২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

আর কোনো যুদ্ধবিমানের চালকের আসনে বসছেন না অভিনন্দন!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৪৪ অপরাহ্ণ, ০২ মার্চ ২০১৯

শুক্রবার রাত ৯টা ২১ মিনিটে তাকে ভারতের হাতে সমর্পণ করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা। তার দেশে ফেরার পর অবসান হলো ভারতীয়দের ৬০ ঘণ্টার উৎকণ্ঠা ও অপেক্ষার।

তার আগমন উপলক্ষে সারা দেশজুড়ে উৎসবের আবহ বিরাজ করছে। অভিনন্দনকে স্বাগত জানাতে ওয়াঘা সীমান্তে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। অভিনন্দন দেশে পা রাখার পরেই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এখন পাইলট অভিনন্দন বিষয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে ভারতসহ বিশ্বমিডিয়া তা হলো, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন এই পাইলট? দেশে ফিরলেও কী কী প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন তিনি? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ভারতের বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজার জানিয়েছে, পাইলট অভিনন্দনের সাহসিকতার প্রশংসা করছে ভারতীয় বিমানবাহিনীসহ দেশটির সাধারণ জনতা।
প্রশংসা এসেছে বলিউড ও ক্রিকেট তারকাদের থেকেও।

তবুও পাকিস্তানের হেফজত থেকে ফিরে দফায় দফায় জেরার মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হবে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে পত্রিকাটি।

যদিও দেশটির বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত অভিনন্দন বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য আসেনি।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, আপাতত বাড়ি ফিরতে পারবেন না অভিনন্দন। ওয়াঘাও সীমান্ত থেকে সরাসরি বিমানবাহিনীর গোয়েন্দাদের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে তাকে।

এরপর রয়েছে তার বেশকিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অভিনন্দনের ফিটনেস বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তিনি পাক কারাগারে অত্যাচারিত হয়েছিলেন কি-না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে। দেখা হবে তার শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি আছে কি-না।

তার পুরো শরীর স্ক্যান করে নিশ্চিত করা হবে যে, পাক কারাগারে তার শরীরে মাইক্রোচিপের মতো কোনো লুকানো প্রযুক্তি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে কি-না। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে আড়ি পেতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় বিপক্ষশক্তি। এ বিষয়ে গভীর অনুসন্ধানে নামবে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রযুক্তিবিদরা।

এছাড়াও অভিনন্দনকে নিয়ে যাওয়া হবে মনোবিশেষজ্ঞদের কাছে। পাক কারাগারের ৪৮ ঘণ্টা সময়ে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা-সংক্রান্ত কোনো তথ্য তিনি দিয়েছেন কি-না। তিনি পাকিস্তানে কোনো ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন কিনা তা-ও খতিয়ে দেয়া হবে।

সব মিলিয়ে পাকিস্তানে আটকের পর থেকে ওয়াঘা সীমান্ত পার করা পর্যন্ত গোয়েন্দাদের প্রতি মুহুর্ত বর্ণনা সবিস্তার দিতে হবে অভিনন্দনকে।

অভিনন্দনের কাছ থেকে তথ্য নেয়া হবে পাক সেনাবাহিনী কোন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার তার মিগ বিমানটি ভূপাতিত হয়েছিল। তার সঙ্গে থাক যেসব নথি পাক সেনাদের হাতে পৌঁছেছে তার তালিকা তৈরি করা হবে।

পাক কারাগারে তাকে আপসের কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল কিনা এবং তার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হয়েছিল সে কথা জিজ্ঞেস করা হবে তাকে।

পাক অধীনে চা পানরত থাকা অবস্থায় যে ভিডিওটি প্রকাশ হয়েছে সেসম্পর্কেও বিস্তারিত জানা হবে অভিনন্দনের কাছে। সামরিক পরিভাষায় পুরো একটি ‘ডিব্রিফিং’ এর মধ্য দিয়ে যাবেন অভিনন্দন।

এসব তথ্য দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ডিব্রিফিং’ ও শারীরিক পরীক্ষায় অভিনন্দন উত্তীর্ণ না হতে পারলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হয়ে কোনো অপারেশনে যেতে পারবেন না অভিনন্দন। তাকে আর কোনো যুদ্ধবিমানে উঠতে দেয়া হবে না। তবে বিমানবাহিনীর সাধারণ কোনো কাজে তাকে নিযুক্ত করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন ওই কর্মকর্তা।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন