই তারা আসলে  বিজ্ঞান বা ধর্ম কোনটাই ভাল ভাবে বোঝেন না ।  অথবা  ব্যাক্তিগত বা গোষ্ঠীগত কারনে সত্যকে লুকিয়ে রাখছেন। এরা  আসলে বৈজ্ঞানীক ও না,আবার ধার্মিক ও না। এরা আসলে বিভ্রান্তিকারী।  যেখানে বিজ্ঞান বলে এমিবা নামক এক প্রকার এক কোষী জীব থেকে পৃথিবীর সকল জীবের সৃষ্টি। বিজ্ঞান যেখানে বলে বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান আধুনিক মানুষের সৃষ্টি হয়েছে ,ধর্ম সেখানে বলে দুটি মাত্র নর-নারী থেকে পৃথিবীর সকল মানুূষ এসছে।  যেখানে সব কিছু সির অথবা পূব পরিকল্পিত। বিজ্ঞান সেখানে বলে কোন কিছুই স্থির  বা পূর্ব পরিকল্পিত নয়।  মহা বিশ্ব এক বিবর্তনের ফল। সৃষ্টিতত্ত্ব বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রচলিত ধর্মের মধ্যে রয়েছে চরম বিরোধ,বাকি না হয় বাদই দিলাম। এ প্রসঙ্গে  বরিশালের এক জন স্ব-শিক্ষিত লৌকিক দার্শনিক  জনাব আরজ আলী মাতুব্বর বলেছেন – ” ধর্ম জগতে এরুপ কতগুলি নীতি,প্রথা,সংস্কার ইত্যাদি এবং ঘটনার বিবরণ প্রচলিত আছে যাহা সাধারন মানুষের বোধগম্য নহে এবং ওগুলি দর্শন ও বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে,এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত ও বটে”।

তিনি প্রশ্ন করেছিলেন সমাজকে – ” ধর্মের নামে কুসংস্কার সত্য, না পরীক্ষালব্ধ বিজ্ঞান সত্য ? ”

যেমন তিনি প্রশ্ন করেছেন আল্লাহর রুপ কি? খোদাতালা কি মনুষ্য ভাবাপন্ন?  ¯্রষ্টা কি সৃষ্টি হইতে ভিন্ন? ঈশ্বর কি সেচ্ছাচারী নাকি  নিয়মতান্ত্রিক? আল্লাহ ন্যায়বান না দয়ালু ? আল্লাহর অনিচ্ছায় কোন ঘটনা ঘটে কি?  নিরাকারের সাথে নিরাকারের পার্থাক্য কি ? নিরাকার পদার্থ দৃষ্টিগোচর হয় কিভাবে ? স্থান,কাল ও শক্তি সৃষ্ট না অসৃষ্ট ? সৃষ্টি যুগের পূর্বে কোন যুগ ? জীব সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি? পাপ পূন্যের ডায়রী কেন? পরলোকের সুখ-দুঃখ শারীরিক না আধ্যাতিœক ?্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র  গোর আজাব কি ন্যায়সঙ্গত ? ইহকাল ও পরকালে সাদৃশ্য কেন ?? প্রভৃতি নানান বিষয়। যা নিয়ে নিয়ে তিনি বই লিখলেন – ”সত্যের সন্ধান” ও ”সৃষ্টি রহস্য” নামক দুটি অবিনাশী বই,যা ব্যাপক নাড়া দিয়েছিল হাজার বছর ধরে প্রচলিত ধর্ম মত সমূহকে। ফলে তাকে কার বরণ পর্যন্ত করতে হয়েছিল।

আজ যারা প্রচলিত ধর্মসমূহকে বৈজ্ঞাণীক ভাবে ব্যাখ্যা করছেন তারা ধর্ম ও বিজ্ঞানেবর নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ডাক্তার জাতির নায়েক,ডক্টর মরিস বুকইলী,এন.সি.বোস প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলছেন বলে আমি মনে করি। কারন এদর লেখা বই,ধর্মগ্রন্থ এবং বিজ্ঞানের বই পাশাপাশি রেখে পড়লে তাদের বিভ্রান্তি স্পষ্ট ধরা পড়ে।

তাই আমাদের সাবধান থাকতে হবে একটি মাত্র বা এক লেখকের বই পাঠ করা থেকে। বহুমুখী বই পড়তে হবে আমাদের। এ সকল লোকেরা মানুষকে বোকা মনে করছে। তারা যে এখন ধর্মেেক বৈজ্ঞানীকিকরন করছেন তা বেশি দিন টিকবে না। কারন পাশাপাশি ধর্মীয় বই, তাদের লেখা বই এবং বিজ্ঞানের বই অধ্যয়ন করলেই তা ধরা পড়বে। বৈজ্ঞাণীকিকরনের মুল রহস্যটা হল অনুবাদের ক্ষেত্রে। প্রতিটি ধর্মগ্রন্থ আজ মনগড়া ভাবে অনুবাদ করা হচ্ছে।  ধর্মের এহন বৈজ্ঞানীকিকরনের ফলে ধর্মেকে তারা চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।  বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল,আজ যা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সত্য তা আগামী কাল সত্য নাও হতে পারে। অন্য দিকে ধর্মকে মানুষ স্থিও মনে করে। দুটি ভিন্ন স্বত্ত্বা।  ধর্মেও কাজ হল মানুষের নৈতিক,আধ্যাতিœক,মানবিক উৎকর্ষ সাধন আর বিজ্ঞানের কাজ হল বাস্তব জ্ঞানের ভিত্তিতে মানুষের মঙ্গল সাধন। দুটির কাজ অভিন্ন ও ভিন্ন। কিন্তু দুটি ভিন্ন স্বত্ত্বা। দুটিকে আলাদা করা যাবে। যুক্তি আর অন্ধবিশ্বাসকে এক করা যাবে না। কারন ধর্ম হল কিছু অবৈজ্ঞানীক,অপ্রমাণত ও বিমুর্ত জিনিসের প্রতি মানুষের অন্ধ বিশ্বাস,যা প্রজন্ম থেকে প্র্রজন্মান্তরে চলছে।  উভয়ের ভুমিকা মানব সমাজে অপরীসীম।

তবে অন্তত আজ আশার আলো এতটুকু যে রাজাকারের বিচার চলছে। মৌলবাদরে বিষবাষ্পকে দমন করা হচ্ছে। যার পরিনতি এখন পর্যন্ত জঙ্গীবাদ মুক্ত বাংলাদেশ। তবে শুধু দমন- পীড়ন নয়,চাই আদর্শ মানুষ,আদর্শ নাগরিক,আদর্শ বাঙালী তথা সেকুলার চিন্তান  শিক্ষা। চাই মুক্ত জ্ঞান চর্চার পরিবেশ। যদি বাক স্বাধীনতাই না থকে,যদি নিজের আদর্শে  নিজের জীবনকে চালিত নাই করা যায়,তবে স্বাধীনতার অর্থ কোথায় ?

এদশে ধর্মের খোলসে হাজারো অর্ধের কাজ করলে সে নাস্তিক হয় না। যখন কোন ব্যাক্তি ধর্মের  কোন বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তখন হয়ে যায় সে নাস্তিক,মুরতাদ,কাফের প্রভৃতি। আর তাকে হত্যা করা তখন হয়ে যায় মৌলবাদীদের ঈমানী দায়িত্ব। জ্ঞান চর্চার এ দূর অবস্থা আর কত কাল চলবে ?

এখনও কেন এদেশে মৌলবাদীরা সোচ্চার ?

কেন তারা আমাদের দেশের কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক,বৈজ্ঞানীকদের বিরুদ্ধে ফতুয়া জারি করে ?

এই বাংলাদেশের জন্য তো তিরিশ লক্ষ জীবন বিসর্জন দেয়নি। এই বাংলাদেশের জন্য তো দুই লক্ষ মা-বোন ইজ্জত দেয়নি। কেন এ দেশে নেই সাহিত্য,দর্শন,সংস্কৃতি আর বিজ্ঞান চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ ?

কেন রমনার বটমূলে মৌলবাদী বোমা বিষ্ফোরন ??  কেন সারা দেশে সারা দেশে মৌলবাদী সিরিজ বোমা বিষ্ফোরন??

পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির মধ্যে রেনেসাঁর স্পৃহা সৃষ্টি হলেও আমরা এখনও পারিনি আমাদের রাষ্ট্রীয়,সামাজিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে রেনেসা জাগরন পুরোদমে শুরু করতে।  তাই সৃষ্টি করতে হবে জ্ঞানের নব জাগরন তথা রেনেসা যা ইউরোপ,আমেরিকা আর অষেট্রলিয়াকে করেছে সমৃদ্ধ। দিয়েছে তাদেরকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ  স্বর্ন মুকুট।

আমাদের প্রচলিত মাদ্রাসা,স্বুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় সহ  নানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যগোপযোগী শিক্ষা ব্যাবস্থা চালু করতে হবে। ধর্মের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কিছু না থাকলেও অন্তত আমাদের  জন্য ক্ষতিকর মৌলবাদ,উগ্রবাদ,জঙ্গিবাদ,পজিবাদ সৃষ্টিকারী অপ শক্তির বিরুদ্ধে অবশ্যই রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে।

আমাদের মুল সংবিধান অবশ্যই চালু করতে হবে। যে ছয় দফার ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, যে জাতীয়তাবাদের জন্য রক্তাক্ত বায়ান্ন হয়েছিল, তা আমাদের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।

আজ  বড়ই পরিতাপের বিষয় যে,আজ যখন আমি এ সব কথা বলছি তখনই বলা হবে আমি কোন না কোন বিশেষ দলের পোষ্য।  তবে সত্য বলব না ?

কতই সুমধুর লাগে বায়ন্ন আর একাত্তরের হৃদয় ছুয়ে যাওয়া গান !!!

কতই ভাল লাগে প্রভাগ ফেরিতে খালি পায়ে হাটতে আর তার দৃশ্য অবলোকন করতে।

”ামার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী,আমি কি ভুলিতে পারি ?”

এই অবিনাশী গান ছুয়ে যায় বাঙালী হদয়। অথচ ওগুলি নাকি হারাম ??

তাই এসব গান বাজেনা আমাদের মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে।  অনেক স্কুল,কলেজে ও ২১ ফেব্রুয়ারী,১৬ ডিসেম্বরম২৬ মাচ,১৫ আগষ্ট পালন করা হয় না।  আমি হলফ করে বলতে পারি যে মাদ্রাসায় পড়া হুজুর বা ছাত্রদেরকে জাতীয় সংগীত গাইতে বলা হয়,তবে অনেকেই তা পারবে না। এটা জাতি হিসেবে আমাদের হতাশার ব্যাপার !!

এমন শিক্ষা আর এমন পরিবেশ তাদের আমরা দিয়েছি যে তারা জাতীয় সংগীত গাইতে পারে না। এমন লক্ষ কোটি হুজুররা এ দেশেরই সন্তান,অথচ জাতীয় সংগীত গাইতে পারে না। কেমন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠল ??

তারা তাদের দেশের জাতীয় দিবসগুলো পালন হারম বা অকাজ মনে করে। দিন দিন এদেও সংখ্যা বেড়েই চলছে। এভাবে চলতে থাকলে এক দিন বাংলাদেশ হবে আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মত মৌলবাদী,জঙ্গীবাদী ও মুর্খ রাষ্ট।

তখন অমুসলিরা তো দুরের কথা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরাই নিরাপদ থাকবে না। তাই ধর্মের ব্যাপারে কিছুই কররা নেই,এটা বলে বসে থাকলে বাংলাদেশ নামক একটি আধুনিক ও অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিলীন হয়ে যাবে।  এ দেশটা কেন প্রায হিন্দু শূণ্য হয়ে গেছে? এ জন্য কারা বেশী দায়ী ? নিশ্চয়ই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা বেশি দায়ী। একটি দেশে যখন একই সম্প্রদায়ের লোকের সংখ্য অধিক হয়ে যায়,তখন স্বভাবত ঐ দেশে ঐ সংখ্য গরিষ্ঠ ধর্মের নামে মৌলবাদ গড়ে ওঠা স্বাভাবিক। তাই বড্ড দেড়ি হয়ে গেছে আমাদের। আর দেরি না করে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সকল মাদ্রাগুলোকে সরকারী নজরদারী বাড়াতে হবে,যাতে সেখানে থেকে শান্তির ধর্ম ইসলামকে কেউ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গত স্বার্থে রাজনীতি করতে না পারে। যাতে ইসলামের তথা মুসলমানদের বদ নাম না হয়।

পাড়ায় পাড়ায়,মহল্লায় সরকারী ও বে-সরকারী উদ্যোগে গণপ্রন্থাগার গড়ে তুলতে হবে।  দেশে অখিক সংখ্যক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে।  উপযুক্ত যন্ত্র পাতি সহ ল্যবরেটরী গড়ে তুলতে হবে। নতুন করে প্রাথমিক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। কারন আমাদের দেশে এখন  প্রয়োজনের তুলনায় অধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। দেখা যায় অনেক স্বুলগুলোতে উপচে পড়া ভিড়.আবার কোথাও ছাত্র-ছাত্রী বিরান শিক্ষা  প্রপ্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারী,১৬ ডিসেম্বর,১৫ আগষ্ট,২৬ মার্চ প্রভৃতি জাতীয় দিবসগুলো মাদ্রাসায় পালন করতে হবে। মাদ্রাসার পাঠ্যসূচিতে ব্যাপক পরিবর্তন  আনতে পারেন। কওমিয়া বলে আলাদা কোন এক চেটিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। এদশের সকল প্রতিষ্ঠানই সরকারের প্রত্যক্ষ নজরে আনতে হবে। মাদ্রাসা,মাজার,গিজা,মন্দির,প্যগোডা প্রভতি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা জাতীয় সংগীতের পরিবেশন দেখতে চাই। মসজিদের মাইক খেকে কেন শুধু আজান,ওয়াজ আর গজল? কেন আমরা জাতীয় সংগীত শুনব না ??  জাতীয় সংগীত গাওয়া কি হারাম ??

শুধু মাত্র ধর্মীয় সংগীতের মাঝে আমরা সীমাবন্ধ থাকতে চাই না?  মন্দিরে কেন শুধু কীর্তন ?  জাতীয় সংগীতের কীর্তন কেন হবে না ??

এ জন্য অবশ্যই রাষ্ট্রীয় আইন ও বাধ্য বাধকতা থাকা উচিত।  যারা আমাদের দেশের জাতীয় দিবসগুলো পালন হারাম মনে করবে তারা যেন এ দেশ ছেড়ে পাকিস্তাান বা ভারতে চলে যায়।

ঐসকল মৌলবাদীরা কি খোজ রাখে যে তাদের নেতা আলী জিন্নাহর সকালের নাস্তায় প্রিয় খাদ্য ছিল শুকরের মাসংস,যা ইসলামমে হারাম। ঐ সকল হিন্দু মৌলবাদীরা কি খোজ রাখে যে,তাদের নেতা মহাতœা গান্ধী হিন্দু ধর্মের প্রচলিত আচার-স্বর্বস্বতা পালন করতেন না ?

এই উপ মহাদেরশ ভাগ হওয়াটা মুলত কিছু স্বার্থবাদী,পুজিবাদী  হিন্দু ও মুসলিম নেতাকের ছক। গণ মুসলিম বা গণ হিন্দুদের ধর্মীয় ইমোজকে কাজে লাগিয়ে আজ পর্যন্ত এই উপ মহাদেশে রাজনীতি চলছে। যার প্রমান ২০১৪ সালের ভারতের জাতীয় নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর মত এক জন উগ্রাবদী হিন্দু নেতার নিরঙ্কুশ বিজয়। নরেন্দ্রমোদীর বিজয়ে সারা বিশ্ব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল,এই ভেবে যে ভারতে হিন্দু-মুসলি দাঙ্গা আবার দাবানল আকারে ছড়িয়ে পড়বে। যার প্রভাব পবে সমগ্র দক্ষিন এশিয়া সহ সারা পৃথিবীতে। এই সেই নৃশংস মোদী যে ছিল একদা গুজরাটের মুখ্য মন্ত্রী। তার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এবং তারই মদদে পরিকল্পিত ভাবে ট্রেনে আগুন দিয়ে ৫২ হিন্দুকে পুড়িয়ে মেরে তার দোষ মুসলমানদের উপর চাপিয়ে হাজার হাজার মুসলমানকে হত্য,পঙ্গু,বিবস্ত্র ও গৃহহারা করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় ভারতের মানুষ এখনও হিন্দু মৌলবাদের  মদ্য পান করে ঘুমিয়ে আছে। ভারত এবং পাকিস্তান চায় হিন্দু ও মুসলিম মৌলবাদ নামক দুটি পুরানো বিষাক্ত মদ পান করিয়ে উপ মহাদেশকে করায়ত্ব করতে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে,ভারত বা পাকিস্তান কেউ আমাদের শত্রু বা প্রকৃত বন্ধু নয়। ভারত  চায় এ দেশটাকে তার আজীবন বাজার বানিয়ে রাখতে,আর পাকিস্তান চায় এ দেশটাকে ভারতের বিপক্ষে দাড় করাতে। দুটি বৃহৎ রাষ্ট্রই আজ আমাদের গেটা দক্ষিন এশিয়াকে অমান্ত করে রেখেছে। তাদের চির বৈরীতার জন্য ”সার্ক” আজকে একটি নাম মাত্র দক্ষিন এশিয়ার জোটে পরিনত হয়েছে। হিন্দু ও মুসলিম মৌলবাদ হল এ দুটি দেশের রাজনীতির প্রধান হাতিয়ার,যা তারা আমাদর দেশেও ঢুকিয়ে দিতে চায়। তাই আমাদের দেশের পর রাষ্ট্রনীতি হতে হবে অত্যন্ত সজাগ,বিচক্ষন ও নিরপেক্ষ। বন্ধুত্ব হয় সমানে সমানে আর বিস্তর ব্যবধানের সম্পর্কে হয় দাস আর প্রভুর সম্পর্ক।  তাই ভারত বা পাকিস্তানের সাথে বা অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টিতে তা অবশ্যই মনে রাখতে হবে। ভারত ট্রানজিন সুবিধা নিল অথচ তিস্তার পানি দিল না। এটা বন্ধুত্ব নয়,বরং বাংলাদেশের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির পরিচয়।  এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে জনগনের কাছে না এসে বিদেশীদের দ্বারে দ্বারে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে তাতে এ দেশ রাজনৈতিক ভাবে বর্তমানে দেউলিয়া তারই প্রমাণ। অথচ জাতির জনক বঙ্গ বন্ধু  হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমান বিদেশীদের কাছে নয় বরং জনগনের কাছে এসছিলেন আর তাই পেয়েছিলেন কোটি কোটি মানুষেল শক্তিশালী হাত। আজ কোথায় সেই জনতার রাজনীতি ?? কোথায সেই শের-ই বাঙলা,হোসেন শহীদ সোহরাওযারদী,আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ??

ইংরেজীতে একটি কথা আছে –  ”ঢ়ড়ষরঃরপং রং ঃযব ধৎঃ ড়ভ ষরভব”  অর্থাৎ রাজনীতি হল জীবনের শিল্প। রাজনীতি এমনই একটি বিষয় যার উপর দেশের সকল অগ্রগতি বা নি¤œগতি নির্ভর করে। এই নীতি সকল নীতির নীতি নির্ধারক। একটি জাতির সকল ক্ষেত্রে অগ্রগতি বা পশ্চাদপদতা সব কিছুই নির্ভর করে ঐ দেশে বিরাজমান সুস্থ বা অসুস্থ রাজনীতির উপর। এটি সকল নীতির অনুঘটক। তাই এই নীতির নাম দেওযা হযেছে বাঙলায রাজনীতি,অর্থাত সকল নীতিসমুহের নীতি। অনেকে ভুল করে রাজনীতিকে রাজার নীতি মনে করে ভুল করে অযথা বাঙলা শব্দ রাজনীতি কে দোষ দেয। সকল উৎপাদনের মুল যেমন বিদ্যুত,তেমনি সকল উন্নয়নের মুল যন্ত্র হল রাজনীতি। একটি দেশের রাজনীত যদি সুস্থ,গণতান্ত্রিক,মানবিক না হয় তবে,ভাষা,ইতিহাস,সংস্কৃতি,সামজ কোন কিছ্ইু সুস্থ ও পগতিশীল হতে পারে না।  অথচ একটি সুস্থ,গণতান্ত্রিক রাজনীতর দর্শনের উদ্ধুব্ধ হয়ে এ দেশের সাড়ে সাত কোটি জনতা ছয় দফার পক্ষে ঝাপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করল। এই কি সেই জাতি ??  আজ তবে কেন হিংসার রাজনীতি ? এক অপরকে সহ্য করতে পারে  কেন ? আমরা কি ভ্রাতৃত্ব বোধ হারিয়ে ফেলেছি ?

আমি মনে করি ভারত বা পাকিস্তান কোনটাই ভগ হয়নি,বরং ভাগ হয়েছে পাঞ্জাব,বাংলা আর রক্তাক্ত কাশ্মীর। জন্ম থেকে জ্বলছে এই তিনটি জাতি।

আমদের দেশে আমরা দেখি কেউ ভারত পন্থী,কেউ পাকিস্তান পন্থী,কেউ রাশীয়া পন্থী,কেউ লিবিয়া পন্থী,কেউ আমেরিকা পন্থী।  আমার প্রশ্ন হল বাংলাদেশ পন্থী কারা ??

এই বাংলাদেশ পন্থী হচ্ছে বর্তমানে এ দেশের উদীয়মান তরুন সমাজ,যারা হৃদয়ের গভীর ধারন করে সোনার বাংলাদেশ।

কিন্তু আজ সেই সম্ভাব্য তরুনদেরকে ধ্বংসের পায়তারা চলছে নোংড়া রাজনীতি,মাদক,অপ-সংস্কৃতির মাধ্যমে। কারন তরুনরাই হল একটি জাতির প্রধান ও শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাই তরুনদেরকে ধ্বংস করতেপারলে ঐ দেশকে ধ্বংস করা সহজ কাজ হবে।  তাই আমাদের তরুন সমাজের চোখ,কান খোলা রাখতে হবে।

সব চেয়ে ভয়াবহ তরুন বিপর্যয় হল ধর্মের নামে তথা জিহাদের নামে তরুন সমাজকে মগজ ধোলাই করে জঙ্গীবাদী আদর্শের খোসায় ঢুকানো।  এক জন মাদক সেবী তরুন মাদক ছাড়তে পারেন, এক জন নোংড়া রাজনীতিতে জাড়ানো যুবক রাজনীতি ছাড়তে পারেন,কিন্তু ধর্মের খোলসে ঢুকে পড়া এক জন মৌলবাদী,জঙ্গীবাদী তরুন আর কখনোই স্বাভাবিক পথে ফিরে আসতে পারেন না। কারন তার মস্তিষ্ক এমন ভাবে কয়লা ঢুকিয়ে দেয়া হয় যা শত চেষ্টায়ও দূর হয় না। চিন্তাগত সন্ত্রাস কখনও নির্মুল হয় না। তাই আমাদর অভিভাবকদেরকে অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে তাদের ছেলে-মেয়ে,বিশেষ করে ছেলেদের । ধর্মভিত্তিক রাজনীতির চেয়ে পৃথিবীতে বর্তমানে ভয়াবহ আর কিছুই নাই,যার প্রমাণ তালেবান,আই,এস,হরকাতুল জিহাদ,হিজবুত তহুরী প্রভৃতি ইসলামী জঙ্গীবাদী রাজনৈতিক দলগুলো। আবার অনেক ইসলামী দল এ সকল জঙ্গীবাদী দলগুলোর প্রতি সিমপ্যাথেটিক বা সম মনা।

আমাদের ভাবতে খুবই অবাক লাগে যে কেন বুয়েটে পড়া এক জন ছাত্র,বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়া এক জন ছাত্র জঙ্গীবাদী অপ দর্শনের খোলসে ঢুকে পড়ছে ??  বিশ্ব বিদ্যালয়ে,বুয়েটে পড়–য়া,মেডিকেল কলেজে পড়–য়া এক জন ছাত্র তো হবেন মুক্ত মনা,সাংস্কৃতিমনা,সৃজনশীিন ও মানবতাবাদী। কেন সে হচ্ছে মানবতা বিদ্বেষী ?

খোজ নিলে দেখা যাবে ঐ ছাত্রের ব্যকগ্রাউন্ড হল সে হয় ছোট বেলায় মাদ্রাসায পড়েছিল,নতুবা তবলীগ করছে,নতুবা তার পরিবার ইসলামী চিন্তা ধারার,অথবা তার কাছে কোন না কোন ইসলামী দল প্রথমে ইসলামের নরম নরম কথা ও আচার স্বর্বস্বতা নিয়ে এসেছে,পড়ে তাকে কিছু বই পড়তে দিয়েছে,তাকে কিছু ডাইরী দিয়েছে যাতে সে প্রতি দিনের  ধর্মীয় কাজগুলো লিখছে,পড়ে সে তাদের সাধারন প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছে,পড়ে সে বিশ্বস হবার পর গোপন বৈঠকে মিলত হয়েছে,পওে তাকে বোমা হাতে দিয়ে বলা হচ্ছে  ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে প্রভৃতি। আর মাদ্রাসা পড়–য়া ছাত্রদের কি অবস্থা হতে পারে তা ভাবা কঠিন কিছু না। তারা অসম্পূর্ণ মানুষ,কারন তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা তো মান্দাতার আমলের।

তবে এ সকল করন সমূহই  শুধু দায়ী নয়। সব চেয়ে বেশি দায়ী করব আমদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে। কারন আমাদের সমাজে এক জন শিশু ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন পরিবার,মসজি,মন্দির,গির্জা,প্যগোডায়। এর বাইরে  ধর্মীয় শিক্ষা বাড়াবাড়ি আছে বলে আমি মনে করি না। আমদের  পাঠ্য সূচিতে নেই পরিপূর্ণ বিজ্ঞান ভিক্তিক শিক্ষা। বিজ্ঞানের মুল ভিত্তি হল বিবর্তনবাদ,যা আমাদের বই পুস্তকে অসম্পূর্ণ ভাবে  ও দুর্বোধ্য আকরে তুলে ধরা হয়েছে।  আমদের বই পুস্তকগুলি মুলত ভাব বাদরে উপর লেখা,বিবর্তনবাদরে উপর নয়।  তাহলে ভাববাদরে সাগরে হবুডুবু খাওয়া এক জন ছাত্র বা ছাত্রী আই,এসের,তালেবানে,হিজবুত তহরীর,হরকাতুল জিহাদের সদস্য হবে,তা অবাক হবার কি আছে ??

আর এরা কেন বলবে না যে আমাদের বাঙালী সংস্কৃতি কাফেরের সংস্কৃতি ??

বিদ্যালয়ে ঘন্টা বাজে,একেক পিড়িয়ড হয়। এবার ঘন্টা পড়ল,স্যররা এসে উচ্চ কন্ঠে বলকে লাগলেন মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীরা অমুক কক্ষে যাও,হিন্দু ছাত্রীরা তমুক রুপে যাও,ক্রিশ্চিয়ানরা সমুক কক্ষে যাও।  পড়ানো হয় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আলাদা আলাদা ইসলাম ধর্মেও বই,হিন্দু ধর্মেব্বই,ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের বই। ফলে হিন্দু ছাত্র জানে না ইসলাম ধর্মে কি আছে,মুসলমান ছাত্রটি জানে না হিন্দু ধর্মে কি আছে। ক্রিশ্চিয়ান ছাত্রটি তো নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবতে থাকে কারন পৃথিবীর সব চেয়ে সমৃদ্ধশালী ধর্মীয় সম্প্রদায় হল ক্রিশ্চিয়ানরা।  তবে মৌলবাদ কে বা কারা শেখালো ??

কেন থাকবে আলাদা আলাদা ইসলাম ধর্মের বই ? হিন্দু ধর্মের বই ? ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের বই ? কেন থাকবেনা সমন্বিত ধর্মের  ও অভিন্ন  সিলেবাসের বই ??

তবে কেমনে আমরা এক অভিন্ন বেদীতে বা মিনারে দাড়াবো ??

আগো তো কোমলমতি ছাত্র-ছাতীদের জন্য একটা অভিন্ন তথা অসাম্প্রদায়ক বেদী বা মিনার। তা আমরা তাদের দিতে পেরেছি কি ?

কেন ধর্ম নামক এক বিমুর্ত ও বিতর্কিত স্বত্ত্বাটি আবশ্যক থাকবে আমাদরে স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রেশনে,ভর্তিতে বা চাকুরীতে ? ধর্ম বিশ্বাস তো ব্যাক্তির নিজস্ব ব্যাপার । তবে কি প্রচলিত ধর্মে অবিশ্বাসীরা কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না? তারা কি চুকুরী পাবে না ??

আমি দেখলাম যে মুসলমান ছাত্রদের ধর্মের স্থলে লিখতে হয় ধর্ম = ইসলাম( সুন্নী)। কি সাংঘাতিক !!!

নীরবেই তবে কি আমরা মুসলমানদের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব শিয়া,সুন্নী,কুর্দী প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করছি না ?

তবে কি যে মৌলবাদীরা আমাদের বাঙালী তথা বাংলাদেশের জন্মকে হারম বলেন তার চাক্ষুস প্রমাণ নয় কি??

১ঁঁ জুন ২০১৬ রাজধানী ঢাকার গুলশানে “হলি আর্টিসান” নামক একটি রেস্তোরায় ঘটে গেল বাংলাদেশের  ইতিহাসে প্রথম জঙ্গী হামলা যাতে অন্তত ২৮ জনের প্রাণ গেল। জঙ্গীরা প্রায় ২০ জন বিদেশীকে গলা কেটে হত্যা করল। পরের দিন সেনাবাহীনীর সহয়তায় অভিযান চালানো হল যাতে ছয় জঙ্গী সহ ২৮ জনের বেশি নিহত হল। যে জঙ্গীরা নিহত হল তারা আমাদেও দেশেরই সন্তান এবং তারা উচ্চ বিত্ত ঘরের ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিল। এই হল সংক্ষেপে মোটামুটি বর্ননা।

আমাদো প্রশ্ন জাগে যে ছেলেরা ধনী পরিবাওে জন্ম নিল জীবনের সমস্ত মৌলমানবিক চাহিদা পেল,দেশের নামিধামী বিদ্যালয়ে পড়ল তারা কেন জঙ্গী হল ?/ তাদেও তো হওয়ার কথা ছির আধুনিক,বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি মনা। আসলে এটি সংকেত দেয় আমাদের যে আমরা সংস্কৃতি দিক দিয়ে কতটা পিছিয়ে যাচ্ছি। যার ফলে বিশ্ব অপশক্তি পুজিবাদ ধর্মেও খোলসে ঘুটে পড়েছে। এটি সংকেত দেয় যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাদ দেওয়া কতটা আরিহার্য আমাদের জন্য। এটি সংকেত দেয় যে আমরা কতটা বিজ্ঞান বিমুখ ও অনগ্রসর জাতি। পজিবাদী বিশ্বায়নের কাল ছায় পড়েছে আমাদের সমাজের উপর। সমাজতান্ত্রিক চেতনাকে নস্যাত করার জন্যই মুলত সকল ধর্মেও নামে পুজিবাদী তৎপরতা বিশ্বময় চলছে বিশেষ কওে ইসলমাম ধর্ম যার মুল চালিকা শক্তি আমেরিকা,সৌদী আরব,ব্রিটেন,ই¯্রাইল সহ পশ্চিমা পুজিবাদী অপশক্তিগুলো।

একটি ঘঁনাকে আমাদের সাদা চোখে দেখলে চলবে না বরং এর ঘভীওে যেতে হবে। যে দেশে ধমের হাক হাক যত বেশি সে দেশে ঐ ধর্মীয় খোলসে পুজিবাদ আস্তানা গড়তে চায়। বাংরাদেশে যেহেতু ইসলাম ধর্মেও লোকের সংখ্য বেশি এবং ইসলামের হাক ডাক বেশি তাই স্বভাবতই এখানে জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠেছে।  আজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কমমিয়া মাদ্রাসায় পরিনত হয়েচে। ফলে হুজুররা বেচেঁ যাচ্ছেন ইসলামী  জিহাদেও নামে পুুজিবাদের সংগ্রামের অপবাদ থেকে। এই যে সন্তান যারা জঙ্গী এবং প্রান হারাল তারা তো আমাদের দেশেরই সন্তান। তাদের তো হবার কথা ছিল এক কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক,বৈজ্ঞানী,খেলোয়ার,শিল্পি ইতাদি। কেন এ সকল কুড়িঁ অশালে ঝওে গেল ?

এই সমাজ,তাদের পরিবার ও রাষ্ট্র কি এ জন্য দায়ী নয় ?

আসলে তারা ছিল তাদেও পিতা-মাতা থেকে বিছিœন্ন,তারা সমাজ থেকে ছির বিছ্চিন্ন ও রাষ্ট্র থেকে বঞ্চিত। তাই এরা জঙ্গীী হয়েচে। আমাদেও শিক্ষা ব্যবস্থা,আমাদের রাষ্ট্রের এভারেষ্ট সম দুর্নীতি,আমাদের ব্যয়বহুল জীবনযাত্রা,স্ংস্কৃতিক শুন্যতা প্রভৃতি দায়ী। আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রটি আমাদের মৌলমানবিক চাহিদা পূরনে ব্যার্থ হয়েছে।  দেমটা যে একটা সাংস্কৃতিক সত্বার উপর ভিত্তি কওে স্বাধীন হয়েছে তা  বাস্তবে প্রকিফলিক হয়নি। দেশের কোন দলই গন মানুষের রাজনীতি করছে ন্।া ব্যাক্তিগত বা গোষ্ঠীগত তুচ্ছ স্বার্থে রাষ্ট্রটি চলছে। মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদী দেশ পাকিস্তান। তাদের থেকে আমরা স্বাধীন হরাম। পাকিস্তানে ইসলামী জঙ্গীবাদ তুঙ্গে এবং আমাদের দেশেও তা যৌবনপ্রাপ্ত হয়েছে তবে স্বাধীন হয়ে লাভ কি ?? আমবার পাকিস্তানের কাছ থেকে আরাদা হয়ে আমরা ভারতে তাবেদারী করছি।  এক পরাধীনতা ভেঙে আমরা কি আরেকটি পরধীনতার জগতে প্রবেশ করছি কি না ??

আমাদের দেশে সুক্ষœ ভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে জামাত-শিবির,হিজবুত তহরী,চে.এম.বি.হরকাতুল জিহাদ প্রভৃত নানান ইসলীমী পুজিবাদী জিহাদী দলগুলো ধনী ও মেধাবী ছেলে-মেয়েদেরকে টার্গেট করে তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। তারা তাদের শিক্ষার খরচ ও পরবর্তী জীবনে চাকুরীর নিশ্চয়তা,মওে গেলে জান্নাতের নিশ্য়তা প্রভৃতি দিয়ে থাকে। ফলে সহেেজই গরীব ঘরের মেধাবী ছেলে-মেয়েরা ঝুকে পড়ে ঐ সকল জঙ্গীবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি। ধনী ছেলে-মেয়েদেরকে ও রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্পন্ন  পরিবারের ছেলে-মেয়েদেরকে টার্গেট করে তারা তাদের অর্থ সংগ্রহের জন্য এবং রাজিৈনতক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তাদের কার্যত্রম চালিয়ে যাবার জন,যেহেতু কোন ক্ষমতাসীন দলের উপর পর্যায়ের বা স্থানীয় পর্যায়ের নেতা বা প্রশাসনের সহয়তা ছাড়া কোন দেশেই কোন জঙ্গীবাদ বা অন্য কিছু আস্তানা গড়ে ওাা প্রায় অসম্ভব। তাই তারা টার্গেট করে ধনী,রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন ঘরের, উধ্বংতন প্রশাসনের ও মেধাবী ছেলে-মেয়েদেরকে।

মেধাবী ছেলে-মেয়েদেরকে টার্গেট কওে এজন্য যে তারা বিদেশে গিয়ে স্কলারশিপ নিয়ে দেশে এসে বা বিদেশে বসে গুরুত্বপূর্ন পদে থেকে দরকে অর্থ,পরিকল্পনা ও লভিং যোগান দিবে। অতি সুক্ষè ভাবে রক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুরো মুখে গনতন্ত্র বললেও তাদের মুল দর্শন গনতন্ত্র নয়্ কারন তাদের মতে গনতন্ত্র হল ইসলামের পরিপন্থী। গনতন্ত্রেও মুল দর্শন হল- “ জনতাই সকর শক্তির উৎস” অন্যদিকে ইসলামেী রাজিৈতক দলগুলোর মুল দর্শন হল –  “ আল্রাহই সকল ক্ষমতা উৎস”। রাষ্ট্র চলবে আল্লাহর পাটানো বিধান কোরান মতে তাতে কে বা কারা কোরান বিশ্বাস করল বা না করল তাতে দেখাব বিষয় নয়। বরং  তাদের মতে কোরান অবিশ্বাসীরা থাকতে পারবে না ইসলামী রাষ্ট্রে। কোন ধরনের অনৈসলামিক কার্যকম চলতে পারবে না ইসলামী রাষ্ট্রে। মানুষকে কাঠোর ভাবে ইসলামী নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। মানুষ হবে ধর্মেও বানানো পুতুল বা গেলাম মাত্র। অন্যদিকে গনতন্ত্র তা বলে না। গনতন্ত্র বলে সকলে সমান। কে কোন ধর্মে বিশ্বাসী বা অবিশ্বসী তা যার যার ব্যাক্তিগত বা গোষ্ঠীগত ব্যাপার আর রাষ্ট্র হল সকরের  সার্বজনীন ব্যাপার অর্থাত “ধর্ম যার যার যার রাষ্ট্রটি সবার’। “ধর্ম যার যার উৎসব সবার”। রাষ্ট্র চলবে মানবীয় জ্ঞান দ্বারা কোন অলৈকিক জ্ঞান দ্বারা নয়। রাষ্ট্র চলবে সংস্কৃতি,বিজ্ঞান,সাম্যবাদের ভিত্তিতে। উল্লেখ্য  গনতন্ত্র কোন ধর্মকে অস্বীকার করে না বরং বিভিন্ন সম্প্রদায়র  ওয়ারিশগনের মধ্যে সম্পদ বিভাজন নানান ব্যাপারে রাষ্ট্র ধর্মীয় মতকে মনে নেয় কিন্তু  যে কোন রাঝনৈতক দর্মন শুধু মাত্র একটি ধর্মকেই প্রাধান্য দেয়। এ করনে পৃথিবীতে অনেক গনতান্ত্রিক দেশ আছে কিন্তু  এশটিও  ধর্মতান্ত্রিক দেশ নেই। পৃথিবীরর মানুষ ধর্মকে দেখতে চাং তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার হিসেবে কিন্তু কিছু ক্ষমততালোভী  পুজিবদী গোষ্ঠী বা রাজিৈনতদল তাদের  স্বার্থ হাসিলের জন্য মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টারচালিয়ে যাচ্ছে। গুরশান ট্রজেডিতে মৃত আমাদের দেশের ছেলেরা ও বিদেশীরা তারই বলি হয়েছে। এই ধর্মীয় পুজিবাদী শক্তির  ঈশ্বও হলেন মহান আমেরিকা তার সাথে আছেন তার অনেক দেব-দেবীরা।

আমেরিকা,ব্রিটেন মধ্যপ্রচ্য সহ পৃথিবীর বিভন্ন দেশে ও অঞ্চলে “ডিভাইড এন্ড রুল‘ অর্থাত ভাগ কর বা ভেদাভেদ সৃষ্টি কর এবং তাদেরকে শাসন ও শোষন কর।  মনে করুন একটি ঘওে পাচঁ ভাই আছ্ েতারা মিলেমিওে বসবাস করল। এক জন মুদী দোকানদার এ পাচঁ ভাইয়ে কাছে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার পন্য বিক্রি করেন। হঠাৎ এক দিন দোকনদার  চিন্তা করে দেখলেন আমি যদি পাচ৭ ভাইকে ভাগ করে পাচঁটি সংসার বানাতে পারি তাহলে  আমি নিশ্চয় পাচঁ ভাইয়ের কাছে আলাদা আলাদা পন্য বিক্রি করতে পারব। এতে আমার ব্যবসা বহু গুনে বেড়ে যাবে এবং পাচঁ ভইয়ের সকলে সাথেই দোনদারের একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠবে এবং ভাইয়ে ভাইয়ে যখন ঝসড়া-মারমারি হবে দোকানদার তখন শিয়ালের ভুমিকা নেবেন সুবিধা বুঝে। আমেরিকা  রাষ্ট্রটি হল ঠিক দোকানদার রাষ্ট্র ও শেয়াাল পন্ডিত রাষ্ট্র। পাঠক আপনাদেরকে গভীর চিন্তা করার অনুরোধ রইল।  বিশ্বেও সব চেয়ে অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ এখন আমেরিক্ ামানুষ হয়ে মানুষকে মারার অস্ত তৈরী করা ও তার ব্যবসা করা কি ভাল কাজ ?

যে সংস্কৃতির লড়াইয়ে আমরা জয়ী হয়েছিরাম ৫২ তে,যে সংস্কৃতির লড়াইয়ে আমরা চুড়ান্ত বিজয় লাভ কিেছলাম ৭২ এ আজ ১৬ তে এসে মনে হয় আমরা হেরে যাচ্ছি সংস্কৃতক সেই একই লড়াইয়ে। আমরা যেন যেন যুদ্ধ ফেরত ক্লান্ত,অবসন্ন ও তন্দ্রাচ্ছন জাতি হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। সংস্কৃতির লড়াই চিরকাল চালিয়ে যেতে হবে। আজকে দুটি বৃহৎ দলকে মনে রাখতে হবে যে যদি তারা এখনই সচেতন না হয় তবে অচিরেই দেশ জঙ্গীদের হাতে চলে যাবে। আর তারা নিশ্চয়ই ভাল করে জানেন যে জঙ্গী দর্শনে দেশের সর্বোচ্চ পদে কোন নারী থাকতে পারে ন্ াতাহলে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা কেমনে হবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ???

তলেবান শাসন আমরা ভুলে যাইনি। পুরো আপগানিস্তানে তাদের  পিতা রাষ্ট্র আমেরিকার সহয়তায় তারা গড়ে তুলেছিল একটি মৌরবাদী রাষ্ট্র। যেখানে ছির না মানুষের চিন্তার,সংস্কৃতির,ধমের ও কর্মের স্বাধীনাত। যেখানের ছিল না নারী স্বাধীনতা। আফগস্তিানে থাকা কত বিশ্ব ঐতিহ্য বৌদ্ধ বিহার তারা ধ্বংস করেছিল তা আমরা ভুলে যাইনি। তালেবানের বর্তমান যোগ্য উল্টরসূরী ভই হল আই.এস। ঐ মৌলবাদী তারেবানদের কুকর্মের খেসারত দিতে হর পুরো আফগানবাাসীকে।  ইরাক,লিবিয়া,সিরিয়া,পাকিস্তানও তাই। বিশ্বের যেখানেই মৌরবাদের ঘনঘটা সেখানেই পশ্চাদপদতা,দরিদ্রতা,অপুষ্টি,জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার,বিজ্ঞাবিমুকতা,সাংস্কৃতির শূন্যতা ও রক্তপাত।

সে যাই হোক আমি ঐ গুলশান ট্রাজেীতে নিহত সকর দেশী ও বিদেশী নাগরিকের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি।

আমার প্রশ্ন হল আমাদের এই সোনার ভাইয়েরা কেন জঙ্গী হল ? খুজে দেখলে দেখা যাবে তাদের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন শিথিল। তাদের পরিবারগুলে ধনী হওয়ায় বাঙালী সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞামুলক এবং বিদেশী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তারা তাদের ছেলেদেরকে মা-বাবা,ভাই-বোন,দাদা-দাদী,নানা-নানী,কাকা-কাকী,শিক্ষক,পরিবার,সমাজ কাকে বলে তা শিক্ষা দেননি। তারা হয়ত তাদের ছেলেদেরকে প্রতি বছর শহীদ মিনারে নিয়ে যাননি। তাই তাদের ছেলেরা হয়ছে ব্রিলিয়ান্ট জঙ্গী বা ব্রিলিয়ান্ড বিপদগামী সন্তান।

তাদের মা-বাবা শিখায়নি তাদের ছেলেদেরকে যে,পরিবার হল  আমাদের প্রাচ্য সংস্কৃতির অহংকর  যা পাশ্চাত্য  সংস্কৃতিতে হল হাহাকার। তাদের সংস্কৃতিতে এক জন মেয়ের মিলন হয় একটি কুকুরের সাথে,এক জন পুরুষের সাথে মিরন হয় আরেক জন পুরুষের সাথে। তাদের সংস্কৃুতে মাদক আবশ্যক। অন্যদিকে আমাদের সংস্কৃতিতে বিশেষ করে বাঙালী সংস্কতিতে এক জন মেয়ের মিলন হয় এক জন ছেরের সাথে,এক জন ছেলের মিলন হয় এক জন মেয়ের সাথে যার সেতুবন্ধন হর শুভ বিবাহ যা পাশ্চাত্য সমাজে বা আরব সমাজে ব্যতিক্রম। আর মাদককে আমাদের সংস্কৃতিতে না বরা হয় কারন এক জন মাদ সেবী আর এক জন ঘুমন্ত বা অর্ধ ঘুমন্ত মানুষ একই কথা। যে লোক শারিরীক ও মানসিক ভাবে  অসুস্থ সে জতিকে সুস্থ কিছু দিতে পারে না। ইদানিং আমাদের পশ্চিম বঙ্গে মদ নিষিদ্ধ করার শ্লোগান তীব্র হচ্ছে। সুতারাং ধো যায় বাঙালী সংস্কৃতি বিশ্বের একটি সুস্থ,পুষ্টিকর ও প্রগতীশীর সংস্কৃতি। কিন্তু তার চর্চা বেশি বেশি করে করতে  হবে।  দু:খের ব্যাপার এই যে আমাদরে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে সাংস্কৃতিক সেক্টরে একটি টাকাও বরাদ্দ হয়নি। সংস্কৃতির চর্চা না থাকলে শুধু মাত্র র‌্যাব,পুলিশ,বিজিবি,সেনাবহিনী,নৌবাহীনী দিয়ে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদ মেকাবেলা করা যাবে না কারন সংস্কৃতির চর্চা না থাকলে  ধীরে ধীরে সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও এক দিন মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদী হয়ে যাবে। তখন কে ধরবে কাকে ??? ভাই কি ভাইকে ?? চোর কি চোরকে ??

বড়ই অবাক হবার ব্যাপার যে গুলশান ট্রাডেডির মত বিষয় যদি কোন মাদ্রাসার ছাত্রদের দ্বারা সংগঠিত হত তবে দেশবাসী অবাক হতেন না,কিন্তু যখন দেখি এক দল আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া ছাত্ররা যখন হচ্ছে জঙ্গী তখন হতবাক হবারই কথা। জঙ্গীরা এখন তাদের কৌশল পাল্টাচ্ছে। আগে তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল মাদ্রাসা কিন্তু এখন তারা টার্গেট ও কৌশল পাল্টেছে। এখন তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই মাদ্রাসা বানিয়ে ফেলছে। ফলে এখন  মাদ্রাসা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে খুব একটা পার্থাক্য পরিলক্ষিত হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখন যেন মসজিদের ইমাম,মুয়াজ্জিন।

আজকে আমাদের দেশটাতে সাংস্কৃতিক শুন্যতা,দুর্নীতি,অনিয়ম,গনতন্ত্রেও চর্চার অভাব,সাহিত্য র্চচার অভাব প্রভৃতি নানান করানে এ দেশে আজ মৌীলবাদ পাহাড় সম হয়ে ওঠচে। বেশি দিন বোধ হয় বাকি নেই  যখন কোন মৌলবাদী শক্তি দেশটির সরকার প্রধান হবে। তখন আমাদের অসচেতন ও অবচেতন রাজনীতিবীদরা  পথে পথে কাদঁবে আর একে অন্যকে  গালিগালাজ করবে,অভিসম্পাত করবে। নারীশাসত দেশ তখন হবে হুজুর শাসিত দেশ। নারীরা তখন বন্দী হয়ে যাবে রান্œা ঘরে, সংখ্যালঘুদের কবর রচিত হবে এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা  বন্দী হবেন মসজিদে আর মাদ্রাসায়।

দেশের  বিশ্বদ্যিালয়গুলোকে  বানানো হবে কওমী মাদ্রাস।  সংস্কৃতিক-সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলি হুজুরদের হুজরাখানা।  টেলিভিশনে খাকবে না কোন বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান থাকবে  সারা দিন কোরান তেলাওয়াত আর হুজুরদের ওয়াজ-নসিহৎ আর ফতুয়া। দেশের  টুরিষ্ট স্থানগুলো জনশুন্য হয়ে যাবে। সিনেমা বন্ধ হয়ে যাবে। যুব সমাজ মাঠে খেলতে পারবে না তাদেরকে মসজিদের ভেতর আটকে রেখে  ওয়াজ –নসিহৎ শোনানো হবে।  এক  বার দেখুন চোখ বন্ধ করে যে দেশের ক্ষমতায়  কোন না কোন মৌলবাধী দল আছে এবং তখন কেমন হবে দেশটা ??

বাংলা সাহিত্য,সংস্কৃতি,জীবনাচরন সবই তখন হয়ে যাবে হারাম বা নিষিদ্ধ। দেশের এখানে সেখানে তখন হুজুরে হুজুরে চলবে রক্তপাত। মসজিদে,মাজারে,ঈদগাহে তখন পাকিস্তান,ইরাক,সিরিয়া,লিবিয়া,আফগানিস্তানের মত ফাটানো  হবে অহরহ বোমা। শুধু তাই নয় অন্য দেশের সাথেও বাধঁনো হবে  যুদ্ধ। আর সেই সুযোগে মৌলবাদীদের খোদা ও দ্বৈতনীতির হোতা আমেরিকা আসবে বাংলাদেশে  যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে। মাথার উপর পাখি না উড়ে উড়বে হাজারো যুদ্ধ বিমান।  রক্তের সমুদ্রে পরিনত হবে দেশ। অথচ এমনটি কি ভেবে দেখে না আমাদের দুটি নারীতন্ত্রিক দল ?? যদি দেশই চলে যায় জঙ্গীদের হাতে তবে দুই জন নারী কেমনে হবেন ঘুরেফিরে দেশের প্রধান মন্ত্রী ??

২০১৬-১৭ অর্থবছরের  বাজেটে তিন লক্ষ টাকার  পরিমান ঘোষনা করা হয় অথচ সংস্কৃতিক খাতে একটি টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। অথচ দেশটি স্বাধীন হল সংস্কৃতির ভিত্তিতে। আর সংস্কৃতির র্চচাই যদি না থাকে নি:সন্দেহে বাংলাদেশের পতাকা বিশ্ব মানচিত্র থেকৈ অদূও ভবিষ্যতে  হারিয়ে যেতে বাধ্য। এটা কি আমদের রাজনীতিবীদরা উপলদ্ধি করতে পারছেন না ??

দেশ আজ মৌলবাদের সমুদ্রে পরিনত হয়েছে। যেখানেই কোন সামাজিক ,সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানীক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেখানেই মসজিদ,মাদ্রাসা থেকে হুজুররা আসেন আপত্তি জানাতে। এমনকি দেশের প্রশাসন ও এ সকল মৌলবাদীদের পক্ষ অবলম্বন করে অনুষ্ঠন আয়োজনের অনুমতি দেয় না বা পর্যাপ্ত সহযোগিতা  করে না।

ধরুন একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠন আরম্ভ হল বিকেল বেলা। অনুষ্টান চলাকালে দিল আযান,গেল ানুষ্ঠান বন্ধ হয়ে। এর পর আবার নামাজের বিরতি। প্রথম ব্রেকে দর্শন চলে গেল এক-তৃতীয়াংশ যারা নামাজের পর আর ফিরল ান অনুষ্ঠানে। এর পর আবার অনুষ্টন চলতে থাকল। এবার মাগরিবের আযান ঞল। অনুষ্ঠন থেমে গেল। নামাজের বিরতি। দর্শক সংখ্যা এবার অর্কেক কমে গেল। আবার আরম্ভ হল অনুষ্ঠান হল অর্খেক খালি  নিয়ে অনুষ্ঠন চলতে লাগল। এবার ইশার আযান ও  নামজের লম্বা বিরতি। বিরতি শেষে দেখা গেল দর্শন শুন্য চোয়ার  পড়ে আছে আর স্টেইেেজ শিল্পীরা পারফর্ম করছে। কি না নাযেহাল দশা হচ্ছে আমদের দেশে ধর্মীয় বাড়াবাড়ির ফলে। কেন মসজিদে আযান হলে থেকে যাবে সামাজিক,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ? ? কেন মসজিদে আযান হলে থেমে যাবে মন্দিরে,গীর্জায় বা প্যাগোডায় অনুষ্ঠন ??  যার যার কাজ  কারো উপর হস্তেক্ষেপ না করে চালিয়ে যাওয়া কি প্রকৃত গনতন্ত্রেও বা ধর্মের  আদর্শ হতে পারে কি না ??

একটি অনুষ্ঠনা আয়োজন করতে কতৃপক্ষের কত টাকা-পয়সা,শ্রম,মেধা প্রভতি নানান বিষয় ব্যয় করতে হয়। এত কিছু করার পওে যদি অনুষ্টানের দর্শক সারি শূন্য হয়ে যায় তখন কেমন লাগবে অনুষ্ঠান আয়োযকদের ?

কেন এক জনের কর্মকান্ড অন্যের কর্মকান্ডকে থামিয়ে দিবে ?  এক সাথে কি সব কিছু চলে পারে না ??

সকরের কি সহঅবস্থান সমাজের জন্য কাঙ্কিত নয় ??

৫২ ও ৭১ এ লড়াই বি সংস্কৃতির জন্য ছিল না ?  মানুষের – মানুষের, মেেতর – মতের , আদর্শেও – আদর্শের, দলের -দলের, ধর্মের –ধমের সহ অবস্থান কি বিশ্বমানবের কাম্য নয়??

তবে কেন আমাদের দেশে  মসজিদে আযান হলে সব থামিয়ে রাখতে হবে ??  এটা তো সৌদী আরব নয়।

মুল কথা হল আমরা পারিনি আমাদেও মুক্তযুদ্ধভিত্তিক আদর্শের ভিত্তিতে দেশটাকে গড়তে। রাজনৈতক নেতা- নেত্রীরা কোন রকমে আপোষ করে যে কয়টা দিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন তাই করেন। তারা আমাদের সংবিধানের আাদর্শের প্রচারক ও ধারক নন।

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি পরিচালনার এ্যাপস হল সংবিধান  আর আমাদের সংবিধানের  এ্যাপস হল বাঙালী সংস্কৃতি। কিন্তু আপসোস স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও দেশটা রয়েছে একটি মিনি পাকিস্তান। এর ফলেই খুন হয়েছেন হুমায়ুন আযান, ওয়াশিকুর,রাজীব,অভিজিতের বিজ্ঞান মনষ্ক লেখক  – প্রকাশকরা। এ জন্যই হামলা হচ্ছে লালনের আক্রায়। এ জন্যই খুন হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা এমনকি মৌলবাদীরা নিজেরাই। দেশে আজ যেন চলছে খুনের এক মহোৎসব। রক্তাক্ত আজ পত্রিকার পাতাগুলো। দেশের গনতন্ত্র আজ হুমকির সম্মুখীন। মিডিয়ার স্বাধীনতা নেই কথা বলার বা প্রচার করর।  টক শো তে কথা বলা যেন হারাম ঘোষনা করছে বর্তমান সরকার। কোন দলই জনতার দল নয়। সবাই নিজের আখের গোচাচ্ছে। কিন্তু তাদের ভেবে দেখা উচিত যদি দেশই না থাকে বা মৌলবাধীরা দখল করে নেয়  তবে নিজেদের আখেরটুকই গোছাবেন কেমনে ??

আজ বৃহৎ দুটি দলের মধ্যে কলহের কারন দেশে উগ্রবাদের তান্ডব চলছে। রাজনৈতিক ভেকুয়াম বা শূন্যতার জন্য,গনতন্ত্রের চর্চার অভাবের ফলে সংস্কৃতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ  আজ জঙ্গীবাদের অভয়াশ্রমে পরিনত হতে চলেছে। গনতন্ত্র ও সংস্কৃতি চর্চার,মুক্ত জ্ঞান চর্চার কোন বিকল্প নেই।

সাংস্কৃতিক খাতে প্রচুর টাকা বরাদ্দ করতে হবে। দেশের শহর,গঞ্চ,বন্দও,প্রাম সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সামাজিক,সাংস্কৃতিক,মুক্ত জ্ঞান চর্চার আয়োজন করতে হবে হুজুরদের ওয়াজ মাহফিলের মত ব্যাপক জারে। বেউ বার অরুণ্ঠানে বাধা দেওয়া চলবে না। ব্যাপক হারে বিভিন্ন ধরনের সামাজিদ,সাংস্কৃতিক,বৈজ্ঞানীক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে সরকারী ও বেসরকারী সহযোগিতায়। একটা দিন আসবে যখন মৌলবাদীরা আর আধা দিতে আসবে না। এমনকি তাদেরও  চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হবে। সুতারাং চিন্তাগত সন্ত্রস মুলোৎপাটনে চাই চিন্তাগত আদর্শের প্রচার। দেশের শিক্ষা ব্যবস্তায় মাদ্রাসা সহ পাঠ্যপুস্তকে সঠিক বিজ্ঞান ভিত্তিক সিলেবাস চালু করতে হবে।

তবেই এমন এক দিন আসবে যখন আর  মৌলবাদীরা বলবে না যে শহীদ মিনাওে ফুল দেওয়া হারাম !!! জাতীয় সংগীত গাওয়া হারাম কারন তা হিন্দুর লেখা,জাতীয় পতাকার প্রতি সালাম জানানো হারাম কারন তাতে কলেমা খচিত নেই। তখন কওমীয়া সহ সকল মাদ্রাসায় আমাদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা পত পত করে উড়বে। সব্ াতখন হবে বাংলা মাতার একই উদরের গর্ভজাত সন্তান। আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি।

মৌলবাদীরা হয়ত ভুলে গেছে নতুবা আড়াল করতে চায় যে,আমাদের দেশে তথা উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে সুফিদের হাত ধরে। ঔ উগ্রবাদী পাকিস্তানী ম্ওদুদের  কিংবা অন্য কোন মৌলবাদীদের হাত ধরে নয়। সুফিবাদের ইসলাম ছিল মানবতার ইসলাম।যে ইসলাম বলেনা মাসুষকে ঘৃণা করতে,জাতিতে,জাতীয়তাবাদকে ঘৃণা করতে তথা বোমা মেরে মানুষ মারতে। একদিন এক মৌলবাদী কাঠমোল্লা আমকে প্রশ্ন করেছিল আপনি কি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন? আপনি কি কোরানে বিশ্বাস করেন? আপনি কি পাঁচ ্ওয়াক্ত নামাজে বিশ্বাস করেন? উত্তরে আমি বললাম হুজুর যদি আমি ্ও সবে বিশ্বাস না করি তবে কি গাছে ফুল ফুটবে না ? যদি আমি ্ওগুলোতে বিশ্বাস না করি তবে কি সূর্য তার অস্তত্ব হারাবে? নদীর ¯্রােতধারা কি থাকবেনা? পৃথিবীর জীবনযাত্রা কি উলটপালট হয়ে যাবে? উত্তরে তিনি বললেন না।এবারে বললাম যদি ্ওগুলোতে বিশ্বাস করি তবে কি দুনিয়াতে সব যুদ্ধ বিগ্রহ,বিগ্রহ,ক্ষুধা,দারিদ্রতা,অশান্তি চলে যাবে? উত্তরে কাঠমোল্লা বললেন না। এবারে কাঠমোল্লাকে আমি প্রশ্ন করলাম যদি আমরা পৃথিবীর সকল মানুষ ্ওসবে বিশ্বাস না করি তবে কি পৃথিবী অচল হয়ে যাবে? উত্তরে কাঠমোল্লা বললেন হ্যা পৃথিবী ততদিন টিকে থাকবে যতদিন পর্যন্ত  এক জন বান্দা আল্লাহর ইবাদত করবে অর্থাৎ নামাজ পড়বে। আমি বললাম তাহলে পৃথিবীর মানুষের তবে এক সাথে অন্তত একদিন আল্লাৈহর ইবাদত না করে ধর্মঘট করে দেখা যেতে পারে যে তারা আল্লাহর ইবাদত না করলে দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যায কিন?। বললাম শুনুন হুজুর সারা পৃথিবীর সব মানুষ যদি আল্লাহকে তথা সৃষ্টিকর্তাকে ভুলেও যায় তাতে আল্লাহ কিংবা বান্দার কিছুই ক্ষতি হবে না বরং ক্ষতি হবে আল্লাহর নামে যারা  আল্লাহর ্ওয়াস্তে খাচ্চে,ঘুমাচ্চে,ভিক্ষা করছে তথা যারা ধর্মমে পুজি করে জীবন যাপন করছে,রাজনীতি করছে তাদেরই ক্ষতি হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আমার কথা শুনে কাঠ মোল্লা সাব খুব ক্ষেপে গেলেন। আমি বললাম এভবেই মৌলবাদ,উগ্রবাদ,জঙ্গীবাদ সৃষ্টি হয়ে থাকে। পরমত সহ্য না করা থেকেই উৎপত্তি হয় অস্থিরতা, যা হল জঙ্গীবাদ।হুজুর কোন রকমে পালিয়ে গেলেন,বিড়বিড় করে কি যেন বললেন বুঝতে পারলাম না।

আমাদের বরিশালের লৌকিক দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর প্রচলিত ধর্মের অনেক বিধি-বিধানের প্রতি প্রশ্ন রেখে গেছেন। আর তাই তিনি হয়েছেন মৌলবাদীদের চোছে নাস্তিক,মুরতাদ,কাফের। তিনি বলেছেন- “ধর্মজগতে এরুপ কতগুলি নীতি,প্রথা,সংস্কার ইত্যাদি এবং ঘটনার বিবরণ প্রচলিত আছে যাহা সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্য নহে,এবং ্ওগুলি দর্শন ্ও বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত ্ও বটে”।

মহান এই লৌকিক দার্শনিক প্রচলিত ধর্মের এই অসম্পুর্ণ ্ও দুর্বোধ্য বিধি-বিধান সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন। যার দ্বার আমারা বুঝতে পারি যে,যত মানুষ ততই ধর্ম।প্রচলিত ধর্মের কোন ক’ল-কিনারা নেই। আর পৃথিবীর সকল প্রচলিত ধর্ম কোন দিনই একটি কমন ভিত্তির উপর আসতে পারিনি এবং সম্ভবত আসত্ওে পারবে না। তাই অজতা জিহাদ,ক্রুেশড বা অন্য নামে মানুষ মেরে লাভ কি?? পরমত সহ্য কি ধর্মের অংশ হতে পারে না ?যদি তাই হয় তবে এ দেশের প্রগতিশীল চিন্তাবিদ,কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক,বৈজ্ঞানীক ্ও মুক্ত মনের মানুষরা কেন বিভৎস ফতুয়ার শিকার? কেন তারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন?

সীমাবদ্ধ কাঠামোর দ্বারা জ্ঞান চর্চা করা যায় না। জ্ঞান চর্চার জন্য প্রয়োজন বাধা বিহীন একটি সীমাহীন মহাশুন্য যা প্রচলিত অর্থে আমার আকাশ বলে থাকি। মানুষের মনকে ধমক দিয়ে বেশিক্ষন দমিয়ে রাখা যায়না,সে প্রকাশ পাবেই।গ্যালিল্ওি,কোপার্নকাস,হাইপেসিয়া,পীথাগোরস,ব্লেক,রবীন্দ্র নাথ,লালন ফকির,আইনষ্টাইন,্ওমর খৈয়াম,আরজ আলীরা চিরকাল সৃষ্টি হতে থাকবে। কারন এদর কোন ধ্বংস নেই এ জন্য যে এরা হল মানুষের অন্তর্চক্ষু বা আতœা,যার কোন বিনাশ নাই। এরা মানুষের সহজাত জগ্রত বা ঘুমন্ত চির জিজ্ঞাসু বিবেক। দেহের বিনাশ হল্ওে চিন্তার বিনাশ হয় না,কারন মানুূষ  ও অন্যান্য জীবের সর্ব প্রধান পার্থাক্য এখানেই। আপনি যতই বলুন “বাবা” পুকুরে নামিস না,ভুত আছে,সন্তান তা মানবে না,এক দিন না এক দিন সে পুকুরে নামবেই নামবে,হয়ত সে মর্ওে যেতে পারে,কিংবা সে সত্যকে আবিষ্কার করে ফেলতে পারবে। সত্য এক দিন আবিষ্কার হবেই। ধমক দিয়ে,ফতুয়া জারি করে সত্যকে লুকিয়ে রাখা যায়না।

ব্যাক্তিগতভবে বয়ে বেড়াচ্ছি নাস্তিক,মুরতাদ আর কাফের নামক কিছু আরবি শব্দ মাত্র।

তোমরা ফতুয়া দ্ওা শহীদ মিনারে ফুল দ্ওেয়া হারাম। নানান প্রশ্ন আসে তবে পৌত্তলীকতার সাথে তোমাদের কেন সাদৃশ্য? ঐ সাদৃশ্য কেন তোমরা হারাম মনে করছ  না? ইসলামের সাথে অনৈসলামিক সাদৃশ্য মানেই কি হারাম??  যদি তাই হয় তবে ইসলামের সাথে  পৌত্তলীকতার অনেক সাদৃশ্য রয়েছে,যা হারাম না হয়ে ফরজ হল কেন???

তাই আসুন আমরা সকলে এই সব বিভ্রান্তিজনক মতবাদকে না বলি এবং মানুষের কাছে সঠিক তথ্য ও উপাত্য তুলে ধরার চেষ্টা করি। যাঁরা ভুল জানে তাদের সঠিকটি জানাই এবং জানাতে আগ্রহী হই। তাদের বুঝানোর চেষ্টা করি যে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হারাম নয়, বরং তা হালাল।নতুবা জাতি হিসাবে আমাদের অস্তিত্ব শূণ্য।

কতটা সমৃদ্ধ,সশিক্ষিত আর সৃজনশীল জাতি আমরা। অথচ পাকিস্তানীরা আমাদের এই বাঙালীর সংস্কৃতিকে কাফেরের সংস্কৃতি বলত। তাদের সুনিপুন সংস্কৃতি হল ইসলামী মৌলবাদ,যার আদলে আছে উগ্রবাদ,পুজিবাদ,জঙ্গীবাদ,ফ্যাসিবাদ প্রভৃতি নানান অপইসলামী সংস্কৃতি। আজ পাকিস্তানে যে অপইসলাম চলছে তা আমরা তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা থেকে জানতে পাই। পৃথিবীর জঙ্গীবাদের প্রধান উৎস পাকিস্তান। যারা নিজেরা নিজেদের হত্যা করে,শহীদ ্ও জিহাদ মনে করে,তারা অপর দেশের মানুষকে আর কি ভাববে? পাকিস্তানের রেখে য্ওায়া মৌলবাদের আদলে এখন্ও আমদের কিছু মাদ্রাসাগুলোতে  চলছে তার অণুশিক্ষণ,যা আমাদের জন্য হতাশার বিষয়। যেখান থেকে উৎপত্তি হ্ওয়া এক জন ছাত্র মনে করে জাতীায় সংগীত হিন্দুর রচনা তা গ্ওায়া পাপ । যারা শুদু মাত্র নজরুলকে কবি মনে করে আর রবীন্দ্র নাথ কে বেদীন মনে করে তার রচনা পড়েনা। আমি অনেক হুজুরদের সাথে কথা বলেছি যারা উক্ত মত অসুসরন করে প্রকাশ্যে কিংবা নিভৃতে। অথচ  নজরুল ্ও রবীন্দ্র নাথ দুজন ছাড়া বাংলা সাহিত্য প্রায় থাকেনা। পক্ষান্তরে হিন্দু মৌলবাদীরা রবীন্দ্র নাথকে কবি বলে গর্ব বোধ করে,আর নজরুলকে সাহিত্যের পাতা থেকে মুছে ফেলতে চায়। যার প্রমাণ কলকাতার হিন্দু উগ্রবাদীরা নজরুলের অনেক লেখা রবীন্দ্র নাথ কিংবা অন্য কবির নামে চালিয়ে দেয়। নজরুলের অপরাধ যে নজরুল বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। অথচ নজরুলের লেখা কীর্তন গাণ না গেলে বাঙালী হিন্দুদের পুজাই যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পক্ষান্তরে নজরুলকে মুসলমার্ওা একদিন নাস্তিক উপাধি দিয়েছিল। কিন্তু“ রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খশির ঈদ”  ঈদের আনন্দ যেন মাটি হয়ে যায় নজরুলের সেই অবিনাশী গাণ না গাইলে।

হিন্দু ্ও  মুসলিম মৌলবাদ শত শত বছর ধরেই বাঙালীর বুককে করেছে ক্ষত-বিক্ষত আর রক্তাক্ত। এই দুটি মৌলবাদের ফলেই আমরা আজ্ও পৃথিবীরি বুকে দাড়িয়ে মাথা উচু করে বলতে পারছি না যে আমরা বাঙালী। আমদের রয়েছে সমৃদ্ধ সভ্যতা,,ইতিহাস,ঐতিহ্য,সংস্কতি,দর্শণ আর জীবনবোধ। আজ্ও তাই  আমরা পহেলা বৈশাখকে আমদের বাঙালী জাতির দিন ভাবতে পারছি না। আমি মনে করি পহেলা বৈশাখ,২১ ফেব্রুরী.২৬ মার্চ,১৬ ডিসেম্বর, ১৫ আগষ্ট প্রভৃতি দিনগুলো আমাদের সমস্ত বাঙালীদের বার্ষিক জাতীয় দিবস হ্ওয়া উচিত। আমাদের দেশে দেখা যায় জাতীয় সংগীতের এসেমব্লী  দশম শ্রেণী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। কলেজ পর্যায়ে আর থাকে না। এতে ছেলে মেয়েরা জাতীয় সংগীত তথা জাতির হৃদয়ের আবেদন ভুলে যেতে থাকে। তাই আমার ব্যাক্তিগতভাবে আবেদন,জাতীয় সংগীতের এসেমব্লী অন্তত দ্বাদ্বশ শ্রেণী পর্যন্ত থাকা উচিত। বাংলাদেশের অন্তত পাবলিক বিশ্বাবদ্যালয়গুলোতে এমন একটি নির্দিষ্ট মিউজিয়াম থাকা উচিত যেখানে অন্তত এ দেশের স্বাধীনতার মহনায়ক,সাত বীর শ্রেষ্ঠ সহ কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক,বৈজ্ঞানীক,ভাষা সৈনিক সহ দেশের বরেণ্য ব্যাক্তিদের ছবি,নাম,জন্ম ্ও মৃত্যু সন,শ্রেষ্ঠ বাণী প্রভৃতি থাকা উচিত। এই কাজটি ইট,বালী,রড,সিমেন্ট,টাইলস প্রভৃতি দিয়ে স্থায়ীভাবে করতে হবে। এতে পাঠ্য পুস্তকের শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হবে। কারণ অনেকেই আমরা আমাদের কৃতি সন্তানদের নাম,পরিচয় ভুলে যাই,যা আমরা পাঠ্য পুস্তকে পড়েছি।তাই শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমাজের কাছে বাস্তবামুখী করে তুলতে হবে। বাঙালী জাতীয়তাবাদ,গণতন্ত্র,সাহিত্য,দর্শন,কলা,শিল্প প্রভৃতি সৃজনশীল চেতনাগুলোকে চির উজ্জেবীত রাখার জন্য এই ব্যবস্থা সহ র্আও অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

উচ্চতর শিক্ষায় পাঠ্য পুস্তক্ওে তা অর্šÍভুক্ত করতে হবে।

ইসলাম ও পৌত্তলীকতার সাথে সাদৃশ্যে কিছু নমনা নি¤েœ তুলে ধরা হল-

ঈশ্বর এক – একমেবাদ্বিীতিয়ম (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ)।
বিশ্ব জীবের আতœাসমূহ এক সময়ে সৃষ্টি।
মরনান্তে পরকাল এবং ইহাকালের কর্ম ফল পরকালে ভোগ।
পরলোকের দুইটি বিভাগ- স্বর্গ ও নরক  বেহেশÍ ও দোযখ)।
স্বর্গ ও নরক সাত ভাগে বিভক্ত ( ইহা ছাড়া নাকি সাজ্জাদের বানানো আরেকটি বেহেশÍ আছে)।
স্বগ বাগানময় নরক অগ্নময়।
স্বর্গ উর্ধ্বদিকে অবস্থিত।
পূণ্যবানদের স্বর্গপ্রাপ্তি এবং পাপীদের নরক প্রাপ্তি।
যমদূত(আজ্রাইল) কতৃক মানুষের জীবন হরন।
ভগবানের স্থায়ী আবাস,সিংহাসন(আরশ)।
স্তব-স্তুতিতে ভগবান সন্তুষ্ট।
মন্ত্র  ে কেরাত) দ্বারা উপাসনা করা।
মানুষ জাতির আদি পিত এক জন মনু (আদম)।
নরবলি হইতে পশু বলির প্রথা (কোরবানী)।
বলিদানে পূণ্য লাভ ( কোরবানী)।
ঈশরের নামে উপবাসে পূণ্য লাভ ( রোজা)।
তীর্থ ভ্রমনে পাপের ক্ষয় ( হজ্জ্ব)।
ঈশ্বরের দূত আছে ( ফেরেশÍা)।
জানু পাতয়া উপাসনায় বসা।
সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত ( সেজদা)।
করজোড়ে প্রার্থনা( মোনাজাত)।
নিত্যউপসনার নির্দিষ্ট স্থান, মন্দির (মসজিদ)।
মালা জপ (তসবী পাঠ)।
ধর্মগ্রন্থ পাঠে পূণ্য লাভ।
কাজের শুরতে ইশ্বরের নাম লওয়া –  নারয়ণং সমস্ত্্যং নবৈষ্ণব নরোত্তম (বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম)।
গুরুর নিকট দীক্ষা গ্রহন ( তওয়াজ্জ)।
স্বর্গে গণিকা আছে – গান্ধর্ব,কিন্নরী,অপ্সরা ( হুর-গোলমান)।
উপসনার পূর্বে অঙ্গ ধৌত করা (ওজু করা)।
দিকনির্নয়কপূর্বক উপসানায় বসা বা দাড়ানো।
পাপ-পূন্য পরিমাপে তৈলযন্ত্র ব্যবহার(মিজান)।
স্বর্গগামীদের নদী পার হওয়া(পুল ছিরাত) প্রভৃতি। ( সত্যের সন্ধান,আরজ আলী মাতুব্বর,পৃ:- ৯৪)।

অনেকে ভাবছেন ধর্মকে নিয়ে অযথা এত টানাটানি করছি কেন? আমাদের ও অনুরুপ প্রশ্ন মৌলবাদীরা অযথা,অস্থানে অসচেতন ভাবে কেন ধর্মের ফতুয়া ছুড়ে মারেন ??

যেহেতু তারা ধর্মকে ঢাল হিসেবে আনছেন,তাই সে ঢাল কতটা মজবুত বা দুর্বল তা দেখাার দরকার আছে কি না ??

সেই সুুফিবাদীরা যে ইসলামের দাওযাত নিযে এসেছিলো এই উপমহাদেশে তাদের মুল কথা ছিল মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নাই। তোমরা মনের দিক থেকে মুসলমমান হও এবঙ তোমাদের জীবনের বাকী কাজকর্ম তোমাদের মত করে চলিযোও। তারা বলেননি যে ইসলাম একটি পরিপুর্ন জীবন বিধান। নানান রকম ধর্মীয ফতুযা তারা মানুষের উপর চাপিযে দেননি। তাদের ইসলাম আমাদের সঙস্কৃতির উপর আঘাত হানেনি,বরঙ করেছে সমৃদ্ধ।

বিজ্ঞান যেখানে  এখন একটি শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাড়িয়েছে সে,বিজ্ঞান যাহা বলে মানুষ তাহাই বিশ্বাস করে। বিজ্ঞান কি সকল বিষয়ে সত্য বলছে ? উত্তরে অবশ্যই না বলবেন। এটা বলছি এ জন্য যে বিজ্ঞান তো সত্য বা মিথ্যার অলৈক বিশ্বাসের ব্যাপার নয়,বরং তা প্রমাণ সাপেক্ষ। আজ যা বিজ্ঞানের ভাষায় সত্যি কাল তা মিথ্যা হতে পারে। তখন বিজ্ঞান তা অবনত চিত্তে মেনে নেয়। বিজ্ঞানে শ্বাশ্বত বলে কিছুই নেই। ইটিই বিজ্ঞানের দর্শন। কিন্তু প্রচলি ধর্মসমূহ নিজেকে পর্বতের চেয়েও মজবুত মনে করে।  প্রশ্ন হলো তার পরও কেন দিন দিন ওগুলির উপর মানুষের বিশ্বাস কেন কমে যাচ্ছে ???

আগেই বলেছি যে,ধর্ম মুলত বিমুর্ত বিষয়,আর সমাজ,অর্থনীতি,রাষ্ট্রনীতি,সংস্কৃতি,ভাষা প্রভৃতি হল মুর্ত বিষয়।

দেশের সকল গুরুত্বপুর্ন স্থানে মুক্ত চিন্তার লোদেরকে চাকুরী দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাতে ধর্মন্ধ ছেলে-মেয়েরা ব্যাপক হারে ঢুকতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারন এক জন ধর্মান্ধ ব্যাক্তিকে একটি লাইব্রেরী বা গবেষনাগার দেওয়া হলে সে ওখানে বসে জঙ্গীবাদের পরিকল্পনা করবে। ফলে দেশের সকল গুরুত্বপুর্ন স্থানে পুজিবাদী মৌলবাদী শ্রেণী ঢুকে পড়ে এক দিন তারা অগণতান্ত্রিক ভাবে,অরজকতার মাধ্যমে,অস্থিরতার মাধ্যমে দেশকে দখল করবে। যার প্রমাণ আফগানিস্তানে তালেবান। যাদের জন্ম মাদ্রাসায়। আর সেই উগ্রবাদী মাদ্রাসাওলারাই এক দিন আফগানিস্তানের হল অধীশ্বর। ফলে তাদের কারনেই দেশটি আজ ধ্বংস হল। ভোগান্তি হল জনগনের।  কারন তালেবানরা খোদার প্রতিনিধি নিজেদেরকে বললেও আসলে তাদের প্রকৃত খোদা হল মানবতা বিধ্বংসী,পুজিবাদী,উগ্রবাদী,জ্ঙ্গীবাদী আমেরিকা। সাদ্দাম,গাদ্দাফি,মোল্লা ওমর এরা সবাই হল আমেরিকার সৃষ্ট সন্তান ও পরে তারা হয়ে গেল আমেরিকার ত্যাজ্য পুত্র গণ। আমাদের দেশেও এক শ্রেনীর আন্তর্জাতিক মানের পুজবাদী ইসলামী দল রয়েছে,যারা আমেরিকা,ব্রিটেন,ই¯্রাইল,সৌদী আরব,পাকিস্তানের মদদপুষ্ট সন্তান। তারা চায় ইসলামের নামে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে,তাদের ধর্ম ব্যবসাকে জাতীয ও আন্তর্জাতিক ভাবে ছড়িয়ে দিতে। এর ফলেই দেখি সৌদী আরব,আমেরিকা,ব্রিটেন মুসলমানদেরকে কোন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,গনগ্রন্থাগার,ল্যবরেটরী,সংগীত বিদ্যালয় প্রভৃতি গড়ে দেয় না,বরং তারা মুসলমানদেরকে মসজিদ,মাজার,কবর স্থান, খানকা,ঈদগাহ প্রভৃতি গড়ে দিচ্ছে। কারন মুসলমানরা ঘুমের মধ্যে থাকলে তাদের পুজিবাদ কায়েম করা সহজ হবে। কারন নেতা হবেন শয়তানের প্রতিনিধি আর ভক্তরা হবেন চোখ থাকতে অন্ধ। ভক্তরা কখনই জানতে পারবে না তাদের নেতাদের কারসাজি। এভাবেই চলছে প্রচলিত ধর্মের নামে পুজিবাদ,সম্প্রজ্যবাদ,ফেসিবাদ,অবৈজ্ঞানীক,অমানবিক মতবাদ। তাছাড়া প্রচলিত ধর্মের ভিতরে আছে বৈপরীত বিষযসমুহ যার ফলে তা হযে দাড়িযেছে নির্দিষ্ট্র সম্প্রদাযের ধর্ম দর্শনে,যা প্রকৃত দর্শনের সাথে সামান্তরিক নয। এর ফলেই ধর্মের ভিত্তিতে যত বিভাজন আর বিতর্ক,বিবাদ,বিশৃঙ্খলা,যুদ্ধবাজনীত প্রভৃতি যা ধর্মের ভাষায ”জিহাদ” ক্রশেড প্রভৃতি নানান নামে নামাঙ্কিত করা হযেছে। সেই জিহাদের আগুনে জ্বলছে গোট আরব জাহান সহ গোটা দুনিযা। এই বিজ্ঞানের যুগে এসেও মানুষ ধর্ম নিযে জিহাদ করছে,যা অবাক হওযার বিষয। তবে এসব বেশি দিন থাকবে না। যখনই আমরা দেখতে পাব ধর্মীয ধর্মীয় মাহফিলের মত বৈজ্ঞানীক মাহফিল আনাচে,কানাচে হচ্ছে তখন মানুষ বিজ্ঞামুখী হবে।

ভাষা নিয়ে আরেকটু কথা বলতে চাই তা হল পৃথিবীর সকল দেশেরই আছে কথ্য ভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা ও শুদ্ধ ভাষা বা লেখ্য ভাষা,যা সমাজের শিক্ষিত  পন্ডিতগন আবিষ্কার করেছেন। আমি বলতে চাই যে, আমি আমাদের দেশের লেখ্য ভাষা তথা বই-পুস্তকের বাংলা ভাষাকে শ্রদ্ধা করি। তবে আমি আঞ্চলিক ভাষাকে ও জীবন্ত রাখার পক্ষে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভাষা আছে যা বিলুপ্তির পথে। তাই বাংলা একডেমি বা ভাষা গবেষনা কেন্দ্রগুলির উচিত হবে পুরো বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে ও বই-পুস্তক,নাটক,সিনেমা ,সাহিত্য চর্চ প্রভৃতি নানান ভাবে সংরক্ষন করতে হবে,নতুবা বাংলাদেশের প্রধান সম্পদ হল বৈচিত্রতা যা কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে। আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠী আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলাকে লজ্জাকর ও বেমানান মনে করে কিন্তু আমি তাদের সাথে এক মত নই। আমি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যখন এম.বি.এ ডিগ্রিতে অধ্যয়ন করছিলাম তখন আমার এক শিক্ষক তখন আমাাকে পরামর্শ দিলেন বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা পুরোপুরি পরিত্যাগ করার জন্য। আমি বললাম স্যার আমি ইচ্ছে করেই বরিশাইল্লা ভাষায় কথা বলি কারন আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষার হার ব্যাপক বেড়েছে। আর শিক্ষিত জনগোষ্ঠী যদি তাদের আঞ্চলিক ভাষাকে ধারন না করে তবে এক দিন তো তা কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাবে। আমি বরিশাইল্লা ভাষায় কিছুটা হলেও কথা বলাকে আমার  ঐতিহ্য মনে করি। স্যার আরো বললেন আঞ্চলিকতা পরিহার না করলে আমার নাকি চাকুরী-বাকুরূী পেতে ঝামেলা হতে পারে। আমি বললাম স্যার এটা আমার অহংকার ও ঐতিহ্য।

ঈদ মুসলমানদরে র্ধমীয় উৎসব,র্দূগাপূজা হন্দিুদরে,মাঘী র্পূণমা বৌদ্ধদরে,বড় দনি ক্রশ্চিয়িানদরে আর পহলো বশৈাখ হল হন্দিু,মুসলমান,বৌদ্ধ,ক্রশ্চিয়িান সহ সকলরে উৎসব র্অথাত পহলো বশৈাখ হল র্সাবজনীন উৎসব। দুই বাংলা সহ পৃথবিীর নানান প্রান্তরে বাঙালীর জীবনে দোলা দয়ে বশৈাখ। আগইে বলছেি যে আরবী ভাষা ও সংস্কৃতি মুসলমানদরে নয়,বরং তা অমুসলমিদরে সম্পদ। অমুসলমিরা দলে দলে ইসলাম গ্রহন করলওে তারা তাদরে অমুসলমিি কৃষ্টি বা সংস্কৃত,িভাষা,খাদ্যাভ্যাস,প্রথা এমনকি বশ্বিাসও অনকে ক্ষত্রেে পাল্টাতে পারনে,িযা এখনও চলছে এবং চলব।ে

অথচ আমাদরে দশেরে নর্বিাধ মোল্লারা ইসলামরে নামে বদিশেী সংস্কৃতি আমাদরে মুসলমানদরে উপর চাপয়িে আমাদরে বাঙালী সংস্কৃত,িভাষা,প্রথা,কথা-উপ কথা প্রভৃতি জাতরি প্রানকে স্তব্ধ করতে চায়। বাঙালীর শষে স্বাধীন নবাব সরিাউদ্দৌলা পরাজয়রে পরে বাঙালীর বৃহত্তর বাংলা রাষ্ট্ররে স্বপ্ন ভস্তেে যায়। এর পর সুভাস চন্দ্র,শরে-ই বাংলা সহ অনকে বাঙালী নতো স্বপ্নে দখেছেলিনে হন্দিু,মুসলমি সকল বাঙালীর জন্য একটি বৃহত্তর বাংলা রাষ্ট্র গড়ার। দু:খরে বষিয় হল আমাদরে পশ্চমি বঙ্গরে বাঙালীরা আজীবন হন্দিুই রয়ে গলে তারা পারল না বাঙালী হয়ে বাঙালীর জন্য একটি স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র গড়ত।ে কন্তিু মুসলমি অধুষ্যতি এই র্পূববঙ্গরে মুসলমানরা ঠকিই মুসলমানত্বিরে ধ্রুম্রজালরে দাসত্ব ভঙেে প্রকৃত বাঙালী হতে পরেছে।ে তারা একটি সর্ম্পূণ্ স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়কি বাংলাদশে নামক বশ্বি মানচত্রিে একটি স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র জন্ম দলি। তাই এই বঙ্গরে বাঙালীরাই প্রকৃত বাঙালী ও বাঙালী জাতস্বিত্তার পাঞ্জরেী।

শুধু মাত্র এক,দুই আর তিন দিন জাকজমক করে, গান গেয়ে, পোশাক পড়ে, খাদ্য খেয়ে বাঙালীপনা নয়,বরং পুরো বছর বাঙালীপনা চালিয়ে যেতে  হবে। তবে  পহেলা বৈশাখ পালন অবশ্যই থাকতে হবে।

আমরা খাদ্য পন্য থেকে পোশক পন্য পর্যন্ত ক্রয় করি বিদেশী,বিশেষ করে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের বিভিন্ন পন্য,যা আমাদের জন্য হুমকি স্বরুপ।

আমাদের দেশপ্রেম কেবল দেশী মুরগী আর দেশী পিয়াজেই সীমাবন্ধ। এটা স্বার্থপরতা ছাড়া কিছুই নয়। কিনতে হবে সব কিছুই দেশী।

খাদ্য পন্য,পোশাক,আসবাবপত্র,ঔষধ,জুতা,কলম,কাগজ ,সাবন থেকে সব কিছুই কিনতে হেব দেশী। তবেই আমাদের দেশ সমৃদ্ধ  হবে,আমাদের ভাষা,সংস্কৃতি ও ঐহিত্য মহিমান্¦িত হবে।

অত্যন্ত বিরক্তিকর লাগে যখন বসি দূরদর্শন উপভোগ করতে। যখন দেখি আমাদের দেশের তরুন ছেলে-মেয়েরা টেলিভিশনের পর্দায় খানিকটা বাংলা ও খানিকটা ইংরেজী বলে। এদর সম্পর্কে বলতে চাই যে এরা আসলে না পারে ভাল বাংলা বলতে,না পারে ভাল ইংরেজী বলতে। এরা আসলে দুটি ভাষায়ই অদক্ষ ও অপরিপক্ব। অথচ  এই গুরুতর বিষয়টি নিয়ে কেউ মাথা ঘামান না। ফলে আমাদের তরুনরা দেশী ভাষা ভুলে যাচ্ছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে বাংলাকে বিশ্ব দরবারে পৌছে দিতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই ইংরেজী শিখতে হবে কারন বিশ্ব দরবারে পৌছানেরা সব চেয়ে ভাল মাধ্যম হল ইংরেজী ভাষা।

পরিশেষে প্রণাম জানাই সদ্য প্রয়াত বাঙালীর কৃতি সন্তান হুমায়ুন আহমেদ,সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়,ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন আর জাতীয় স্মৃতি সৌধের নকঁশাকরী মাইনুল হাসান প্রমুখ ব্যক্তিবর্গকে। বাংলাদেশ তথা সসগ্র বাঙালী জাতি পৃথিবীর বুুকে সম্মান আর মর্যাদার সাথে বসবাস করেতে পারে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। পুথিবীবাসী জানুক বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডার কত গভীর ্ও কত মধুর। এ ভাষা,এ সংস্কৃতি কতটা মাটি ্ও মানুষের কথা বলে। যার প্রমাণ সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনেস্কো আমদের বাঙালীদের বাউল গাণকে মানবতার গাণ হিসাবে স্বীকতি দিয়েছে। বাড়ছে লালন ফকিরকে নিয়ে গবেষণা। গবেষণা চলছে লৌকীক দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর কে নিয়ে। আমাদের বাংলা ভাষাকে স্ওিরালিয়ন দিল রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা।২১ পেল আন্তর্জাতিক সম্মান।  ২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কন্ঠে গেয়েছি আমরা আমাদের জাতীয় সংগীত যাতে অংশ্র গ্রহণ করেছিল ২ লক্ষ,৫৪ হাজার,৬৮১ জন লোক, যার মাধ্যমে বাঙালী

পেয়েছে গিনেচবুকে মর্যাদার আসন।

পহলো বশৈাখকে আজ জাতীয় ছুটরি দনি ঘোষনা করা হয়ছে। এটা আমাদরে একটি বশিাল পদক্ষপে যা প্রথম করছেলিনে বাঙালী জাতীয়তাবাদরে অগ্রদূত শরে-ই বাংলা এ.ক.েফজলুল হক। তনিি প্রতষ্ঠিা করছেলিনে বাংলা একাডমেী যার উদ্দশ্যে ছলি বাংলা ভাষাকে নয়িে গবষেনা করা,বশ্বি দরবারে বাংলা ভাষা,সাহত্যি,সংস্কৃততিে পৌছে দওেয়া। জাননিা এ ক্ষত্রেে বাংলা একাডমেী কতটুকু সফল। তবে শুধু মাত্র একটি প্রতািষ্ঠানরে উপর নর্র্ভি করা চলবে না। আমাদরে দশেরে অন্তত বভিাগীয় শহরগুলোতে বাংলা ভাষা গবষেনা প্রতষ্ঠিান সরকারী উদ্যোগে গড়ে তুলতে হব।ে বাংলা ভাষা ও সাহত্যিরে উপর প্রচুর  ম্যাগাজনি প্রকাশনার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে দশেে প্রচুর নবীন লখেক সৃষ্টি হতে পারে এবং প্রবীন লখেকরা তাদরে মধো বকিাশরে সুযোগ পান।

আমাদরে দশেরে বভিন্ন পত্র পত্রকিায় সাহত্যিরে তমেন ফচিার নইে। তাই জাতীয় সকল পত্রকিায় বাধ্যতামুলক ভাবে সাহত্যিরে পাতা থাকতে হব।ে

আমাদরে বরশিাল হল সাহত্যিরে র্তীথভূম।ি অথচ হতাশার বষিয় যে বরশিালে প্রায় ২০-২৫ টি আঞ্চলকি পত্রকিা আছে যখোনে একটি মাত্র পত্রকিায় সাহত্যিরে পাতা আছে বাকগিুলোতে নইে বললইে চল। অথচ এটা বরশিালরে জন্য লজ্জাকর।

আমরা এগিয়ে যাচ্চি এবং যাব। বাঙালীর মধ্যে এক বিশাল রেনেসা ঘটে চলছে যা ধীরে ধীরে এগুচ্ছে।

 

রচনায়: মো. অহেদুল হক তালুকদার

নির্বাহী সদস্য, দার্শনিক আরজ মঞ্জিল পাবলীক লাইব্রেরী, লামচড়ী, বরিশাল সদর, বরিশাল,বাংলাদেশ।

138 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন